somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রিফ্রাক্শন
আমি একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে চাওয়া নকল মানুষ। নিজ ধর্মে বিশ্বাসী ধার্মিক। নিজ কাজে নির্ভরশীল শ্রমিক। দেশকে ভালবাসা এক দেশপ্রেমিক।মানুষে মানুষে সচেতনতা বাড়ুক, দেশ হোক উন্নত, সমৃদ্ধশালী। মানবতা আশ্রয় নিক হৃদয়ে।

আত্মসমালোচনা

২৭ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"আমার কোটের নিচে ঢাকা আছে এক ক্লান্ত অথচ দয়ার্দ্র হৃদয় - সে হৃদয় কারও ক্ষতি করে না"

কথাটি বলেছে ১৯৩২ মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত এক আসামী 'ফ্রান্সিস ক্রোলি' যে কিনা কথাটি বলার অল্প কিছুক্ষণ আগে লাইসেন্স চাওয়া এক পুলিশ কর্মকর্তাকে গুলি করে মেরেছে। শুধু এই নয় সে দু বন্ধুক নিয়ে পাঁচ রাউন্ড গুলি করে মানুষ ঝাঁঝরা করে নিজের মানের উপাধি নিয়েছে 'Francis Two Gun Crowley'।

ধরা পরার পর বৈদ্যুতিক চেয়ারে মৃত্যুদন্ড দেয়ার আগে তার অনুশোচনা হওয়া উচিত ছিলো কিন্তু সে নিজের কোন দোষ দেখতে না পেয়ে বলেছিলো ' আত্মরক্ষার জন্য এটাই আমি পেলাম'।

আবার আমেরিকার ভয়ংকর এক ডাকাত দলের নেতা ক্যাপোন বলেছিলো, "আমার জীবনের সেরা মূহুর্তগুলো মানুষকে আনন্দ দেবার জন্য ব্যয় করেছি, তাদের নানাভাবে সাহায্য করেছি, বদলে যা পেয়েছি তা হলো নিন্দা, আর তাড়া খাওয়া পলাতক কোন মানুষের জীবন।"

কথা শুনে সাইকো মনে পারে কিন্তু এখানে সেও নিজের দোষ খুঁজে পায়নি।

দোষ না খুঁজে পাওয়ার অনেক উদাহরণ পাওয়া যায়।

১৯০৮ সালে আমেরিকার ২৬তম প্রেসিডেন্ট থিয়েতো রুজভেল্ট যখন William Howard Taft এর কাছে ক্ষমতা দিয়ে আফ্রিকায় সিংহ করে ফিরে আসে তখন Taft এর সাথে ঝগড়া লেগে যায় Taft এর রক্ষণশীলতার কারণে, পরে দল ছেড়ে নতুন করে নির্বাচন করে জয় লাভ করেন Theodore Roosevelt.

রুজভেল্ট তখন ট্যাফটকে দোষী করলেও ট্যাফট বলেছিলো, " আমি বুঝতে পারছি না অন্য আর কিছু করতে পারতাম কিনা?"

আমরা নিজের দোষ নিজে খুঁজে পাই না বলে আত্মসমালোচনা সহ্য করতে পারি না। কিন্তু অন্যের সমালোচনা অতি সহজে করতে পারি।

নিজের সমালোচনা সহ্য না করার আরেকটা উদাহরণ বলি,

আমেরিকার ২৯ তম প্রেসিডেন্ট হার্ডিয়েং এর মন্ত্রীসভার টি-পট ডোম ওয়েল কেলেঙ্কারির কথা, যা আজও the greatest and most sensational scandal in American Politics হিসেবে বিবেচিত। তো টি-পট ডোমের তেল নৌবাহিনীর কাজের জন্য রাখার ক্ষেত্রে লো বাজেটে লিজ দিতে হবে কোম্পানিগুলোকে এজন্য দায়িত্ব আসে সেক্রেটারি Albert Bacon Fall এর ওপর। কিন্তু Fall কোন কম্পিটিটিভ বিডিং না করে একটা চুক্তির মাধ্যমে তার বন্ধুকে দিয়ে দিলো।

এখবর ফাঁস হওয়ার পর ফল এর অবস্থান জেলে আর সরকার পতন। কিন্তু Fall এর স্ত্রীর ভাষ্য, Fall কোনভাবেই বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে না। যদি তাকে সোনা দিয়ে বানানো ঘরের লোভ ও দেখানো হয়!!

কি অদ্ভুত মানুষ।

কিন্তু ডেল কার্নেগির মতে, সমালোচনা সবসময় নিজের কাছেই ফিরে আসে পোষা পাখির মত। মানুষকে জানতে তাই সমালোচনা নয়। কেননা সমালোচনা মানুষকে জেদি করে তুলে সেই সমালোচনা থেকে ফাঁক খুঁজতে।

সমালোচনা থেকে সরে আসতে হবে, সমালোচনা করার আগে ভাবতে হবে। এর একটা উদাহরণ দেয়া যায় আমেরিকার অন্যতম সেরা শাসক, ১৬ তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের কথা।

তরুণ বয়সে আব্রাহাম অনেক সমালোচনা প্রিয় ছিলেন। অন্যকে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করে খুব মজা পেতেন।১৮৪২ সালে জেমস শিল্ডসকে বিদ্রুপ করে রীতিমতো লাড়াই বাধিয়েছেন। কিন্তু কোন মতে দু'পক্ষের বন্ধুদের জন্য সমোঝোতা হয়। এরপর থেকে তিনি আর কাউকে সমালোচনা করেননি।

তবে ১৮৬৩ সালে গেটিসবার্গ যুদ্ধে জয়লাভ করলেও ৪ জুলাই রাতে যখন জয়ী সেনাপ্রধান জেনারেল মিড, শত্রু লী' কে সুবিধাজনক অবস্থানে পাওয়ার পরো কোন কিছু করেন নি এজন্য প্রচন্ড বিদ্রুপ করে মিড কে চিঠি লিখেছিলেন।

কিন্তু পরপ আর চিঠিটা পাঠান নি। রেখে দিয়েছিলেন কোন এক বইয়ের ভেতরে। হয়ত তার মনে হয়েছিল, সেও জেনারেল মিডের অবস্থায় থাকলে হয়ত এটাই করত। চিঠি পোস্ট করার আগে তাহলে আব্রাহাম সাহেব আরেকবার ভেবেছিলেন।

ঠিক একই কাজ করে জার্মান আর্মিরা। কোন ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে অবজেকশন জানানো যাবে না, জানালে শাস্তি। জানানোর আগে নিজেকে সময় নিয়ে ভাবতে হবে, অবজেকশন জানানোটা কতটা যৌক্তিক। অনেকের ডিসিশন পরিবর্তন হয়ে যায়।

আমাদেরও তাই করা উচিত। কাউকে বিচার করার আগে তার অবস্থান সম্পর্কে জানা উচিত। নিজেকেও ভাবা উচিত।

স্বয়ং সৃষ্টিকর্তায় যখন মৃত্যুর আগে আমাদের বিচার করেন না তখন আমরাই কেন বিচার করব?

**ডেল কার্নেগীর 'বন্ধু ও প্রতিপত্তি' থেকে সংকলিত।

#Days_of_Corona
#Home_Quarantine_days
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×