somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্তমান সংঘাত ও সহিংসতা

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক ।
বর্তমান সংঘাত ও সহিংসতার জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী । যদি বলেন, কেন দায়ী ? তাহলে বলতে হয় বর্তমান সংকটের সৃষ্টি হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার কারণে, আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর একক সিন্ধান্তে । বিষয়টি ক্লিয়ার করার জন্য গত ২৩ শে ডিসেম্বর প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত সুজন এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের কলামের উল্লেখযোগ্য অংশ বিশেষ তুলে ধরছি-
‘২১ জুলাই ২০১০ সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে চেয়ারপারসন করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি সংসদীয় ‘বিশেষ কমিটি’ গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যদের মধ্যে ১২ জন ছিলেন আওয়ামী লীগের এবং অন্য তিনজন মহাজোটের অন্য শরিক দলের।২৯ মার্চ ২০১১ অনুষ্ঠিত ১৪তম বৈঠকে কমিটি নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা করে এবং ‘বিদ্যমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অপরিবর্তিত রাখার বিষয়ে বৈঠকে ঐকমত্য হয়’ (বৈঠকের কার্যবিবরণী)। বৈঠকে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘মীমাংসিত বিষয়কে অমীমাংসিত করা ঠিক হবে না...তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেজর কোনো কিছুতে হাত দেওয়া আমাদের কোনোমতেই উচিত হবে না।’ একই ধরনের মতামত ব্যক্ত করেন কমিটির অন্য সদস্যরা, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন বর্তমান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু প্রমুখ। ওই বৈঠকে আমির হোসেন আমু আশঙ্কা প্রকাশ করেন: ‘আসলে এটা যদি আমরা পরিবর্তন করতে যাই, তাহলে অনেক জটিলতা বাড়বে, অনেক ঝামেলায় আমরা জড়িয়ে পড়ব। তার চেয়ে এটাই ভালো, যেভাবে আছে, সেভাবে থাক।’ আইনজীবী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় পরিবর্তনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন: ‘আমাদের হাত দিয়ে এ বিষয়টি ওপেন করা ঠিক হবে না...এটা নিয়ে গন্ডগোল হবে। যখন গন্ডগোল হবে, তখন সব দায়িত্বটি আমাদের কাঁধে এসে পড়বে।’আবদুল মতিন খসরু সাবধানবাণী উচ্চারণ করে বলেন: ‘আমি বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ব্যবস্থা আছে, এটিই থাকুক। এর মধ্যে আমাদের হাত দেওয়া ঠিক হবে না। এতে জটিলতা আরও বাড়বে। বিরোধী দলকে আমরা অনেকটা সুযোগ করে দেব কথা বলার জন্য; আমাদের ঘায়েল করার জন্য।’এটি সুস্পষ্ট যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করলে যে জটিলতা সৃষ্টি হবে, আগে থেকেই সে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছিলেন আমাদের অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদেরা। তাই, ১০ মে ২০১১ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক বলে প্রদত্ত বিভক্ত (৪-৩), সংক্ষিপ্ত আদেশের পরও বিশেষ কমিটি সামান্য পরিবর্তনসহ এটি অব্যাহত রাখার পক্ষে ২৯ মে ২০১১ সর্বসম্মতভাবে সুপারিশ করে। এর পরদিন, ৩০ মে, কমিটি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে অবশ্য সিদ্ধান্তটি পাল্টে যায় ।’

অতএব,প্রধানমন্ত্রীর একক সিন্ধান্তে বাতিল হল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ।

দুই ।
কিছু দিন আগে জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো ৬ দিন সফর শেষে ঢাকা ছেড়ে গেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াসহ নাগরিক সমাজ, নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং প্রধান রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করেছেন। কিন্তু শেষ মূহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর সাথে তারানকোর দ্বিতীয় দফা বৈঠকটি বাতিল হয় । কেন বাতিল হয় বহুল প্রত্যাশিত বৈঠকটি সে সম্পর্কে কথা বলেছেন বেগম জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা শফিক রেহমান । গত ১৫ই ডিসেম্বর রেডিও তেহরানকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে শফিক রেহমান বলেন,-‘বিএনপি ও আওয়ামী লীগের চারজন করে মোট আটজনকে নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তারানকো। তারানকো ঢাকা ত্যাগের কিছুক্ষণ আগে অর্থাৎ তার প্রেস কনফারেন্সের কিছুক্ষণ আগের এই বৈঠকটিতে দেখা যায়, জানা যায় এবং শোনা যায়, তোফায়েল ও আমুর বক্তব্য বা রায় বিএনপির চারজনের বক্তব্যের কাছাকাছি ছিল। অর্থাৎ সেখানে ৪ যোগ ৪ থাকলেও ভোটাভুটি যদি নেয়া হতো তাহলে দেখা যেত ৬ জনের মত এক এবং ২ জনের মত ভিন্ন। আর ওই ভিন্নমতের দুজন হচ্ছেন- গওহর রিজভী ও সৈয়দ আশরাফ। তো এই ঘটনার পর ভিন্নমতের দু’জনের যেকোনো একজন ফোন করেন শেখ হাসিনাকে। ফোনে বৈঠকের পরিস্থিতির কথা জানিয়ে বলেন- সামগ্রিক পরিস্থিতি কিন্তু আপনার বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। এই খবর শোনার পর শেখ হাসিনা তারানকোর সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি হননি। আর এটাই হচ্ছে তারানকোর সঙ্গে শেখ হাসিনার দেখা না করার মূল কারণ।’

যে রাজনৈতিক সংকট শেখ হাসিনার কারণে সৃষ্টি হয় তা থেকে উত্তরনের একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল জাতিসংঘের মধ্যস্ততায়, কিন্তু এবার শেখ হাসিনার একগুয়েমির কারণে সুযোগটা নষ্ট হয় যার মাশুল দিচ্ছে গোটা দেশ এবং দেশের জনগন ।





সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:১০
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×