গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের স্বপক্ষে নিজেদের পরিষ্কার অবস্থান তুলে ধরলেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র জ্যেষ্ঠ নেতা সুব্রামানিয়াম সোয়ামি। সোয়ামি গাজায় চলমান সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধে ইসরাইলের পাশে থাকারও আশ্বাসও দিয়েছেন এই বিজেপি নেতা।
গত ৩ আগস্ট বোম্বের বীর সাভাকার অডিটরিয়ামে ইন্দো-ইসরাইল ফ্রেন্ডশিপ এসোসিয়েসন আয়োজিত ‘গাজায় চলমান সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধে ইসরাইলের প্রতি সংহতি প্রকাশ’ নামক একটি পাবলিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ইসরাইলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে খোলাখুলিভাবে এসব কথা বলেন বিজেপি নেতা।
বক্তব্যে সুব্রামানিয়াম সোয়ামি বলেন, আজকের সভা আয়োজন করা হয়েছে সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধে ইসরাইলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করার জন্য। সকলেই জানেন ইসরাইল ভারতের দীর্ঘ দিনের বন্ধু। সকলেই জানেন ইসরাইল গাজায় সন্ত্রাস ও জঙ্গি বিরোধী যুদ্ধে লিপ্ত। আমরা বলতে চাই সন্ত্রাস ও জঙ্গি বিরোধী যুদ্ধে ভারত ইসরাইলের পাশে আছে এবং থাকবে। ভারতের দেশপ্রেমিক হিন্দু, মুসলামন, খ্রিস্টান, পার্সি সকলেই ইসরাইলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করবে। ভারতের পররাষ্ট্রনীতি কোনো ধর্ম, বর্ণ, জাতির উপর বিবেচনা করবে না বরং বন্ধুত্বের জোর ভিত্তির উপর নির্ভরশীল। আপনারা জানেন, ভারতও আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ বিরোধী যুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে লিপ্ত। মনে রাখতে হবে এই যুদ্ধ ভারতের দেশপ্রেমিক মুসলমানদের বিরুদ্ধে নয়। আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি খোলামেলাভাবে ইসরাইলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করার জন্য। প্রতিটি স্বাধীন দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। ইসরাইল যেটি করছে সেটি যৌক্তিক। অনেকেই বলছেন গাজা থেকে ছোঁড়া হাতে গোনা রকেটের জন্য ইসরাইলকে এত ঘাম ঝরাতে হচ্ছে কেন, কেন এত ইসরাইলি সেনা মারা যাচ্ছেন? ইসরাইল মূলত সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের নির্র্মূল করার জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছে। দেশ রক্ষার যুদ্ধে সেনারা শহীদ হবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে মনে রাখা উচিত শত্রু যদি আপনাকে আক্রমণ করে তবে শত্রুকে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেয়া উচিত যাতে করে শত্রু দ্বিতীয়বার আপনাকে আক্রমণ করার সাহস না পায়। আমরা বলতে চাই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে ভারত প্রতিটি দেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ করবে।
উল্লেখ্য ভারতের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিজেপি’র এই প্রভাবশালী নেতা নির্বাচনে জয়ী হলে ভারতে বসবাসকারী মুসলমানদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার কথা বলেছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশের খুলনা থেকে সিলেট পর্যন্ত জোরপূর্বক দখল করার মতো কথা বলেছিলেন।
অন্য দিকে গত বুধবার সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী মানবাধিকার সংগঠন হারমনি ইন্ডিয়া নামক একটি সংস্থা চেন্নাই এর পিটার রোডস্থ কলেজ অডিটরিয়ামে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে একটি পাবলিক মিটিং আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে গাজা-ইসরাইল যুদ্ধের বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠান থেকে গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে গাজায় ইসরাইলি দখলদার বাহিনী মানবতা বিরোধী কাজের প্রতিবাদ করা হয়। সংস্থার একটি প্রেস রিলিজে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরাইলি দানবীয় আক্রমণে ১ হাজারের বেশি নিরীহ শিশু ও নারী নিহত হয়েছেন। সন্ত্রাসী, জঙ্গিদের বাদ দিয়ে ইসরাইলি বাহিনী নিরাপরাধ সাধারণ ফিলিস্তিনি, স্কুল, হাসপাতালকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। হামলায় জাতিসংঘ অফিসও রক্ষা পাচ্ছে না। ইসরাইলি দখলদারী মনোভাব ও মানবতা বিরোধী অপরাধের কারণে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি নাগরিক বাস্তুহারা হয়েছেন। সুতরাং ফিলিস্তিনে নিগৃহীত মানবতার প্রতি সংহতি প্রকাশ করা প্রয়োজন বিশেষ করে যারা স্বাধীনতা, শান্তিতে বিশ্বাস করেন তাদের উচিত ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা। অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক গভর্নর গোপাল কৃষ্ণ গান্ধী, হারমনি ইন্ডিয়ার সভাপতি এন রামসহ একাধিক মানবাধিকার ও সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য জানুন
সম্প্রতি কলকাতার দেশ পত্রিকায় যে প্রশ্নে দ্বিধাগ্রস্থ সমগ্র পৃথিবী সত্যিই কি ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইনের সহাবস্থান সম্ভব? শিরোনামে একটি বিশ্লেষন ছাপা হয়। এতে ভারত-ইসরাইল সর্ম্পকের দিকটি উঠেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩০