১।
নুরুল আর কবির । ওরা ছিল পাশাপাশি। দুই প্রতিবেশী। দুই বন্ধু। দুই সহযোদ্ধা।অন্ধকারে বসে ছিল, হাতে অস্ত্র নিয়ে। একসময় শুরু হল চরম গোলাগুলি। ঠাঁই ঠাঁই করে আকাশ কাঁপিয়ে খন্ড প্রলয়। যখন যুদ্ধ করছিলো কি ভাবছিলো ওরা মনে মনে? সামনে শত্রু। মুখোমুখি বিপক্ষ। এই মুহূর্তটা আসার আগে হয়ত ওদের পরস্পরের অনেক কারণ ছিলো যুযুদমান হবার , চূড়ান্ত ক্ষণগুলোতে কারণ কিন্তু একটাই । মারো অথবা মরো। প্রথম বারুদের গন্ধ বাতাসে মিশে যাবার সাথে সাথে সাথে সবারই পিছু হঠার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। একদা ওরা কৃষক ছিলো, দুইজনেই ,এখন দক্ষ গেরিলা যোদ্ধা।আরেকটা গুলি ছোঁড়ে নুরুল ।কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে দুইজনেই পরবর্তীটা ছোঁড়ার আগে। যতটা বাঁচিয়ে চলা যায় রসদ। কেউ কি পড়লো ওপাশে? শুধু একটা আর্তনাদ শোনা যায়। আর কিছু বোঝা যায় না। বাকিটা অনুমান , কারো লালে হয়ত কালচে সবুজ মাটি হয়েছে লাল। লাল কি আরও কিছু মনে করায়? অন্য কোন প্রতিক্রিয়া ? নুরুলের খয়েররঙা বাড়িটা যখন জ্বলছিলো তার চারপাশে নেচে নেচে চলেছিল লোলিহান রেখা। লালচে আভায় চারপাশ আলো হয়ে উঠেছিল।
সুফিয়া ওদের কাছে রসদ বয়ে আনে। লুকিয়ে লুকিয়ে খবরও ।তার কাছে শুনেছে সে মুক্তিতে যাবার কারণে কিভাবে তার বাপ ভাই মা বোন -গোটা পরিবারটাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তখনকার লাল লহু কেমন নকশা তুলেছিল উঠানজুড়ে।হিসেব করে করে খরচ করতে হবে জানার পরেও হাত ওর নিশপিশ করে ওঠে সবগুলো গুলি ছুঁড়ে ফেলতে , প্রচন্ড আক্রোশে পায়ের কাছে লটকে থাকা উপবাসী জোঁকের কামড়ও সে অনায়াসে ভুলে যায়।
কবিরের মনেও কি লাল এরকম নিষ্ঠুর কোন দোলা দেয়?দেবার তো কথা ছিল না।কিন্তু নববধূ প্রায় কিশোরী সুফিয়ার সাথে বাসর তো দূরে থাকুক একটা রাতও সে কাটাতে পারেনি। হাতে লাল মেহেদী, লাল চুড়ি , লাল বেনারসির ব্যাখাতীত সৌন্দর্যের কথা সে জানে না। সেই সুফিয়া, ওর বাপ ভাইকে নদীর ধারে দাঁড় করিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল।সে ঘন কালো রাতে অতর্কিতে এই প্রত্যন্ত এলাকায় নীলঝুড়ি গ্রামে মিলিটারী এসেছিল।ওদের বিয়ের দিন সেটা।যুদ্ধের সময় সবাই মেয়ে পার করে দিতে চায়।অবিবাহিত অল্পবয়সী মেয়ে কেউ ঘরে রাখতে চায় না। উৎসবের দিন হলেও তাই তেমন কোন উৎসব ছিলো না। স্রেফ দায়ে পড়া আনুষ্ঠানিকতা।রাতে মিলিটারী এলো অকস্মাৎ,এসে তান্ডব লাগিয়ে দিলো গ্রামে। সুফিয়ার বাবা কুদ্দুস শেখ আর ভাই রাইসুলকে মারার আগে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছিল। লাশ মেলেনি, পানিতে ভেসে ভেসে কোথায় চলে গিয়েছে সে জানেনা।ওদের শোকে কাতর হবার চেয়ে বরং তখন ও ভয়ে পালিয়েছিল। জংলা গাছগুলো অবহেলায় বেড়ে উঠলেও পরম মমতা নিয়ে তাকে আশ্রয় দিয়েছিল।
মেহেদীর কারুকাজ না মুছতেই সুফিয়া অশক্ত হাতে তুলে নিল গ্রেনেড ,গুলি , বোমা, স্টেনগান । শাকসবজির নিচে টুকরির করে এদের সরবরাহ করে।ওর সলজ্জ্ব নববধূর মুখের দীপ্তি কখন মুছে গিয়েছে এমনকি কবিরেরও কাছে- সে জানেনা। যুদ্ধ বড় বেহায়া।সে কোন সম্পর্কের শোভা, আবরু , অবকাশ রাখেনা।সুফিয়া আসে , চুপিসারে জিনিস দিয়ে কেটে পড়ে। এখন ওরা সহযোদ্ধা। ওর হাতের লাল মাটির কালচে রঙে কবে ঢাকা পড়েছে । মালসামান আনার আগে মাঝে মাঝে সে ভারী আগ্নেয়াস্ত্রগুলো হাত দিয়ে ধরে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখে । এগুলো দিয়ে আগামীদিন ,পরশু তরশু কোন মানুষের বুক ভেদ করে দেবে ওরা, বুলেটের জাতপাতের ভেদ নেই। শত্রু মিত্র বোধ নেই। সবাইকেই সে এক হয়ে নির্মম আঘাত হানে। তার চোখে অশ্রু ঝরে না। সে সত্যিকারের সাম্যবাদী।কিন্তু বালিকা থেকে হঠাৎ এক ঝটকায় বুড়িয়ে ওঠা সুফিয়ার অন্তক্ষরণ সারাক্ষণ চিন্তায় দুশ্চিন্তায় রক্তাক্ত হয়। যতক্ষণ কবিরের সাথে থাকে ঐ স্বল্প সময় পরে আলাদা হলেই তার মনের মধ্যেকার স্ত্রী জেগে ওঠে।আজ সে দেখে এসেছে কবিরকে, কালও কি গিয়ে পাবে কিংবা পরের পালা যখন আসবে? আর এই যে গা শিরশিরে করা জিনিসগুলো যাদেরকে ছেদ করে দিয়ে যাবে, তাদের জন্যও কি এমন কেউ বসে আছেনা দূর দেশে - বউ বা প্রেমিকা,মা বা বোন, মেয়ে? দেখে তো মনে হয়না। যাদের পথ চেয়ে এমন কেউ আছে তারা কিভাবে অন্যকে মেরেকেটে উল্লাসে মাতে? এমন জালিম হয়ে ওঠে?
২।
যুদ্ধ বেশ ভালোই চলছিল,মুক্তিবাহিনীর অনুকূলে। হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে। নুরুলের দেহে হঠাৎ যেন সহস্র সাপের বিষের ছোবল পড়ে। বুলেটের সুতীক্ষ আক্রমণে সে নেতিয়ে পড়ে। আর কভার দিতে পারছিলো না। পিছে আরো দুই তিনজনের লাশ পড়ে যায়।অবস্থা বেগতিক। সবাইকে পিছু ফিরতে হবে, কবির কিংকর্তব্যবিমূঢ়।জোর করে ওকে চলে যেতে বলে নুরুল। তার একার চেয়ে এ লড়াই অনেক বড়। অল্প সময়েই প্রচন্ড বেদনায় জ্ঞান হারালো সে।
সজাগ হবার পরে শুভ্র বিছানায় নিজেকে আবিষ্কার করে নুরুল।সারা শরীর জুড়ে অসহ্য অবশ ভাব। এ কোথায় এলো, কেমন করে এলো, অসহায় শুয়ে শুয়ে ভাবে সে।ইদ্রিস নামের একজন এগিয়ে আসে ওর সকল প্রশ্নের জবাব নিয়ে।মুখে সহৃদয় ভরসামাখা আন্তরিকতা। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তুলে এনেছে ওকে। দুশমনদের জন্য লুকিয়ে এই জংলা জায়গায় সবার চোখের অন্তরালে খড়ের চালার নিচে এক গোপন হাসাপাতাল গড়ে তুলেছে। মুক্তিলোককে সেবা দেয় জানতে পারলে ওকে সহ জ্যান্ত কবর দিয়ে দেবে পাকবাহিনী।অবশ্য একে কি হাসপাতাল বলা যায়? একটা মাত্র ডাক্তার সে কেমন করে যেন জোগাড় করেছে। আর কেউ নেই। তবে কিছু ঔষুধ পথ্য আছে, আর ব্যান্ডেজ। ডাক্তারের মুখ বিষন্ন , চোখের দৃষ্টি নিষ্প্রভ তবু হাতের সেবা সযত্ন।ধীরে ধীরে ভালো হয়ে ওঠে নুরুল। তাকে তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে হবে, তার অসমাপ্ত অভিযান তাকে ডাকছে। এখনো পবিত্র মাটি থেকে তাড়িয়ে দিতে হবে হানাদার শকুনিদেরকে।
