somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একলা বিকেল গুলো

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সূর্যের আসল খেলা দেখা যায় দুপুর হেলে বিকেল গড়ালে। দিনের আর অন্য কোন পর্যায়ে দিবাবসানে অত রূপ বৈচিত্র্য নেই যতটা আছে গোধূলী বেলার। অফিস শেষে হুড়াহুড়ি করে বের হই।এত তাড়া কিসের? কোন কাজ আছে ? না তো! দিনান্তের অবশিষ্ট রূপ দেখতে ইচ্ছা করে। কিছুক্ষণ সব তুঙ্গ ব্যস্ততা , উচ্চাভিলাস, দিনের লক্ষ্যভেদের দৌড় শেষ না করতে পারার অতৃপ্তি ভুলিয়ে দেয় দিনশেষের সমাহিত শান্তি। রাস্তায় যানজটে বসে থাকি, তখনকার একমাত্র বিনোদন -মুগ্ধ হয়ে তরল সোনালী লালাভ আলোর দিকে তাকিয়ে ক্লান্তি ভুলতে চেষ্টা করি। এই দৃশ্য পৃথিবী সৃষ্টি সময় থেকে আজও ছুটির পরের সকল শ্রান্তি হরণ করে চলেছে। চিরপুরাতন হয়েও চিরনতুন।জানালায় ভিক্ষা চায় অন্ধ, চলন প্রতিবন্ধী , কুঁজ বিশিষ্ট মানুষেরা। ওদের আমি কখনো কিছু দেই না, দিতে পারিনা। কখন যেন অনেক আগে একসময় পত্রিকায় পড়েছিলাম, এক লোক এভাবে শিশুদের ইচ্ছাকৃত বিকলাঙ্গ করে দেয় ভিক্ষা বৃত্তি করিয়ে উপার্জনের জন্য। সুপ্ত শিশু কোলে অল্পবয়সী শীর্ণ মাদেরকেও কিছু দিতে পারি না। একবার প্রতিবেদন দেখেছিলাম , এরা বাচ্চাকে ক্ষতিকর ঔষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে ভিক্ষার এক্সেসরিজ হিসেবে ব্যবহার করে। জোয়ান একটা মহিলাকে এমনিতে কে ভিক্ষা দেবে? কোলের সন্তান দেখলে সবার মায়া হয়। আমি মানুষটা মনে হয় বেশী সংবেদনশীল । মন খারাপ ভাব নিয়ে ভাবি কাউকে কিছুতেই সাহায্য করতে পারছি না একটুও।এত বাছ বিচার করে করে হাত শূন্যই রয়ে গেল।নিজের পূণ্যের আর অন্যের দৈন্যের।


গোধূলী বেলার রূপ অপূর্ব। অপূর্ণতার নয়।তখন সবাইকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে।এমন পড়ন্ত বেলায় অসহনীয় মন অবশ করে আনা সৌন্দর্য চোখে লেগে থাকা অন্তকরণে তুচ্ছতাকে ঠাঁই দিতে সাধ যায় না।

ঘরে এসে অফিসের ধড়াচূড়া বদলে বেশ জিন্স ফতুয়া কেডস লাগিয়ে নেই। ভাবটা যেন খুব স্বাস্থ্য সচেতন। ধুপধাপ করে নিচে চলে যাই। সারা দিন এসি কক্ষে বসে থেকে বড্ড গুমোট ভাব লেগেছে , আরো কিছুক্ষণ বাইরে থাকলে , খোলা বাতাসে বুকভরা অকৃত্রিম নিতে পারলে প্রাণে পরিশুদ্ধি আসবে।যেহেতু আমার সচেতনতা সজাগ মনেই ভান ছিলো, নিচে গিয়ে একদন্ডে ছুঁড়ে ফেলে দিই।টিপিক্যাল স্বাস্থ্য বিলাসীর মতো জোরে জোরে কদম ফেলি না।তাতে কিছুই দেখা হবেনা। ইতিউতি তাকাতে তাকাতে ধীর মাপা পা ফেলি।

এইতো, কিছুদিন আগে আমি আর বোন মিলে বিকেলে হাঁটতাম। এখন সে চিকিৎসক হবার ব্রত নিয়ে অনেক দূরে।গত দুইবছরে পুরানো জায়গা অনেক বদলেছে , দূরে ছিলাম , ফিরে দেখি আগের ছোট সাথীরা আর কেউ নেই। এখনকারদের সাথে পরিচয় হয়নি।করে নেবার মত সময়ও হয়ে ওঠেনা আজকাল।দরকারই বা কি?একাকী একার মধ্যে ডুবে থাকতেও তো আমার খারাপ লাগে না। পাশে কেউ না থাকলে দূরের মানুষদের অংশ হয়ে যাওয়া যায়। ভিড়ের ভেতর টুপ করে ভিড়ে গিয়ে বেশ হারিয়ে যাওয়া যায়। এই যেমন ধরা যাক, ফুটপাথ ধরে ঐ যে নীল হলুদ কামিজ পরা মেয়েটি হেঁটে হেঁটে আসছে লঘুপায়ে ।সকালের পোশাক এখনো ঝকঝকে, ইস্ত্রি আছে ঠিকঠাক।কিন্তু ওর শ্রান্ত দীন পদক্ষেপ দেখে ভাবতে থাকি মেয়েটার কি আজকে দিনটা বেশ খারাপ গেল? আমার মত চাকরী করে বোধহয় , বস কি তুচ্ছ কারণে নাহক বকুনী দিয়েছে? কেমন অনিচ্ছুক টেনে টেনে পথ চলছে।


কিংবা, ঐ যে বিপরীত দিক থেকে আসছে একটা লোক , কাঁধের উপরে লাঠির দুটি মাথায় মস্ত দুটো বোঝা ঝুলিয়ে নিয়ে দুপদাপ করে হেঁটে চলে যাচ্ছে। গায়ে সাদা শার্ট আর ফ্যাকাশে সবুজ লুঙ্গি। সবই আমার আন্দাজ । কারণ দারিদ্র‌ের অযত্নে এর আসল রং কি ছিল সেটা আর এখন বোঝা যায়না। পরনের পোশাক এর মলিন। কিন্তু চোখেমুখে কোন ক্লান্তি নেই।কেমন জোর কদমে ছুটছে। মুখে একটা স্মিত প্রসন্নতা , প্রায় সামান্য হাসির মতো। কিছু একটা রহস্য লুকিয়ে আছে তাতে।হয়ত ওর সারাদিন হাঁড়ভাঙা খাটুনি শেষে মায়াময় গৃহে ফেরার তাড়না ওকে উজ্জীবিত করে রাখছে। হাতের কাজটা শেষ করতে তাই আর তার তর সইছে না।

কিছু কিছু ছোট মেয়েতে মিলে সামনের ফাঁকা জায়গাটায় এক্কাদোক্কা খেলে ।আশ্চর্য !এখনকার মেয়েরা এত মেয়েমানুষী এখনও ধরে রেখেছে? মনে মনে আমিও ওদের অলক্ষ্যে ছক কাটা ঘরে চারা ছুঁড়ে দিই। যা, ঠিক মতো পড়লো না তো!বৌচি, ফুলটোক্কা, চোর পুলিশ খেলার দিনগুলোর দক্ষতা কি তবে চিরতরেই হারিয়ে গেল নাকি?

কতকগুলো ছেলে মাঠে ফুটবল খেলছে। ছোট মাঠটা। তার মধ্যেই বেশ দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে গেছে।এগারোজন করে জোগাড় করতে পারেনি, দুই দলে চারজন চারজন করে। তাও ভালো লাগে এই কিশোরেরা খেলার সময় পায় বলে। আজকের শিশুকিশোর বেড়ে ওঠে পিসিতে মুঠোফোনে গেমস খেলতে খেলতে।এসবের আবেদন এখনও আছে? আড়চোখে হাঁটতে হাঁটতে খেলা দেখি। ভয়ও লাগে এই তেড়ে আসবে না তো বেকায়দা বলটা? মাঝে মাঝেই সে মাঠের সবুজ গন্ডির ভেতর আর আবদ্ধ থাকতে চায় না, একবার এক সাইকেল ওয়ালার ছুটন্ত সাইকেলের ঘুরন্ত চাকায় গিয়ে লাগলো। অবাক কান্ড! ছেলের দল ভয়ে হইহই করে উঠলো । কিন্তু ঠিকই গতি অপরিবর্তিত রেখে দ্বিচক্রযানের দক্ষ মালিক দিব্যি চালিয়ে নিয়ে গেল।

নিশ্চিতই, মনে মনে ওদের আর সবার মত , আমিও খেলার দলের অংশ হয়ে গেছি। এবং মজার ব্যাপার আমি ভিতরে ভিতরে দুইপক্ষেই আছি। একদল গোল দিলে খেলার রোমাঞ্চে উদ্বেলিত হই, অন্য দলের একটু হতাশায় উত্তেজিত হই।


আকাশজোড়া থরে থরে মেঘের পাল তোলা নীল নদীর দিকে তাকিয়ে হাঁটতে ভালো লাগে। হাত দুটি দুইপাশে ছড়িয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে কালো কালো নাম না জানা পাখির সারি দেখতে দেখতে আর হাঁটত হাঁটতে ভাবি আমিও যেন উড়ছি। আচ্ছা আমরা মানুষেরা যেমন মাঝে মাঝে পথ হারিয়ে ফেলি ওরা কেন হারায় না?দিক তো আমি একদম মনে রাখতে পারি না। ওরা কিভাবে স্মৃতিতে ধরে রাখে গৃহের ঠিকানা?আকশের বুকে ওদের দিনমান বাস, কিন্তু সে তো ক্যামোফ্লাজ করা, ক্ষণে ক্ষণে বর্ণচোরা বিশ্বাসহন্তার আবাস।কত রং এ সময়ের। এক এক সময় মেঘগুলো সিড়ি হয়ে ঢেউ তোলে বিশাল আসমানী পটে। ।কখনো সাদা ধূসর মেঘে আকাশে একপ্রান্ত ছাওয়া। অন্যপ্রান্তে লাল আর নীলের প্রসাধন।কখনো গোল ছোট ছোট তুলার টুকরা সেটে বানানো হরিদ্রা অরুণ নীলাম্বরী নকশি কাঁথার ফোঁড়। কখনো আবার তীব্র সোনার জলে ধোয়া আকাশ । কখনো এসব কিছুই না। স্রেফ একঘেঁয়ে ছাই রঙের বৃষ্টিভেজা চেহারা। অপরিসীম দুঃখ মনে , এখন আবির খেলাবে না সে। কিন্তু আসমানী সাজসজ্জার কমতি পূরণ করে দেয় অপূর্ব চোখ ঝলসানো সবুজ গাছপালা ঘাস লতারা। কেন যেন মেঘলা আকাশের প্রেক্ষাপটেই ওদের সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখায়।


কোন এক শৌখিন মানুষ বাড়ির সামনে গোলাপ বাগান করেছে । সামান্য ব্যাপার, মাটির বেশীরভাগ কংক্রিটের চাদরে ঢাকা,অল্প বেঁচে যাওয়া জায়গায় কয়েকটা গাছ।বেশীরভাগই গোলাপ। ফুল এখনো আসেনি। গাছের গায়ে লাল, হলুদ,গোলাপী , সাদা ইত্যাদি ট্যাগ সেঁটে দেয়া। মনে রাখাতে সুবিধা হবে তাই।মানুষ মালী হয়ে স্বহস্তে লাগালেও এগুলোর পরিচয় মনে রাখতে পারেন না, কিন্তু ফুলের স্রষ্টার ঠিকঠিক মনে রেখে ফুল দিতে কখনো ভুল হয় না।


একটা গাছ আছে ছোট পুকুরটার ধারে। লম্বা ঢ্যাঙ্গা , নিত্তান্ত শ্রীহীন, জানতাম না কি নাম। একদা খুব ঘনঘোর বরষায় চমৎকার কদমফুলে সে মোহিত করে দিলো আমাকে। বাহ! এই গাছে এত ঐশ্বর্য গোপন ছিলো? দেবার মালিক কাউকে রিক্তহস্তে পৃথিবীতে পাঠান না।

শিউলি গাছটার কি যেন সমস্যা আছে। মনের খেয়ালি সারাবছরই সে ফুল দেয়। আর এখনতো এরই সময়।যখন আমি হাঁটি সেই বিকেলে , তখন কিন্তু সাদা সাদা ফুলের কঙ্কাল পড়ে থাকে।সেসব মানুষ পশুপাখি গাড়ির চাকা মাড়িয়ে মাড়িয়ে চলে যাচ্ছে। ফুলবিলাসী মানুষের জন্য দেখা বেশ কষ্টকর ।


শুধু মানুষ না , এক জোড়া হাঁসও আছে একটা ছোট্ট মেয়ের পোষা।দিনে পুকুরে ছাড়া থাকে, রাতে ফ্লাটবাড়িতে থেকে এই বিপুল শৌখিনতা আর বিলাস কিভাবে বজায় রাখে সেই মেয়েটা জানি না। বেশ ভেসে ভেসে ঘুরে বেড়ায় সবুজ ঘোলাটে পানিতে।


ঘুরতে ঘুরতে আমার একটা সোনালী খয়েরী রঙের বিড়ালের সাথে ভাব হয়ে গেছে।প্রথমে বেশ ভয় পাবার অভিনয় সে করে, প্রতিদিনই। তারপরে চিনতে পেয়ে পায়ে পায়ে ঘোরে। মৃদু মৃদু ডাকতে ডাকতে মোলায়েম গা'টা ঘষতে থাকে কেডসের গায়ে। ওর একটা নাম দিয়েছি আমি। থাক , ও নামটা ওর আর আমার মাঝে গোপন। কেউ আশে পাশে না থাকলে শিশুসুলভ হাস্যকর নামটাতে আমি মার্জারটাকে একবার দুইবার ডাকি। মাঝে মাঝে তাকে দেখা যায় না। একদিন দুইদিনের জন্য গায়েব হয়ে যায়।তখন পরের দিনের জন্য অপেক্ষা করি মনে মনে। একদিন বেশ মন খারাপ হলো , একটা বাচ্চাছেলে ওকে আদর করছে। সে বেশ মিউ মিউ করে চাপা উল্লাসে চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে। এগিয়ে যেতে ছেলেটা বললো, এটা ওর বিড়াল, নাম রিকি। ধ্যাত, আমার দেয়া সুইট নামটার বদলে এ কেমন নাম? আর এই বেওয়ারিশ বিড়ালের মালিকানা যে আমি ভেবেছিলাম নিজের তাও দেখলাম আরেকজন দাবীদার। অথচ মুখ ফুটে বলার জোরই বা কই আমার? মানুষ এরকমই, সবখানে খালি অধিকার ফলাতে ভালোবাসে, মনে মনে নিজের করে নেয় যা নিজের নয়, পরে কেবল কষ্ট পাবার বেহুদা বিলাসিতা। নিজের দোষেই সে বার বার অপ্রাপ্যের জন্য দুঃখ পায়।

ছেলেটা ওকে খাবার দেয় আমি তাকিয়ে দেখি। সব দখলের মানসিকতায় কার উপর যেন বেজায় রাগ হয়। বিড়ালটা কেমন অকৃতজ্ঞ' বলতে ইচ্ছা করে।


একটা কুকুর আছে, সেও খুব মিশুক। সবার কাছে যায়। একদিন ছোট ছেলের দল ওকে নিয়ে খেলছিল। নির্ভয়ে গায়ে হাত দিয়ে চাপড় মারায় হাতে খড়খড়ে লোমগুলো ঠেকেছিল। সে আমাকে চিনে ফেলেছে। তবে নাপাক প্রাণী বলে তার ধারে পাশে আমি আর ঘেঁষি না। সে আমাকে রাস্তায় দেখলেই সজাগ হয়ে ওঠে। আড়মোড়া ভেঙে দৌড়ে আসার আগেই তাড়াতাড়ি জোর কদমে এগিয়ে যাই। সে বিমর্ষ মুখে তাকিয়ে আধাপথ অতিক্রম করে পিছু পিছু আসে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। তারপরে আস্তে আস্তে নিজের জায়গায় ফেরত যায়।কোন একটা কিছু তার হিসেবে বুঝি মিলছে না।

আরকটা কুকুর আছে, তার একটা পা একটু ছোট। ওটা উপরের দিকে বেঁকে থাকে। খোঁড়তে খোঁড়াতে সে বাকি তিনটাতে ভর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে অদ্ভূত ভঙ্গিতে পথ চলে। দেখে খুব মন খারাপ লাগে। কিভাবে ওর এই দশা হলো?

আমার সেই পরিচিত বিড়ালটা মধ্যখানে অনেকদিনের জন্য উধাও হয়ে গেল।কে জানে ওর কি হয়েছে।কোন মানুষের নিষ্ঠুরতার শিকার হয় নি তো? আমার স্বজাতি অকারণে নির্মম হয়ে উঠতে, স্যাডিস্ট সাজতে খুব ভালোবাসে। আমি মনে মনে প্রতীক্ষা করতে করতে করতে একসময় ওর কথা ভুলে যাই। একদিন দেখি সিঁড়ির গোড়ায় কতগুলো বিড়াল ছানা খেলা করছে, আমি অনায়াসে পুরানোটির জায়গায় এদের বসিয়ে ফেলে শূন্যস্থান পূরণ করে ফেলি। প্রকৃতি কোন ভারসাম্যহীনতা মেনে নেয় না। অফিস ফেরত একটু কান চুলকে, গলায় মাথায় হাত বুলিয়ে তারপরে প্রাত্যহিক ভ্রমণ শুরু করি। ওগুলো কিন্তু খুব ভীতু। এত ছোট মার্জার শিশু এত ভয় পায় আগে দেখিনি। ঐ বড় বিড়ালটা তো এত ভয় পেত না, পোড়খাওয়া দীর্ঘ জীবনে সে নিশ্চয়ই অনেক মানুষের অনেক অত্যাচারে অভ্যস্ত। এই ছানাগুলো বেলায় এত আতঙ্কের উৎস কি? এদের তো নিয়মিত খাবার দেয়া হয়। রিসেপশনে যে গার্ড থাকে সে সর্বক্ষণ আশে পাশে থাকে। দেখাশোনা করে।এরা তো পোষা বিড়ালের ছানা ।


বিকেলের দিকে হাঁটতে হাঁটতে অযথা অনেক দার্শনিক প্রশ্ন মনে আসে। আবার নিশ্চিহ্ন মুছে যেতেও সময় লাগে না। আগুন সুন্দর আকাশ ধীরে ধীরে দিনের উত্তাপ আর মনের চিন্তাভাবনা দুইটাই দূর করে স্বস্তি দিয়ে যায়। কেমন কমলা হলুদ সর্বগ্রাসী আলো বের হয় মেঘের কোনে কোনে ফাঁকে ফাঁকে।আলোর উৎস এতক্ষণে হারিয়ে গেছে। অন্দরে হিডেন লাইটিং এর লুকোচুরি খেলা সূর্য খেলছে অনন্তকাল ধরে। আমরা স্রেফ এর কাছে শিখেছি এই কিছুদিন হলো।এই হলুদ আলোয় পৃথিবীটা বড় বেশী সুন্দর লাগে। চিরল বিরল সূচালো পাতায় আভা গলে পড়ে আলপনা তোলে প্রান্তরের বাঁকে, ঘাসের ফাঁকে। একেই কি কন্যা সুন্দর আলো বলে? প্রকৃতি কন্যার গায়ে হলুদ সাজ এ। একসময় সব হলুদ লেপে মুছে শুধু অরুন রঙের রাংতায় সমস্তটা ছেয়ে যায়, আর কোথাও কিছু নেই।এতক্ষণে দামাল শাসন- মানি- না ছেলেদের সর্বশেষ দলটিও বিদায় নিয়েছে। আযানের সুর ভেসে আসে।তারার ফুলের কারুকাজে বেগুনী নীল লাল বেনারসি গায়ে জড়িয়ে সন্ধ্যাতারার নাকফুলটি পরে গোধূলী চলেছে।তার নিভৃত মিলনের অভিসার সাঁঝের সাথে রাতের আঁধারে। তাদের একান্ত চিরন্তন গোপনীয়তা নিশার মিশকালো পর্দার অন্ধকারে চির রহস্য হয়ে থাকুক, এই খানেই যবনিকা টানি।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫
২৯টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×