হাই ভিউয়ারস,
সবাইকে মৃত্যু পরবর্তী জীবন থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।অবাক হচ্ছো নিশ্চয়! ভাবছো আমি তোমাদের সাথে ফান করছি। আরে না,আমি মোটেও তোমাদের সাথে ফান করছি না। সব জিনিস নিয়ে কি ফান করা যায়, না ফান করা উচিত ? আসলে আমি সত্যি সত্যি নরক থেকে মানে নরকের দরজা থেকে ইউটিউবার নূপুর বলছি।তোমরা নিশ্চয় অবাক হচ্ছো? এটা কিভাবে সম্ভব? আর আমিই বা এখানে কিভাবে পৌছালাম? গাঞ্জা টাঞ্জা খাইছি না-কি? ওয়েট ওয়েট ভিউয়ার, সব তোমাদের এক্সপ্লেইন করব, শুধু একটু ধৈর্য ধরো।
আমি বলতে চাই আজ অবশ্যই তোমাদের জন্য বিশেষ একটা দিন। সৌভাগ্যও বটে তোমাদের আর আমার জন্য যদিও দূর্ভাগ্যের। ইউ আর জাস্ট নট ইমাজিন আমার সাথে কি কে হতে চলেছে। আচ্ছা এক কাজ কর তোমাদের গেসগুলো কমেন্ট সেকশনে লিখে সেন্ড করো। আজকে আমার সাথে যা হয় হোক আমি তোমাদের নরকের পরিবেশটা দেখাতে পারবো এটাও বা কম কিসের? সত্যি কথা বলতে কি এমন জঘন্য পরিবেশ আমি পৃথিবীর জীবনে কোনদিন দেখিনি।সেই আলোকে বলবো এখানকার পরিবেশ তোমরা নিজের চক্ষে না দেখলে কোনদিন কক্ষনো অনুমান করতে পারবে না তবু তোমাদের গেস চালিয়ে যাও।অল দ্য বেস্ট।
যা বলছিলাম ।চারদিকে এমন ভয়াল ভয়ংকর অবস্থা যা তোমরা কোনদিন পৃথিবীর ভৌতিক গল্প বা সিনেমায় দেখো নি। এক কথায় ট্রিমেনডিয়াস।আমি তো ভীষণ ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে আছি। জানি না আমার সাথে কি কি হতে চলেছে। আসলে আমি এখনও শাস্তির আওতায় আসি নি।এখন পর্যন্ত আমি ভালো আছি মানে যেটুকু থাকা যায় আর কি।।নরকের প্রহরীরা আমাকে দরজার বাইরে দাড় করিয়ে রেখেছে।সকাল থেকে দানাপানি কিছুই পড়ে নি পেটে।চারিদিকের পরিবেশ আমাকে অত্যান্ত উদগ্নি করে তুলছে। আমি এখান থেকে যা দেখছি তাতেই আমার খবর হয়ে যাচ্ছে। তাহলে ব্যপারটা বোঝো। একটু আগে জানতে পারলাম রাত্রি দ্বি প্রহরে আমার ব্যপারে সিদ্ধান্ত হবে।প্রথমে যমরাজ উরা ধুরা মং আমার বিচার করবেন তারপর শাস্তির পরিমান নির্ধারণ করবেন। কত নাম্বার গেট দিয়ে আমাকে নরকে পৌঁছে দিবেন আর কি কি শাস্তি আমার জন্য নির্ধারিত তা তখনই জানা যাবে।যদি সম্ভব হয় আমি সাথে সাথে তোমাদের আপডেট করবো। আমি আসলে খানিকটা ভীত জানি না আমার সাথে কি হতে চলেছে। শুধু মাত্র তোমাদের জন্য। তোমাদের ভালোবাসি ইউটিউবকে ভালোবাসি তাই এই রিস্ক টুকু নিচ্ছি।তোমাদের খবর পাঠাচ্ছি। এক্ষেত্রে আমাকে সাহায্য করছে যমরাজে খাস সহকারী উলোট কম্বল। সে আমার সাথেই আছে।তোমাদের কাছে একটাই অনুরোধ আমার এই ভিডিওটা ভাইরাল করতে সহযোগিতা করবে।হাত জোড় করে বলছি।প্লিজ প্লিজ প্লিজ আমার ভিডিওটা ভাইরাল করে দাও।এই নুপুরকে তোমরা রাতারাতি বিখ্যাত করে দাও। তার আগে তোমাদের কিছু কথা বলে নেই আমি হঠাৎ করে এখানে কিভাবে এলাম। আসলে আমার দূর্ভাগ্য। গতকাল তোমাদের জন্য একটা থ্রিলিং ভিডিও বানাতে গিয়ে মাইনকা চিপায় পড়ে গেছি।
এবার আসি আসল ঘটনায়
সময় দুপুর দুইটা। বাসায় আমি আর আমার সহকারী মাইমুনা। মা রান্নাঘরে। ভাই বোনরা সবাই স্কুলে। হঠাৎ মাথায় আইডিয়া এলো।
আত্মহত্যার উপর একটা ফানি টিকটক ভিডিও বানাই।আমার সহকারী মাইমুনা আমাকে উৎসাহিত করলো। আমি ওড়না পেচিয়ে দড়ি বানালাম বারান্দা থেকে টুল আনলাম। ফ্যানের সাথে ওড়না সরি দড়িটাকে পেঁচালাম। তার আগে কিভাবে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে হয় তার কিছু ভিডিও দেখলাম ইউ টিউবে।যেন কোন সমস্যায় না পড়ি। আমি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা জন্য রেড়ি। মা এলে পা দিয়ে টুলটা শুধু সরিয়ে দেবো।মাইমুনা আর মা আমাকে বাঁচাবে।ব্যস ভিডিও ভাইরাল।ক্যামেরা রেডি।এখন শুধু মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষা। আমার বিশ্বাস ওরা কেউ আমার সাথে বেইমানি করবে না। মা আর মাইমুনা কেন জানি আসতে দেরি করছে এদিকে গলার ফাঁসটা বেশ অস্বস্তিকর লাগছে। ঠিক তখনই একটা মাছি পায়ে সুড়সুড়ি দিলো আমি এক পা নড়াতে টুল কাত হয়ে গেল।ব্যাস এরপর যা হবার তাই হলো আমি সত্যি সত্যি ফ্যানের সাথে ঝুলে পড়লাম।
এদিকে মা আর মাইমুনা আসতে আসতে আমার দম আটকে গেল আমি কাটা কই মাছের মত লাফাতে লাগলাম সময়ের সাথে সাথে আমার গলায় ফাঁস আরও শক্ত হয়ে এটে কষে এলো আমি গোঙরাতে লাগলাম।.....
(২)
কয়েকটি উদিগ্ন মুখ আমার মুখের উপর।এরা আবার কারা? তবে কি যমরাজ আমার বিচার কার্য সমাধা করেছেন? আমি কি এখন অনন্ত পথের যাত্রী?
এরা কি সব যমালয়ের প্রহরী? আরে একজনকে তো মায়ের মত দেখতে আমি ধড়ফড়িয়ে উঠে বসতে যেতে সবাই রা রা করে ঠেলে উঠলো।
করো কি করো কি।এই শরীর নিয়ে ওঠার দরকার নেই। তোমার বিশ্রামের প্রয়োজন।
এতক্ষণে বুঝলাম এরা সবাই আমার বাসার লোকজন।
আমি ঘুমের ঘোরে গোঙাচ্ছিলাম বলে এরা সবাই ছুটে এসেছে। সবাই ভেবেছে আমায় বোবায় ধরেছে।কি একটা অবস্থা।
ঈশশ আমি যদি সত্যি সত্যি বিখ্যাত ইউটিউবার হতে পারতাম! সে যে কোন উপায়ে হোক না কেন! স্বপ্নটা যদি সত্যি হতো...
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক