somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পার্কে অবাধ প্রেমের অভয়াশ্রম

৩০ শে নভেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরকীয়া বাড়ছে, বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি। আর পারিবারিক অশান্তিসহ দাম্পত্য কলহে পরকীয়ার বলি হওয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ। পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়, প্রায়ই নারী বা পুরুষ পরকীয়ার অদৃশ্য ফাঁদে আটকে আত্মহনন করছে। আবার কখনো হত্যা করা হচ্ছে। তারপরও থেমে নেই পরকীয়া। বর্তমান সময়ে সহজলভ্য মুঠোফোন আর রাজধানীর পার্ক বা উদ্যানগুলোর নিরাপত্তা পরকীয়ায় অতিরিক্ত সুযোগ করে দিয়েছে।

প্রায় সব শ্রেণীর মানুষ এ ধরনের প্রেমলীলার আকর্ষণে আকৃষ্ট। তাই সকাল ১০টা বাজতে না বাজতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রমনা পার্ক যেন পরকীয়ার লীলায় উদ্ভাসিত হতে থাকে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এই প্রেম লিলা।এমনই এক রোমান্সকর প্রেমিক জুটির সাথে দেখা হয় বেলা সাড়ে ১১টায়। প্রেমিক সিরাজ মিয়া পেশায় একজন রিকশাচালক। তার প্রেমিকা সেলিনা ঝি’র কাজ করেন।

পেশাগত জীবনে যাই হোক না কোন প্রেমের রোমান্সকর মুহূর্তকে উপভোগ করতে একটুও পেছনে পড়েনি। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিরাজ ও সেলিনার বাড়ি একই গ্রামে। তাদের সাথে দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল। কিন্তু পরিবারের সম্মতির কারণে তাদের দু’জনের মিলন হয়নি। উভয়েরই অন্যদিকে পাড়ি জমাতে হয়েছে। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে সেলিনার স্বামী তাকে দুটি সন্তানসহ ফেলে নিখোঁজ।

তিনি ধানমন্ডির এক সাহেবের বাড়িতে ঝি’র কাজ করেন। অন্যদিকে সিরাজের স্ত্রী প্রায় এক বছর আগে একটি সন্তান রেখে মারা যান। এদের দু’জনের পরিস্থিতি একই ধরনের। আর উভয়ের প্রয়োজনের তাগিদে নতুন স্বপ্ন নিয়ে উভয়কে খুঁজে বের করেছেন। এরপর থেকেই দু’জন দু’জনকে চোখে চোখে রাখেন। দু’জন দু’জনকে একবার হারালেও আর হারাতে চায় না বলে জানান সেলিনা। সব গুছিয়ে এক-দুই মাসের মধ্যে তারা নতুনভাবে ঘর বাঁধবে বলে জানান।

সিরাজ-সেলিনার মত বিভিন্ন শ্রেণীর অসংখ্য প্রেমিক জুটি এখানে নির্বিঘে তাদের স্বীয় প্রেম লিলায় মত্ত। আর এতে অনেকের জীবন জীবিকারও পথ বেরিয়ে আসছে। পরকীয়ায় লিপ্ত নারীদের বেশিরভাগই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের বোর্ডার। আর কর্মজীবী হোস্টেলগুলোতে বসবাসকারী নারীদের একটি অংশ বিভিন্ন কারণে পারিবারিক ঘরের বাইরে স্বাধীন এবং নিজস্ব আঙ্গিকে জীবন যাপন করেন।

জীবিকার অন্বেষণেই কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজে নেয়। অনেকরই চাকরি বা কর্মসংস্থান না থাকালেও বিভিন্ন কায়দায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালায়। এদের অনেকেই বিভিন্ন সামর্থ্যবান কোনো লোকের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। সকালে বের হয়ে মোবাইলে ফোন করে পার্কে বসে এক দুই ঘণ্টা কাটিয়ে যায়। এমন প্রেমিক জুটির সংখ্যা ইদানীং বৃদ্ধি পেয়েছে। উদ্যানের গেটকিপার বলে, স্যার এখানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসলে সবাই হতভম্ব হয়ে যায়। পরে বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যদের কে নিয়ে বের হয়ে যেতে হয়। ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে পার্কে ঘুরার কোন পরিবেশ নাই।

মাঝবয়সী নারী-পুরুষ ইদানীং উদ্যানে চুকিয়ে প্রেম করছে। কারণ এই বয়সে এ ধরনের প্রেমিক জুটি অন্য কোথাও সময় কাটাতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বর্তমান উদ্যান-পার্কগুলোতে এ ধরনের কোনো জটিলতার সম্ভাবনা নেই। এমনিভাবে রাজধানীর পার্ক- উদ্যানগুলোতে প্রেমিক-প্রেমিকার অভয়াশ্রমে পরিণত হওয়ার সাথে সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত প্রেমিক জুটিদের আনাগোনা বেড়ে যাচ্ছে।

উদ্যানের গেটকিপার আরো জানান স্যার সন্ধ্যা হলে এখানে মনে হয় গেরিলা যুদ্ধ শুরু হয়েছে। উদ্যানের দায়িত্বে যারা আছে তারা দেখে ও না দেখার ভান করছে।
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×