somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রিফ্রাক্শন
আমি একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে চাওয়া নকল মানুষ। নিজ ধর্মে বিশ্বাসী ধার্মিক। নিজ কাজে নির্ভরশীল শ্রমিক। দেশকে ভালবাসা এক দেশপ্রেমিক।মানুষে মানুষে সচেতনতা বাড়ুক, দেশ হোক উন্নত, সমৃদ্ধশালী। মানবতা আশ্রয় নিক হৃদয়ে।

ত্রিশ টাকার চুড়ি

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। গায়ের সাদা শার্টটা ঘামে ভিজে গেছে যেন সদ্য বৃষ্টিতে ভিজে আসলাম। সেই সকালে বেরিয়েছি এখন মধ্যদুপুর গড়িয়ে গেছে। আকাশটাতে মেঘ লাগছে। খুব জোরে বৃষ্টি হতে পারে। আজ একটু খুশি কারন চাকরীটা পেয়ে গেছি। অফিসার বলেছেন আগামীকাল মাজার একটা নতুন বেল্ট কিনে চাকরীতে যোগ দিতে। কারন আমি খেয়াল করিনি কখন যে ছিড়ে গেছৈ। তখন একটু লজ্জা লাগল কিন্তু মজাও পেয়েছিলাম।

ক্লান্তিতে আর হাঁটতে ইচ্ছা করছে না। তাই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঠিক সামনে বসলাম। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। এক কাপ জল হলে খারাপ হত না। কিন্তু পকেটে হাত দিয়ে টাকা পেলাম যা তাতে বাড়ি ফিরতে হবে। হঠাত্‍ স্কুলের ছুটির ঘন্টা আর বাচ্চাদের দৌড়াদোড়ি। কিছুক্ষণ পর সবার প্রস্থান আবারো আকাশের দিকে তাকালাম।

চোখের উপরে কি যেন ঝাপসা লাগল, ভালো করে মনোযোগ এনে পানির বোতল দেখে হাতে নিয়ে খেয়ে ফেললাম। গলাটা যেন একটু তৃপ্তি পেল। পানি খাওয়া শেষে পাশে তাকালাম দেখে একটু অবাক হলাম একটি বাচ্চা মেয়ে হয়ত ঐ স্কুলে পড়ে সে আমাকে তার পানির বোতলটা দিয়েছে।

বাচ্চা মেয়েটার চোখ আর নাক এবং থুতনি দেখে আমার ভালবাসার মানুষটির কথা মনে পড়ে গেল। একদম নকল।

আমিঃ ধন্যবাদ।
মেয়েঃ ওয়েলকাম।

আমিঃ তোমার নাম কি?
মেয়েঃ অপরাজিতা।

নামটাও চেনা কারন আমি বলেছিলাম আমার মেয়ের নাম হবে অপরাজিতা। মনে মনে ভাবলাম, যাহ! কি ভাবছি আমি।

অপরাজিতাঃ তোমার নাম কি?
আমিঃ মুরাদ।

এর ভেতরে বৃষ্টি চলে এল। এত তাড়াতাড়ি এত জোড়ে বৃষ্টি সাধারন আসে না।

আমিঃ তুমি দাড়িয়ে আছ কেন? তোমার বাবা আসবেননা?
অপরাজিতাঃ আমার বাবা নেই?তবে মা আসবেন।

থমকে গেলাম। কি বলব ভেবে পেলাম না।

অপরাজিতাঃ বৃষ্টিতে ভিজবে?
আমিঃ না। আচ্চা চল।

কি মেয়েরে বাবা! একজন অপরিচিত বাচ্চা মেয়ের একটুও ভয় নেই। একজন অপরিচিত মানুষের সাথে এত পরিস্কার মনে কথা বলা বাচ্চা দেখা যায় না। আবার বলে বৃষ্টিতে ভিজবে?

দুজনে ভিজতে ছিলাম আর অপরাজিতা ছড়া বলতে ছিল
"RAIN RAIN NOT GO AWAY"

ভাল মজা করতে ছিলাম কিন্তু এতে বালি দিল একটি গাড়ি এসে। কাল রঙের গাড়ি। এসে দাড়াল আর গাড়ি থেকেই অপরাজিতাকে ডাকতে ছিল কিন্তু না যাওয়াতে নিজেই ছাতা নিয়ে চলে এল।

মেয়েটিঃ ভিজছ কেন?
অপরাজিতাঃ মা তুমিও ভিজবে?

মেয়েটিঃ না। চলে এস।
অপরাজিতাঃ আচ্ছা।

অপরাজিতার মা' কে দেখে আমার চোখ দুটি থমকে গেল। পুরো পৃথিবী ক্ষনিকেই বদলে যেত লাগল। আমি আর কথা বলতে পারলাম না। মেয়েটি যে আমার সহধর্মনী আর অপারাজিতা তো আমার মেয়ে।

অপরাজিতা আমাকে বিদায় দিয়ে চলে গেল কিন্তু ভুলে ফেলে গেল স্কুল ব্যাগ। আমি ব্যাগটা নিয়ে চলে এলাম বাড়িতে।

২। বাড়িতে এসে গা মুছে ঘুমিয়ে পড়লাম। যখন ঘুম ভাঙল তখন দেখি বাইরে বাতাস চলছে। বর্ষাকাল শেষ। শরতের শুরু। এসময় বাতাস হয়। নিকোটিনের কাঠিতে আগুন জ্বালিয়ে ছাদে আসলাম। সিগারেটের তখনও অর্ধেক বাদ আছে আবার মনে পড়ে গেল অপরাজিতা ও তার মায়ের কথা।

প্রায় ৫ বছর পর এভাবে দেখা হয়ে যাবে হৈমন্তীর সাথে ভাবতে পারিনি। ৫ বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়েছিল কিন্তু সংসার টা একটু ছোট খাটো ঝড়ে ভেঙে গেল তবে ডিভোর্স হয়নি। অভিমান করে বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলো, পরে আর রাখেনি কোন যোগাযোগ। আমাদের একটা মিষ্টি প্রেম কাহীনি ছিল। কিন্তু রাগ কিংবা অভিমানের সময় মিষ্টি কি লবন এসব কিছুই মনে থাকে না।

৩। আমি ছিলাম গ্রামেয় ছেলে। মাধ্যমিক আর উচ্চমাধ্যমিক কোন মতে টপকে একবছর গ্যাপ দিয়ে চান্স পেয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।

তখন টাকার বড় অভাব ছিল। টাকার জন্য অনেক কিছু হারিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে প্রথম থেকেই আমি হলে থাকতাম। আমার বড় বোন থাকে দেশের বাইরে মা ও চলে গেছেন বছর খানেক হল চিকিৎসার কারনে। কিন্তু বোনের টাকায় আর কদিন খাব তাই এই চাকরিটা করতে বের হয়েছিলাম।

মাঝে অবশ্য ছিল ডিভিশনাল ক্রিকেট খেলা। সেই সূত্রে বছর খানেকের ভিতরেই রাশেদ ও রাফার সাথে ভাল বন্ধূত্ব হয়ে গেছিলো।

তিনজন যদিও এক বাইক তে আঠত না তবুও রাশেদ যদি পিছে বসত তাহলে এটে যেত। রাশেদ রাফা দুজনে ভাল মোটা আমি মোটা নয়, ঐ স্বাস্থ্যবান বলে চালিয়ে দেয়। একটি হোটেলে গেলে, রাফা ও রাশেদের খাওয়া দেখলে ওয়েটার পর্যন্ত তাকিয়ে থাকত।

এভাবেই দিন কাটত। একদিন মেডিকেল কলেজ গেইটের পাশে বসে রাফার কাছে থেকে সিটি মারা শিখছিলাম। আগে পারতাম না তাই একটি পেন্সিলের মথা থেকে বাঁশি হাতের মাঝে রেখে মুখ দিয়ে বাজাতাম। কেউ ধরতে পারত না কিন্তু একদিন রাশেদ ধরে ফেললো, তাই এই সিটি বাজানো শেখা।

তো অনেক বার চেষ্টা করার পরেও পারলাম না। তারপর একবার হঠাত্‍ করে বেজে উঠল আর সামনে তাকিয়ে দেখি একটি মেয়ে। সোজা এসে আমার গালে চড় মেরে দিল। আমি হতভম্ভ। আমার মত ভাল ছেলে যে আজ পর্যন্ত কোন মেয়ের দিকে তাকায় না সে কি করে মেয়ে দেখে সিটি মারবে। আসলে পৌষ মাসের শেষে জন্মেছিলাম বলে হয়ত ভাগ্য কিছুটা খারাপ সবসময়।

সবাই বলে মেয়েদের হাত নরম কিন্তু চড় মারার সময় যে এত জোর পায় কোথায় থেকে, এই প্রশ্ন তখন মাথায়। শুনতে অসত্য মনে হলেও দুদিন গাল লাল হয়েছিল। বাড়ি থেকে বের হইনি ঐ দুদিন।

তারপর একদিন বাসে করে ভার্সাটি যেতে ছিলাম। আমি উঠেই একটি ছিটে না দেখে হঠাত্‍ করেই বসে পড়লাম পাশে লক্ষ করলাম ঐ রমনি। আমি আবারো চমকে গেলাম, জানিনা আবার কি বলে। মেয়েটি এখনো খেয়াল করেনি তাই আমিও নিজ থেকে আর তাকালাম না। দ্রুত বাস থেকে নামতে পারলেই হয়।

তবুও আড়চোখে মেয়েটির দিকে একবার তাকালাম দেখলাম মোবাইল গেম খেলায় ব্যাস্ত।

কিছুক্ষন পর, হঠাত করেই মেয়েটি বলে উঠলো, এই যে আপনি আবারো আমার পিছে লেগেছেন?
আমিঃ জি না।

মেয়েটিঃ তাহলে উদ্দেশ্য কি?
আমিঃ ভার্সিটিতে যাচ্ছি।

মেয়েটিঃ কোন ইয়ার?
আমিঃ থার্ড ইয়ার। পদার্থবিজ্ঞান। আপনি?

মেয়েটিঃ মেডিকেল ফোর্থ ইয়ার।
আমিঃ ও আচ্ছা।

এর ভেতরে মেডিকেল গেইটে বাস থেমে গেছে।মেয়েটি নেমে যাচ্ছে।আর আমার নাম জানতে চাইল।

আমিঃ মুরাদ। আপনারটা?
মেয়েটি তো নাম না বলেই চলে গেছিল।

৪। মেয়েটি তো নাম না বলেই সেদিন চলে গেছিল। পরে আর অনেক দিন দেখা হয় নি। এদিকে সেমিষ্টার পরীক্ষাও শেষ। পরীক্ষা শেষে
রাফা আর রাশেদের জন্য অপেক্ষা করতে ছিলাম। হঠাত্‍ দূর থেকে লক্ষ করলাম রাফা যেন কার সাথে কথা বলছে। একটু কাছে আশার পর বুঝতে পারলাম ডিপার্টমেন্টের নব্য ম্যাডাম। আমি উঠে যেয়ে পাশেই দাড়ালাম। ম্যাম আমাকে খেয়াল করে নি। আমি ওদের কথা শুনতে ছিলাম।

ম্যাডামঃ কি এইবার পাশ করবে তো রাফা?
রাফাঃ জি।

ম্যাডামঃ কেমন হবে?
রাফাঃ বি মাইনাস।

ম্যাডামঃ তুমি কি এটাই আশা কর? আমি যত দিন ক্লাসে ছিলাম দেখেছি তুমি পেছনে বসে ঘুমাও।
রাফাঃ কই না তো ম্যাম।

ম্যাডামঃ আমি দেখেছি। যাই হোক পরের বার থেকে এমন যেন না দেখি।
রাফাঃ আচ্ছা ম্যাম, আপনি ক্লাস নিবেন তো? তাহলেই পারব।
ম্যাম বলল, কোর্স মিললে নিতে পারি। এর পর ম্যাম চলে গেল।

রাফার চরিত্রে একটু সমস্যা আছে। এই রাফা নতুন ম্যাডামের হাসিতে পাগল হয়ে ক্লাস করতে যেত।যদিও রাফার দোষ নেই, ম্যাডামের মিটমিটি হাসি টা আসলেই অনেক সুন্দর।

পরেরদিন খেলার মাঠে যাব বলে আমি বের হয়ে ফোন দিয়ে রাশেদ আর রাফার জন্য ওয়েট করতে ছিলাম।

কিছুক্ষণ পর খবর পেলাম রাফা আর রাশেদ মটর বাইকে আসতে যেয়ে দুর্ঘটনা ঘটাইছে। রাফা পেছনে ছিল তাই ওর গায়ের চামড়া ছুলে গেছে আর রাশেদ মোটা বলে আর গাড়ি চালাইতে ছিল বলে একটি হাত ভেঙে গেছে। অনেক বার বলেছি রাশেদ তুই গাড়ি চালাতে পারিস না তবুও শখ করে চালাতে যায় যদিও রাশেদ ই গাড়িটার মালিক। খবর শোনা মাত্র ওদের কাছে গিয়ে ওদের কে নিয়ে মেডিকেলে গেলাম।

রাফার গায়ে স্ট্রেচিং করতে আবারো ঐ মেয়েটির আগমন। যে মেয়েটি আমাকে চড় মেরেছিল। এখনো ওনাকে দেখলে ভয় লাগে। অনিয়মিত ভাবেই গালে হাত টা চলে যায় আমার।

মেয়েটি আমাকে তার চেম্বারে যেতে বলল। আমিও গেলাম।

মেয়েটিঃ কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটল?
আমিঃ আমি অখানে উপস্থিত ছিলাম না।
মেয়েটিঃ আচ্ছা আপনি আসতে পারেন।

চলে আসার আগে আমি সাহস নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম বেশ কয়েকবার আপনার সাথে দেখা হলো কিন্তু আপনার নাম জানা হলো না। কি নাম আপনার?
মেয়েটিঃ আ....... হৈমন্তী।

আমিঃ অনেক সুন্দর নাম।
হৈমঃ এটা নাটক নয়ত?

আমিঃ কোনটা?
হৈমঃ দুর্ঘটনা ঘটানোটা।

আমিঃ না কি যে বলেন।
হৈমঃ উদ্দেশ্যটা কি খুলে বললেই তো পার। ছোট বলে তুমি করেই বললাম।

আমিঃ মানে?
হৈমঃ প্রথমদিন আমাকে দেখে সিটি মারা, তারপরে ফলো করে বাসে ওঠা এমনকি বাড়ির সামনে ঘোরা ফেরা আবার আজকে এই নাটক।

অবাক হয়ে গেলাম। এই মেয়ে কি বলে। এই শহরে এমন কোন রাস্তা নেই যেখানে আমাদের পদচারনা নেই তাই হয়ত কোন এক রাস্তায় গেছিলাম তাই ঐ মেয়ে দেখেছে। হয়ত ভেবেছে আমরা পিছু নিয়েছি।

আমিঃ মানে....
হৈমঃ কিছুনা। তাহলে তাড়াতাড়ি এই ঔসুধ গুলো নিয়ে বাড়িতে গিয়ে খাওয়ান আর কোন দরকার হলে ০১৭২...... এই নাম্বারে কল করবেন।

চলে এলাম বাড়িতে। তখন মধ্যরাত ভাবলাম একটু দুষ্টামি করব তাই মেসেজ দিলাম। কিন্তু সাথে সাথেই কল ব্যাক। আমি ধরলাম।

হৈমঃ কে আপনি?
আমিঃ মুরাদ।

অনেক ক্ষন কথা হলো।
শেষ পর্যায়ে প্রেমের শুরুর দিকের মত কথা বলা শুরু করলাম। কিভাবে শুরু হলো বা আমরা কি কথা বলছি তা মাথায় ছিলোনা কাররই।

আমিঃ আপনার কি খেতে ভাল লাগে?
হৈমঃ আইসক্রিম।

আমিঃ খাবেন এখন?

বলেই বিপদ। একবার যদি বলে খাবে তবে আমি এখন মাঝরাতে কিভাবে আইসক্রিম পাব কোথায়। কিন্তু না গেলে যদি আবার.....

মেয়েটি বলল, খাব। অপেক্ষা করিছি নিয়ে আসেন।

অনেকদিন সাইকেল চড়া হয় না তাই সাইকেল নিয়ে খুজতে বের হলাম আইসক্রিম। শেষ পর্যন্ত দুইটি আইসক্রিম কিনে চললাম। কিন্তু বাড়ির ঠিকান না জেনে কি করে যায় তাই মেসেজ দিয়ে জেনে নিলাম।

পৌছে গেলাম দেখি হৈমন্তী ছাদের ওপর দাড়িয়ে আছে। কিন্তু আমি কিভাবে উঠব যেহেতু মেইন গেইট বন্ধ আর এত রাতে ও গেইট খুলতে পারবেনা।

হৈমঃ দেখ পাশে একটি বরই গাছ আছে ঐটি বেয়ে ওঠ।

আমি ভাবলাম এও কি আমার কপালে ছিল। উঠতে যেয়ে গায়ে কাটাও ফুটেছিল। বাংলা সিনেমার মত ওড়না ছিড়ে বেধে দিল।

তারপর দুজনে মিলে আইসক্রিম খেলাম।

এভাবে অনেকদিন চলতে লাগল। দুজনের ভেতরে অনেক অনুভুতি ভাগাভাগি করেছি। কিন্তু আমাদের সঠিক সম্পর্কটা কি জানতাম না। একটা প্রশ্ন থেকেই যেত।

৫। কিছুদিন পর কয়েকদিনের জন্য গ্রামে আসলাম তখন গ্রামে নবান্ন মেলা চলছে তবুও কেমন জানি শুধু হৈমন্তীর কথা মনে পড়ত লাগল। মন টা আর স্থির থাকল না। তাই গ্রামের নবান্ন মেলা থেকে ত্রিশ টাকা খরচ করে গৃহিনি চুড়ি কিনে এনেছিলাম।

শহরে ফিরে সোজা চলেগেলাম হৈমন্তীর বাড়িতে।

হৈমঃ এত দিন পর এল কেন?
আমিঃ কই দু দিন।

হৈমঃ এই দুদিন ই অনেক।খাওয়া দাওয়া ঠিক মত করেছ তো এ কদিন।
আমিঃ এত কেয়ার?

হৈমঃ কাছের মানুষের জন্য চিন্তা হবে না?

এরপর আমি ওর জন্য আনা গিফট টা দিলাম যদিও কমদামি তবুও ও আনন্দ করে হাতে পড়ল।

হৈমঃ আমাকে তোমার কেমন লাগে?
আমিঃ ভাল।

হৈমঃ আমাকে বিয়ে করবা?

৬। কয়েকদিন পর আমরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেছিলাম। আমার শ্বশুর মেয়ে যা চাইতেন তাই দিতেন। তবে আমার মত বেকার এর হাতে ডাক্তারি পাশ করা প্রতিষ্ঠিত মেয়েকে তুলে দিতে দেখে অবাক হয়ে ছিলাম।

বিয়ের দশ দিন পর দেখলাম হৈমন্তী প্রচুর অভিমান করে বসে আছে। আমার সাথে আমার এক পুরনো বান্ধাবীর ছবি। বেশ ক্লোজ। কেন তুলেছিলাম মনে নেই।

কি জানতাম ঐ ছবি ও রেখে দিয়েছে আর আজকে হৈমন্তীকে এমএমএস করবে।

হৈমন্তীর রাগের একটি বিষয় ছিল কেননা এই কথাটি আমি গোপন করলাম। সব অনুভুতি যখন ভাগ করেছিলাম তখন এটা বললে কি সে আমাকে ভালবাসত না।

কিন্তু কেন জানি বলা হয়নি। আসলে মনের পাতায় ছিল না।

হৈমন্তীর কিছু কথা খুব পিড়া দিতে লাগল তাই মাথা গরম করে চড় মারলাম কাপুরুষের মত। আর সেই যে আমাকে ছেড়ে গেল আর আসেনি। পরে অনেকভাবে চেষ্টা করেছি ওকে ফেরাবার। কিন্তু লাভ হয়নি। পরে শুনেছিলাম স্কলারশিপ নিয়ে দেশের বাইরে আছে।

৭। এসব পুরাতন কথা ভাবতে ভাবতে সকাল হয়ে গেল। চাকরীতে যোগ দেওয়ার কথা আছে কিন্তু দিলাম না। ঠিক করলাম আগে অপরাজিতা আর হৈমন্তীকে খুজে বর করতে হবে কারন অপরাজিতার ব্যাগটা আমার কাছে ছিল।

সারারাত ঘুম না হওয়াতে একটু ঘুমিয়ে যখন উঠলাম তখন দুপুর বারটা। অপরাজিতার স্কুলে যেয় বাড়ির ঠিকানা নিয়ে পৌছাতে পৌছাতে রাত আট টা বেজে গেল।

হৈমন্তী ভেতরে রান্না করতে ছিল আর অপরাজিতা আমাকে দেখে ছুটে আসল হয়ত একটা রক্তের টান আছে। কিছুক্ষণ পর হৈমন্তীও সামনে আসল। সন্ধ্যা থেকেই বৃষ্টি চলছিল। দুজন দুজনার দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ।চোখ ফেরাতেই লক্ষ করলাম আমার দেওয়া ঐ ত্রিশ টাকার চুড়ি এখনো হৈমন্তীর হতে আছে।

চলে গেলাম বলে বের হতে যাচ্ছি এমন সময় হৈমন্তী পেছন থেকে বললঃ "বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশের অবস্থা খারাপ। রাতটা থেকে যাও।"

সমাপ্

লেখা ২৪/৪/২০১৫
অনেক আগের লেখা।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:১৫
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×