[ বাণী চিরন্তনিঃ
যেই ছেলে বা মেয়ে ভার্সিটি তে পড়াশোনা করেছে কিন্তু ভার্সিটির আবাসিক হলের ডাল খায় নি তার ক্যাম্পাস জীবন অপূর্ণই থেকে গেল, ঠিক যেমন মাঝি ছাড়া নৌকা অপূর্ণ থেকে যায় – জনৈক ক্যাম্পাস মনীষী]
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর ট্র্যাডিশন হচ্ছে রাতের খাবার অনেক আগেই খেয়ে নেওয়া হয়। সাধারনত এশার নামাজের আগেই খাওয়া শেষ হয়ে যায়। এর পর খেতে গেলে ভাল কিছুই পাওয়া যায় না। অনেকেই যেহেতু নামাজ পড়ে তাই খাবার আগে ডাইনিং হলে প্রচুর ভিড় হয়।
যেদিনের কথা বলছি সেদিনও প্রচুর ভিড় ছিল। তখন কিছুদিন হল ভর্তি হয়েছি। আমরা ভর্তি হবার মাস ছয়েক আগে পাশের মাদার বখশ হলে শেয়ালের মাংস খাওয়ানো নিয়ে তুলকালাম ঘটে গিয়েছিল। সেই ঘটনার রেশ তখনো কেটে যায় নি। খাবারের মান নিয়ে প্রায়ই ডাইনিং ম্যানেজারের সাথে ছাত্রদের কথা কাটাকাটি হত। যারা ভার্সিটির আবাসিক হলে থেকেছেন তারা এই ব্যপারটা আশা করি ভালভাবেই বুঝতে পারেন।
খাওয়া শুরু করার কিছুক্ষণ পর পাশের টেবিলে শোরগোল শুনতে পেলাম। খাওয়া শেষ না করেই উঠে পড়লাম। গিয়ে দেখি একটা ডালের বড় গামলার পাশে দাঁড়িয়ে লিকলিকে একটা ছেলে তার শরীরের চেয়ে তিনগুন বেশি আওয়াজে চিৎকার করছে। চিৎকারের কারণটা ডালের গামলার দিকে তাকিয়েই বুঝলাম। বেশ বড় আকারের একটা টিকটিকি ডালের উপর মরে ভেসে আছে। (আমি চ্যালেঞ্জ দিতে পারি বাংলাদেশের সব থেকে বড় আকারের টিকটিকি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে দেখা যায়।)
এরপর যা হবার তাই হল। প্রথমে চিৎকার, তারপরে ম্যানেজারকে কিঞ্চিৎ উত্তম-মধ্যম এবং সবশেষে কাঁচের থালাগুলোর উপর আক্রোশ মেটানো হল। সবকিছু ঘটে যাবার পর প্রভোস্ট স্যার খোঁজ নিতে আসলেন। (এটাই স্বাভাবিক, আগে আসলে তাকেও কথা শুনতে হত)। এর ফল আমাদেরকে পরবর্তীকালে ভোগ করতে হয়েছে। কাঁচের থালা ভাঙার অপরাধে আমাদেরকে অনেকদিন পর্যন্ত মেলামাইনের থালায় ভাত খেতে হয়েছে।
বিঃদ্রঃ সেই রাতে আমি কিন্তু আর আমার খাওয়া শেষ করতে পারি নি।
১ম পর্ব ঃ Click This Link