somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রিকি
ছোটো প্রাণ,ছোটো ব্যথা >ছোটো ছোটো দুঃখকথা >নিতান্তই সহজ সরল >সহস্র বিস্মৃতিরাশি প্রত্যহ যেতেছে ভাসি>তারি দু-চারিটি অশ্রুজল>নাহি বর্ণনার ছটা ঘটনার ঘনঘটা> নাহি তত্ত্ব নাহি উপদেশ> অন্তরে অতৃপ্তি রবে সাঙ্গ করি মনে হবে>শেষ হয়ে হইল না শেষ

এম. এস. ধোনি দ্য আনটোল্ড স্টোরি----দ্য ম্যান ইউ নো, দ্য জার্নি ইউ ডোন্ট :) :) :)

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



“You only live once, but if you do it right, once is enough.”


জীবনে সাফল্য লাভের জন্য ইচ্ছা শক্তি, পরিশ্রম আর একাগ্রতার কোন বিকল্প নেই। আমরা মনে করি, মানুষের নিয়তিই মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নিয়তির থেকেও এক ধাপ এগিয়ে যে জিনিসটার দরকার পড়ে তা হলো কখনও হার না মানার পণ। মহেন্দ্র সিং ধোনির জীবনটা ঠিক এমনই ছিল...মচকাবো তবুও ভাঙবো না। স্বপ্নকে তিনি বাস্তবে রুপান্তর করেছেন। এখানে বলে রাখা ভালো, আমি কোন পার্টিকুলার ক্রিকেট টিমের সাপোর্টার না। সুতরাং ধোনির গোঁড়াভক্ত হিসেবে না বায়োপিককে বায়োপিক হিসেবেই দেখেছি। আজ তাঁরই জীবন নির্ভর বায়োপিক এম এস ধোনি দ্য আনটোল্ড স্টোরির খুঁটিনাটি দিক নিয়ে আলোচনা করবো।




রাঁচি শহরের পাম্প অপারেটর পান সিং ধোনির ঘর আলো করে আসে ছোট সন্তান মহেন্দ্র সিং ধোনি। স্কুলে ফুটবল খেলাতে তার পারদর্শিতা থাকলেও কখনও সে ক্রিকেট পছন্দ করত না। একদিন তার স্কুলের শিক্ষক ব্যানার্জির আমন্ত্রণে স্কুল ক্রিকেট টিমের প্র্যাক্টিস সেশনে গেলে ক্রিকেটের সাথে তার সখ্যতা শুরু হয়ে যায়। সে ফুটবল টিমে গোলকিপার হওয়ায় তার কৌশল দেখে ঊইকেটকিপার হিসেবে তাকে ট্রেইনিং দেয়া হয়। তার শুরুটা এমনই ছিল, যতদিন না সে নিজের গরজে ব্যাট ধরে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলো। পাশাপাশি পড়াশুনাটাও সে ঠিকঠাকভাবে চালিয়ে যাচ্ছিল। এভাবে সে নিজের যোগ্যতায় এবং পারিপার্শ্বিক মানুষের সহায়তায় এগিয়ে যেতে থাকে। তাঁর জীবনের চড়াই উতরাই এর কাহিনীই এম.এস ধোনি দ্য আনটোল্ড স্টোরি। আনটোল্ড...যে কথা যায়না বলা। হ্যাঁ...ব্যাটসম্যান-উইকেটকিপার এই মানুষটার জীবন একেবারে সহজ ছিল না। অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে তিনি আজকের অবস্থানে এসেছেন। আর্থিক অবস্থা ভালো না হবার কারণে কখনও চাকরির পাশাপাশি ক্রিকেট প্র্যাক্টিস চালিয়ে নিজের জীবন কাটিয়েছেন তো কখনও প্রিয়জনকে হারিয়ে ভেঙ্গে পড়েছেন। স্বপ্নের কন্টকময় রাস্তাটা পার করেই যে তিনি আজকের অবস্থানে এসেছেন পুরো সিনেমাতে সেটাই রয়েছে। সর্বোপরি এম এস ধোনি দ্য আনটোল্ড স্টোরি...এক সাধারণ মানুষের অসাধারণ হয়ে উঠার এবং স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার গল্প। এ গুড বায়োপিক টু ওয়াচ। “The man you know, the journey you don’t.”




সিনেমার কিছু ভালো দিক এবং খারাপ দিক:

প্রত্যেকটি সিনেমার ভালো দিক এবং কিছু খারাপ দিক থাকে। যদিও আমি গড়পড়তা ভাবে সিনেমার প্রতি নিজের মনোভাব লিখে যায়, কিন্তু আজকে প্রথমবারের মত আমার মতে সিনেমার ভালোলাগা-খারাপলাগা দিকের বিষয়গুলো তুলে ধরব।

ভালো দিক:

সিনেমার সব থেকে যে দিকটি আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে তা হলো, এখানে ধোনিকে মহানায়ক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়নি। কিছু কিছু বায়োগ্রাফি সিনেমায় দেখা যায়, সিনেমার প্রটাগনিস্টের জীবনের শুধু পজিটিভ কিংবা শুধু নেগেটিভ দিকগুলোকেই তুলে ধরা হয়, এখানে তা নেই---গল্পটি জীবনের দুটো দিকের সমন্বয়েই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এখানে ধোনি সাধারণ মানুষ, যার জীবনে ঊর্ধ্বগতিও আছে, নিম্নগতিও আছে। সুপারম্যান ইফেক্ট ব্যবহার করে ‘ফিকশনে সবকিছু সম্ভব’ এই কাজ করা হয়নি। এই ক্ষেত্রে পরিচালক নিরজ পান্ডে যথেষ্ট ভালো কাজ করেছেন। কার লেখাতে যেন পড়েছিলাম, নিরজ নিউট্রাল ভাবে এই সিনেমা বানিয়েছেন, গোঁড়াভক্ত হিসেবে নয়। কথাটি ঠিক। কোন কোন সিনেমায় দেখা যায়, নায়ক গাড়ি ধরতে পারছে না, পরিচালক ১ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে তাকে তিন তিনটা রুট পার করিয়ে এনে গাড়ি ধরিয়ে দেন...এম. এস ধোনি গাড়ি ফেল করার গল্প!! আমার ভালো লেগেছে এই দিক। দ্বিতীয়ত, ব্যাক্তি ধোনির পাশাপাশি খেলোয়াড় ধোনির সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। তার চালচলন বলতে গেলে ভালোই খেয়াল করেছে নায়ক সুশান্ত সিং রাজপুত।

খারাপ দিক:

সিনেমার খারাপ দিক যেটা লেগেছে তা হলো সিনেমার দৈর্ঘ্য। সিনেমার প্রয়োজনেই এই কাজ করা হয়েছে কিনা না অন্য কোন কারণে, সিনেমাটা একটু বেশিই দীর্ঘ সময়ের হওয়ায় মাঝখানে খেই হারিয়ে ফেলেছিলাম। দ্বিতীয় সমস্যা, ফার্স্ট হাফ আমার কাছে সেকেন্ড হাফের তুলনায় ভালো লেগেছে। সেকেন্ড হাফে সিনেমাটা কিছুটা ডকুমেন্টারির দিকে মোড় নিয়েছে, এটা অ্যাভয়েড করা যেত হয়ত। তৃতীয় সমস্যা, ফিনিশিং। সিনেমার হুট করে শেষ হয়ে যাবার বিষয়টি ভালো লাগেনি আমার। শেষ হয়ে হইল না শেষের মত ফিনিশিং...শেষ করার পর মনে হচ্ছিল, কলাকুশলীদের নামের সাথে হয়ত বাকি সিনেমা আছে!! এই সিনেমার এন্ডিং কেন জানি ভালো লাগেনি আমার।




এম. এস ধোনি দ্য আনটোল্ড স্টোরি কীভাবে হলো:

ধোনির উপরে বায়োপিক নির্মাণের ব্যাপারটি প্রথমে ধোনির ম্যানেজার অরুণ পান্ডের মাথায় এসেছিল। ২০১১ সালের ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনালের পর এয়ারপোর্টের এক ঘটনায় তার মাথাতে হঠাৎ করেই এই আইডিয়াটা নাড়া দিয়েছিল। এয়ারপোর্টে এক বাচ্চা ছেলে ধোনিকে প্রেরণাদায়ক কিছু বলতে বলেছিল। তার উত্তরে ধোনি তার কাছে এগিয়ে গিয়ে হাঁটু ভাঁজ করে বসে ৫ মিনিট তার সাথে কথা বলেছিল। তার ম্যানেজার অরুণ পান্ডে তাকে পরে জিজ্ঞেস করেছিল, কেন সে নিজের মূল্যবান সময় সেই বাচ্চাকে দিয়েছিল। অরুণের প্রশ্নের জবাবে ধোনি বলেছিল, তার জবাব তাকে প্রেরণা দেবে এবং সামনে এগোতে সাহায্য করবে। অরুণ পান্ডে তখন তাকে বলেছিল, তার জীবনের গল্পটা যদি সবার সামনে তুলে ধরা হয় তাহলে হাজার হাজার বাচ্চা আর কিছু না হলেও বড় হবার প্রেরণা পাবে। এম. এস ধোনি আনটোল্ড স্টোরির গল্পটা ঠিক এভাবেই শুরু হয়েছিল। তার দুই বছর পরে, ধোনির সম্মতিতে সিনেমার প্রাথমিক কাজ শুরু হয় এবং বেবি সিনেমা পরিচালনা করার সময় নিরজ পান্ডেকে অ্যাপ্রোচ করা হয়। পান্ডে ধোনির জীবনের খুঁটিনাটি জানার জন্য অনেক কয়জনকে নিয়োগ করেছিল এবং ধোনি নিজে এই সিনেমার কন্সালট্যান্ট হয়েছিল। ধোনিকে যখন সিনেমা তৈরির ব্যাপারে প্রথমে রাজি করানো হয়েছিল সে শুধু একটা কথাই বলেছিল, “Don’t misinterpret me. Show me as I am.” এম এস ধোনি দ্য আনটোল্ড স্টোরিতে আর কিছু না হলেও তার কথাটা রাখা হয়েছে। সে যেমন তাকে সেভাবেই উপস্থাপন করা হয়েছে, অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়নি ।




M. S Dhoni: The Untold Story (2016)

IMDB rating: 8.3/10
Genre: Biography/ Sport/ Drama
Cast: Disha Patani, Sushant Singh Rajput, Kiara Advani
Country of Origin: India


**** এই লেখা সম্পূর্ণ রূপে আমার… পূর্বের কোন লেখার সাথে মিলে গেলে তা একান্তই co-incidence….no resemblance. আশা করি পোস্টটি ভালো লাগবে !!!! =p~ =p~=p~=p~
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৩
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×