তিন তিনটি বছর হয়ে গেল।
ওদিক- টায় এখন খুব একটা কেউ যায় না। স্যাঁতস্যাঁতে অন্ধকার। ইরাদ সেখানে।
সেখানেই থাকবে বাকিটা সময়। তার বাবা নির্বাক। মা প্রায় অন্ধ। ছোট বোনটি অনেকদিন হল হাসে না।
অর্নি সেদিন এসেছিল। সে কাঁদতে চেয়েছে।কিন্তু কাঁদে নি। তার স্বামী , অমিত তার সাথেই ছিল।
তাই হয়ত অজানা ভয় তাকে ছেপে বসেছিল।
দু'বছর হল। অর্নির একটি ছেলে আছে। নাম দিহান। নামটি দিহান হওয়ার কথা ছিল না।
তপ্ত দুপুর।
অর্নির প্রিয় সময়। এ সময় ইরাদ এর কপোলে (গালে) ঘাম জমে। যা সূর্যের আলোয় চিকচিক করে উঠে।অর্নি তার প্রেমে পড়ে,প্রত্যেক মুহূর্তে নতুন করে পড়ে । অর্নি, মাথা ঠেকাল ইরাদের কাদে। আনন্দে তার চোখ ভিজে আসছে।এমনি এক সময় ঠিক করে ফেললো, তার প্রথম সন্তানের নাম হবে তপ্ত।
অর্নির এখন এসব মনেই পড়ে না।
সে ব্যস্ত আমিত কে নিয়ে, সে ব্যস্ত দিহান কে নিয়ে। সে কেঁদে পেলে , আমিতের ফিরতে দু'মিনিট দেরি হলে।দিহান কম খেলে অর্নির রাতে ঘুম হয় না। অর্নি অনেক সুখি। তাকে এখন রোদে বসতে হয় না। ইরাদ এর কপোল কিংবা ঘাম এর জন্য অপেক্ষা করতে হয় না , হয় না কোন উৎকণ্ঠা। দিহান এর হাসি কিংবা অমিতের অভিমানেই তার সুখ, জীবন।
মানুষ ইরাদদের মনে রাখে না। পৃথিবী তাদের মনে রাখতে দেয় না। অর্নিরা ইরাদদের জন্য কাঁদে না। সবাই ভুলে যায়।
সবাই ভুলে গেছে। অর্নি, ইরাদ একদিন তপ্ত এর সপ্ন দেখেছিল। সবাই ভুলে গেছে ইরাদ নামে একটি ছেলে ছিল।
যে মানতে পারে নি পরাজয়, গিলে ফেলেছিল একমুঠ ঘুমের ঔষধ।
ইরাদরা দেখে না, বাবার আবেগ, মায়ের চোখের আলো, বোনের হাসি কিংবা অর্নি দের সুখী জীবন-সংসার।
ইরাদরা দেখাতে পারে না, অগনিত তপ্ত দের পৃথিবীর আলো।