somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিল্পের সুফল কতোটা পাচ্ছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা?

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


‘বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সেই কয়েকটি দেশের মধ্যে থাকবে যেখানে চলচ্চিত্র টিকে থাকবে,যদিও অন্য অনেক দেশে তা জাদুঘরে নির্বাসিত হবে (আলমগীর কবির,১৯৭৯:৯২)।’

চলচ্চিত্র একটি দেশের সব থেকে বড় গণমাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে নিজস্ব সংস্কৃতি আর জাতি সত্তাকে তুলে ধরার সাথে সাথে সৃষ্টিশীল চিন্তা গুলো প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়। তাছাড়া আন্তজার্তিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে চলচ্চিত্র সুদূরপ্রসারী ভূমিকা পালন করে। এই চলচ্চিত্রকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয় সকল ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড। তাই চলচ্চিত্রকে বাদ দিয়ে কোন দেশের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড কল্পনা করা যায় না।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র এর ব্যতিক্রম কিছু নয়। সব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড চলচ্চিত্রকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে। এফডিসি কেন্দ্রিক ঢাকাই চলচ্চিত্র হাঁটি হাঁটি পা করে পার করে ফেলেছে কয়েক দশক। এই কয়েক দশকে অসংখ্য ছবি নির্মিত হলেও কোন এক অজ্ঞাত কারনে এই মাধ্যমটি এখন পর্যন্ত শিল্প হয়ে উঠতে পারে নি। যদিও ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে ‘শিল্প’ হিসেবে ঘোষনা দেন। তারপর মে মাসের তিন তারিখ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে জানানো হয়,প্রতি বছর এপ্রিলের তিন তারিখ জাতীয়ভাবে চলচ্চিত্র দিবস পালন করা হবে। এরপর ২০১২ সাল থেকে প্রতি বছরের এপ্রিলের তিন তারিখ চলচ্চিত্র দিবস পালন করা কয়। বিষয়টি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের জন্য আনন্দের বটে। কারন তারা চলচ্চিত্রে শিল্পের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন। এখন প্রশ্ন আসতেই পারে, আসলে কি চলচ্চিত্র শিল্প ঘোষনার ফলে শিল্পের কোন সুবিধা পাচ্ছেন নির্মাতা বা প্রযোজকরা? প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে চলুন জেনে আসি শিল্প হিসেবে চলচ্চিত্রের কি কি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা রয়েছে! এখানে প্রধান দু’টি বিষয়ে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার কথা। প্রথমত,ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ। দ্বিতীয়ত,কর অবকাশ সুবিধা। চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষনার এই আট বছরের চিত্র যদি দেখি তাহলে স্পষ্ট করে দেখা যাবে কোন প্রযোজক চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ব্যাংক ঋণ পাননি বা কোন ছবিকে কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হয়নি। শুধু তাই নয় এই খাতে উল্লেখ করার মতো বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়নি । সুতরাং বলা যায় শিল্পের কোন সুফল পাচ্ছেন না নির্মাতা,প্রযোজকরা।

প্রতি বছরের মতো আজ এফডিসি-তে চলচ্চিত্র দিবস পালিত হচ্ছে। সরকারী এক সিদ্ধান্তের সাথে একমত হতে না পারায় চলচ্চিত্র সংগঠনগুলো আলাদাভাবে এই দিবসটি উদযাপন করছে। ওদিকে সরকারিভাবে এফডিসিতে আয়োজিত হচ্ছে দিবসটি। অভিযোগ- এবারের চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন কমিটির প্রধান হিসেবে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমামের থাকা না থাকা। প্রথমে জানানো হয় উদযাপন কমিটির প্রধান হিসেবে থাকবেন সৈয়দ হাসান ইমাম। পরে আবার তাকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠে। আর তখনই প্রতিবাদ করে চলচ্চিত্র সংগঠনগুলো এবং তারা এই আয়োজনে এফডিসির সঙ্গে না থাকার সিদ্ধান্ত নেন। (সূত্রঃ সারাবাংলা ডট নেট)

এই যে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদযাপনে বিভাজন,রেষারেষি কিংবা শিল্পের সুবিধা না পাওয়া-এসবই প্রমাণ করে দেয় চলচ্চিত্র কেবল চলচ্চিত্রই রয়ে গেছে সেটা শিল্প হয়ে ওঠেনি আজও। শিল্প ঘোষনার পরও যদি এই খাত শিল্পের কোন সুযোগ সুবিধা না পায় তাহলে অর্থ খরচ করে খাওয়া দাওয়া,নাচগান করে দিবসটি উদযাপন করে কোন লাভ নেই। বরং দিন শেষে কিন্তু প্রাপ্তির খাতায় শূন্যই থেকে যাবে।

লেখার প্রথমে উল্লেখিত উক্তিটি আলমগীর কবির প্রায় তিন দশক আগে করেছিলেন। তিনি বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে আশাবাদী ছিলেন বলে হয়তো এমনটি বলেছিলেন। তিনি যদি আজ এই দিনে বেঁচে থাকতেন তাহলে তিনি কথাটি বলার আগে অন্তত পাঁচবার ভাবতেন।

যা হোক কথা বাড়াবো না। শেষ করতে চাই আশাবাদী হয়ে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাস গর্ব করার মতো। শুধুমাত্র অল্প কয়েকটি পদক্ষেপ পারে এদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের চেহারা বদলে দিতে। চলচ্চিত্র আমাদের, তাই একে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টাই পারে চলচ্চিত্র শিল্পের স্থবির অবস্থা দূর করতে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:০৮
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×