somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিহান ও বৃন্তির গল্প

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





রিহান ছাদে এর এক কোনে বসে আছে .... সে এখানে নতুন এসেছে ... তার আন্টির বাসায় :) এখন থেকে সে এখান থেকেই পড়ালেখা করবে DU তে :) । ছাদের এই জায়গা বেশ সুন্দর করে সাজানও যেন ও কোন এক পরী এসে এই স্থান টা সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে :) হঠাৎ পিছন থেকে একটা মেয়ের কন্ঠ :-

এ যে মিস্টার এখানে বসে আছেন কেন ?
ভাল লাগেতেছে তাই :)
ভাল লাগলে বসতে হবে ?
খারাপ লাগলে তো বসার কথা না :(
সরেন এখান থেকে .... এখানে প্রতিদিন আমি বসি
তো কি ?
তো কি মানে ? সরতে হবে এখান থেকে :)
সরি কানেকশান এরর :( ট্রাই এগেন লেটার
মানে কি ?
মানে অন্যদিকে বসেন
আমি পারব না , আপনি সরে বসেন
আপনি পারবেন না , তো আমি পারব কি করে ?
প্লিজ সরেন এখান থেকে :)
কেন ?
এই জায়গাটাতে আমি বিকালের সময় টুকু পার করি
ও তাই ?
হুম
তো এত সুন্দর করে সাজিয়েছে কে ?
আমি যেহেতু এখানে বসি সেহেতু আমি এ তো হব , আর কে আসবে সাজাতে ?
না মানে , অন্য কেও সাজাতে পারে
না আমি নিজেই সাজিয়েছি
ওহ দারুন
তো এত সুন্দর করে সাজালেন কি করে ?
জানিনা , ফুল গাছ গুলো আদরে তোলা তো তাই তারা উপহার হিসেবে স্থান টিকে . সুন্দর করে দিয়েছে :)
তাই বুঝি ?
হুম
বাই দা ওয়ে , আমি রিহান .. নীলা আন্টি দের বাসায় আসছি :)
আমি বৃন্তি , থার্ড ফ্লোরে থাকি :)
ও কিসে পড়েন ?
ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার , আপনি ?
আমি DU তে , এবার এডমিশন নিলাম , এই প্রথম ঢাকায় আসা , আগে CTG তে . . থাকতাম :)
ওহ
ওকে , নাইস টু মিট ইউ , সি ইউ লেটার :) নাও বাই :)
ইউ টু :)

রিহান নেমে গেল ছাদ থেকে :) এই বাসা নীলা আন্টিদের আর ওদের বাসায় আসছে রিহান । কত কথা ভাবছে বৃন্তি ছেলেটাকে নিয়ে । অথচ অন্যদিন এখানে একা বসে বসে ফুলগুলো এর সাথে সময় যেত বৃন্তির । আজ আর ফুলগুলোর সাথে কথা বলছে না সে ... বসে আছে অন্যমনস্ক হয়ে । দেখতে দেখতে সূর্যটা হারিয়ে যেতে শুরু করল । বৃন্তি ও নেমে এল .. আর তার বিশ্রামের সময় নেই .. পড়াশোনার চাপ অনেক :) আর কোন কিছুর চিন্তা করার সময় ও নেই তার ।



পরের দিন :) আজ বৃন্তি তাড়াতাড়ি এসেছে ... এসেই শুরু হয়ে গেল ফুল গুলোর সাথে খেলা :) আজকে তার ক্লাস ছিলো না , শুধু শুধু কলেজে গেছে সে ... মন খারাপ করে বাসায় এসেছে এখন মন ভাল করার লক্ষ্যে এখানে আসা আর টাইম পাস করা :) তার হাতে একটা খাতা আর পেন্সিল ... কি যেন আঁকছে সে :) অনেক দুর আকার পর হঠাৎ পেছন থেকে

ঐদিকে একটা ফুল কম হল তো ...

চমকে গেল বৃন্তি , পিছন ফিরে তাকাতেই সে ছেলেটা

হাই বৃন্তি
হাই
কেমন আছও ?
ভাল , আপনি ?
হুম ভাল ... খুব সুন্দর আর্ট কর ও তো
ধন্যবাদ :)
মাই প্লেজার ... আজকে এত তাড়াতাড়ি ছাদে , কালকে আমি স্থান টা দখল
. নিয়েছিলাম তাই আজ যাতে নিতে না পারি তাই ?
. না না আসলে এমন টা নয় ... আজকে ক্লাস ছিলো না .. তাই একটু
. আগেইআসলাম
সত্যি ?
হুম >>>>>




আর এভাবে আস্তে আস্তে শুরু তাদের ভালবাসার গল্প .. প্রপোজ টা করেছিলো রিহান
... না করতে পারে নি বৃন্তি :) জানত না শেষ কোথায় তবুও কাছে টেনে নিল রিহানকে :) আর তাদের পথ চলার গল্প এগিয়ে চলছে ..

কয়েক বছর পর
আজ রিহান চলে যাচ্ছে USA তে , তাই বৃন্তির সাথে দেখা করতে এসেছে , বৃন্তি কাঁদছে শুধু ... তারপর ও বিদায় দিতে হবে রিহান কে :) কিছু করার নেই রিহানের ... বৃন্তিকি নিয়ে সুখের দিন কাটাতে হলে তার লাইফটাকে উচ্ছ পর্যায়ে নিতে হবে :)

রিহান USA গেল আজ তিন বছর ... এ ৩ বছরে রিহান একটি বারও বৃন্তি এর সাথে যোগাযোগ রাখেনি ... বৃন্তি এখন অনেক বদলে গেছে .. কারও সাথে কথা বলে না সবসময় একা একা থাকে .... বৃন্তির সে সাজান বাগানে সব গুলো ফুল আজ মৃত । কারণ সেখানে বৃন্তির চোখের পানি ছাড়া আর কিছু ঝরে না আর সে নোনা পানিতে গাছ গুলো মাথা তুলে তাকাতে পারে না । সে সুন্দর জায়গা টা আজ অন্যরকম ... এখন সেখানে আছে শুধু এক রাশ কষ্ট আর কিছুই না । বৃন্তি এখন মেডিকেল কলেজে পড়ে । সে চেষ্টা করে অতীত ভুলতে কিন্তু সে ব্যার্থ , সে অতীত গুলো তাকে একটু একটু করে পুড়ছে আজ ... সে পিছু টানে সআজ ও দাড়াতে পারছেনা :) সে চাপা কষ্ট নিয়ে সে চলছে একা একা .. তার সঙি নেই কেও :( থাকবে বা কি করে কাওকে কাছ আসতে দেয় নি বৃন্তি । অনেক প্রশ্ন আজ বৃন্তির মনে , কিন্তু করবে কাকে ? কে দেবে তার প্রশ্নের উত্তর ? যে দেওয়ার সে তো আজ অনেক দুরে ..... নীলা আন্টিকে অনেক বার জিজ্ঞেস করার পরও কিছু জানতে পারে না বৃন্তি । আজ সে একা বড় একা তার একমাত্র সঙি বলতে তার চোখের পানি , না ? চোখের পানি বললে ভুল হবে , সে আজ শুকিয়ে এসেছে :’( তার একমাত্র সঙি এক রাশ অসহ্য চাপা কষ্ট :) আর এ নিয়ে কোনরকমে চলছে বৃন্তি ।

আজ বৃন্তির একুশ তম জন্মদিন :) কাল রাতে কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল সে নিজেও জানেনা , সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে তার ফোনে একটা নিউ এসএমএস ।
Unknow Number : Happy Birthday to you :)
বৃন্তি অবাক , তার ফোন নাম্বার তো রিহান ছাড়া আর কেও তো জানেনা ? তাহলে এ কে ? ফিরতি কল দিল বৃন্তি :) রিং হচ্ছে ........... ওপাশ থেকে
হ্যালো
হ্যালো কে ?
আমি আরফিন
সরি
আমি আরফিন , আপনার ইয়ার মেট
আমার ইয়ারমেট ?
হুম
আমার নাম্বার ফেলেন কোথায় ?
ঐটা গোপন থাক না :)
কেনও ?
থাক না গোপন ...
কল টা কেটে দিল বৃন্তি :) তার মাথায় এখন একি চিন্তা .. তার ইয়ারমেট তার ফোন নম্বর আর বার্থডে তারিখ কিভাবে জানে ? যাই হোক অনেক দিন পর কি যানি কি মনে করে ফেবু তে লগিন করল ... তার ফেবু তো আজ অনেক নোটিফিকেশন .. সবাই তার ওয়ালে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাল ... সবাইর শুভেচ্ছা তে লাইক দিয়ে একটা করে ধন্যবাদ কমেন্ট করে যেই বের হতে যাবে অমনি খেয়াল করল একাট ম্যাসেজ তার ইনবক্স এ :) অবাক হল কারণ ম্যাসেজ টা সে আরফিন এর .. ফ্রেন্ড লিষ্টে নেই আরফিন । কি মনে করে জানি গেল ও আরফিন এর আইডি তে :) এবার তার মনে পড়তেছে এই আফরিন কে এ্ই সে ছেলে যে সবসময় বৃন্তির দিকে তাকিয়ে থাকে সারাটাখন । যাকে একটু বিরক্তি এই লাগে বৃন্তির । ছেলেটার চেহারায় একটা অন্যরকম মায়া ... কোন না কোন কারনে বৃন্তির মন টা কাড়ে সে চেহারা .. কারণ সে চেহাররা মাঝে কিছুটা রিহানের ছবি দেখতে পাই বৃন্তি । আজকে একটু লেট করে কলেজে যায় বৃন্তি একটা ছোট কাজে তার দেড়ি হয়ে যায় .... কলেজে গিয়েও সে একটু বেশি এ অবাক হয় .. ক্লাসে কেও নেই ... দ্বিতীয় ত বৃন্তির একটা স্বভাব প্রতিদিন লাস্টের বেঞ্চ টা তে বসার ... আজ যেই বসতে গেল দেখল সেখানে কিছূ ফুল রাখা , একটা বার্থডে উইস কার্ড আর সাথে একটা কাগজ মোড়ানো কি একটা জানি ... সেখানে ছোট একটা কাগজে লেখা
“ এটা আপনার জন্য
.................. বৃন্তি ”
যে বৃন্তি খুলতে যাবে অমনি তার সব বন্ধুরা তাকে উইস করতে করতে ক্লাসে ঢুকল ... তার আর গিফট টা খোলা হল ও না ... বন্ধুরা ছোট খাট করে একটা পার্টি দিল .... প্রতিবছর এই দিনে সে একটু ভাল থাকে কিছু সময়ের জন্য সে কষ্টটা ভুলে থাকতে পারে .. এভাবে আজ তার দিন টা চলে গেলও .. বিকালে আসল বাসায় ... কোন ও কারণে আজ তার চাঁদে যাওয়া হয়নি , অনেক ক্লান্ত ছিল ও সে কলেজ থেকেই ফিরেই ঘুমিয়ে পড়ল সে ... মায়ের ডাকে চোখ মেলল সে ..
কিরে আজ অসময়ে শুয়ে পড়লি কেন ও ?
এমনি ?
খারাপ লাগতেছে ?
না আম্মু :)
কয়টা বাজে জানিস ?
কয়টা ?
৮.০০ টা
এতক্ষন ডাকনি কেন ?
তুই এসেই ঘুমিয়ে পড়লি তাই ডাকলাম না আর কি :(
আমার মন টা খারাপ
কেন ?
আজ আমার জন্মদিন আর তোমরা আমকে উইস কর নাই :(
রাগ করিস না আসছিলাম রাতে তুই গভীর ঘুমে ছিলি অনেক ডাকলাম তুই শুনলি না ... সরি রে
ঠিক আছে মা , খুব খিদে পেয়েছে খেতে দাও :)
আগে কেক টা কেটে নে ... তোর বাবা আসতেছে ...
অতঃপর কেক কাটা আর বাবা মার সাথে কিছুটা আনন্দ ভাগাভাগি করে বৃন্তি ... রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে যে ঘুমোতে যাবে তখনি তার চোখে পড়ল সে গিফট টা ......
গিফট টা খুলে সে আজকের দিনের সবথেকে বড় অবাক হল সে ..... অনেক ক্ষনের জন্য সে যেন নিস্তব্দ ছিল :)

অনেক ক্ষন পড়ে বৃন্তি নিস্তব্দতা থেকে ফিরেছ , সে শক্ত হয়ে জমে গেছে .. তার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে সে কিছুই বুঝে উঠতে পারছেনা .. কি হচ্ছে এসব তার সাথে ? আর কেনই বা এমন হচ্ছে ???
তার চোখের কোনে শুকিয়ে যাওয়া সত্বে ও এক ফোঁটা অশ্রু বাসা করে নিল ... কখন যে সেন্স লেস হয়ে গেল সে নিজেও বুঝতে পারল না :)
জ্ঞান ফেরার বৃন্তি তাকে হাসপাতালের বেডে আবিষ্কার করল :o পাশে তার মা বসা .. মা কাঁদতেছে
আম্মু কাঁদছ কেন ?
কই নাতো :(
কিছু লুকাচ্ছ ?
না লুকোব কেন ?
তাহলে
না এমনি চোখে কি যানি পড়ল
তাই ? আমার কি হয়েছিল ?
কিছু না মামনি .. এমনি সেন্স লেস হয়ে গেছিলি

হুম
আম্মু বাসায় যাব , প্লিজ
হুম জাবি তো , একটু সুস্থ হয়ে নে , নে এই গরম দুধ টুকু খেয়ে নে :)
অতঃপর ৫ ঘন্টা পড় বাসায় পিড়ল বৃন্তি :) আম্মু আমাকে একটু একা ছাড়বে ? প্লিজ
হুম মামনি
তার মা তাকে একা রেখে বের হয়ে গেল ... তখনি বৃন্তি সে গিফট টাকে আবার দেখছে , এই সে গিফট যেটা বৃন্তি রিহানকে USA যাওয়ার সময় পড়ে দিয়ে ছিল ... আর এইটা সে ছবি যেটা তার দুজন এয়ারপোর্টে তুলেছিল :) তাহলে এগুলো এই আফরিন ছেলেটার কাছে কি করে ? প্রশ্ন গুলো তার মাথায় শুধু ঘোর পাক খাচ্ছে :) কেন এমন টা হচ্ছে .. এটা কি বাস্তব ? নাকি সপ্ন ? কোনটা ধরবে সে ? অনেক শক্ত করল সে নিজেকে :) তাকে খুজে পেতেই হবে এরকম হচ্ছে কেন ???
পরদিন খুব তাড়াতাড়ি কলেজে উপস্থিত :)
এই সায়েম শুনত
হুম , কি বল ?
আরফিন কে দেখেছিস ?
না তো ... দেখিনি ?
ও তাই ?
কেন রে ?
খুব দরকার :) কিছু জানিস কেন আসেনি ?
হুম ... কাল রাতে ম্যাসেজ দিয়েছিল বলল আজকে আসবে না :)
কবে আসবে কিছু বলছে ?
না , দাড়া একটা কল দি
লাভ নেই .. সুইচ অফ
ওহ
আচ্ছা কিছু জানলে আমাকে জানাস ....
ওকে


