তোমাকে পেলে কবিতা লেখা ছেড়ে দেবো,
কলম-কালি-কাগজ ছেড়ে তেল-নুন-ঘামে সংসারী হবো।
কমলালেবু ভোরে আলো ফুটতেই
কোমরে আঁচল জড়িয়ে রান্নাঘরে উনুনের আঁচে লালচে কপোল,
পছন্দের খাবারের সাথে
টিফিন বাক্সের কোণে গুঁজে দেবো হৃদয়ে তীর বেঁধা চিরকুট।
কর্মব্যস্ত তোমাকে ফোন করে বলবো “সময় করে খেয়েছো তো?”
দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই স্নান সেরে কপালে কালো টিপ,
পাটভাঙা তাঁতের শাড়ী, আর এলোচুলে টবের সদ্যফোটা গোলাপ;
এক চিলতে বারান্দার গরাদে রাখবো কাজল ঘেরা চোখের অপেক্ষাদের।
ছুটির দিনে লম্বা বাজারের ফর্দ লিখবো,
বাজার শেষে তুমি এলে ফর্দের সাথে মিলিয়ে নেবো
তেল-নুন-চাল-ডাল-দারুচিনি-এলাচের হিসেব;
দু’আঙুলে টিপে যাচাই করে নেবো মাছের তাজাভাব,
দেখবো মাংসের রং, ধনেপাতা লেবু কাঁচামরিচের ঘ্রাণ।
কথা দিচ্ছি
তোমাকে পাওয়ার পর একটা কবিতাও লিখবো না,
খুনসুটি করবো তোমার সাথে, আদর-সোহাগ,
কখনো বা ঝগড়াও, মান-অভিমান, রাগ ভাঙ্গাবো
আর শুধু ভালোবাসবো,
যেমনটা করে পৃথিবীর তাবৎ সংসারী মানুষেরা।
ভ্রু পল্লবে ডাকলেও যাবো না চন্দনের বনে,
কবিতারা থাকুক নির্বাসনে,
শব্দ বোনার কুরুশকাঠি বাক্স বন্দী;
শুভঙ্কর থাকুক দাঁড়িয়ে চৌরাস্তার মোড়ে অনন্তকাল,
নন্দিনী এখন সংসারী,
সুরঞ্জনাকে ডেকে ডেকে ফিরে যাক প্রেমিক যুবকের দল।
কথা দিচ্ছি
তোমাকে পাওয়ার পর আর একটাও কবিতা লিখবো না,
শুধু একবার তুমি আমার কবিতা হয়ে দেখো।
কথা দিচ্ছি
আমি তোমার বনলতা সেন হবো,
আর তুমি হবে আমার শ্রেষ্ঠ কবিতা।
© শিখা রহমান
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৭