বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
বিগত দেড় দুই বছর ধরে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নারী মুক্তির ফিরিস্তি দেখতে দেখতে আমি ক্লান্ত। নারীদের এই করতে হবে, সেই করতে হবে, নারী নির্যাতন, নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর এগিয়ে চলা, নারীর জয়গান শব্দগুলো এখন অনেক বেশী জনপ্রিয়। খবরের কাগজগুলোতে এই শব্দগুলো ব্যবহার করে আলাদা ফিচারও থাকে নিয়মিত। আমাদের মায়েরা, আমাদের স্ত্রীরা, আমাদের বোনেরা সেভাবেই বাঁচতে শিখে, সেভাবেই নিজেদের গড়তে চায়, সেভাবেই জীবন সাজাতে চায়, সেভাবেই জীবনে সাফল্যের অর্থ খুঁজে!
অর্থহীন জীবনের স্বপ্ন দেখার আগে, বাঁচার নামে সব হারানোর আগে, বন্দীত্ব থেকে মুক্তির নামে স্বাধীনতা নামের মরীচিকার শিকল পরার আগে dear Muslim sisters, আমি আপনাদের একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে, আপনাদের প্রতি আমার কিছু কথা বলতে চাই ...
হেফাজতের ১৩ দফার একটি দফা ছিল আধুনিকতা আর ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে নারী পুরুষ অবাধ মেলামেশা বন্ধ করতে হবে! (সুবাহানাল্লাহ!)
সে দাবীর পর সুশীল সমাজের মাথা আউলা হয়ে গেল। নারীকে ঘরে বন্দী করে রাখার পায়তারা, নারীকে পিছিয়ে দেওয়ার পায়তারা, ইসলাম নারীকে ঘরের কোণে আটকে রেখেছে, ইসলাম মধ্যযুগীয় ইত্যাদি হাজারটা অভিযোগে সরগরম পত্রিকার কলাম, টিভি টকশো আর মুখে খই ফুটেছে শাহরিয়ার কবির, রোকেয়া প্রাচী, জাফর ইকবাল, আসিফ নজরুলদের মত সেক্যুলার সুশীলদের! আর তাঁদের সেক্যুলার কথনের আস্ফালন দেখে দুইপাতা পড়া আমাদের শিক্ষিত নারীসমাজ মাঠে নেমে এল। (আউজুবিল্লাহ)
আমি এমন এমন বোনদেরকে এসব নর্দমার কিটদের সাথে তাল মিলাতে দেখেছি যে খুব হতাশ লেগেছিল। চুপ করেই ছিলাম। কিন্তু তার পরের বিষয়গুলো দিন দিন সহ্যসীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। Now it's time to make you realized who you are.…
সম্মান বিষয়টা আপেক্ষিক। কিন্তু আত্মসম্মান, আত্মমর্যাদা বিষয়গুলো আপেক্ষিক নয়। এগুলো মানুষের ভেতর by born থাকে। মানুষ যখন সম্মানের বিষয়গুলো আপেক্ষিকতার কাছে ছেড়ে দিয়ে সেক্যুলার সমাজের নষ্ট মানুষগুলোর দেখিয়ে দেওয়া সম্মানের সংজ্ঞায় সম্মান খুঁজে তখন মানুষের সেই by born আত্মসম্মান আর আত্মমর্যাদার ব্যপারগুলতেও আপেক্ষিকতা চলে আসে। আপেক্ষিকতা চলে আসে বলেই একই রক্ত মাংসের একজন নারীর কাছে তার হিজাব তার আত্মসম্মান, ইজ্জতের রক্ষক, আবার অন্য একজন নারীর কাছে সেই হিজাব বন্দীত্বের প্রতীক। আপেক্ষিক বলেই একজন নারীর কাছে পরপুরুষের সামনে না যাওয়া, কথা না বলা, বিবাহের পূর্বে বয়ফ্রেন্ডের না বানানো, বন্ধু আড্ডা গানে হারিয়ে না যাওয়া এসব যখন একটা আদর্শ,
তখন অন্য একজন নারীর কাছে সেগুলোই গোঁড়ামি, আনস্মার্টনেস! তার কাছে এগুলো করাটাই আধুনিকতা, এগুলো করাটাই স্মার্টনেস, এগুলো করাটাই জীবন!