*** একে একে সাতটা দিন শেষ এখন ও আরফিন কলেজে আসল না :( অনেক দিন বৃন্তির ছাদে যাওয়া হয়না :( শেষ কবে গিয়েছিল সে ভুলেই গেছে .... অথচ আগে ছাতে না গেলে তার দিনি যেত না :(
আজ অনেক দিন পর বৃন্তি ছাদে এল ... কিন্তু সে কনফিউজড এটা কি সে ছাদ ? যেখানে সে আসত , নাকি কোন স্বর্গের একটা স্থান সে বুঝতে পারছে না :( মাত্র কিছু দিন আগে ও এখানে ছিল কিছু মৃত প্রায় ফুল গাছ .. ছিল অন্যরকম এক পরিস্থিতি , সে বুঝতে পারছে না কে সাজাল এত সুন্দর করে ? সে খেয়াল করল এখানে একটা কাগজের ফুল গাছ আছে :) সে গাছের প্রতিটি পাতায় অস্পষ্ট ভাষায় কি জানি লেখা আছে সে পড়তে চেষ্টা করার আগে খেয়াল করল গাছের নিছে একটা কাগজ আছে । সে কাগজ টা হাতে নিল আর পড়া শুরু করল , আর এটা পড়তে পড়তে তার দুচোখ বেয়ে পানি ঝড়তে শুরু করল ...
সেখানে লেখা ছিল
“ প্রিয় বৃন্তি .............
আমি রিহান , আশা করি ভাল আছ , জানি খুব অভিমান আমার উপরে , প্লিজ ভুল বুঝোনা আমায় । তুমি যে টিঠিটি পড়ছ সেটা ২০১৪ এর ১৪ ফেব্রয়ারী তে লেখা । আমার হাতে আর সময় ছিল ও অল্প কিছু দিন , সত্যি বলতেছি তোমাকে খুব ভালবাসি , এতটা ভাল হয়ত কেও তোমাকে আমার মত করে বাসতে পারবে না । আমাকে ক্ষমা করে দিও আমি তোমার কাছ থেকে অনেক কিছু লুকিয়েছি । আমাকে স্বার্থপর ও বলতে পার ও কারণ আমি এই পৃখিবীকে থাকবনা জেনেও তোমাকে ভালবেসেছি , শুধু নিজের জন্য । নিজের চলে যাওয়ার কষ্টটা ভুলে থাকতে তোমার মাঝে হারাতে চেয়েছি । চেয়েছিলাম কিছু টা ভালবাসার সুখ নিয়ে জীবণ টা শেষ করতে । হুম আমি ফেরেছি তবে তোমাকে খুব কষ্ট দিয়ে গেলাম । প্লিজ আমাকে মাপ করে দেওয়ার চেষ্টা করবা :) জানি মাপ চাওয়ার ও যোগ্য না আমি তবে হুম আমি তোমাকে সত্যিই খুব ভাল বেসেছিলাম তোমাকে । তোমার জন্যই পৃথিবীতে আমি আরও কয়েকদিন বাঁচতে ছেয়েছিলাম তাইতো বাঁচার আশাও না থাকা স্বত্তেও তোমার জন্য আমি আজ এত দুর এসেছি শুধু এই উছিলায় আর আল্লহর কৃপায় যাতে সুস্থ হয়ে যায় । কিন্তু না আল্লাহর মর্জি না আমি এই পৃথিবীতে আর কয়েক টা দিন থাকি :) তাইতো শত চেষ্টার পরও আমি থাকতে পারলাম না এই সুন্দর পৃথিবীতে । আজ কে যখন ঘুম ভাঙলো তখন আমি খুবি অবাক হলাম । আজকের তারিখ টা দেখে ... কত সুন্দর তারিখ ১৪.০২.২০১৪ । তোমার জন্য ফুল কিনতে পারতাম কিন্তু কিনি নাই কারন এ্ই ফুল পচে যাবে তাই ফুল না কিনে এই প্লাস্টিকের ফুল গাছটা পাঠালাম তোমার জন্য .. কারন এটা সহজে নষ্ট হবে না .. এই গাছটার প্রতিটি কৃত্তিম পাতায় পাতায় আমার ভালবাসা আছে । আরও অবাক হলাম কেন জানও আমি আজ প্রায় দেড় বছর পর ঘুম থেকে উঠছি । ঘুম থেকেই উঠে মা বাবার পড়ে তোমার কথা মনে পড়েছে । প্লিজ আমাকে মাপ করে দিও , ভুল বুঝ না আমায় ।অনেক কষ্টে তোমার কাছে এই চিঠিটা লিখলাম ... কষ্টটা কেনও জান ডক্টর আমার হাতে কত্ত কিছু লাগিয়ে দিয়েছি হাতটা চালাতে পারছি না । তুমি হয়ত ভাববা এত দিন তোমাকে কল দি নাই কেন ও । কিবাবে কল দিব ? আমর কাছে কোন ও ফোন নাই .. আর ফোন থেকেও লাভ কি ? মুখের ভেতর কত্ত বড় একটা পাইপ লাগিয়ে দিয়েছে । ও আচ্ছা একটা কথা বলতে ভুলে গেছি । তোমার জন্য একটা ডায়েরী দিয়েছি আমি ... এটা পড়িও তবে একটা শর্ত মোটেও কান্না করতে পারবে না । কান্না যদি করও আমি উপর থেকে কষ্ট পাব :) আর হ্যাঁ আরফিন আমার ছোট ভাই ... ও আমার কথায় তোমার জন্য এত সব কিছু করেছে । আর কষ্ট হচ্ছে অনেক , লিখতে পাড়ছি না । আলবিদা বৃন্তি । আলবিদা এই সুন্দর পৃথিবী । ভাল থেক আমার জন্য অনেক কষ্ট পেয়েছ , আবার ও তোমার কাছে মাপ চেয়ে নিচ্ছি । ডায়েরী টা পড়তে ভুলো না ”

নীল ডায়েরী
আগষ্ট 2006
আজ প্রথম নীলা আন্টির বাসায় গেলাম । আমি ছাদ খুব পছন্দ করি তাই খাওয়া দাওয়ার পরে বিকাল করে ঘুরে আসতে গেলাম ছাদ থেকে । ছাদ এর এক কোণা খুব সুন্দর করে সাজান ও খুব সুন্দর সুন্দর ফুলের গাছ । ছাদের এই স্থান টা যে কারও পছন্দ হবে । হঠাৎ দেখি একটি মেয়ে আমার সাথে এসে ঝগড়া শুরু করে দিল ।এই মাসে আমার সাথে মেয়েটার খুব ভাব জমে গেল ও ।
সেপ্টেম্বর 2006
আজকে আমার চেক আপ এর তারিখ । 2008 এর দিকে আমার ক্যান্সার ধরা পড়ে । যে কোন সময় মারা যেতে পারি । আর যদি তা না হয় তাহলে হাতে সময় বেশি নেই । আমাকে পৃথিবী ছাড়তেই হবে ।

অক্টোবর 2006
মেয়েটাকে উদানিং আমার খুব ভাল লাগে । খুব দুর্বল হয়ে গেছি তার প্রতি । পৃথিবীতে আমি আর বেশি দিন নেই । তাই মেয়েটাকে আপন করতে পারছি না । পড়ালেখা টা করি শুধু নিজেকে সব কিছুর মাঝে হারিয়ে রাখতে ... আর না হয় কেন ই বা এই পড়া লেখা ?
নভেম্বর 2006
মেয়েটাও সম্ভবত আমার প্রতি দুর্বল । কিন্তু বুঝব কি করে ? বন্ধু বুদ্ধি দিল কয়েক দিন ছাদে না যেতে আর আমি তা বাড়িয়ে প্রায় 15 দিন ছাদে যায়নি ।
ডিসেম্বর 2006
মেয়েটা বসে আছে .. আচ্ছা আমি এমন মেয়ে মেয়ে করছি কেনও ? ওর তো একটা নাম আছে , হুম ওর নাম বৃন্তি । সে ফুফিয়ে কাঁদছে । চুপি চুপি পো ফেলে তার কাছে হেটে গিয়ে বুঝলাম । হেই , চমকে উঠে সে । চোখের পানি মুছে পেলে ..
কেমন আছেন ? কোথায় ছিলেন এতদিন ?
হঠাৎ আপনি ? বাসায় গিয়েছিলাম :)
সরি । বলে যেতে পারতেন :)
সরি আমার ভুল হয়ে গেছে ( বুঝলাম মেয়েটা দুর্বল আমার প্রতি । )
আপনার ফোন নম্বার টা দেন :)
কিছু না ভেবে .. 018*****76
ধন্যবাদ ।

ফেব্রয়ারী 2007
৭ তারিখ ... একশত গোলাপ আমার জন্য । আমি হেরে গেলাম আমি শুধু একটা নিয়ে আসছি .. :(
8 তারিখ ... সে প্রপোজ করবে ভেবে আসছে , আমি করে দিলাম :)
14 তারিখ : কি আর বলব ??? এই থেকে শুরু আমার এত কষ্টের মাঝে অন্য এক জীবণ ।
মার্চ 2007 থেকে ডিসেম্বর 2009 : এত কিছু ডায়েরী তে লিখব কি করে ???

জানুয়ারি 2010
একটু অসুস্থ বেশি হয়ে পড়েছি .. বৃন্তিকে বুঝতে দি না । এখন মেয়েটাকে হারাতে চায়না , তাকে কষ্ট দিতে ও চায়না । আমি যদি মরে যায় মেয়েটা অনেক কষ্ট পাবে । আমার কেন জানি বাঁচার ইচ্ছা টা বেড়ে গেছে । বাবা ও বুঝতে পারছে ব্যাপার টা । এবার আমার চিকিৎসা USA তে , ওখানে কি জানি করবে । মেয়েটাকে কি বলে যাব ? এক বন্ধুর বুদ্ধিতে সকলারশীপ পেয়েছি বলে তাকে রাজি করিয়েছি । তাকে বলেছি তোমাকে সুখি করতে আমাকে তো স্যাটেল হতে হবে । তবু ও মানছিল না অনেক কষ্টে মানালাম ।
ফেব্রুয়ারী 2010
আজকে বিদায় নিচ্ছি ... সবার কাছ থেকে .. আমার সাথে শুধু আমার মা আর বাবা যাচ্ছে । এটা নীলা আন্টি ছাড়া আর কেও জানেনা ।
এপ্রিল 2010
আজকে আমার প্রথম অপারেশন .... যদি আল্লাহর ইচ্ছা হয় তাহলে হয়ত ভাল হয়ে যাব ।

**** সূর্য এর আলো দেখতে পাচ্ছি । পাশে দেখি মা বসে আছে । আমার সামনে কান্না মানা ওনার , না হলে মনে হয় কেদেই দিত । আবার ঘুমিয়ে পড়লাম .. কতক্ষন ঘুমালাম মনে নেই :) ঘুম থেকে উঠে তাকালাম ক্যালেন্ডার দিকে আজকের তারিখ টা 14.02.2014 । কত দিন ঘুমালাম আমি ??? শুনতে পেলাম আমার হাতে সময় আর মাত্র কিছু দিন । হাত কাপছে কিছু লিখতে পারছি না ।
সবাই এসেছে আমার সাথে দেখা করতে । ভাই টাকে ও দেখতে পাচ্ছি , সবার চোখে পানি । সবার থেকে একটু সময় চাইলাম .. ভাইটার সাথে অনেক কথা আছে । আর লিখতে পারছি না .. ডক্টর আমার হাতে কত্ত কিছু লাগিয়ে দিয়েছে .. হাতটা ও চালাতে পারছি না । মুখের ভেতর কত্ত বড় একটা পাইপ আমার রিকুয়েষ্ট এ কিছুক্ষনের জন্য খুলে দেয়া হয়েছিল ।

এই ডায়েরি টার লেখা এখানেই শেষ .. এতে আর লেখা হবে না :) শুধু পড়া হবে । আর বৃন্তির জন্য আমার শেষ ম্যাসেজ ।
“ বৃন্তি , অনেক রেগে থাকতে পার ও আমার উপর ... তোমার অধিকার আছে । একটা কথা বলব .. সত্যিই যদি আমাকে ভালবেসে থাক তাহলে আমাদের ভালবাসার দোহাই । তুমি অঘটন কিছুই করবা না :) আমাকে ভুলে তোমার নিজের সুন্দর একটা জীবণ গড়বা । আর যদি তা না করতে পারও তাহলে আমি এখান থেকে অনেক কষ্ট পাব ”


*** এবার সে ডায়রিটা বৃন্তি লেখা শুরু করল ***
ফেব্রয়ারি 2020 :
আমি সব ভুলতে অনেক চেষ্টা করলাম তবে পারলাম না ... জানি না কি করব ?? কারন তোমাকে ভুলতে না পারলে তুমি অনেক কষ্ট পাবে । তোমাকেই ভুলতেই হবে । আর তাই সে গড়ে তুললাম একটা এতিম খানা .. “ রিহান এতিম খানা ” অবসর সময় এই ছোট ছোট এন্জেল গুলোর সাথেই কাটাই । আমি এখন একজন সফল ডক্টর । ক্যান্সার স্পেসেলিষ্ট । এখন আমার একটা ছোট ফ্যামিলি ও আছে । একটা ছেলে আর একটা মেয়ে আছে । মেয়েটার নাম নিশি আর ছেলেটার নাম অহর । আমি এখন অনেক অনেক টাই খুশি ।




প্রায় ৩ বছর পর । সত্যিই বৃন্তি আজ অনেক অনেক খুশি ।একটা এক্সিডেন্টের পড়ে সে অতীত সম্পূর্ন ভাবে ভুলে গেছে । সে এখন একজন গৃহিনী । ছেলেমেয়ে আর স্বামীকে নিয়ে তার এখন অন্যরকম এক সুখি পরিবার । সময় ফেলে তার স্বামী তাকে সে এতিম খানায় নিয়ে যায় .. এতিম খানাটা এখন তার স্বামী সোহেল দেখাশোন করে ।



রিহানের একটা কথা শেষ পর্যন্ত সঠিক এ হল । তার ডায়েরি টা এখন আর কেও লেখার নেই .. শুধু পড়ার আছে । ওহ একটা কথা ভুলেই গেছি এখন আর বৃন্তির নাম বৃনিত নেই । তার নাম এখন স্নেহা ।

রিহান ছাদে এর এক কোনে বসে আছে .... সে এখানে নতুন এসেছে ... তার আন্টির বাসায় :) এখন থেকে সে এখান থেকেই পড়ালেখা করবে DU তে :) । ছাদের এই জায়গা বেশ সুন্দর করে সাজানও যেন ও কোন এক পরী এসে এই স্থান টা সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে :) হঠাৎ পিছন থেকে একটা মেয়ের কন্ঠ :-

এ যে মিস্টার এখানে বসে আছেন কেন ?
ভাল লাগেতেছে তাই :)
ভাল লাগলে বসতে হবে ?
খারাপ লাগলে তো বসার কথা না :(
সরেন এখান থেকে .... এখানে প্রতিদিন আমি বসি
তো কি ?
তো কি মানে ? সরতে হবে এখান থেকে :)
সরি কানেকশান এরর :( ট্রাই এগেন লেটার
মানে কি ?
মানে অন্যদিকে বসেন
আমি পারব না , আপনি সরে বসেন
আপনি পারবেন না , তো আমি পারব কি করে ?
প্লিজ সরেন এখান থেকে :)
কেন ?
এই জায়গাটাতে আমি বিকালের সময় টুকু পার করি
ও তাই ?
হুম
তো এত সুন্দর করে সাজিয়েছে কে ?
আমি যেহেতু এখানে বসি সেহেতু আমি এ তো হব , আর কে আসবে সাজাতে ?
না মানে , অন্য কেও সাজাতে পারে
না আমি নিজেই সাজিয়েছি
ওহ দারুন
তো এত সুন্দর করে সাজালেন কি করে ?
জানিনা , ফুল গাছ গুলো আদরে তোলা তো তাই তারা উপহার হিসেবে স্থান টিকে . সুন্দর করে দিয়েছে :)
তাই বুঝি ?
হুম
বাই দা ওয়ে , আমি রিহান .. নীলা আন্টি দের বাসায় আসছি :)
আমি বৃন্তি , থার্ড ফ্লোরে থাকি :)
ও কিসে পড়েন ?
ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার , আপনি ?
আমি DU তে , এবার এডমিশন নিলাম , এই প্রথম ঢাকায় আসা , আগে CTG তে . . থাকতাম :)
ওহ
ওকে , নাইস টু মিট ইউ , সি ইউ লেটার :) নাও বাই :)
ইউ টু :)

রিহান নেমে গেল ছাদ থেকে :) এই বাসা নীলা আন্টিদের আর ওদের বাসায় আসছে রিহান । কত কথা ভাবছে বৃন্তি ছেলেটাকে নিয়ে । অথচ অন্যদিন এখানে একা বসে বসে ফুলগুলো এর সাথে সময় যেত বৃন্তির । আজ আর ফুলগুলোর সাথে কথা বলছে না সে ... বসে আছে অন্যমনস্ক হয়ে । দেখতে দেখতে সূর্যটা হারিয়ে যেতে শুরু করল । বৃন্তি ও নেমে এল .. আর তার বিশ্রামের সময় নেই .. পড়াশোনার চাপ অনেক :) আর কোন কিছুর চিন্তা করার সময় ও নেই তার ।



পরের দিন :) আজ বৃন্তি তাড়াতাড়ি এসেছে ... এসেই শুরু হয়ে গেল ফুল গুলোর সাথে খেলা :) আজকে তার ক্লাস ছিলো না , শুধু শুধু কলেজে গেছে সে ... মন খারাপ করে বাসায় এসেছে এখন মন ভাল করার লক্ষ্যে এখানে আসা আর টাইম পাস করা :) তার হাতে একটা খাতা আর পেন্সিল ... কি যেন আঁকছে সে :) অনেক দুর আকার পর হঠাৎ পেছন থেকে

ঐদিকে একটা ফুল কম হল তো ...

চমকে গেল বৃন্তি , পিছন ফিরে তাকাতেই সে ছেলেটা

হাই বৃন্তি
হাই
কেমন আছও ?
ভাল , আপনি ?
হুম ভাল ... খুব সুন্দর আর্ট কর ও তো
ধন্যবাদ :)
মাই প্লেজার ... আজকে এত তাড়াতাড়ি ছাদে , কালকে আমি স্থান টা দখল
. নিয়েছিলাম তাই আজ যাতে নিতে না পারি তাই ?
. না না আসলে এমন টা নয় ... আজকে ক্লাস ছিলো না .. তাই একটু
. আগেইআসলাম
সত্যি ?
হুম >>>>>




আর এভাবে আস্তে আস্তে শুরু তাদের ভালবাসার গল্প .. প্রপোজ টা করেছিলো রিহান
... না করতে পারে নি বৃন্তি :) জানত না শেষ কোথায় তবুও কাছে টেনে নিল রিহানকে :) আর তাদের পথ চলার গল্প এগিয়ে চলছে ..

কয়েক বছর পর
আজ রিহান চলে যাচ্ছে USA তে , তাই বৃন্তির সাথে দেখা করতে এসেছে , বৃন্তি কাঁদছে শুধু ... তারপর ও বিদায় দিতে হবে রিহান কে :) কিছু করার নেই রিহানের ... বৃন্তিকি নিয়ে সুখের দিন কাটাতে হলে তার লাইফটাকে উচ্ছ পর্যায়ে নিতে হবে :)

রিহান USA গেল আজ তিন বছর ... এ ৩ বছরে রিহান একটি বারও বৃন্তি এর সাথে যোগাযোগ রাখেনি ... বৃন্তি এখন অনেক বদলে গেছে .. কারও সাথে কথা বলে না সবসময় একা একা থাকে .... বৃন্তির সে সাজান বাগানে সব গুলো ফুল আজ মৃত । কারণ সেখানে বৃন্তির চোখের পানি ছাড়া আর কিছু ঝরে না আর সে নোনা পানিতে গাছ গুলো মাথা তুলে তাকাতে পারে না । সে সুন্দর জায়গা টা আজ অন্যরকম ... এখন সেখানে আছে শুধু এক রাশ কষ্ট আর কিছুই না । বৃন্তি এখন মেডিকেল কলেজে পড়ে । সে চেষ্টা করে অতীত ভুলতে কিন্তু সে ব্যার্থ , সে অতীত গুলো তাকে একটু একটু করে পুড়ছে আজ ... সে পিছু টানে সআজ ও দাড়াতে পারছেনা :) সে চাপা কষ্ট নিয়ে সে চলছে একা একা .. তার সঙি নেই কেও :( থাকবে বা কি করে কাওকে কাছ আসতে দেয় নি বৃন্তি । অনেক প্রশ্ন আজ বৃন্তির মনে , কিন্তু করবে কাকে ? কে দেবে তার প্রশ্নের উত্তর ? যে দেওয়ার সে তো আজ অনেক দুরে ..... নীলা আন্টিকে অনেক বার জিজ্ঞেস করার পরও কিছু জানতে পারে না বৃন্তি । আজ সে একা বড় একা তার একমাত্র সঙি বলতে তার চোখের পানি , না ? চোখের পানি বললে ভুল হবে , সে আজ শুকিয়ে এসেছে :’( তার একমাত্র সঙি এক রাশ অসহ্য চাপা কষ্ট :) আর এ নিয়ে কোনরকমে চলছে বৃন্তি ।

