somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার পোলাপাইন আমলের কিছু সৃতি। (পাঁচ) ৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১০০তম পোষ্ট।

১২ ই জুলাই, ২০১০ রাত ৩:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজকে আমার ব্লগিং এর ৪ বছর হইলো। B-) আর এটা আমার ১০০তম পোষ্ট। ৪ মাস আগে একরামুল হক শামীম ভাইয়ের ৪বছর পূর্তিতে একটা পোষ্ট দিয়েছিলেন। সেখানে শামীম ভাই বলেছিলো ওনাকে ব্যাচেলর্স অব সায়েন্স ইন ব্লগ (বিএসসি, ব্লগ) গ্র্যাজুয়েশনের একটা সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা। এখন আমিও দেখি সেই সার্টিফিকেটের দাবিদার হয়ে গেলাম। ১০০তম পোষ্টে অনেকেই অনেক বড় বড় পোষ্ট দেন অনেক সৃতিচারন করেন। কিন্তু আমার মত বলদের হাত দিয়ে ঐরকম পোষ্ট লেখা কোন দিন বের হয়নি হবেও না হয়তো কোন দিন। এই ব্লগের সকল ব্লগারদের ধন্যবাদ নিয়মিত সুন্দর সুন্দর পোষ্ট দিয়ে আমাকে নিয়মিত পাঠক করে রাখার জন্য। ব্লগের মডারেটর দের এক ক্ষেত ধনিয়া পাতা আমাকে এই ৪ বছরের মধ্যে একবারও ব্যান বা জেনারেল না করার জন্য। একবার একটু খোঁচা খুঁচি করার জন্য অন্য একটা আইডি করেছিলা। সেটাকে ব্যান করে আমাকে খোঁচা খুঁচি থেকে দুরে রাখার জন্যও ধন্যবাদ :-* এই এতটা সময় ব্লগিং করেও ব্লক হয়েছি মাত্র তিনজন ব্লগারের ব্লগ থেকে। আর ব্লক করেছি মাত্র একজন শিল্পপতি ব্লগারকে ওনার মন্তব্য আমার কোন দরকার নেই বলে।

আমার পোলাপাইন আমলের কিছু সৃতি। (এক) (দুই) (তিন) (চার)

তখন আমি ক্লাস থ্রী বা ফোরে পড়ি বড় আপার বিয়ের কথা বাত্রা চলতেছে, তো এক দিন এক ভাইয়া আসলো নাম টা ঠিক মনে পড়তেছে না বাহার বা বাকের এই রকম কিছু একটা হবে। ওনার সাথে মুরুব্বি ধরনের একজন লোক ছিল. আমি বাসার সবার ছোট হওয়াতে একটু বেশি আদর সব সময় এই পাইতাম... ভাইয়া টা এক রকম কোলে নিয়ে বসে থাকলো এইটা ঐটা জিজ্ঞাস করতে থাকলো ওই সময় আমার ছোট আপা ও আমার পাশেই বসা ছিল ছোট আপা আমার থেকে তিন বছরের বড় ...... এক সময় ভাইয়া টা আমাকে জিজ্ঞাস করলো তোমার আপা কি গান গায় ??? আমি ও সরল সোজা উত্তর দিলাম হুমম গায় তো তবে আসতে আসতে গুন গুন করে গায়.... ছোট আপা পাসের থেকে গুতা দিয়ে বলে ওই চুপ করে থাক... এমনিতে বান্দর হলেও বাইরের মানুষের সামনে খুব ভালো মানুষ সেজে থাকতাম। অন্য সময় এই কথা আমাকে যদি ছোট আপা বলত তাইলে তখন এই এর উত্তরে সিউর বলতাম তুই চুপ থাক। যাইহোক ভাইয়াটা আমাকে বললো এখন তোমার আপাকে একটু গান গাইতে বলতে পারবা??? আমার উত্তর না পারব না আমাকে বকা দিবে... উনি আমাকে সাহস দিল কেউ বকা দিবে না আমি তোমার সাথে আছি তো.... এই কথা গুলা কিন্তু খুব আসতে আসতে কানে মুখে কথা হইতেছিল.... আমি জোরে বললাম আপা একটা গান গাও তো ভাইয়া তোমার গান শুনব....B-) ওমা আমি কি এমন অপরাধ করে ফেললাম সবাই আমার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকানো শুরু করলো..... B:-) ওই সব তাকানোর ভয়ে আমি চুপ মাইরা গেলাম একদম। একটু পরে ভাইয়া আমাকে বলল ভয় পাওয়ার কিছু নাই তুমি একটা কাজ করবা যখন তোমার আপা গুন গুন করে গান গাইবে তখন তুমি পেছনের জানালায় বসে গলা ঝারবা তাইলেই আমি শুনতে পারব... এরপর থাকে যখন বড় আপা গুন গুন করে গান করত তখন আমি পেছনের জানালায় বসে গলা ঝাড়তাম আর আমার গলা ঝারা শুনে বাসার সবাই হাসত আপা ও আরো একটু জোরে জোরে গান গাইত আর বলত ডাক তোর ভাইয়ারে শুনুক আমার গান.... :||

ছোট বেলায় আমি একটা ময়না পাখি পুষতাম। অনেক যত্ন নিতাম আমার ময়নাটার.... ১২টা-৪টা স্কুল, দুপুরে গোসল করার সময় ময়নাটাকে ও গোসল করাইতাম। খাঁচা পরিস্কার করে ময়নার খাঁচাটা রোদে রেখে স্কুলে চলে যেতাম। স্কুল থেকে ফেরার পথে একটা আন্কেল এর দোকান পরতো সেখানে কলা বেচতো আধা খারাপ/পঁচা কলা গুলো আন্কেলটা আমার পাখির জন্য রেখে দিতো আমি নিয়ে আসতাম। তো স্কুল কিসের যেন ছুটি দিলো ১০-১৫ দিনের জন্য তখন শীত কাল ছিলো। বাসার সবাই ঠিক করলো গ্রামের বাড়ীতে বেড়াতে যাবে। আমি আবার বেইকা বসলাম আমি বাড়িতে যাবো না। এই কথা বলার পরে ছোট আপা পারেতো আমার ২২টা দাঁতই ভাইঙ্গা দেয়। (২২টা দাঁতের কথা বলতেছি কারন ঐ সময় আমার ২২টা দাঁতই ছিলো ২৮টা ছিলো বলে মনে হয় না)২-৩ বছর পরে একবার সবাই মিলে গ্রামের বাড়ীতে যাওয়া হইতো তখন... কিন্তু আমার ও তো বাড়িতে যাইতে খুব ইচ্ছা করতেছে। আমি বাড়িতে গেলে আমার ময়না পাখিটার কি হবে ওরে কার কাছে রাইখা যামু। :(( পরে রাতে ঘুমানোর সময় আব্বাকে জরাইয়া ধরে শুয়ে থাকলাম। প্রচুর মন খরাপ বাড়িতে ও যাইতে ইচ্ছা করতেছে আবার পাখিটার চিন্তায় যাইতেও ইচ্ছা করতেছে না। তো আব্বা আদোর করে বললো বাড়িতে যাবা না কেন?? তুমি একা কি ভাবে থাকবা এই খানে। তখন আব্বাকে সাহস করে বললাম আমি চলে গেলে আমার ময়না পাখিটার কি হবে। তখন আব্বা বললো তাইলে তুমি বাড়িতে যাইতে চাও কিন্তু ময়নাটার জন্য যাবে না ?? আমি ও আদুরে গলায় হুম বললাম.... :!> আব্বা বললো ঠিক আছে আমি ময়না পাখি রাখার বেবস্থা করে দিবো। পাসেই আমার থেকে ছোট নাম খোকন ওর ও আমার পাখিটার উপরে বেশ মায়া ছিলো। মাঝে মাঝে কলা এনে খাওয়াতো। সকালে ওর বাবা কে আব্বা বলে দিলো কিছুদিন পাখিটা রাখার জন্য। উনি রাজি হইলো খোকন আর ওর বোনরা দেখা শুনা করবো বলে রাজি হইলো। তার পরের দিন ওর কাছে পাখি রেখে আমরা গ্রামের বাড়ীতে বেরাতে চলে গেলাম। সেই বার নানা বাড়িতে অনেক মজা করলাম। একটা কথা এখনো স্পষ্ট মনে আছে সেইবার নানাদের অনেক জমিতে পেয়াজ লাগানো ছিলো। পেয়াজ বড় হওয়ার জন্য পেয়াজের ফুল ভেংঙ্গে ফেলে দেয়া লাগে তাহলে মাটির নিচের পেয়াজ বড় হয়। তখন শহরে পেয়াজের ফুল বিক্রি হইতো ৪-৫টাকা কেজি। প্রতিদিন সকালে বড় মামা মেঝ মামা আর নানা সাথে আরো ৫-৭জন নিয়ে এই পেয়াজের ফুল ভাংঙ্গতে যেত জমিতে। আমিও সাথে গিয়ে ঘুরে আসতাম। মাঝে মাঝে পেয়াজের ফুল ভেংঙ্গে দিতাম। দেখলাম এই ফুল গুলো ভেংঙ্গে একটা যায়গাতে সব ফেলে দেয়া হচ্ছে। তখন নানাকে বললাম নানা আপনি কি জানেন এই গুলা আমরা কিনে খাই কেজি ৪-৫টাকা করে। নানা বললো জানি তখন আমার প্রশ্ন তাহলে এই গুলা ফেলে দিচ্ছেন কেন। বিক্রি করলেতো অনেক টাকা আসতো। তখন নানা বললো এই গুলা শহরের মানুষের খাবার