somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেম ও বদহজম

২৭ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রোগী এসেছে ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার বললেন, আপনার সমস্যাটা কী?? রোগী বলল, সমস্যার তো কোন কূল কিনারা নাই। শরীরে বাত; সকাল-সন্ধ্যা জ্বর, কাশি আছে হাঁপানি আছে। পেটের ট্রাবল দীর্ঘদিন ধরে। ইদানীং আমাশা হয়েছে। যুবক বয়স যক্ষ্মা হয়েছিল। ছোটবেলায় হয়েছিল হুপিং। এখন চোখেও কম দেখী! আর এই দেখুন গায়ে কি যেন চাকা চাকা বের হয়েছে।
ডাক্তার সাহেব বললেন--এক কাজ করুন, ঝড়-বৃষ্টির সময় সাত ফুট লম্বা একটা লোহার ডান্ডা নিয়ে মাঠে হাঁটি-হাঁটি করুন।
/
/
ঃ কেন?
ঃআপনার তো সবেই হয়েছে, শুধু বজ্রপাতটা বাকি। এটাই বা বাদ থাকবে কেন?? বজ্রপাতও হয়ে যাক। এইরাম কিছু ডাক্তার আছে যারা বিশেষজ্ঞ নন বলেই ডাক্তারি কিছু জানেন। যাদের ওষধ খেলে রোগ সারে। তবে নৈবেদ্যর ওপর সন্দেশের মতো প্রেসক্রিপশনেরর স্ঙ্গে কিছু কঠিন কথাবার্তা বলেন। রোগীরা তা সহ্য করে নেয়। গ্রাম্য প্রবচন আছে না--যে গরু দুধ দেয়...।।
এরাম একটা ডাক্তারের কাছেই প্রথম শুনলাম যে বদহজমে যে সমস্থ লক্ষন দেখা যায়, অবিকল একই লক্ষন দেখা যায় প্রেমে পড়লে। বুক জ্বালা,অস্বস্তি, মাথা ঘোরা, রক্তচাপ বুদ্ধি, পিপাসা বোধ এবং অনিদ্রা। তার মতে প্রেম এবং বদহজম এ দুটি আসলে একই জিনিস। এক বৃন্তে দুটি ফুল। এবং তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, বদহজমের ওষধ দিয়ে প্রেমরোগ সারানো যায়। আমি বললাম আপনে প্রেমকে তাহলে রোগ হিসাবে দেখছেন?? ডাক্তার বললেন রোগকে রোগ হিসেবে দেখবো না? প্রেম হচ্ছে একটা ভাইরাস-গঠিত ব্যাধি। সায়েন্স আরও ডেভেলপ করলে প্রের ভাইরাস আবিষ্কার হবে। ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমরা কিছুই করতে পারিনা, যা করি তা হচ্ছে সিমটোমেটিক চিকিৎসা। প্রেমের ক্ষেত্রেও তাই। সিমটোমেটিক চিকিৎসা করবেন, রোগ সারবে। রোগের দৃষ্টিকোনঃ
১। বারো বছর থেকে নব্বই বছর পর্যন্ত যেকোন সময়ে এই রোগের সংক্রমণ হতে পারে। বৃদ্ধ বয়সে এই রোগ সাধারণত জটিল আকার ধারণ করে।
২। বয়ঃসন্ধিকালে এই রোগেরর বেশ কয়েকটি সংক্রমণ হতে পারে। তবে আশার কথা রোগ কখনো গুরুতর আকার ধারণ করে না।
৩। এই রোগ পুরুষেদের যতটা কাবু করে, মেয়েদের ততটা কাবু করতে পারেনা। মেয়েরা এই রোগে আক্রান্ত হলেও তাদের মধ্যে রোগ লক্ষন কদাচচ প্রকাশ পায়।
৪। বিবাহ নামক সামাজিক প্রথা এই রোগে ভ্যাকসিনের কাজ করে। বিবাহিত নর-নারীর খুব অল্পসংখ্যকই এই রোগে আক্রান্ত হন, তবে আক্রান্ত রোগ অতি দ্রুত জটিল আকার ধারণ করে।
/
/
ক শ্রেণী বা বিশ্বপ্রেমিক শ্রেণীঃ
এই শ্রেণীর পুরুষ মহিলা দেখামাত্র প্রেমে পড়ে যাবে। তৎক্ষণাৎ কঠিন ডিসপেপসিয়ার সমুদয় লক্ষণ প্রকাশ পাবে। ব্ল্যাড প্রেসার বৃদ্ধি পাবে, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিম্নগামী হবে। শ্বাস কষ্ট হবে। কবিতা রচনা করলে মনের কিঞ্চিৎ আরাম হবে। প্রেমিকের কাছে দীর্ঘ পত্র রচনা করলেও ব্যধির প্রকোপ খানিকটা কমে।প্রেমিকার একগুচ্ছ চুল সঙ্গে রাখলে খুব ভালোফল পাওয়া যায়। রক্তচাপ কমানোর ওষধ খাওয়ানো যেতে পারে।
খ শেণী বা অনুকরন শ্রেণীঃ
শরতচন্দ্রের দেবদেসের সঙ্গে এই শ্রেণীর বড় রকমের মিল দেখা যায়। মিলের মূল কারন অনূকরণ প্রবণতা। এদের মধ্যে প্রেম লক্ষন প্রকাশ পেলেই উপন্যাস অথবা সিনেমার প্রেমিক চরিত্রের
অনুকরনে সচেষ্ট হয়। ছাত্র হলে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। কেউ কেউ লম্বা চুল দাড়ি রাখে। এদের কিছু অংশ পরবর্তী সময়ে গাঁজা ও পেথেড্রিন জাতীয় নেশায় আসক্ত হয়। এই রোগের সেমটোমেটিক চিকিৎসা খুবেই ফলদায়ী। কোন কোন ক্ষেত্রে অবশ্যি "প্রহার" খুবেই চমৎকার কাজ করে।

গ শ্রেণী বা বিপরীত শ্রেণীঃ
প্রেমে পড়লে এই শ্রেণীর মধ্য বিপরীত লিঙ্গের স্বভাব প্রকাশ প্রায়। পুরুষ মহিলারদের মতো আচরন করে। লজ্জা, ব্রীড়া এসব দেখা যায়। এই শ্রেণীর মধ্যে প্রেমে পড়া কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্ত লক্ষন প্রকাশিত হয়। মিল্ক অব মেগনেশিয়া এদের জন্য খুব উপযোগী। বিবাহ নামক সামাজিক প্রথা এদের জন্য ম্যাজিকের মতো কাজ করে। বিবাহিত পুরুষ কখনো এই রোগের কবলে পড়ে না।

ঘ শ্রেণী বা বেকুব শ্রেণীঃ
এরা নিজেরা কারো প্রেমে পড়ে না, তবে অন্যরা তাদের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে বলে ধারনা পোষন করে। এই রোগের কোন চিকিৎসা নেই। বিবাহের পরে এই রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।
(এলেবেলে, হুমায়ূন আহমেদ)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৪৩
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×