আজ বৃন্তির একুশ তম জন্মদিন :) কাল রাতে কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল সে নিজেও জানেনা , সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে তার ফোনে একটা নিউ এসএমএস ।
Unknow Number : Happy Birthday to you :)
বৃন্তি অবাক , তার ফোন নাম্বার তো রিহান ছাড়া আর কেও তো জানেনা ? তাহলে এ কে ? ফিরতি কল দিল বৃন্তি :) রিং হচ্ছে ........... ওপাশ থেকে
হ্যালো
হ্যালো কে ?
আমি আরফিন
সরি
আমি আরফিন , আপনার ইয়ার মেট
আমার ইয়ারমেট ?
হুম
আমার নাম্বার ফেলেন কোথায় ?
ঐটা গোপন থাক না :)
কেনও ?
থাক না গোপন ...
কল টা কেটে দিল বৃন্তি :) তার মাথায় এখন একি চিন্তা .. তার ইয়ারমেট তার ফোন নম্বর আর বার্থডে তারিখ কিভাবে জানে ? যাই হোক অনেক দিন পর কি যানি কি মনে করে ফেবু তে লগিন করল ... তার ফেবু তো আজ অনেক নোটিফিকেশন .. সবাই তার ওয়ালে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাল ... সবাইর শুভেচ্ছা তে লাইক দিয়ে একটা করে ধন্যবাদ কমেন্ট করে যেই বের হতে যাবে অমনি খেয়াল করল একাট ম্যাসেজ তার ইনবক্স এ :) অবাক হল কারণ ম্যাসেজ টা সে আরফিন এর .. ফ্রেন্ড লিষ্টে নেই আরফিন । কি মনে করে জানি গেল ও আরফিন এর আইডি তে :) এবার তার মনে পড়তেছে এই আফরিন কে এ্ই সে ছেলে যে সবসময় বৃন্তির দিকে তাকিয়ে থাকে সারাটাখন । যাকে একটু বিরক্তি এই লাগে বৃন্তির । ছেলেটার চেহারায় একটা অন্যরকম মায়া ... কোন না কোন কারনে বৃন্তির মন টা কাড়ে সে চেহারা .. কারণ সে চেহাররা মাঝে কিছুটা রিহানের ছবি দেখতে পাই বৃন্তি । আজকে একটু লেট করে কলেজে যায় বৃন্তি একটা ছোট কাজে তার দেড়ি হয়ে যায় .... কলেজে গিয়েও সে একটু বেশি এ অবাক হয় .. ক্লাসে কেও নেই ... দ্বিতীয় ত বৃন্তির একটা স্বভাব প্রতিদিন লাস্টের বেঞ্চ টা তে বসার ... আজ যেই বসতে গেল দেখল সেখানে কিছূ ফুল রাখা , একটা বার্থডে উইস কার্ড আর সাথে একটা কাগজ মোড়ানো কি একটা জানি ... সেখানে ছোট একটা কাগজে লেখা
“ এটা আপনার জন্য
.................. বৃন্তি ”
যে বৃন্তি খুলতে যাবে অমনি তার সব বন্ধুরা তাকে উইস করতে করতে ক্লাসে ঢুকল ... তার আর গিফট টা খোলা হল ও না ... বন্ধুরা ছোট খাট করে একটা পার্টি দিল .... প্রতিবছর এই দিনে সে একটু ভাল থাকে কিছু সময়ের জন্য সে কষ্টটা ভুলে থাকতে পারে .. এভাবে আজ তার দিন টা চলে গেলও .. বিকালে আসল বাসায় ... কোন ও কারণে আজ তার চাঁদে যাওয়া হয়নি , অনেক ক্লান্ত ছিল ও সে কলেজ থেকেই ফিরেই ঘুমিয়ে পড়ল সে ... মায়ের ডাকে চোখ মেলল সে ..
কিরে আজ অসময়ে শুয়ে পড়লি কেন ও ?
এমনি ?
খারাপ লাগতেছে ?
না আম্মু :)
কয়টা বাজে জানিস ?
কয়টা ?
৮.০০ টা
এতক্ষন ডাকনি কেন ?
তুই এসেই ঘুমিয়ে পড়লি তাই ডাকলাম না আর কি :(
আমার মন টা খারাপ
কেন ?
আজ আমার জন্মদিন আর তোমরা আমকে উইস কর নাই :(
রাগ করিস না আসছিলাম রাতে তুই গভীর ঘুমে ছিলি অনেক ডাকলাম তুই শুনলি না ... সরি রে
ঠিক আছে মা , খুব খিদে পেয়েছে খেতে দাও :)
আগে কেক টা কেটে নে ... তোর বাবা আসতেছে ...
অতঃপর কেক কাটা আর বাবা মার সাথে কিছুটা আনন্দ ভাগাভাগি করে বৃন্তি ... রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে যে ঘুমোতে যাবে তখনি তার চোখে পড়ল সে গিফট টা ......
গিফট টা খুলে সে আজকের দিনের সবথেকে বড় অবাক হল সে ..... অনেক ক্ষনের জন্য সে যেন নিস্তব্দ ছিল :)

অনেক ক্ষন পড়ে বৃন্তি নিস্তব্দতা থেকে ফিরেছ , সে শক্ত হয়ে জমে গেছে .. তার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে সে কিছুই বুঝে উঠতে পারছেনা .. কি হচ্ছে এসব তার সাথে ? আর কেনই বা এমন হচ্ছে ???
তার চোখের কোনে শুকিয়ে যাওয়া সত্বে ও এক ফোঁটা অশ্রু বাসা করে নিল ... কখন যে সেন্স লেস হয়ে গেল সে নিজেও বুঝতে পারল না :)
জ্ঞান ফেরার বৃন্তি তাকে হাসপাতালের বেডে আবিষ্কার করল :o পাশে তার মা বসা .. মা কাঁদতেছে
আম্মু কাঁদছ কেন ?
কই নাতো :(
কিছু লুকাচ্ছ ?
না লুকোব কেন ?
তাহলে
না এমনি চোখে কি যানি পড়ল
তাই ? আমার কি হয়েছিল ?
কিছু না মামনি .. এমনি সেন্স লেস হয়ে গেছিলি

হুম
আম্মু বাসায় যাব , প্লিজ
হুম জাবি তো , একটু সুস্থ হয়ে নে , নে এই গরম দুধ টুকু খেয়ে নে :)
অতঃপর ৫ ঘন্টা পড় বাসায় পিড়ল বৃন্তি :) আম্মু আমাকে একটু একা ছাড়বে ? প্লিজ
হুম মামনি
তার মা তাকে একা রেখে বের হয়ে গেল ... তখনি বৃন্তি সে গিফট টাকে আবার দেখছে , এই সে গিফট যেটা বৃন্তি রিহানকে USA যাওয়ার সময় পড়ে দিয়ে ছিল ... আর এইটা সে ছবি যেটা তার দুজন এয়ারপোর্টে তুলেছিল :) তাহলে এগুলো এই আফরিন ছেলেটার কাছে কি করে ? প্রশ্ন গুলো তার মাথায় শুধু ঘোর পাক খাচ্ছে :) কেন এমন টা হচ্ছে .. এটা কি বাস্তব ? নাকি সপ্ন ? কোনটা ধরবে সে ? অনেক শক্ত করল সে নিজেকে :) তাকে খুজে পেতেই হবে এরকম হচ্ছে কেন ???
পরদিন খুব তাড়াতাড়ি কলেজে উপস্থিত :)
এই সায়েম শুনত
হুম , কি বল ?
আরফিন কে দেখেছিস ?
না তো ... দেখিনি ?
ও তাই ?
কেন রে ?
খুব দরকার :) কিছু জানিস কেন আসেনি ?
হুম ... কাল রাতে ম্যাসেজ দিয়েছিল বলল আজকে আসবে না :)
কবে আসবে কিছু বলছে ?
না , দাড়া একটা কল দি
লাভ নেই .. সুইচ অফ
ওহ
আচ্ছা কিছু জানলে আমাকে জানাস ....
ওকে


*** একে একে সাতটা দিন শেষ এখন ও আরফিন কলেজে আসল না :( অনেক দিন বৃন্তির ছাদে যাওয়া হয়না :( শেষ কবে গিয়েছিল সে ভুলেই গেছে .... অথচ আগে ছাতে না গেলে তার দিনি যেত না :(
আজ অনেক দিন পর বৃন্তি ছাদে এল ... কিন্তু সে কনফিউজড এটা কি সে ছাদ ? যেখানে সে আসত , নাকি কোন স্বর্গের একটা স্থান সে বুঝতে পারছে না :( মাত্র কিছু দিন আগে ও এখানে ছিল কিছু মৃত প্রায় ফুল গাছ .. ছিল অন্যরকম এক পরিস্থিতি , সে বুঝতে পারছে না কে সাজাল এত সুন্দর করে ? সে খেয়াল করল এখানে একটা কাগজের ফুল গাছ আছে :) সে গাছের প্রতিটি পাতায় অস্পষ্ট ভাষায় কি জানি লেখা আছে সে পড়তে চেষ্টা করার আগে খেয়াল করল গাছের নিছে একটা কাগজ আছে । সে কাগজ টা হাতে নিল আর পড়া শুরু করল , আর এটা পড়তে পড়তে তার দুচোখ বেয়ে পানি ঝড়তে শুরু করল ...
সেখানে লেখা ছিল
“ প্রিয় বৃন্তি .............
আমি রিহান , আশা করি ভাল আছ , জানি খুব অভিমান আমার উপরে , প্লিজ ভুল বুঝোনা আমায় । তুমি যে টিঠিটি পড়ছ সেটা ২০১৪ এর ১৪ ফেব্রয়ারী তে লেখা । আমার হাতে আর সময় ছিল ও অল্প কিছু দিন , সত্যি বলতেছি তোমাকে খুব ভালবাসি , এতটা ভাল হয়ত কেও তোমাকে আমার মত করে বাসতে পারবে না । আমাকে ক্ষমা করে দিও আমি তোমার কাছ থেকে অনেক কিছু লুকিয়েছি । আমাকে স্বার্থপর ও বলতে পার ও কারণ আমি এই পৃখিবীকে থাকবনা জেনেও তোমাকে ভালবেসেছি , শুধু নিজের জন্য । নিজের চলে যাওয়ার কষ্টটা ভুলে থাকতে তোমার মাঝে হারাতে চেয়েছি । চেয়েছিলাম কিছু টা ভালবাসার সুখ নিয়ে জীবণ টা শেষ করতে । হুম আমি ফেরেছি তবে তোমাকে খুব কষ্ট দিয়ে গেলাম । প্লিজ আমাকে মাপ করে দেওয়ার চেষ্টা করবা :) জানি মাপ চাওয়ার ও যোগ্য না আমি তবে হুম আমি তোমাকে সত্যিই খুব ভাল বেসেছিলাম তোমাকে । তোমার জন্যই পৃথিবীতে আমি আরও কয়েকদিন বাঁচতে ছেয়েছিলাম তাইতো বাঁচার আশাও না থাকা স্বত্তেও তোমার জন্য আমি আজ এত দুর এসেছি শুধু এই উছিলায় আর আল্লহর কৃপায় যাতে সুস্থ হয়ে যায় । কিন্তু না আল্লাহর মর্জি না আমি এই পৃথিবীতে আর কয়েক টা দিন থাকি :) তাইতো শত চেষ্টার পরও আমি থাকতে পারলাম না এই সুন্দর পৃথিবীতে । আজ কে যখন ঘুম ভাঙলো তখন আমি খুবি অবাক হলাম । আজকের তারিখ টা দেখে ... কত সুন্দর তারিখ ১৪.০২.২০১৪ । তোমার জন্য ফুল কিনতে পারতাম কিন্তু কিনি নাই কারন এ্ই ফুল পচে যাবে তাই ফুল না কিনে এই প্লাস্টিকের ফুল গাছটা পাঠালাম তোমার জন্য .. কারন এটা সহজে নষ্ট হবে না .. এই গাছটার প্রতিটি কৃত্তিম পাতায় পাতায় আমার ভালবাসা আছে । আরও অবাক হলাম কেন জানও আমি আজ প্রায় দেড় বছর পর ঘুম থেকে উঠছি । ঘুম থেকেই উঠে মা বাবার পড়ে তোমার কথা মনে পড়েছে । প্লিজ আমাকে মাপ করে দিও , ভুল বুঝ না আমায় ।অনেক কষ্টে তোমার কাছে এই চিঠিটা লিখলাম ... কষ্টটা কেনও জান ডক্টর আমার হাতে কত্ত কিছু লাগিয়ে দিয়েছি হাতটা চালাতে পারছি না । তুমি হয়ত ভাববা এত দিন তোমাকে কল দি নাই কেন ও । কিবাবে কল দিব ? আমর কাছে কোন ও ফোন নাই .. আর ফোন থেকেও লাভ কি ? মুখের ভেতর কত্ত বড় একটা পাইপ লাগিয়ে দিয়েছে । ও আচ্ছা একটা কথা বলতে ভুলে গেছি । তোমার জন্য একটা ডায়েরী দিয়েছি আমি ... এটা পড়িও তবে একটা শর্ত মোটেও কান্না করতে পারবে না । কান্না যদি করও আমি উপর থেকে কষ্ট পাব :) আর হ্যাঁ আরফিন আমার ছোট ভাই ... ও আমার কথায় তোমার জন্য এত সব কিছু করেছে । আর কষ্ট হচ্ছে অনেক , লিখতে পাড়ছি না । আলবিদা বৃন্তি । আলবিদা এই সুন্দর পৃথিবী । ভাল থেক আমার জন্য অনেক কষ্ট পেয়েছ , আবার ও তোমার কাছে মাপ চেয়ে নিচ্ছি । ডায়েরী টা পড়তে ভুলো না ”

নীল ডায়েরী
আগষ্ট 2006
আজ প্রথম নীলা আন্টির বাসায় গেলাম । আমি ছাদ খুব পছন্দ করি তাই খাওয়া দাওয়ার পরে বিকাল করে ঘুরে আসতে গেলাম ছাদ থেকে । ছাদ এর এক কোণা খুব সুন্দর করে সাজান ও খুব সুন্দর সুন্দর ফুলের গাছ । ছাদের এই স্থান টা যে কারও পছন্দ হবে । হঠাৎ দেখি একটি মেয়ে আমার সাথে এসে ঝগড়া শুরু করে দিল ।এই মাসে আমার সাথে মেয়েটার খুব ভাব জমে গেল ও ।
সেপ্টেম্বর 2006
আজকে আমার চেক আপ এর তারিখ । 2008 এর দিকে আমার ক্যান্সার ধরা পড়ে । যে কোন সময় মারা যেতে পারি । আর যদি তা না হয় তাহলে হাতে সময় বেশি নেই । আমাকে পৃথিবী ছাড়তেই হবে ।

