somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেসবুক থেকে

০৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কারণ আমারা নতুন একটা আসক্তির জন্ম দিয়েছি, "বিনোদনাসক্তি", সিবকিছুতে বিনোদন খুজি। আর বিনোদন বলতে বুঝি নাচ গান ইত্যাদি ইত্যাদি ।

আমরা কোনোকিছুর উদযাপন মানেই বিনোদন বুঝি, এজন্য জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানেও ডিজে গান বাজে। পূজায় যেহেতু এই বিনোদন পাওয়া যায় সেহেতু যবনের বাচ্চা হওয়া সত্ত্বেও পূজায় যায়। বিনোদনের লোভে যায়।
এই বিনোদনাসক্তি যে একেবারে নতুন সেটা বললে ভুল হবে, এটা মানুষের একটা সহজাত প্রবৃত্তি বলতে পারেন, ইদানীং বিপদজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে এই আর কি। আগে একসাথে বসে কাজিনরা গল্প করতো, এখন একসাথে বসে মোবাইল টেপে, মোবাইলে বিনোদন আছে, সস্তা ডোপামিন মেলে। গল্পে আর ডোপামিন না, গল্পে বিনোদন কম।

সুফি সাধকরা যখন এই উপমহাদেশের হিন্দু আর বৌদ্ধদের কালেমার দাওয়াত দিলেন তারা মুসলামান হওয়ার পরেও হিন্দুয়ানী অনেক কিছু ত্যাগ করতে পারেনাই। হিন্দু থাকা অবস্থায় যে বারো মাসে তেরো পুজা করতো সে দেখে এখন তার বছরে মাত্র দুইটা ঈদ, অনেকেই এখনকার মতো পূজায় চলে যেতো, বিনোদনের আশায়। তো সেই সুফি সাধকরা নতুন বিনোদনের ক্ষেত্র আবিস্কার করলেন, মীলাদ, নবীর জন্মদিন উদযাপন ইত্যাদি ইত্যাদি, নব্য মুসলমানেরা নতুন কিছু বিনোদনের ক্ষেত্র পেলো, পূজায় যাওয়া বাদ দিলো। (এজন্য এই মীলাদ আর মীলাদুন্নবি শুধুমাত্র ভারত উপমহাদেশে দেখবেন, মধ্যপ্রাচ্যে এই প্রেকটিস নাই, কারণ তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিতে বিনোদনের অনেক ক্ষেত্র আছে যেগুলারে ধর্মীয় গুরুরা ভ্যালিডেশন দিছে)

তো এখনকার পোলাপাইনের কাছে আর মীলাদ বা এইধরনের ধর্মীয় উদযাপনের ক্ষেত্রগুলা আকর্ষণীয় মনে হয় না। কারণ তাদের প্রতিবেশী অন্য এক ধর্ম যে তার নিজ উদযাপনে "ডিজে" ঢুকাইছে এখন তারও এইরকম কিছু চাই। হিন্দু ধর্মে সংস্কার সম্ভব, তারা ধর্মকে সময়োপযোগী করে, ইচ্ছামত পরিবর্তন করতে পারে। ইসলাম ধর্মে সংস্কার প্রায় অসম্ভব (ইজমা কিয়াস দ্বারা অল্প সম্ভব যদিও), যা ইচ্ছা তা করার সুযোগ নাই, ধর্মের বিধান সুনির্দিষ্ট আর পরিস্কার। ইসলাম ধর্ম বলে সময়কে ধর্মোপোযোগি করতে, ধর্মকে সময়োপযোগী করতে না।

আমাদের নিকট প্রতিবেশী পাকিস্তান আর আফগানিস্তান তার নিজস্ব সংস্কৃতি আর ধর্মের ফিউশন করছে, এজন্য পাকিস্তানিরা পাকিস্তানি সংস্কৃতি আর ইসলামি সংস্কৃতির দন্দ পায় না। আমরা পাই বাংগালী সংস্কৃতি আর মুসলিম সংস্কৃতির দন্দ।

ইসলাম ধর্মের অনেক উৎসবকেই আমরা কালচারে রুপান্তরিত করতে পারিনাই, এই উৎসব "ধর্মীয় উৎসব" হিসেবে রয়ে গেছে, সার্বজনীন হয়ে উঠেনাই। আবার অনেক ক্ষেত্রে আবহমান বাংলার চিরপরিচিত অনেক কৃষ্টি যা ধর্মীয় অনুশাসনের বিরুদ্ধে যায় না তবুও তাকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে তা ইসলামি কৃষ্টি না বলে। এর ফলে ধর্ম আর সংস্কৃতির ফিউশনে সৃষ্টি হতে পারতো এমন অনেক কিছুই বিলুপ্ত ।

তো এখন কি করা যেতে পারে?

যা করা যেতে পারে তা হচ্ছে লেভেলিং বাদ দিতে হবে, তুমি শিয়া, তুমি সুন্নি, টিশার্ট পইড়া মসজিদে আসছে, মাথায় টুপি নাই, ও নামাজে বুকে হাত বাধে, ও মিলাদ পড়ে, ও মিলাদ বিরুধী এইসব ট্যাগ দেওয়া বন্ধ করতে হবে। এইগুলা করলে কি হয় যে শুধুমাত্র শুক্রবারে নমাজে যায় সে নিজেকে বাকি পাগড়িওয়ালাদের থেকে আলাদা (other) মনে করে। ওদের সাথে নিজেকে মিলাতে পারে না। খাপ খাওয়াতে পারে না, পারলে পাগড়িওয়ালারা যেভাবে ঈদের দিন বোরিং ফিল না করে উদযাপন করে সেও সেইভাবে বোরিং ফিল না করে উদযাপন করবে, নিজের মতো করে করবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৩২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×