মিসেস সালমা চৌধুরীর রাগটা সামাল দিতে একটু কষ্ট হচ্ছে।ঘটনাটা যে এতটা পর্যায়ে যাবে সেটাও তিনি ভাবেন নি।এখন মনে হচ্ছে তার আরো আগে সাবধান হওয়া উচিত ছিল।
ছেলেটাকে তিনি দেখেন মাস খানেক আগে।মাথায় ঝাকড়া চুল,পরনে খয়েরি রংয়ের ময়লা পান্জাবি।রাস্তায় দাড়িয়ে তিন তলার দিকে তাকিয়ে ছিল।প্রথম দেখাতেই ছেলেটার প্রতি বিরূপ মনোভাব জন্ম নেয় তার।তারপর থেকে রোজ একই সময়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ছেলেটাকে।
ব্যাপারটা সুবিধা জনক মনে হল না তার।কারন ঠিক ঐ সময়েই ইন্তিকা বেলকুনিতে বসে বই পড়ে।অনেক ধরনের বই পড়ে।গল্পের বই,কবিতার বই,উপন্যাসের বই।আজকাল প্রায় দেখা যায় মেয়েটা রোমান্টিক ধাচের কবিতা,উপন্যাসের বই পড়ছে।
ছেলেটা ইদানিং আকার ইঙ্গিতে কি যেন ইশারা করতে চায়।সালমা চৌধুরী আড়াল থেকে তাকিয়ে দেখেন ইন্তিকা সাড়া দেয় কিনা।কিন্তু না ইন্তিকা সাড়া দেয় না।
আজকে ছেলেটাকে তিনি হাতে নাতে ধরে ফেললেন।ধরেই বললেন,এই ছেলে এখানে কি করো?
আচমকা ধরা পড়ে যাওয়ায় ছেলেটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।আমতা আমতা করে বলে,না মানে আন্টি,আমি নির্ঝর,পাশেই থাকি,
-এসব জানতে চাইনি।কেন দাড়িয়ে আছ এখানে?
-কোন কারন নেই,এমনিতেই
-এমনিতেই মানে?তিন তলার বেলকুনির দিকে কি তাকাও?
-না তো আন্টি তাকাই না তো
-মিথ্যে বলবে না,আমি অনেক দিন দেখেছি
-আসলে আন্টি ইন্তিকা..
-কি ইন্তিকা কি?তাকে ভালোবাসো
ছেলেটা কিছু বলল না।মাথা নিচু করে থাকলো।তিনি আর ছেলেটাকে কিছু বললেন না।সোজা বাসায় এসে ইন্তিকার রুমে ঢুকলেন।মেয়েটা বই পড়ছে।উপন্যাসের বই বোধহয়।এর জন্যেই আজকের এই ভয়াবহ ঘটনাটা ঘটেছে।নিশ্চয়ই ইন্তিকাই ছেলেটাকে প্রশ্রয় দিয়েছে।নাহলে বাড়ি পর্যন্ত আসে কি করে?অনেক রাগ ঝাড়লেন তিনি মেয়ের উপর,পরের ছেলেকে তো আর শাসন করা যায় না।
মায়ের অকস্মাত্ রাগারাগিতে স্তব্ধ হয়ে গেল ইন্তিকা।পরে আস্তে আস্তে বুঝতে পারলো পুরো ব্যাপারটা।তার কিছুই বলার নেই।ঐদিকে মা বকে যাচ্ছে,আর সে গাল ফুলিয়ে কেদেই যাচ্ছে।
অবশ্য মায়ের বকুনির জন্য কাদছে না সে।সে কাদছে অন্য কারনে।একটা উপন্যাসের বইয়ে সে পড়েছে নায়ক নায়িকাকে নীল খামে চিঠি দিয়ে ভালোবাসার কথা জানায়।তারও খুব ইচ্ছে ছিল নির্ঝর তাকেও ভালোবাসার কথা জানিয়ে পাঠাবে নীল খামে চিঠি..

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


