somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ইসিয়াক
একান্ত ব্যক্তিগত কারণে ব্লগে আর পোস্ট দেওয়া হবে না। আপাতত শুধু ব্লগ পড়বো। বিশেষ করে পুরানো পোস্টগুলো। কোন পোস্টে মন্তব্য করবো না বলে ঠিক করেছি। আমি সামহোয়্যারইন ব্লগে আছি এবং থাকবো। ভালো আছি। ভালো থাকুন সকলে।

কবিতাঃ কেন?

২৬ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক লক্ষ ছাপ্পান্ন হাজার পাঁচশত সত্তর বর্গকিলোমিটারের একটি ভূখণ্ড।
পৃথিবীর বুকে শ্যামল সেই বদ্বীপ জুড়ে জালের মত অসংখ্য নদী।
নদীর মায়া স্পর্শ ছুঁয়ে দিগন্ত বিস্তৃত খোলা মাঠ।
মাঠের ওপারে পললভূমিতে ঘণ পল্লববেষ্টিত বনতল
ফসলের মাঠ
আহা! সবুজের আহ্বান
এখানে আকাশে ওড়ে হাজার রঙের পাখি
গাছে গাছে ফোটে রকমারী ফুল
সেই গাছের মগডালে ডানা শুকায় তৃপ্ত পানকৌড়ি
কাঠবিড়ালি ডেকে চলে একটানা নিস্তব্ধতা ভাঙতে
মন কেমনের সুরে গায় বিরহী ঘুঘু
বক ধ্যান মগ্ন তার শিকারে
মধুলোভে মাতাল ছোটে মৌমাছি
প্রজাপতি উড়ে আর খেলে ছোঁয়াছুয়ি খেলা
শিশির শুকাতেই ঘাসের ডগা ছুঁয়ে আহ্লাদ করে ঘাস ফড়িং
রোদ্রউজ্জ্বল দিনে মেঘ ভেসে চলে অচিনে
রাখাল বাজায় বাঁশি কেটে যায় বেলা।
সবই ঠিক আছে
কিন্তু ...
কিসের একটা অশনি সংকেত
কোথায় যেন অসংগতি।
সন্তপর্ণে ঘণিয়ে আসছে ঘোর
অমানিশার ঘোর।
অশুভ কালো ছায়া অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে ধরছে ক্রমশ
আমার ভাষা সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্য ।
শ্যামল বাংলার পতাকা আজ খামচে ধরে সেই পুরানো শকুনেরা।
ওরা দলবদ্ধ
ওরা সংগঠিত।
তিলোত্তমার সৌন্দর্য এখন ম্লান ধর্মান্ধতার করাল থাবায়।
এ তো বন্দীদশা।
দমবন্ধ প্রহর।
লেগেছে গ্রহন
ওরে বাহে,জাগো জেগে ওঠো আবার লেগেছে গ্রহন!
এ যে পাথর সময়!
চির দুঃখী মা আমার, কপালে বুঝি সুখ স্বস্তি জুটবে না তোর কোনকালেই
আর কত মূল্য দিতে হবে তবে
সেই সে কবে পলাশীর আম্রকাননে স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হলো
এদেশীয় দোসর সামন্ত প্রভু আর কুচক্রী ব্রিটিশদের শাসন শোষণ অত্যাচার মাত্রা ছাড়ালো

কত শত আন্দোলন দানা বেঁধে সফলতা আসে না আর
অধরা থেকে যায় স্বাধীনতা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জটিল আবর্তে আর দেশপ্রেমিক স্বদেশী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ রাজ ছিবড়ে চুষে অবশেষে ছেড়ে যায় এদেশ
ততদিনে শুধু কাঠামোটুকু অবশিষ্ট
তারপরও কিন্তু
এ যে শুধু হাত বদল কোথায় নিজেস্বতা!
কোথায় স্বাধীনতা!
ব্রিটিশ পদলেহী৷ লোভী রাজনৈতিক নেতবৃন্দের হাতে দেশমাতৃকা আবার হয় শৃঙ্খলাবদ্ধ।
চোরে চোরে মাসতুতো ভাইদের লোভের তাড়নায় খন্ডিত হয় দেশ।
কারও কিছু যায় আসে না
যায় আসে সরলমতী আমজনতার
তথাকথিত ভালো মন্দের নিয়ন্তা যখন ধর্ম তখন সুখ স্বস্তি পরাভূত হবে এতে আর আশ্চর্য কি!
ধর্মের আফিমের চেয়ে বড় মাদক আর কি হতে পারে!
তবু মেয়ে রণে চলল
নিভন্ত চুল্লিতে আবার আগুন জ্বলল
বায়ান্ন
ছেষট্টি
উনসত্তর
সত্তর পেরিয়ে
দ্রোহের যজ্ঞে ত্রিশ লক্ষ প্রাণের আহুতির বিনিময়ে
মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এলো কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
এলো ষোলই ডিসেম্বর ১৯৭১
দীর্ঘ নয় মাসের ধ্বংসযজ্ঞে পর এলো স্বাধীনতা
লেখা হলো নতুন ইতিহাস
কিন্তু
অচিরেই জাতির পতাকা খামচে ধরলো সেই পুরানো শকুন
নিয়াজীর অনুসারীরা আবার এককাট্টা
ধর্মের আফিমে বুদ জনগোষ্ঠীর মাথা খেতে সময় লাগে কি কখনও?
একটু৷ একটু করে বিষাক্ত বিষ বাস্প ছড়িয়ে পড়তে পড়তে
আজ আবার বাংলার আকাশে মেঘের ঘণঘটা
সামরিকশাসন
তথাকথিত গণতন্ত্রের সুযোগ কাজে লাগিয়ে
ধর্মীয় আফিমের নেশায় বুদ হলো বাঙালী।
হায়রে সরলমতী
গণতান্ত্রিক ঢালের আড়ালে চলে তালিম
খুব সন্তপর্ণে
নারীকুলকে কালো মোড়কে করা হচ্ছে বস্তাবন্দী
দূরাচারী দূরাত্না পুরুষের দূর্বলতার সুযোগে সহজ শিকার পরিণত হয় বড় অংশের জনগোষ্ঠী
ভয় আতঙ্কে লোভ সব একাকার এখন
খুঁজে ফেরে পাপমুক্তির পথ
চায় পৃথিবীর জীবনে ভোগ বিলাস শেষে অনন্ত স্বর্গ প্রাপ্তি।
এমন সুবর্ণা সুযোগ হাতছাড়া করতে কে আর চায়!
ধর্মগুরুদের বিধান যে বড্ড হৃদয়গ্রাহী
জাতি হিসাবে আমরা কি তবে নির্লজ্জ লোভী?
আফসোস।
সত্যি বলতে কি
সুযোগের অভাবে আমরা সৎ।
সমস্ত অর্জন আজ ব্যর্থতায় পর্যবসিত
দেশমাতৃকা আজ বস্তাবন্দি
তীব্র তাপদাহেও হাত ও পায়ের বন্ধনী খুলবার অনুমতি নেই তার।
হায়!
ধর্মান্ধতার করাল গ্রাসে অন্ধকার নেমে আসছে অন্ধকার
আফিমের নেশায় মত্ত দূর্নীতিগ্রস্ত মানুষ তার
সব পাপ ধুয়ে ফেলতে উদগ্রীব
তাই দানবাক্সে মেলে লক্ষ কোটি টাকা সোনার অলংকার
এ সবই মৃত্যু পরবর্তী জীবনে সেই স্বর্গ লাভের লোভনীয় আকর্ষণ।
হায় সেলুকাস কি বিচিত্র এ দেশ!
এখন সেভাবে স্বাধীনতা উদযাপনে মানা
অধিকাংশ এখন আপোষে বিশ্বাসী।
আপোষ!
আপোষ!!
আপোষ!!!
আপোষ করে আর যাই হোক স্বাধীনতা ধরে রাখা যায় না হে বাঙালী ।
অসাম্প্রদায়িক বাংলা আর গড়া হলো না তোর
কি হবে এত এত উন্নয়ণ?

ক্ষমতার স্বাদ সে বড় মিষ্টি!
কিন্তু এর ফল?

এখন গ্রহনের কাল
এখন দহনের কাল।
জাগো বাহে জাগো।
এত কিছুর পরেও আবার এসেছে পঞ্চাশ উর্ধ্ব ২৬শে মার্চ
বয়সের ভারে নূজ্য কি সে?
বীর বাঙালী কি ভুলতে বসেছে অতীত গৌরব গাঁথা?
দাম দিয়ে কেনা স্বাধীনতা রক্ষার দৃপ্ত শপথের কথা কি ভুলে গেছো বাঙালি?
আজ কেন আমার রক্তে কেনা স্বাধীনতা ধর্মান্ধ জনগোষ্ঠীর সামনে নতজানু ?
কেন????
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৬
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×