কল্লোল ছেলেটি আজও বাড়ি ফেরেনি
দেখতে দেখতে মাস দুই পার হলো
হাপিত্যেশ করলেও চোখের জল শুকিয়েছে ইতিমধ্যে
ঠোঁটকাটা মানুষেরা আজকাল প্রায় নিখোঁজ হচ্ছে শুনছি।
এ বছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে একটি দৈনিক পত্রিকা
বিষয়ঃ গুম ও খুন!
সংখ্যাটা অনেক! এরা কারা?
এরাও কি কল্লোলের মত প্রতিবাদ মিছিলে গিয়েছিল?
নামের তালিকাটা প্রকাশ করেনি যদিও।
চাপ ছিল হয়তো!
কল্লোলের বাবা প্রতিদিনকার মত আজও বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিতে এলেন।
যথারীতি কেউ তাকে পাত্তাই দিলো না
তবে কেউ দুর ছাই ও বললো না।
জহুরুল সাহেব একবুক আশা নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘোরেন
আজ নিশ্চয় ছেলের একটা না একটা খোঁজ পাবেনই।
হায়!
সন্ধ্যা হলে বাড়ি ফেরেন হতাশা নিয়ে
এ শহরে হতাশাগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
কল্লোলের মা প্রতিদিন ভাত রাঁধেন
আলুভর্তা আর ডাল রাঁধেন
সাথে একটা কোয়েল পাখির ডিমের পোঁচ
ছেলেটা আমিষ ভক্ত ছিল।
যদিও সে প্রতিবাদী হয়ে উঠছিল
তবুও ছেলেটা মানিয়ে নিতে শিখছিল
মুরগির ডিম থেকে কোয়েলের ডিমে ঠেকেছিল মূল্যস্ফীতির চাপ
সকল কিছুর সাথেই মানিয়ে নিতে শিখছিল সে
যেমন শিখে নিয়েছিল বাঁশমতি চালের খুদের ভাত খাওয়া।
এর মধ্যে আর কিছু না, শুধু একটা প্রতিবাদ মিছিলে গিয়েছিল
কে জানতো প্রতিবাদ মিছিলে গেলে আজকাল
বানভাসি স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
কল্লোল গুম হয় নি
কল্লোল হয়তো ভেসে গেছে
মা বাবা ছোট বোন গুম খুনের ঘটনা বিশ্বাস না করলেও
অন্যদের আলোচনায় কিন্তু সে কথাই বারবার উঠে আসে।
এত কিছুর পর মুখ বুজে সবাই সবকিছু সয়
না সয়ে উপায় কি তায়?
এ যে হীরক রাজার দেশ!
এখানে শুধু উপায়হীনরাই রয়!
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক