♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
বি. দ্র. পোস্টের সকল ছবি ও ভিডিও নেট হতে সংগ্রহীত।

লিখালিখি কোনো সহজ বা সাধারণ বিষয় নয়। এরজন্য প্রয়োজন হয় সময় আর সাধনা। প্রয়োজন হয় রসদের। তারই ধারাবাহিকতায় একটা লিখা বহুদিন হয় মাথায় ঘুরছে যার সূত্রপাত নতুন প্রবর্তিত নোট নিয়ে চলমান বিতর্ককে কেন্দ্র করে। যেখানে আরসব বিতর্ককে ছাপিয়ে আছে ২০ টাকার নোটে মসজিদের পরিবর্তে মন্দিরের ছবি। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দেশে একে দেখা হচ্ছে বড় ধরণের অধর্ম হিসেবে। সেই প্রেক্ষিতে আমার কিছু কথা নিচে দিচ্ছি।

মন্দিরের ছবি নিয়ে নামাজ হবেনা রেফারেন্স কি? এটাতো প্রাণী নয়। বরং এতোদিন যে বঙ্গবন্ধু বা পাট নেওয়া কৃষকের ছবি ছিলো, তখন নামাজে সমস্যা হলো না?

নিজ চোখে দেখা সৌদির নোটে মানুষের ছবি আর তা নিয়ে মসজিদুল হারামে নামাজ আদায়। তখন কি নামাজ বা হজ হয়? আবার মসজিদের ছবি নিয়ে এতোদিন বিধর্মীদের করা ইবাদত হয়েছেতো?

যারা বলছেন ২০ টাকার নোট বয়কটের জন্য, তারা এতোদিন কোথায় ছিলেন? বঙ্গবন্ধুর আগেও যখন নোটে হরিণ, পাখি ইত্যাদি প্রাণীর ছবি ছিলো তখন কোথায় ছিলো এই আবেগ?

ভালো করে না দেখেই কেনো আবেগে গা ভাসানো? সঠিকভাবে দেখলে বুঝা যায় মসজিদ নয়, বঙ্গবন্ধুকে মন্দির দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এদিকে ষাট গম্বুজ মসজিদকে যে ২০ হতে নিয়ে ১০০ টাকার নোটে তথা বড় নোটে স্থান দেওয়া হয়েছে, সেটা কি নজরে পরেছে?

মন্দিরের ছবিতে নামাজ হবে কিনা বিতর্ক। এদিকে অনেক মুসলিম রোগীই বেঁচে উঠছে ভিন্নধর্মী ভাইদের রক্ত আর চিকিৎসায়। তখন সেই মুসলিমদের সারা জীবনের ইবাদতের কি হবে?

একটা তিতা কথা বলি। যেই ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা মন্দিরের ছবি নিয়ে এতো চিন্তিত, তারা যদি বিষয়টি না জানতে পারতেন, আর ছবির নিচে যদি মন্দির লিখা না থাকতো, তবে কতোজন নিজগুণে ধরতে পারতেন এটা মন্দির? বোধ করি অনেকেই তখন এটা মসজিদ ভেবে নিতেন। আরো তিতা কথা হচ্ছে, মন্দিরের ছবিতে যারা নামাজ বা পবিত্রতা নিয়ে চিন্তিত তাদের কয়জন নিয়মিত নামাজ পরেন? কতজনের মুখে সুন্নতি ,দাঁড়ি আছে? উন্মুক্ত রাস্তার পাশে কাজ সেরেই যখন হাত না ধুয়ে মসজিদওয়ালা নোটে হাত লাগিয়েছেন তখন কোথায় ছিলো এই ঈমানি শক্তি? মনে হয় না এই দেশের মতো আর কোনো দেশের নোট এতো নোংরা হয়।
আর ওয়াজ মাহফিলে যে বক্তাগণ ২০ টাকার নোট বয়কটে ডাক দেন, তারা যদি কাল জানেন ভারতের মুদ্রায় মসজিদের ছবি দেওয়া হচ্ছে তখনতো চিল্লাইয়া “সুবহান আল্লাহ্” আর “আলহাম্দুলিল্লাহ্” কইয়া মাইক ভাঙ্গবেন। বলবেন ঐ ইসলামের বিজয় দেখা যায়। যদিও ভারতের সেই পরিবর্তন কোনো হিন্দুর হাত ধরেই হয়। এক্ষেত্রে যদি এখন হিন্দু বক্তাগণ বলে ঐ সনাতনের বিজয় দেখা যায়?
তবে সত্য বলতে নোটগুলিতে আধুনিকতার চাইতে হিজিবিজির প্রকাশই বেশি ঘটেছে বলে মনে হয়েছে। আর রং দেখে মনে হয়েছে আগের নোট মডিফাই করা। জানিনা জনগণ সহজে বুঝার জন্যে এমন করা হয়েছে কিনা।
আমার এই লেখা পড়ে অনেকেই ভাবতে পারেন আমি ইসলামবিমুখ হয়ে গেছি। আদতে তা নয়। আমি ইসলামের পক্ষে আর অসঙ্গতির বিপক্ষেই আছি। আমার কছে যা অসঙ্গতি মনে হয়েছে তাই তুলে ধরেছি। নোটের সাথে ধর্ম মেশানো ভন্ডামি। বরং আড়ালে অন্যকিছু চলছে। হয়তো দেশকে অস্থির করতে ধর্মীয় দাঙ্গা তৈরির কোনো মাস্টার প্ল্যান।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি প্রাণীর মতো কোনো ধর্মীয় বা দলীয় বিষয়ও নোটে যুক্ত করা ঊচিৎ নয়। নোটের জন্য বিশেষ আইন করা প্রয়োজন। এটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ, কারো বাপের না। ইদানিং আলোচনায় মনে হচ্ছে যেনো সবাই নোট নিয়ে শুধু মসজিদেই ছুটে। অগণিত নোট যে নিষিদ্ধ পল্লী, দ্রব্য, আর অবৈধ কাজে ব্যয় হয়, তখন মসজিদের অসম্মান করা হয় না? ১০ টাকায় বায়তুল মোকাররমের উপর “আল্লাহু” সুস্পষ্ট। এই নোট যখন পদদলিত বা অসম্মানিত হয়, তখন কোথায় থাকে তৌহিদি জনতা? সত্যি যদি ঈমানি বল থাকতো, তবে অনেক আগেই ১০ টাকার নোট বয়কটের ডাক উঠার কথা ছিলো। কিন্তু……
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:৪১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