ওকে সুস্থ দেখে ইদ্রিস নিতে এলো কোন এক সুন্দর সকালে । নুরুল বিদায় নিলো ডাক্তারের কাছ থেকে। বের হয়ে লৌহ কঠিন হাতে ইদ্রিস ওকে গাড়িতে তোলে। কিছু বলার বা জিজ্ঞেস করার সুযোগই পায় না নুরুল। অবাক হয়ে ইদ্রিসের মুখের দিকে তাকায়।সে মুখে এখন ইস্পাত শীতল নিস্পৃহ নিষ্ঠুরতা।জিপের সতর্ক প্রহরীর বন্দুকের মুখে বসে নিরাপদে সবার অগোচরে মিলিটারি ক্যাম্পে পৌঁছে নুরুল আর ইদ্রিস।
সাব, ইয়েই ও মুক্তি হ্যায়।বহুত খতরনাক আদমি।
সাব্বাশ, তুম বহত আচ্ছা কাম কিয়া। ইনাম মিলেগা।
ইদ্রিস উৎফুল্ল মনে নুরুলকে হানাদারহস্তে সমর্পণ করে ফিরে যায়। ওর কাজ এখানে শেষ হয়েছে। এত লুকোছাপা করে ওকে আড়াল করা, পৃথক চিকিৎসা, সবই যাতে ওকে ওর সহযোদ্ধা কেউ ছিনিয়ে নিয়ে না যায়। এরকম অঘটন তো দুএকটা আগেও ঘটেছে।গাঁয়ের লোকেরাও মুক্তির পক্ষে। টের পেলে কি হতো বলা যায় না। মুক্তি আসলেই খুব খতরনাক । মালাউন ডাক্তারটাকে হাত করা গেছে ওর পরিবারকে জিম্মি করে। যতদিন ওর বোনটা তাদের কাছে আছে বিশেষ করে তার জন্যই সে টুঁশব্দটিও করবে না-এটাই নিশ্চিন্তি।
-------
মেজর আকবরের জিজ্ঞাসাবাদে কিছুতেই মুখ খোলে না নুরুল। ওর সদ্য বুজে আসা ক্ষত আবারও আঘাতে আঘাতে সজীব হয়ে ওঠে।
৩।
যুদ্ধ শেষ।অনেকে ফিরে এসেছে। অনেকে আসেনি। কবির ফিরেছে চিরতরে একটা পা হারিয়ে।ওর নিজের বাড়িতেও না গিয়ে সে ছুটে আসে প্রথমেই সুফিয়ার কাছে।নিজের বাবার বাড়িতে বা বলা যায় বাড়ির অবশিষ্ট ধ্বংসস্তুপে আশ্রয় নিয়েছে সে।কবির ক্রাচে ভর দিয়ে দিয়ে বউয়ের সামনে দাঁড়ায়।সুফিয়া ওকে দেখেও নড়ে না। তাকিয়ে থাকে নিস্পলক। পাথরের চোখ।দেখে গায়ে কাঁটা দেয়। তবে কি ও যা শুনেছে সব সত্যি?-ধরা পড়েছিল সুফিয়া। সম্ভ্রম হারিয়েছে। কবিরের তো গেছে শুধু একটা পা, সুফিয়ার গেছে সবই।
থমকে দাঁড়ায় কবির। দাঁড়িয়েই থাকে। অনেকক্ষণ। অনেক বছর, অনেক যুগ পার হয়ে যায় ওদের মধ্যে। তবু মাঝখানের কয়েক গজি দূরত্বটা অনতিক্রম্য।পলক না ফেলে সে আস্তে আস্তে পিছু ফেরে। খোঁড়াতে খোঁড়াতে বের হয়ে যায় দাওয়া , উঠান , বেড়া পার হয়ে। দূরে আরও দূরে। যদি ফিরত , একটু আগাত হয়ত সুফিয়ার পাথর হয়ে যাওয়া অনাবৃষ্টির চোখে খরার কলঙ্ক ঝরিয়ে অঝোর বর্ষণ হতো। কিন্তু কবির থামে না , ফেরে না। হাঁটে দ্রুত আরও দ্রুত ।যতটুকু গতি তার সাহায্যকারী পা নিতে পারে।ভুলে যায় এখন নিজের আগের অবস্থার মতো জুলুম ওটায় সইবে না।
-------
টানবাজারের এক মলিন কক্ষে বসেছিল রুপালী। হলুদ আলোতে তার ক্ষয়াটে যৌবনের মৃত অবশেষ আরও বীভৎস দেখাচ্ছিল। রং মেখেছে সে ওটা ঢাকতে যথাসাধ্য। তাতে ওকে আরও খারাপই দেখাচ্ছে। তাতে অবশ্য ওর বা ওর খদ্দের কারোরই মাথাব্যাথা নেই। রূপালীর একমাত্র চিন্তা ওর বাচ্চাটাকে নিয়ে , আজকাল চেহারা খারাপ হয়ে পড়ায় ওর খাবার ,খরচ জোটানো বেশ মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। ওর খদ্দেরের মাথাব্যাথা নেই কারণ সে এখন পাড় মাতাল।তার কাছে এই মুহূর্তে রূপহীনা রুপালী আর ক্যাটরিনা কারিনায় কোন তফাৎ নেই। একটা অশ্লীল উক্তি করে সে রুপালীকে কাছে টানে। ওর উরুতে হাত বুলায়। সন্তর্পণে কাপড়টা সামান্য টানে রূপালী। না লাজ শরমের বালাই এতদিন পরে তার আর নেই।অনেক অনেক বছর আগের ক্ষতটা লুকানোর চেষ্টা আছে শুধু। সে আর জন্মের কাহিনী সে কবেই ভুলে গেছে। তবু দাগটা মাঝে মাঝে তাকে অস্পষ্ট ইঙ্গিত দিতে চেষ্টা করে, সে কখনো, কোন এক জীবনে সুফিয়া নামের একটি গ্রাম্য বালিকা ছিলো।এর ওর পরামর্শে বিশ্রী দাগটা সে অনেক মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে।কিন্তু লোশন, ক্রিম , টোটকা ফন্দি কিছুতে কাজ দেয় নি।
কবির দাওয়ায় বসে ছিল। ক্রিম সোনালী আমন্ত্রণপত্রটায় সে হাত বুলায়। মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা হবে বড় শহরে। এত দিন পরে ওদের ডাক পড়েছে বড় মঞ্চে। নিশ্চয়ই গত শীতে সে রিপোর্টার ছেলেটা এসেছিল গ্রামে তার কাজ এটা। তার সাথে কথাটথা বলে ফিরে গিয়ে লিখেছিল ওদের কাগজে।
হাতের সাহায্যকারী কাঠামোটায় ভর করে করে আস্তে আস্তে আগায় কবির। ওর কাঁচাপাকা দাঁড়ি, মলিন পাঞ্জাবি , ও নিজেই খুব বেমানান এই লাল গালিচা মোড়া বড় মিলনায়তনে। বহুকষ্টে সামনের সারির একটা আসনে বসে পড়ে। পিছনে যেতে আর পা টানছে না। একটু আরাম করে হাতপা ছড়িয়ে দেয়। তখনও বেশ ফাঁকা মিলনায়তন। এখনও সবাই এসে পৌঁছায় নি। কোথা থেকে হন্তদন্ত হয়ে তেড়ে আসে এক সুট টাই পড়া সুদর্শন ছোকরা। প্রায় ধমক দিয়ে বলে, এখানে বসেছেন কেন? এটা ভিআইপি সিট। যান পিছনে যান। আপনার কার্ডে দেখেন নম্বর দেয়া আছে। কবির ছানিতোলা চোখে ভালো দেখতে পায় না, কই, কোথায় লেখা আছে? খুব বিরক্ত হয়ে ছেলেটা নিজেই দেখেশুনে ওকে বসিয়ে দেয় সঠিক সিটে। একে একে সব অতিথিরা আসে। সংবর্ধনা চলছে।সবাইকে মঞ্চে সনদ সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। ঝিমুনি ভাবের মধ্যে কবির একসময় নিজের নামটা শুনতে পেরে সচকিত হয়ে ওঠে। ধীর পায়ে খাঁড়া হয়। হাঁটতে শুরু করে স্টেজের দিকে। তাকায় সামনে। একি? ও কি চোখে ঠিক দেখছে? রাজাকার ইদ্রিস মোল্লা হাসিমুখে দাঁড়িয়ে। এখন অনেক মোটাসোটা হয়েছে , চেহারায় আরামে থাকা জীবনের জৌলুস।তবু চেনা যায়। সবার হাতে হাত মিলাচ্ছে, খামে মোড়া শুভেচ্ছা তুলে দিচ্ছে।
আর আগাতে পারে না কবির। একটু টলে ওঠে।ওর অবশিষ্ট পা'টা অনেক বছর আগের মত আবারও আঁটকে গেছে, গেঁথে গেছে মেঝের সাথে। আবার পিছু ঘুরতে যায় সে । বহু বছর আগের মত। কিছু কিছু মানুষের নিয়তি থাকে পলায়নের, বার বার পালিয়ে যাবার। যেতে বাধ্য হওয়ার।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৭