অনেককে দেখা যাইতেছে, এই মহত্ত্বপূর্ণ দৃষ্টটারে স্মরণীয় করে রাখতে হুজুররে সালাম দিতে ভুল করছে না। হুজুরও হাসিমুখে সালামের উত্তর নিতে নিতে রংসাইডে বাইক চালানোর অন্যায়টি বেমালুম ভুইলা যাইতেছে। বিষয়টারে বাদাম থিকা খোসা ছড়ানোর মতো হালকাভাবে নিতেছে পাবলিক। ভাবতেছে হুজুরই তো, গেলে যাক উল্টাপথে! কী আসে যায় একজন হুজুর গেলে। তারচে বড় কথা, সে যাইতেছে কাচুমাচু করে, ভয়ে ভয়ে ব্রেক কষে। কারো কোনো সমস্যা তো করতেছে না!
কথায় আছে, বাপেরও বাপ আছে। তেমনটাই দেখা গেলো রাস্তায়। সালামের পর সালাম নিতে থাকা হুজুর হঠাৎ সালাম দিয়ে বসলো একজন পাগড়িঅলা জবরদস্ত বুজুর্গ ব্যক্তিকে। তাদের সাথে কোনো পূর্বপরিচয় নাই। মূলত তার পোষাকই উল্টাপথের হুজুরের থিকা সালাম পাওয়ার দাবিদার। তারা মুখোমুখি বসিবার নাটোরের বনলতা সেনের মতো মনে হচ্ছে বহুদিনের পরিচিত। কথা চলছে ব্যস্তসড়কের মাঝেই, হঠাৎ দেখার মতো চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।
পাগড়িঅলা হুজুর তারে বলতেছে, সোজা রাস্তা দিয়া ঘুইরা আসতে। আধা কিলোমিটার দূরত্বে ইউটার্ন আছে, সেই দিশাও দিলো তারে। ব্যক্তিজীবনে পাগড়িহুজুর নিয়মের বড়ই তাবেদার, একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার কথা হইল, হুজুররা সমাজের নিয়মনিষ্ঠ রক্ষক, এখন আপনেরাই যদি নিয়মের ভক্ষক হয়া যান, তাইলে কেমনে কি? এই নিয়া তাদের মাঝে তুলকালাম হইতে হইতে মানুষদের চোখ তাদের দিকে মিড়মিড় কইরা তাকায়া আছে। এরই মধ্যে মানুষদের মাঝে গুঞ্জন উইঠা গেলো, হুজুররাই তো হুজুররে দেখতে পারে না...
আমি চিন্তা করলাম, এক হুজুর রংসাইড দিয়া আসতেছে বইলা সাধারণ মানুষ তার দিকে সহানুভূতিশীল হয়া সাইড দিয়া যাইতেছে। সে হয়ত মনে মনে ভাবতেছে, হুজুর মানুষ একটু আধটু সুবিধা নিতেই পারি! জনগণের সম্মান আর আস্থা এবং তাদের মনে হুজুরদের প্রতি সেন্সিটিভ জায়গাটারে পুঁজি কইরা এমন এক্সট্রা সুবিধা নিলে কী আর হইব! কিন্তু আরেক হুজুর যিনি নিয়মের খুব তাবেদার। তিনি বিষয়টারে ছাইড়া দিতে পারে নাই, তিনি তারে ধইরা বসলেন। ফল যা দাঁড়ালো, হুজুররাই হুজুররে দেখতে পারে না...
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৯