বরাবরের মত অাজকের পর্বটিও সাজিয়েছি কিছু চমকপ্রদ তথ্যের সংমিশ্রণে। অাশা করি অাপনাদের ভাল লাগবে। তাহলে চলুন শুরু করি অাজকের এই পর্বটি-
ছোটবেলায় অামরা প্রায় সবাই সাবানের বাবল বানিয়েছি। কিন্তু এটি সবসময় গোলাকৃতির হয় কেন, ত্রিভূজ, চতুর্ভুজ বা অন্য কোন অসম অাকারেরও তো হতে পারতো? এই প্রশ্নটির উত্তর খুজে পেতে অামাদেরকে তরলের পৃষ্ঠটানের সাথে পরিচিত হতে হবে। পৃষ্ঠটান বলতে অামরা কি বুঝি? তরলের অণুগুলির মধ্যে পারস্পরিক সংসক্তি বলই পৃষ্ঠটানের জন্য দায়ী। নিচের চিত্রটি লক্ষ্য করুন-
নির্দিষ্ট অায়তনের তরলেন অভ্যন্তরস্থ প্রতিটি অণু তার পরিপার্শ্বে থাকা সমস্ত অণুর দ্বারা সবদিক থেকে সমভাবে অাকর্ষিত হয়। ফলে লব্ধি বল শূন্য হয়। কিন্তু তরলের মুক্তপৃষ্ঠে থাকা অণুগুলির পরিপার্শ্বে সব জায়গায় তরল অণু ঘিরে থাকে না, সেই জন্য ওই অণুগুলো নিচের দিকে অাকর্ষিত হয়। এর ফলে একটি অভ্যন্তরীণ চাপের সৃষ্টি হয় এবং তরল অণুগুলি সম্ভাব্য সর্বনিম্ন ক্ষেত্রফল ধারণ করে। এটাই হলো তরলের পৃষ্ঠটান। বস্তু যত রকম অাকার ধারণ করতে পারে, তার মধ্যে গোলকপৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল সবচেয়ে কম হয়। তাই পৃষ্ঠটান বা সারফেস টেনশন তরল পৃষ্ঠকে গোলাকৃতি রূপ দান করে।
যদিও অামাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশে তরলের এই গোলাকৃতি রূপ দেখা সম্ভব নয়, কিন্তু মহাকাশ স্টেশনে কিংবা কৃত্রিমভাবে তৈরী "জিরো গ্রাভিটি" তে এটা লক্ষ্য করা যায়। এখানে নির্দিষ্ট অায়তনের তরল পৃথিবীর মহাকর্ষ বল থেকে মুক্ত হয়ে পৃষ্ঠটানের প্রভাবে গোলাকৃতি রূপ ধারণ করে।
এখন তাহলে সাবানের বাবলের কথায় ফিরে অাসা যাক। যখন অামরা পাইপে ফুঁ দিই, সাবানের পানি ফুলে ওঠে। এক্ষেত্রে সাবান, পানি ও বাতাসের অণুগুলো পরস্পর সংঘবদ্ধ হয়ে খুব পাতলা একটা অাবরণ তৈরী করে। ভেতরের বাতাসের অণুগুলো এই অাবরণটিকে বাইরের দিকে ঠেলতে থাকে, অন্যদিকে পৃষ্ঠটান অাবরণটিকে সম্ভাব্য সর্বনিম্ন ক্ষেত্রফলে অানতে গোলাকৃতি রূপ দান করে। এজন্যই সাবানের বাবলগুলো সবসময় গোলাকৃতির হয়ে থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৮:২৩