somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানহীন কবিতা, স্বমেহন ও পারষ্পরিক পিঠ চুলকাচুলকি = বর্তমান প্রজন্মের সামহোয়ারইন ব্লগ

২৭ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগের মান বলতে কি বোঝায়? তার আগে সম্ভবত প্রশ্ন আসে "মান" বলতে বোঝায়? যখনই মানের প্রশ্ন আসে তখনই তুলনার বিষয় চলে আসে। কোন একটা কিছুর মান ভালো বা খারাপ বলতে হলে সেই কিছুটাকে অন্য কোন কিছুর সাথে তুলনা করতেই হবে। তাই ব্লগের মান বলতে একই কনস্ট্রাকটের অন্য কিছুর সাথে এই ব্লগের তুলনা চলে আসে। যেহেতু সামহোয়ারইনের সাথে তুলনা করা যায় এমন কোন বাংলা ব্লগ দেখছি না, সেহেতু বর্তমান ব্লগকে ফেলে আসা ব্লগের তুলনায় মানহীন বলছি।

প্রসংগ কবিতা

প্রথমেই একটা বিষয় পরিষ্কার করে নেয়া উচিত - আমি কবি বা কবিতা বিদ্বেষী নই। সাহিত্য বা আরো বড় দাগে সৃষ্টিশীলতার যতগুলো মাধ্যম আছে তার মাঝে কবিতা বোধকরি সবচেয়ে সুন্দর, সাবলীল, স্নিগ্ধ! কবি মানুষের কথা বলে, কবি জীবনের কথা বলে, কবিতা ছোট ক্যানভাসে আস্ত জীবনের গল্প নিয়ে আসে - ডালিম গাছের তলে শুয়ে থাকা দাদীর গল্প, কাজলা দিদির গল্প, মায়ের কোলে ফিরে গল্প শুনতে পারার আকুতির গল্প। কবিতা মাত্র দুই লাইনে জীবনের গভীর বোধের কথা বলে "নিউট্রন বোমা বোঝো, মানুষ বোঝোনা।" কবিতা মেঘলা দিনে দেখা কালো মেয়ের কালো হরিন চোখের গল্প বলে, বলে সাদা বা কালো সব বাইরে, ভেতরে সব সমান - কবিতা সমানাধিকারের কথা বলে, সাম্যের গান গায়। কবিতা যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা বলে "নেভার সাচ ইনোসেন্স এগেইন।"

বর্তমানের সামহোয়ারইনে আমরা কী দেখছি, কী কবিতা পড়ছি? এগুলো কী কবিতা (সবাইকে বলছি না)। আচ্ছা কবিতা লিখতে ইচ্ছুক এমন সবার লেখা প্রতিষ্ঠিত কবিদের মত হবে না। সে মেনে নেয়া গেলো - একদিন লিখতে লিখতে হয়ে যাবে। আবার এও ঠিক কবিতার মানের লিটমাস টেস্টও পরিবর্তন হয়, হয়েছে এবং হবে। দাশ বাবুকে একদিন কুলীন শ্রেনী মেনে নিতে না চাইলেও আজ আধুনিক কবিদের মাঝে তিনি সবচেয়ে জনপ্রিয়। মানুষ মায়ের পেট থেকে পরেতো আর লিখতে শিখে যাবেনা। সে প্রত্যাশা করা উন্মাদের প্রত্যাশা হতে পারে, সাধারণ বুদ্ধির মানুষের নয়। কেউ প্রথম চেষ্টায় প্রমথ চৌধুরীর মত প্রবন্ধ বা জসীমউদদীনের মত কবিতা লিখবে এ কী হয়! সময় লাগবে। কিন্তু তাকে "অখাদ্যের" জন্য বাহাবা দিয়ে "কবি, বাহ বাহ বাহ!!" কিন্তু তার নিজের বিকাশের অন্তরায়, ঠিক যেমন "অতি মাতৃপ্রেম" বাচ্চার জন্য ভালো নয়।

আবার যখন কেউ কবিতার নামে নিজের দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে নামে তখন সেটা চোখে পরে। যিনি কবিতা লেখেন (অথবা চেষ্টা করেন) তিনি মানুষ। রাজনৈতিক জীব হিসেবে তার কোন দলকে সমর্থন করার একশত ভাগ স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু কিছু বিষয় থাকে যা রাজনৈতিক মতের বাইরে, যেখানে তর্ক চলেনা, যা অস্বীকার করা যায়না, যা অস্বীকার করাকে স্বাধীন মতপ্রকাশ বলা যায়না। ইউএসএর মত দেশে যেখানে ফার্স্ট এমেন্ডমেন্টের জোরে দেশের প্রেসিডেন্টকে "*াক অফ ইউ পিস অব *ট" বলা যায়, সেই দেশে পারলে নাৎসিজম নিয়ে কথা বলুন, এন্টিসেমেটিক ভাবধারার কথা বলুন। না ও বলা যায়না, কিছু জিনিস বলা যায়না, অস্বীকার করা যায়না।

২৫ মার্চ ১৯৭১। বাংলাদেশের ইতিহাসে, বাংলার মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর একটি। ভয়াবহ সেই কালো রাতে মানুষ ভীত হয়েছেন, আকস্মিক আক্রমনে হতচকিত হয়েছেন, জীবনের জন্য ভয় পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা সেদিন নেতৃত্বহীন ছিলেন না। সেদিন হঠাৎ কোথা থেকে একজন উড়ে এসে জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার দায়িত্ব বুঝে নেননি, কেউ নেতার হয়ে ব্যাটনটা হাতে তুলে নিয়েছেন পরের কারো হাতে তুলে দেয়ার জন্য। মেজর জিয়াকে গ্লোরিফাই করার জন্য ইতিহাসকে বিকৃত করার কী প্রয়োজন? স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতা যদি ইতিহাস বিকৃতি হয়, তবে সে স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়, একটা প্যারাডকক্সে পরিনত হয়।

একটা কবিতা (অথবা কবিতা চেষ্টা) কি স্বাধীনতার মত বড় একটা মহান বিষয়কে ছোট করতে পারে, এর ঔজ্বল্য কে ম্লান করতে পারে? না, পারেনা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মুলধারায় এর প্রবেশের পথ করে দিতে পারে। ইতিহাসকে অনেকদিন দাবিয়ে রাখা হয়েছে, অনেক বিকৃতি হয়েছে, মানুষের মাঝে ভুল ধারণা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। আর নয়, আর সুযোগ দেয়া নয়। গতকাল প্রথম আলো পত্রিকায় দেখলাম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পিএচডি গবেষণা হয়েছে মাত্র গুটিকয়, ৫০টি ও নয়। যা হয়েছে তার অর্ধেক গত কয়েক বছরে। কেন এমন হয়েছে বুঝতে পারেন? আর কত এদের সুযোগ দেবেন? আর কত!!

[এই পোস্ট আপডেট হতে পারে]
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫১
৫৬টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×