somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনার কি ব্লগিং করার স্ট্যাটাস আছে?

১২ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৯:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: ধর্মীয় বিষয় কষ্ট দিলে আন্তরিকভাবে অনুরোধ থাকবে আমার লিখা এড়িয়ে যাবার।


(ছবি নেট হতে)

সামুতে ব্লগিং-এর আজ ১২ বছর ৪ দিন চলছে। এই সুদীর্ঘ এক যুগের বেশির ভাগ সময়টাই যদিও ইনএ্যাক্টিভ থেকে চলেছে, তবুও ব্লগিং করতে এসে যা বুঝেছি তা হচ্ছে, ব্লগিং-এ স্ট্যাটাস বা ব্যাকগ্রাউন্ড অনেক বড় একটা বিষয়। আগে ভেবেছিলাম ব্লগ হচ্ছে লিখার খেলা। এখানে কে কোথা হতে এসেছে তারচাইতে বড় বিষয় ভাবতাম কে কেমন লিখে। আর সেজন্য নিজের আইডেন্টি হাইড করার ব্যবস্থা ভাবতাম।

কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তা নয়। ব্লগিং-এর জন্যে লিখার ওয়েট হেভী নয়, স্ট্যাটাসটাই হেভী হওয়া দরকার। সূত্রটা এমন যে, অমুকের স্ট্যাটাস যেহুতু তমুক, তাই তার ব্লগিংটাও সেই রকম। তাই এখন মনে হচ্ছে ব্লগিং-এর জন্য দরকার,
*একটা ভালো বংশ
*একটা ভালো ডিগ্রী
*একটা ভালো জব/পজিসন
*একটা ভালো আর্থিক অবস্থা
*একটা ভালো(!) দেশে অবস্থান
*একটা ভালো(!) জাতির দাসত্ব
*একটা ভালো ব্লা ব্লা ব্লা………
আর একটা ভালো লিখা? না, সেটা না হলেও চলবে। উপরের বিষয়গুলো থাকলেই বলা যায় আপনার ব্লগিংটা উন্নত। আপনার ধারণাগুলো সঠিক। আপনি একজন নির্ভুল হনু টাইপের ব্লগার। আপনি লিখার নামে যা-ই প্রসব করেন, তাই সুধা।

তাই ব্লগিং করার আগে ভেবে দেখুন, আপনার উপরের বিষয়গুলো আছেতো? নয়তো আজ হতেই নিজেকে ব্লগার জাহির করা বন্ধ করুন। ব্লগিং বিষয়টা আপনার জন্যে নয়।

জ্ঞাণ, মেধা, প্রজ্ঞা, সৃজনশীলতা, কমনসেন্স ইত্যাদি ইত্যাদির কোনো মূল্য ব্লগিং-এর ক্ষেত্রে নেই! ভালো একটা ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকলে সমাজে যেমন টিকে থাকা মুশকিল, ব্লগিংওতো সমাজের অংশ। তাই, আপনার ব্যাকগ্রাউন্ডই বলে দিবে আপনি কোন ধরণের ব্লগার।

সেদিন একটা গল্প পড়লাম। সেটা দিয়ে শেষ করছি।

একবার এক পর্যটক মেক্সিকোয় গেলেন। সেখানে জেলেদের মাছের খুব প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন,
“আচ্ছা, মাছ ধরতে আপনাদের কত সময় লাগে?”
জেলেরা-বেশিক্ষণ না।

পর্যটক“তাহলে আপনারা আরও বেশি সময় দিয়ে আরও বেশি মাছ ধরেন না কেন?”
জেলেরা বলেন, "আমরা যে মাছে ধরি তাতে আমাদের প্রয়োজন মিটে যায়"।

পর্যটক“তাহলে মাছ ধরার পর বাকি সময়টা আপনারা কী করেন?”
জেলেরা জবাব দেয়,
“আমরা ঘুমাই, বাগান করি, বাচ্চাদের সাথে খেলা করি, বৌয়ের সাথে খাই, সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেই, মজা করি, হাসি, গলা ছেড়ে গান গাই…”।

পর্যটক তাদেরকে থামিয়ে বলেন,
“আমি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছি। আমি আপনাদেরকে বুদ্ধি দিয়ে সাহায্য করতে পারি। আপনাদেরকে আরও বেশি সময় দিয়ে মাছ ধরতে হবে, বাড়তি মাছগুলো বিক্রি করে মাছ ধরার বড় নৌকা কিনতে হবে। ”

“তারপর?” জেলেদের প্রশ্ন।
পর্যটক,“আপনারা বড় নৌকার সাহায্যে বেশি মাছ ধরবেন, বেশি আয় করবেন। সেটা দিয়ে আরও বড় দুটা, তিনটা বা আরও বেশি নৌকা কিনবেন। একসময় মাছ ধরার নৌবহর বানিয়ে ফেলবেন। তখন মধ্যসত্ত্বভোগী ব্যবসায়ীদের কাছে মাছ বিক্রি না করে, সরাসরি মাছ প্রসেসিং ফ্যাক্টরির সাথে বেচাকেনা করবেন। এক সময় নিজেরাই মাছ প্রসেসিং ফ্যাক্টরি খুলে বসবেন। তারপর অনেক ধনী হয়ে গ্রাম ছেড়ে মেক্সিকোর রাজধানী, আমেরিকার লসএঞ্জেলেস বা নিউ ইয়র্কে চলে যাবেন। সেখান থেকে আপনারা মেগা প্রজেক্ট চালু করবেন। ”

জেলেরা“এসব করতে কত সময় লাগবে?”
পর্যটক“কুড়ি/পঁচিশ বছর তো লাগবেই।”

“তারপর” জেলেরা সবিষ্ময় প্রশ্ন করলেন।
লোকটা হেসে জবাব দেয়, “ব্যবসায় যখন আরও বড় হবে তখন আপনারা শেয়ার বাজারে যাবেন, মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় করবেন।”

জেলেরা,"ধরুন পেলাম মিলিয়ন ডলার। কিন্তু, তারপর?”
পর্যটক তখন জবাব দেন,
“আপনারা তখন অবসরে যাবেন। শান্ত গ্রামে ফিরে এসে সমুদ্রের ধারে ঘুমাবেন, বাচ্চাদের সাথে খেলা করবেন, বৌয়ের সাথে খাবার খাবেন, সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিবেন, মজা করবেন…,”।

তখন জেলেরা বলেন,
“সেই কাজটাই তো আমরা এখন করছি।
তাহলে এই বিশ/পঁচিশ বছরের এই কষ্টের জীবনের মানে কী?”
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৯:৫৪
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×