অক্টোবর 2006
মেয়েটাকে উদানিং আমার খুব ভাল লাগে । খুব দুর্বল হয়ে গেছি তার প্রতি । পৃথিবীতে আমি আর বেশি দিন নেই । তাই মেয়েটাকে আপন করতে পারছি না । পড়ালেখা টা করি শুধু নিজেকে সব কিছুর মাঝে হারিয়ে রাখতে ... আর না হয় কেন ই বা এই পড়া লেখা ?
নভেম্বর 2006
মেয়েটাও সম্ভবত আমার প্রতি দুর্বল । কিন্তু বুঝব কি করে ? বন্ধু বুদ্ধি দিল কয়েক দিন ছাদে না যেতে আর আমি তা বাড়িয়ে প্রায় 15 দিন ছাদে যায়নি ।
ডিসেম্বর 2006
মেয়েটা বসে আছে .. আচ্ছা আমি এমন মেয়ে মেয়ে করছি কেনও ? ওর তো একটা নাম আছে , হুম ওর নাম বৃন্তি । সে ফুফিয়ে কাঁদছে । চুপি চুপি পো ফেলে তার কাছে হেটে গিয়ে বুঝলাম । হেই , চমকে উঠে সে । চোখের পানি মুছে পেলে ..
কেমন আছেন ? কোথায় ছিলেন এতদিন ?
হঠাৎ আপনি ? বাসায় গিয়েছিলাম :)
সরি । বলে যেতে পারতেন :)
সরি আমার ভুল হয়ে গেছে ( বুঝলাম মেয়েটা দুর্বল আমার প্রতি । )
আপনার ফোন নম্বার টা দেন :)
কিছু না ভেবে .. 018*****76
ধন্যবাদ ।

ফেব্রয়ারী 2007
৭ তারিখ ... একশত গোলাপ আমার জন্য । আমি হেরে গেলাম আমি শুধু একটা নিয়ে আসছি .. :(
8 তারিখ ... সে প্রপোজ করবে ভেবে আসছে , আমি করে দিলাম :)
14 তারিখ : কি আর বলব ??? এই থেকে শুরু আমার এত কষ্টের মাঝে অন্য এক জীবণ ।
মার্চ 2007 থেকে ডিসেম্বর 2009 : এত কিছু ডায়েরী তে লিখব কি করে ???

জানুয়ারি 2010
একটু অসুস্থ বেশি হয়ে পড়েছি .. বৃন্তিকে বুঝতে দি না । এখন মেয়েটাকে হারাতে চায়না , তাকে কষ্ট দিতে ও চায়না । আমি যদি মরে যায় মেয়েটা অনেক কষ্ট পাবে । আমার কেন জানি বাঁচার ইচ্ছা টা বেড়ে গেছে । বাবা ও বুঝতে পারছে ব্যাপার টা । এবার আমার চিকিৎসা USA তে , ওখানে কি জানি করবে । মেয়েটাকে কি বলে যাব ? এক বন্ধুর বুদ্ধিতে সকলারশীপ পেয়েছি বলে তাকে রাজি করিয়েছি । তাকে বলেছি তোমাকে সুখি করতে আমাকে তো স্যাটেল হতে হবে । তবু ও মানছিল না অনেক কষ্টে মানালাম ।
ফেব্রুয়ারী 2010
আজকে বিদায় নিচ্ছি ... সবার কাছ থেকে .. আমার সাথে শুধু আমার মা আর বাবা যাচ্ছে । এটা নীলা আন্টি ছাড়া আর কেও জানেনা ।
এপ্রিল 2010
আজকে আমার প্রথম অপারেশন .... যদি আল্লাহর ইচ্ছা হয় তাহলে হয়ত ভাল হয়ে যাব ।

**** সূর্য এর আলো দেখতে পাচ্ছি । পাশে দেখি মা বসে আছে । আমার সামনে কান্না মানা ওনার , না হলে মনে হয় কেদেই দিত । আবার ঘুমিয়ে পড়লাম .. কতক্ষন ঘুমালাম মনে নেই :) ঘুম থেকে উঠে তাকালাম ক্যালেন্ডার দিকে আজকের তারিখ টা 14.02.2014 । কত দিন ঘুমালাম আমি ??? শুনতে পেলাম আমার হাতে সময় আর মাত্র কিছু দিন । হাত কাপছে কিছু লিখতে পারছি না ।
সবাই এসেছে আমার সাথে দেখা করতে । ভাই টাকে ও দেখতে পাচ্ছি , সবার চোখে পানি । সবার থেকে একটু সময় চাইলাম .. ভাইটার সাথে অনেক কথা আছে । আর লিখতে পারছি না .. ডক্টর আমার হাতে কত্ত কিছু লাগিয়ে দিয়েছে .. হাতটা ও চালাতে পারছি না । মুখের ভেতর কত্ত বড় একটা পাইপ আমার রিকুয়েষ্ট এ কিছুক্ষনের জন্য খুলে দেয়া হয়েছিল ।

এই ডায়েরি টার লেখা এখানেই শেষ .. এতে আর লেখা হবে না :) শুধু পড়া হবে । আর বৃন্তির জন্য আমার শেষ ম্যাসেজ ।
“ বৃন্তি , অনেক রেগে থাকতে পার ও আমার উপর ... তোমার অধিকার আছে । একটা কথা বলব .. সত্যিই যদি আমাকে ভালবেসে থাক তাহলে আমাদের ভালবাসার দোহাই । তুমি অঘটন কিছুই করবা না :) আমাকে ভুলে তোমার নিজের সুন্দর একটা জীবণ গড়বা । আর যদি তা না করতে পারও তাহলে আমি এখান থেকে অনেক কষ্ট পাব ”


*** এবার সে ডায়রিটা বৃন্তি লেখা শুরু করল ***
ফেব্রয়ারি 2020 :
আমি সব ভুলতে অনেক চেষ্টা করলাম তবে পারলাম না ... জানি না কি করব ?? কারন তোমাকে ভুলতে না পারলে তুমি অনেক কষ্ট পাবে । তোমাকেই ভুলতেই হবে । আর তাই সে গড়ে তুললাম একটা এতিম খানা .. “ রিহান এতিম খানা ” অবসর সময় এই ছোট ছোট এন্জেল গুলোর সাথেই কাটাই । আমি এখন একজন সফল ডক্টর । ক্যান্সার স্পেসেলিষ্ট । এখন আমার একটা ছোট ফ্যামিলি ও আছে । একটা ছেলে আর একটা মেয়ে আছে । মেয়েটার নাম নিশি আর ছেলেটার নাম অহর । আমি এখন অনেক অনেক টাই খুশি ।




প্রায় ৩ বছর পর । সত্যিই বৃন্তি আজ অনেক অনেক খুশি ।একটা এক্সিডেন্টের পড়ে সে অতীত সম্পূর্ন ভাবে ভুলে গেছে । সে এখন একজন গৃহিনী । ছেলেমেয়ে আর স্বামীকে নিয়ে তার এখন অন্যরকম এক সুখি পরিবার । সময় ফেলে তার স্বামী তাকে সে এতিম খানায় নিয়ে যায় .. এতিম খানাটা এখন তার স্বামী সোহেল দেখাশোন করে ।



রিহানের একটা কথা শেষ পর্যন্ত সঠিক এ হল । তার ডায়েরি টা এখন আর কেও লেখার নেই .. শুধু পড়ার আছে । ওহ একটা কথা ভুলেই গেছি এখন আর বৃন্তির নাম বৃনিত নেই । তার নাম এখন স্নেহা ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×