একটু ভালভাবে খেয়াল করুন- By born থাকা আত্মসম্মানও তখন আপেক্ষিক হয়ে যায়। একজনের কাছে for the sake of ALLAH , অন্যজনের কাছে for the sake of shaitan ...
একজন মুসলিমাহ হিজাবকে দেখে নিজের সম্মানের রক্ষক হিসেবে, যৌবনের তাড়নায় নারীর শরীর থেকে শরীরে চোখের বিচরণ করে বেড়ানো পরপুরুষের দৃষ্টির ঢাল হিসেবে। একজন মুসলিমার কাছে হিজাব জাফর ইকবালের ভাষায় বন্দীত্ব নয়, রোকেয়া প্রাচীর মত ইসলামের লিঙ্গ বৈষম্য নয়, বর্বরতা নয়। কেন নয় সেটা যুক্তির চেয়ে অনেক বেশী আবেগের প্রশ্ন। অনেক বেশী উপলব্ধির প্রশ্ন।
আপনি কি আমাকে বলতে পারবেন সঠিকভাবে হিজাব করা, মাহরাম নন মাহরাম মেনে চলা, ইসলাম নারীর যে বাধ্যবাধকতা দিয়েছে সেসব মেনে চলা কয়টা জঙ্গি মেয়েকে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে?
কয়টা ক্ষ্যাত মেয়েকে রাস্তায় টিজ করা হয়েছে?
কয়টা?
পক্ষান্তরে হিজাব ছেড়ে শিলা-মুন্নি-চাম্মাক চালো, ধূতি কাটিং কপচানো মেয়েগুলোই রাস্তায় বাজে মন্তব্যের শিকার হয়,
বন্ধু আড্ডা গান আর ভাবালুতায় মিশে যাওয়া আধুনিকা মেয়েগুলোই ধর্ষিত হয়।
ইসলাম নারীকে যে সম্মানে সম্মানিত করেছে সেটাকে প্রত্যাখ্যান করে সেক্যুলার কিটদের শিখিয়ে দেওয়া আধুনিকতার শিল্পকলার মধ্যেই বোন তোর অস্মমান। এই আধুনিকতাই তোকে লজ্জিত করেছে, এই আধুনিকতাই তোর শরীর নিয়ে খেলছে, তোকে পণ্য বানিয়েছে! শেষ পর্যন্ত তোকে তাঁদের মত নর্দমার কিট বানিয়ে তবেই ক্ষান্ত দেবে।
নারীবাদী সুশীল নর্দমার কিটগুলো সুযোগ পেলেই বলতে ভুল করে না ইসলাম নারীকে ঘরের কোণে আটকে রেখেছে। কিন্তু নারীকে তারা ঘরের বাইরে এনে কি সম্মান উদ্ধার করেছে বলবেন কি?? কর্পোরেট জীবনের স্বপ্ন, জীবনে বড় হওয়া, পুরুষ এটা করলে আমরা কেন এটা করব না এই তো?? মিডিয়া ক্যারিয়ার, নাটক, সিনেমা, মডেলিং এই তো সাফল্য?? এই সাফল্যের পেছনে তোকে ছুটতে বাধ্য করে নর্দমার কিটগুলো তোর আব্রু কেড়ে নিয়েছে, তোর মূল্যবোধ নৈতিকতা কেড়ে নিয়েছে। তোকে শিখিয়েছে এই সাফল্যের পেছনে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আত্মসম্মান সর্বস্ব তোর শরীরটা তুলে দিতে হবে সমাজের হায়েনাদের কাছে। বিনিময়ে পাবি ক্যামেরার সামনে পোজ দেওয়ার সুযোগ, পত্রিকায় একটা সাক্ষাৎকার দেওয়ার সুযোগ, মানুষের ঘরে ঘরে টিভি স্ক্রিনে শরীর দেখানোর সুযোগ।
ভাবতে অবাক লাগে বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীদের পোশাক বিকিনি আর প্যানটি! বলতে খুবই অস্বস্তি লাগছে বিষয়টা এমন যে আপাদমস্তক শরীরের প্রতিটা লোমকূপ উন্মুক্ত করার মাঝেই নারীর সৌন্দর্য? সামনে বসে থাকা বিচারকদের কামনার প্রবৃত্তি তৈরি করার মাঝেই প্রতিভার বিস্ফোরণ।? আর এখান থেকেই যথার্থ স্বীকৃতি?? শরীর ঢাকার হিজাব যদি বন্দিত্বের প্রতীক হয়ে নগ্ন হওয়াটাই মর্যাদার মাপকাটি হয় তাহলে বনের পশুগুলোই তো সবচেয়ে মর্যাদাবান, সবচেয়ে সভ্য! তুই আশরাফুল মাখলুখাত বোন, অনেক মর্যাদার! কেন নিজেকে এত সস্তা বানাস? কেন?
তোর সম্মান লাগবে?? কতো সম্মান লাগবে তোর? রাসুল (সঃ) পুরুষের আকর্ষণীয় শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলেছেন কাকে??
দামি গাড়ি?,
বিলাস বহুল বাড়ী?
কোহিনূর হীরা?
না রে বোন! তার একটিও নয়।
তিনি পুরুষের আকর্ষণীয় শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলেছেন নেক স্ত্রীকে!
‘আবদুল্লাহইবনে আ’মর (রাযি.) বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ পৃথিবীর সবকিছুই ভোগ ও ব্যবহারেরসামগ্রী। আর সবচেয়ে উত্তম ও উৎকৃষ্ট সামগ্রী হচ্ছে দ্বীনদার সচ্চরিতরা স্ত্রী।(মুসলিম, মিশকাত- হা/৩০৮৩, নিকাহ অধ্যায়)
রাসুল (সঃ) বলেছেন কারো যদি একটি বা দুটি মেয়ে থাকে সে যদি তাঁদের সুন্দরভাবে বড় করে তাঁদের সুপাত্রস্থ করে তাহলে সেটা তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। (সুবাহানাল্লাহ)
নারীর প্রতি দায়িত্বপালনও পিতামাতার জান্নাতের দরোজা।
মসুলিম নারীর ইজ্জত বাঁচাতে গিয়ে মারা গেলে আল্লাহ্ তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। একজন মুসলিমাহ কারো শহীদ হয়ে জান্নাতে যাওয়ারও দরোজা।
একজন নারী তার সন্তানের জন্য তার মা হয়ে তার জান্নাতে যাওয়ার দরজা হওয়ার সম্মানে ভূষিত হয়!
চিন্তা করা যায়! জান্নাত একটা নারীর পায়ের নিচে থাকে। কোন পুরুষকে আল্লাহ্ এতটা সম্মানিত করেন নি।
ঐ কিট সুশীলরা বলে- ইসলামে নাকি নারীর অধিকার নাই?
সেদিন এক সৌদি পুরুষকে ৩০ টি বেত্রাঘাত এবং ১০ দিন জেল দেওয়া হয়েছে তার স্ত্রীকে শুধুমাত্র একটি চড় মারার অপরাধে।
নিউজ লিংকঃ Click This Link
ইসলামী খিলাফতের স্বর্ণযুগে গভীর রাতেও একজন তরুণী একাকি রাস্তায় হেঁটে গেলেও তার মনে আল্লাহ্র ভয় আর পশুপাখির ভয় ছাড়া অন্য কোন পুরুষের আশঙ্কা ছিল না। আর কতো সম্মান চাই তোর? আর কতো নিরাপত্তা চাই তোর? আর কতো? ইসলাম নারীকে অধিকার দিয়েছে সে শিক্ষা অর্জন করবে, সম্পদ উপার্জন করবে, সম্পদের মালিক হবে, বেচা কেনা করবে, উত্তরাধিকার হবে, বিবাহের প্রস্তাব দানকারী পুরুষকে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে। কিন্তু এসব করতে গিয়ে নারী আত্মসম্মান বিসর্জন দেবে না, শরীর সওদা করে বেড়াবে না। এসব করতে গিয়ে নারীকে এঞ্জলিনা জলি, ক্যাটরিনা কাইফ হতে হবেনা। রুবাবা দউলা মতিন, কানিজ আলমাজ খান হতে হবেনা। এসব করার জন্য হট, সেক্সি, সেক্সসিম্বল হতে হবেনা। সবার আগে একজন আদর্শ নারী হতে হবে বোন। একজন মুসলিমাহ হতে হবে। নিজের সম্মান নিজেকে বুঝতে শিখতে হবে। আল্লাহ্কে ভয় করতে জানতে হবে। ব্যাস এতটুকুই ...
কাশমিরের এক মহিলা ব্যান্ড আছে ‘প্রাগাস’ নামে। যার মেম্বাররা ডিজিটাল হিজাবি মুসলিমাহ। কাশমিরের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা এইধরনের ব্যান্ডকে নিষিদ্ধ ফতওয়া দেওয়ার পর নারীবাদীরা আন্দোলনের ঢেউ তোলে। তবে সেক্যুলার আদর্শের কাছে আমার বোনদের মানসিক পরাজয়ের সাম্প্রতিক উদাহরণটা আরব আমিররাতের মহিলা ব্যান্ড দলের কমপ্লিট হিজাবি মেয়েদের সাম্যতা খোঁজার চেষ্টা!! সেক্যুলার সমাজের নারী পুরুষ সমান থিউরি আর ইসলামের থিউরি ভিন্ন। ইসলাম অধিকারের সাম্যতার কথা বলে, আত্মার প্রশান্তির সাম্যতার কথা বলে, নারী পুরুষ নিজ নিজ অবস্থানে নিজেদের দায়িত্বের কথা বলে। সেকুলারদের মত “ছেলেরা রাস্তা ঘাটে বাথরুম সারতে পারলে মেয়েরা কেন পারবে না” এধরনের অসুস্থ এবং কুৎসিত সমঅধিকারের কথা ইসলাম বলে না। এটা একজন মানুষের নৈতিক সমর্থনও নয়। কিন্তু সেক্যুলার সমাজ আমাদের নারীদের আজ সেই শিক্ষাই দিচ্ছে যেখানে আত্মিক সাম্যতার চেয়ে ফিজিক্যাল সাম্যতার নষ্টামি খোঁজা হয়। সেকুলাররা আসলে চায় নারীর দেহ। অন্য কিছু নয়। যদি সব নারী ইসলাম পালন করা শুরু করে তবে তো সেকুলাররা আর নারীর দেহ উপভোগ করতে পারবে না তাই তারা সবসময় নারীর পর্দার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তারা নারীদেরকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বোঝানোর চেষ্টা করে যে পর্দা তোমাদেরকে বন্দী করে রাখবে। ফলে তারা সাম্যতার কথা বলে। আর এই সাম্যতার খোঁজে আমাদের বোনেরা মাথায় ত্যানা পেঁচিয়ে ফুটবল মাঠে দৌড়াদৌড়ি করে। হিজাব করে গিটার ড্রামস বাজিয়ে ব্যান্ড তৈরি করে নারী পুরুষের সাম্যতা খুঁজে। অধিকারের সাম্যতা রক্ষায় সমকামি বিয়ের বৈধতা খুঁজে। “ফেসবুকে ছেলেরা নিজেদের ছবি দিতে পারলে আমরা কেন সাজুগুজু ছবি দিতে পারব না’ এমন কথাও শুনেছি আমাদের ডিজিটাল দ্বীনি বোনদের কাছে। সেক্যুলার কৌশলের কাছে কি সুন্দরভাবে আমাদের মুসলিম বোনদের পরাজয় হল! কি অদ্ভুত মুসলিম বোনদের জীবনের অর্থ, উদ্দেশ্য আর জীবনাদর্শ!
আমরা কল্পনাও করতে পারবোনা আমাদের জীবনটা কত ক্ষুদ্র। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে জীবনের অনেক ধাপ পরিবর্তন হয়ে যায়। আজ থেকে কয়েক বছর আগেও আমি ভাবিনি একদিন আমি এরকম একটা লেখা লিখব। আদর্শ অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল একটা ব্যাপার। আর আদর্শের বাছাইয়ে যে মানুষ হেরেছে সে তার জীবনটাই হারিয়েছে। আমার বোনদের তাই নিজের সততার কাছে একবার প্রশ্ন ছুড়া উচিত আপনি আসলে কি করতে যাচ্ছেন! আপনার আসলে কি করা উচিত? কাকে দেখে আপনি জীবনের অর্থ খুঁজছেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা খুবই জরুরী পৃথিবীর বুকে শেষ নিশ্বাস থাকার আগে।
ইয়া বড় লাল টিপ কপালে গেঁথে, লাল নীল শাড়ি, খোপায় ফুল গোঁজে টিএসসি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সুখ সুখ ভাবের জীবন খোঁজা ঐ যে মেয়েটি, সে মনে করে এটাই জীবন! অন্ধকার রাতের সাজগোজ করে কিছু অর্থের বিনিময় মুল্যে অমুল্য সম্ব্রম সওদা করে বেড়ানো প্রমোদ বালিকাটিও মনে করে এটাই জীবন। ক্যামেরার আলোকোজ্জ্বল শাটারে দেহ সাজিয়ে, একটা ছবি, দুইটা নাটকে অভিনয়ে সাফল্যের(!!) তিলক মাথায় এঁকে রঙ্গিন পর্দার আড়ালে জীবন খোঁজা আধুনিকা ললনার কাছেও এটাই জীবন। নিজের সন্তানকে রহিমা বুয়ার হাতে তুলে দিয়ে নয়টা থেকে পাঁচটা একটা অফিসে সফল ক্যারিয়ারের পেছনে ছুটে চলা আমাদের ব্যস্ত মায়েদের কাছে এতটুকুই জীবনের অর্থ! একটা বয়ফ্রেন্ড, একটা দামি মোবাইলের হেডফোন কানে, চুইঙ্গাম চিবোতে চিবোতে বন্ধু আড্ডা গানে ঘরে ফেরা স্কুল ড্রেস পরিহিতা মেয়েটির কাছে এতটুকুই জীবনের অর্থ!
আমি আপনাকে, হ্যা, আপনাকে, আপনি আমার মুসলিম বোন, আপনাকে আমি আজ জীবনের খুব সহজ একটা অর্থ শিখিয়ে দিতে চাই। অনন্ত জান্নাতের সবকটা দরজার চাবি আপনাকে দিয়ে দিতে চাই।
আব্দুর রহমান ইবন আউফ (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেছেন, “মুসলিম নারী যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, রামাদানের সাওম পালন করে, নিজের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, এবং স্বামীর আনুগত্য করে তবে তাকে বলা হবে জান্নাতের যে কোন দরোজা দিয়ে ইচ্ছে তুমি ভিতরে প্রবেশ কর”। [মুসনাদে আহমদ, ইবনে হিব্বান]
জি! এতটুকুই তো! খুব বেশী কিছু নয়। খুব জটিল কিছু নয়।
আখিরাতে তোর জীবনটা সহজ করা এই দুনিয়াতেই অনেক সহজরে বোন। তুই নিজেই জীবনটা কঠিন করছিস দিনের পর দিন। সমাজ থেকে জীবনের পাঠ নিচ্ছিস। সেক্যুলার কিটদের জীবনের আদর্শ বানাচ্ছিস।
ইসলামে সবচেয়ে সম্মানিত চার নারীর কথা বলে আমার কথা শেষ করব। সেই চারজন নারী হলেন:
১। হযরত খাদিজা (রাঃ)
২।হযরত ফাতিমা (রাঃ)
৩। হযরত আছিয়া (রাঃ)
৪।হযরত মারিয়াম (আঃ)
আসুন খুব ভালোভাবে এদের খেয়াল করি। হযরত খাদিজা (রাঃ) এই মহিলা সারাজীবন রাসুল (সঃ) এর পাশে ছিলেন তার সঙ্গিনী হিসেবে। তার সবকিছু দ্বীনের জন্য কুরবান করেছিলেন স্বামীর হাতে দিয়ে। আমাদের এই মা রাসুল (সঃ) এর এততাই প্রিয় ছিলেন তার মৃত্যুতে তিনি খুবই ভেঙ্গে পড়েন। এমনকি মাঝে মাঝে রাতে তিনি স্ত্রীর কবরের কাছে গিয়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদতেন। (সুবাহানাল্লাহ), এমন স্ত্রী পেলে কে না কাদবে? হযরত খাদিজা (রাঃ) ছিলেন একজন অসাধারণ স্ত্রী এবং মা।
একইভাবে হযরত ফাতিমা (রাঃ) ছিলেন হযরত আলী (রাঃ) এর প্রিয়তমা স্ত্রী এবং হাসান হোসেন (রাঃ) এর সুযোগ্য মা।
হযরত মারিয়াম (আঃ) ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে সতী নারী এবং হযরত ঈসা (আঃ) এর মা।
আর হযরত আছিয়া ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ তাগুত-কাফের ফেরাউনের স্ত্রী, যিনি জঘন্য এক স্বামীর স্ত্রী হয়েও আল্লাহ্র পথে ছিলেন এবং হযরত মুসা (আঃ) কে লালল পালন করেন।
এই চার মহিলাকে ইসলামে সবচেয়ে সম্মানিত করা হয়েছে কিসের মানদণ্ডে?
এরা সবাই ছিলেন একেক জন ভালো মা, ভালো স্ত্রী। আল্লাহ্ সুবানাহুতায়ালা একজন নারীর সম্মান নির্ধারণ করেছেন এই দুইটি জায়গায়---মাতৃত্বে আর স্ত্রীত্বে!
মহান আল্লাহ বলেনঃ
"নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ, মুসলিম নারী, ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ, অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ, সত্যবাদী নারী, ধৈর্য্যশীল পুরুষ, ধৈর্য্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ, বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ, দানশীল নারী, রোযা পালণকারী পুরুষ, রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ, , যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী নারী, আল্লাহর অধিক যিকরকারী পুরুষ ও যিকরকারী নারী-তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার। (সুরা আহযাবঃ ৩৫)
আমার বোনেরা এখানেই সম্মান খুঁজে নিন, এখানেই জীবনের অর্থ খুঁজে নিন, এখানেই বাঁচতে শিখুন। আল্লাহ্র কসম করে বলছি আল্লাহ্ সুবানাহুতায়ালা ইসলামের মাধ্যমে নারীর যে সম্মান নির্ধারণ করেছেন এর বাইরে গিয়ে কেউ কোনদিন সম্মান পেতে পারেনা, পারেনা, পারেনা।
এর বাইরে গিয়ে শান্তি পেতে পারেনা, পারেনা, পারেনা,। আপনাদের সামনে রয়েছে রাহা, জিয়া খানদের দৃষ্টান্ত। অর্থ, খ্যাতি আর গ্ল্যামারের পিছনেই যদি শান্তি থাকত তবে তারা কেন আত্মহত্যা করল?
সত্য কথা বলতে এর মধ্যে লজ্জা, অসম্মান আর জীবনবোধের ক্ষয় ছাড়া আর কিছুই নেই। অতএব ইসলাম নিয়ে বাঁচতে শিখুন, কোনদিন অপমানিত হবেন না, আপনার আত্মার মৃত্যু হবে না, সেক্যুলার আস্তাকুঁড়ে নিজের আত্মার মৃত্যু ঘটিয়ে অন্যদের সামনে বাঁচার ভান করতে হবে না।