গ্রামের মানুষরা এই সব ফালতু খাবার খায় না। আর এই জন্য এই গুলো কেউ বিক্রি করে না কারন এই গুলা কেউ কিনবে না। বেছে বেছে কিছু ভালো ফুল তুলে নানা আমাকে দিয়ে বললো যাও বাড়িতে গিয়ে তোমার নানিকে বল তোমার জন্য রাইধা দিতে। একটা কথা বলে নেই এই পেয়াজের ফুল কুচি কুচি করে কেটে ডিম দিয়ে ভাজি করলে দারুন মজা হয় আমার দারুন পছন্দের একটা খাবার। এই পেয়াজের ফুল নিয়ে বাড়িতে আসার পরে নানিকে দিলাম বললাম এই গুলা রান্না করতে। নানি আমার আম্মার নাম ধরে ডেকে বললো দেইখা যাও তোমার বাপ ধন আমার জন্য কি তরকারী নিয়ে আসছে। আম্মাতো যানে আমি এইটা পছন্দ করি তাই আম্মা সেই দিন সেই ফুল গুলো ভাজি করছিলো। এই সব কাহিনী নিয়ে আরো একটা পোষ্ট দেয়া যাবে এখন এই সব বলা বন্ধ করি। বাড়ি থেকে ১২ দিন পরে ফিরলাম। ফেরার পর বাসায় যাওয়ার আগে আমি গেলাম আমার পাখির কাছে। ওমা আমার পাখির এই অবস্থা কেন পাখি দেখি আধা মরা হয়ে গেছে। জিজ্ঞাস করলাম পাখির এই অবস্থা কেন ?? কাহিনী যা শুনলাম তাতে আর কিছু বলার থাকে না। পাখির নাকি পাছায় একটা ফোড়া উঠছে আর ময়না পাখির এই ফোড়া ভালো হওয়ার পরেই নাকি ময়না পাখি কথা বলে। তো সেই ফোড়া ফাটিয়ে দেয়া হইছে আর এই জন্য ময়না পাখির জ্বর উঠছে। এই জ্বর সারানোর জন্য একটা পেরাসিটেমন ট্যাবলেট গুরা করে আমি আসার দুই দিন আগে খাওয়ানো হইছে। ময়না পাখিটাকে নিয়ে আসলাম বাসায়। পাখিটার অবস্থা দেখে আর গোসল করানোর ইচ্ছা হইলো না। সুধু খাঁচাটা পরিস্কার করলাম। কলা কিনে খাওয়ানোর চেস্টা করলাম কিন্তু আমার পাখি আর আমার হাতের খাবার খাইলো না। ঘন্টা খানেক পরে আমার সখের পাখিটা মারা গেলো। :(( অনেকেই তখন বলছিলো এত আদর আমি করছি তাই আমি আসা পর্যন্ত বাইচা ছিলো। না হয় আরো আগেই মারা যাইতো। খুবি কষ্ট পাইছিলাম সেই দিন কিন্তু আমার কিছুই করার ছিলো না। ফুফাত ভাই জামান রে নিয়ে খুজতে লাগলাম কোথায় এই পাখিটাকে কবর দেয়া যায়। একটা সাদা কাপরে পেচাইয়া নিলাম। অনেক খুজাঁখুজি করে মাঠের পাসে এমন একটা জায়গা বেছে নিলাম যেইখানে মানুষের পা পরবে না মানুষ হাটা হাটি করবে না। সুন্দর করে কবর খুড়ে পাখিকে কবর দিলাম। আজকে যখন এই লেখাটা লিখছি তখন মনে পরলো আহারে পাখিটাকেতো গোসল না করাইয়াই কবর দিছি। আসলেই ঐ সময় আমার জানাই ছিলোনা কবর দেয়ার আগে গোসল করানো লাগে। এর পরে আর আমি পাখি পুষি নাই। আজকে অনেক দিন পরে পাখিটার জন্য মন খারাপ হইলো আবার। :((

আরো অনেক কিছু লিখার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু লেখা হলোনা। লিখতে বসলে আর হাত দিয়ে লেখা বের হয় না। :((
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১০ ভোর ৪:০১
২৬টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×