ছোটবেলায় মা বলতো, " বাবা এদের সাথে খেলবি না। নষ্ট হয়ে যাবি।" আমি খেলি নি। আমি নষ্ট হতে চাই নি।
বাবা বলতো, "এদের সাথে মিশবি তো, তোর পিঠের চামড়া রাখব না।" আমি মিশি নি। আমি পিঠের চামড়া হারাতে চাই নি।
মামা বলতো, "জীবনটা ধ্বংস হয়ে যাবে, এদের সাথে মিশবি না।" আমি মিশি নি। জীবনটা ধ্বংস হোক, এটা আমি চাই নি।
বন্ধুরা বলতো, "এহ!! কত দেখছি। টাকা হলে এদের ঠিকই ভুলে যাবি।" আমি ভুলে গেছি। এদের সাহায্য করার মত মন আমার হয় নি।
শরৎকাল। ঝাঁঝাল রোদ। তীব্র গরম। এর মাঝেই গালি-গালাজ।কি জঘন্য গালি। আমি কানে আঙ্গুল দিলাম। আমি ভাল ছেলে হতে চেয়েছি,এসব নোংরা শব্দ শুনতে চাই নি। তাকিয়ে দেখি, পাঁচটি ছেলে মারামারি করছে আর গালি দিচ্ছে। ঐ তো, একটির গেঞ্জি ছিড়ে গেছে। নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে।
শরৎকাল। আকাশে ঝকঝকে মেঘ। ঝকঝকে মেঘ থেকে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়ছে। আমি বৃষ্টি দেখে বিমোহিত। গালির শব্দ ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে। আচ্ছা এই ছেলেগুলো কি বৃষ্টি দেখে বিমোহিত হয়? এদের কি বাবা আছে? এদের কি অসুখ হয়? জ্বরের ঘোরে কি মা মা ডাকে? মা কি তখন সত্যি এদের পাশে থাকে? পরম মমতায় মাথা স্পর্শ করে। এদেরকে কি আমরা জারজ বলি? এদের কে কি আমরা বখাটে বলি? এরা জানে না , কে এদের বাবা মা। এদের মাথায় কেউ ভালবাসার হাত রাখে না। এরা জানে না সম্মান কি? এরা জানে না সুন্দর ব্যাবহার কি?
আমি কিন্তু ভাল ছেলে। হবু ইঞ্জিনিয়ার। ভিতরে ভিতরে অনেক গর্ব। দিনে ১২-১৩ টার বেশি বেন্সন খাই না। রামদা হাতে দৈড়ানোর মজাই আলাদা। কোপানো দেহ দেখতে ভাল লাগে। দেহে সুন্দর লাল লাল রক্তের ছোপ পড়ে। তাই মাঝে মাