-খুব তো উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছো দাদা। তো সব খবর ভালো তো?
- আরে ভায়া উড়বো নাতে কি আর করবো? এখন তো উড়াউড়ির সময়। বুঝলে না, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।
-দেখো আবার গোলাগুলির মধ্যে পড়ে যেও না বেঘোরে প্রাণটাই হারাবে।
-নগদ যা পাও হাত পেতে নাও এই নীতিতে বিশ্বাসী আমি। একটু তো ঝুঁকি থাকবেই ।যায় যাক প্রাণ হা হা হা।
- তো কামাই রোজগার বেশ ভালো হচ্ছে মনে হয়? বেশ ভালো তো?
-আর বলো না যেখানে যাই নানা প্রতিবন্ধকতা,কম ঝক্কি ঝামেলা সামলাতে হয় না। কদিন বাজার বেশ ভালো গিয়েছিল মনের আনন্দে কয়েকটাকে তো লুটে পুটে খেলাম ইচ্ছে মতো। এখন অবশ্য সবকিছুতে ভীষণ কড়া কড়ি। আগের দিন আর নেই চারিদিকে কামান দেগে বংশ নির্বংশ করার অভিযান চলছে। কি আর করা। ভাবছি পেশা পাল্টাবো।না হয় ডুব দেবো কদিনের জন্য। তারপর দেখি কি হয়।
-ডুব দিলে কিভাবে চলবে? কি খাবে ? সঞ্চয় আছে কিছু? স্ট্যাটাস মেইনটেইন করতে পারবে তো?
-তাই তো ভাবছি। মুশকিল হয়ে গেল ভায়া।এমন পরিস্থিতি হবে আগে ভাবিনি। কি যে দিনকাল এল!
-চল আমাদের উগান্ডার অন্যতম ক্ষমতাধরের বাড়িতে অভিযান চালাই। কি যেন নাম ও হ্যাঁ মনে পড়েছে ডুগডুগি রহমান,ওর বাসায় যাই। প্রতি দিন তো টিভিতে দেখছি।বেশ নাদুস নুদুস চেহারাখানি হয়েছে। বক্তব্য ও রাখছে বেশ ভালোই ।দেখলে মনে হয় বয়সটা কমে একেবারে ইয়াং হয়ে গেছে। একেবারে গুলুবুবু।
-ঢুকতে দেবে না। ঢুকতে দেবে না। ওখান কার সিকিউরিটি গার্ড খুব কড়া।
- লাইন আছে লাইন আছে।ম্যানেজ করা যাবে।তারপর সুযোগ বুঝে জায়গা মতো একটা পুশ । ব্যাস কেল্লা ফতে। আরে খেতে হলে রাজকীয় খাবারই খেতে হয় জানো তো। আহ! যেমন গন্ধ তেমন স্বাদ। আমাদের তো এইটুকুই জীবন। এইটুকুতেই সুখ।কি বল ভায়া?
-লাভ কি এত ঝুঁকি নিয়ে?আবার বিপদ না বেড়ে যায়।সীমা অতিক্রম করলে সমস্যা আছে।
-আরে না! কি যে বলো না বলো, আমায় ধরে সে সাধ্য কার।
তাহলে চল তাড়াতাড়ি চল অনেকক্ষণ না খাওয়া বেজায় খিদে পেয়েছে আমার।
-দাড়াও দাড়াও এখন না। সময় হয়নি এখনও ব্যস্ত হও কেন? এখন এত আলোতে পথ ঘাট ভালো দেখা যাবে না। শেষে সবটা মাটি হয়ে যাবে ।সন্ধ্যাটা আগে নামতে দাও। অন্ধকার একটু গাঢ় হোক তারপর আমরাও টুক করে ঢুকে যাবো ফাঁক ফোঁকড় গলে। সমস্যা বিশেষ হবে না।
অবশেষে বিশেষ কসরত করে সুযোগ মত তারা দুজন ঢুকে গেল উগান্ডার ফুটানি মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী ডুগডুগি রহমানের সুসজ্জিত বাসায়। ......
এ ঘর ও ঘর মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াল ওরা। খুব একটা প্রটেকশন নেই কোথাও। মন্ত্রী মশাইয়ের ছোট ছেলেটা দেখতে বেশ নাদুস নুদুস। আরামে ঘুমাচ্ছে সে। পছন্দ হয়ে গেল আগন্তকদের।
সত্যি এরকম নাদুসনুদুস দেহ দেখে লোভ সামলানো মুশকিল ! বড় মশাটি আর দেরি না করে দিল টুক করে হুল ফুটিয়ে। তার দেখা দেখি অন্যটিও।
আহ! সেকি স্বাদ! চুমুকেই তৃপ্তি। চো চো করে রক্ত টানতে লাগলো তারা মনের আনন্দে।
কিন্তু ইহা উগান্ডার মন্ত্রী সভার বিশেষ মন্ত্রীর বাসা।যে সে জায়গা নয়। নিরাপত্তা প্রহরীরা অচিরেই আক্রমণকারীদের সন্ধান পেয়ে গেল।
ঠাস!
একটা শব্দ মাত্র। নিমেষে ভবলীলা সাঙ্গ হল মশা দুটির।
বেচারা!!! সব জায়গায় কি আর পাকামো খাটে?
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৯:১৪