দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে ধর্মের দোহাই দিয়ে এখনো অনেকেই বাংলাদেশকে পাকিস্তান বা ভারতে অংশ হিসেবে দেখতে চায়। কেউ চায় বাংলাদেশ ভারতের অংগরাজ্য হয়ে যাক, কেউ চায় আবার পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হয়ে যাক। এই দুই পন্থীদের কেউই বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেনা।
যারা পাকিস্তানপন্থী তাদের বেশীরভাগই মুসলিম এবং তাদের বিশ্বাস যেহেতু পাকিস্তান মুসলিম দেশ তাই তারা আমাদের ভাই, এবং আমাদের একসাথে থাকা উচিত ছিলো, এখনো পাকিস্তানের যেকোনো সাফল্যে তারা আনন্দিত হয়, ফেসবুকে ইমরান খানের বক্তৃতা শেয়ার করে,ভারত পাকিস্তানের যেকোনো কোন্দলে তারা পাকিস্তানের পক্ষে সমর্থন দেয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় এখন যদি বাংলাদেশকে পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করে একটি রাষ্ট্র করার প্রস্তাব করা হয় তাহলে তারা সবার আগে ভোট দিবে৷
অন্যদিকে ভারতপন্থীদের বেশীরভাগই হিন্দু (সনাতন) ধর্মালম্বী, আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে এমন অনেকেই আছেন যাদের টাইমলাইন দেখলে আপনি বুঝতেই পারবেননা যে তারা বাংলাদেশী না ভারতীয়, তাদের টাইমলাইন ভারতের সাফল্যসংবাদ, মোদির ভাষন ইত্যাদিতে ভর্তি। তারা বাংলাদেশের চাইতে ভারতের সাফল্যই বেশী খুশী হোন। একইভাবে বাংলাদেশকে ভারতের অংগরাজ্য করার প্রস্তাব দিলে উনারা দিগম্বর হয়ে রাস্তায় উল্লাসনৃত্য করবেন বলে আমার ধারণা। উনাদেরও একই বক্তব্য (যদিও উনারা তা সহজে প্রকাশ করতে চান না) যেহেতু ভারত হিন্দুরাষ্ট্র তাই আমাদের ভারতের সাথেই থাকা উচিত।
এই দুইদল বলদদের কে বুঝাবে যে ধর্মের উপর ভিত্তি করে কোন রাষ্ট্র গঠিত হতে পারেনা, যদি হতো তাহলে সমগ্র আরব এক দেশ হতো. সকল আরব রাষ্ট্র মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও কেনো আলাদা আলাদা দেশে বিভক্ত?
এই উভয় গোষ্ঠীই আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। তারা খায় পড়ে বাংলাদেশের কিন্তু অন্তরে লালন করে পাকিস্তান বা ভারত। আওয়ামী লীগের বাংগালী জাতীয়তাবাদ অথবা বিএনপির বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ যা-ই বলিনা কেনো এরা কোনটাই বিশ্বাস করেনা। এদের থেকে সতর্কতা অবলম্বন করাই কাম্য, আর আপনি যদি নিজেকে এই দুই দলের মধ্যে যেকোন একটিতে আবিস্কার করেন তাহলে নিজেকে শুধরে দেওয়ার এখনই সময়।
বি. দ্র. এই লেখায় বাংলাদেশের সকল মোসলমানকে পাকিস্তানপন্থী বা সকল হিন্দুকে ভারতপন্থী বলা হয়নি। শুধুমাত্র তাদের মধ্য থেকে ক্ষুদ্র এক অংশের কথা বলা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০২০ রাত ২:৪৯