♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)

(ছবি নেট হতে)
প্রিয় ব্লগার ভাই ও বোনেরা,
জানিনা কি লিখছি বা লিখবো বা কিভাবে লিখবো। শুধু বুঝতে পারছি লিখা দরকার। আর এই লিখার চাপ আজ বহুদিন ধরেই উপলব্ধি করে চলেছি। তারপরও লিখতে পারছি না এই, কি-কিভাবে ইত্যাদি করে।
যারা আমায় ভালবাসেন তারা নিশ্চই দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্য করেছেন আমার মাঝে বিশেষ পরিবর্তন এসেছে। আমি আগের মতো যেমনি এ্যাক্টিভ নই, তেমনি আগের মতো পোস্ট পড়া, মন্তব্য করা, বা মন্তব্যের উত্তর করা ইত্যাদির কোনোটাই আমায় দিয়ে হচ্ছে না। অনেকেই ভাবতে পারেন আমি বদলে গেছি। আবার ভাবতে পারেন আমি ভাব নিচ্ছি। কিন্তু সত্যিটাও নিশ্চই অনেকে উপলব্ধি করতে পারছেন যে, নিশ্চই কোনো ক্রাইসিসের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। আবার ক্রাইসিস শব্দটাও উল্লেখ করতে ভয় হয়, কারণ ক্রাইসিস শুনলেই অনেকে ভাবে এই বুঝি টাকা-পয়সা চাইলো।
আসলে আমি বিশাল অন্তর্দন্দে আটকে গিয়ে তাল-মাটাল হয়ে গেছি। এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে।
মূল কারণ, দীর্ঘদিন ধরেই পরিবারে অশান্তি চলে আসছে। কিন্তু তা এখন এমন এক স্থানে পৌঁছেছে যা আমায় ভেঙ্গে ফেলে নতুন-নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন করছে।
সর্বদা এসব প্রশ্ন মাথা জ্যাম করে রাখায় বহুমাত্রিক চিন্তা-ভাবনা করতে পারছি না। সেক্ষেত্রে তাল ধরে রাখতে পারছি না। প্রায়ই খেই হারিয়ে ফেলছি। এজন্য লিখা, মন্তব্য করা ইত্যাদি সবই জটিল হতে জটিলতর ঠেকছে। তাই ইচ্ছে থাকলেও এগিয়ে যেতে পারছি না। অল্পতেই মুড সুইং হচ্ছে। এমন হয় যে, আগ্রহ নিয়ে কাজ শুরু করে পরে আর আগ্রহ থাকে না। লিখতে নিয়ে মাঝখানে আর শেষ করতে ইচ্ছে করে না। সব যেনো প্রলাপ মনে হয়। লিখার মাঝে নতুন চিন্তা এলেই সব পাকিয়ে যায়।
আরেক সমস্যা হচ্ছে মোবাইল চেঞ্জ করার পর আপডেট কী-বোর্ড আর নতুন লে-আউট। বর্ণ খুঁজতে গিয়ে কি লিখছিলাম সেটাই হারিয়ে ফেলি। পরে আর লিখতে পারিনা। আবার বর্ণ খুঁজে বের করতেও মেজাজ খারাপ হয়। এদিকে নতুন করে আবার টাইপ শেখারও ধৈর্য্য হচ্ছে না। এমন সময় শুধু মনে হয়, কি লাভ এসব করে?
আরো বড় সমস্যা হচ্ছে, পরিবার হতে ধাক্কা খেয়ে এখন যাই করি মনে হয়, কি লাভ এসব করে? পরিবারই যেখানে মূল্য দেয় না সেখানে…..…..
সেইসাথে আরো পীরাদায়ক দেশ এবং বিশ্ব পরিস্থিতি। ৫ই অগাস্টের পর নতুন স্বপ্ন দেখলেও পেছনে তাড়া করছে নব স্বৈরাচারের ছায়া। পতিত স্বৈরাচার হতে মুক্তি পেতে যখন দল-মত ভুলে সবাই মজলুমের কাতারে দাঁড়িয়ে দেশ নিয়ে ভেবেছি তখন আশা ছিলো পরিবর্তনের। কিন্তু এখন যখন মুখোশ খসে পরছে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লিপ্সায়, তখন এই ভেবে বিদগ্ধ হচ্ছি যে, কতো বড় একটা গেইমের মাঝে ছিলাম। যারা স্বৈরাচার খেদিয়ে দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখালো, তারাই এখন নতুন স্বৈরাচার হবার প্রয়াস নিয়ে এগুচ্ছে, আর আমরাই কিনা তাদের নেক্সট টার্গেট! শাসক বদলায় নামমাত্র। মজলুম, জালিম, আর জুলুমের কোনো পরিবর্তন আসে না।
এদিকে একই গেইম চলছে বিশ্বেও। ফিলিস্তিনের জন্য সবাই মায়াকান্না দেখিয়ে এখন যখন ইরান এগিয়ে এলো, তখন পাশে আর কেউ নেই। এদিকে ইরানের এই এগিয়ে আসাটাও কি মজলুমের জন্য নাকি চলমান গেইমেরই অংশ তাও জানি না।
এবার সব মিলিয়ে বলি, মজলুম ফিলিস্তিনের জন্যে দরদ দেখালেও রায়টা বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, ইজরায়েল এসবের দিকেই। ফিলিস্তিনের জন্য করলে সন্ত্রাস, ইজরায়েলের জন্য মানবতা। কান্নাটা দেশের জন্য হলেও লক্ষ্যটা মসনদ। বিপক্ষ করলে স্বৈরাচার, সপক্ষ করলে অধিকার। তেমনি পরিবারে যার দাপট আছে সে করলে তা ভালোর জন্য। অন্যক্ষেত্রে অপরাধ আর অপবাদ। তেমনি ব্লগেও অনেক সময় যা নীতিমালা তাই অপরাধ।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই এমন দ্বিমুখীতা আর দ্বিচারিতা দেখত-দেখতে জীবনের প্রতিই মায়া চলে গেছে। এসবের বিরুদ্ধে একমাত্র প্রতিকার মহান সৃষ্টিকর্তা। কিন্তু ধৈর্য্যের শেষ সীমানায় পৌঁছে মনে হয়, “ঈশ্বর থাকেন ওই ভদ্র পল্লীতে, এখানে তাহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না।”
এসব নানান কারণে এখন সবই অর্থহীন মনে হয়। তাই কিছুই করতে পারি না, বা ইচ্ছে হয় না। সব যেনো শুরুর আগেই শেষ হয়ে যায়। হয়তো খেই হারাই, নয়তো ভুলে যাই, নয়তো ইচ্ছে করে না।
জানি এসব লিখে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করছি যা অনুচিত। কিন্তু অনেকেই যখন দেখি আমায় মিস করছেন, আমায় লিখছেন, কিন্তু আমি তার সঠিক মূল্যায়ণ করতে পারছি না, তখন নিজেকে ভীষণ নিচ, জঘন্য, আর ভন্ড মনে হয়। জানি আপনাদের এই ভালোবাসার যোগ্য আমি নই। তারপরও চেষ্টা করি মূল্যয়ণ করতে, কিন্তু কেনো পারি না তার কিছুটাই তুলে ধরতে চেষ্টা করলাম। জানি না কতোটা পেরেছি। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতেই “জটিল ভাই ২.০” খুলেছিলাম। কিন্তু বরাবরই ব্যর্থ হয়ে চলেছি। ভেবেছিলাম আরো অনেককিছুই লিখবো। কিন্তু এখন আবার খেই হারিয়ে ফেলছি

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


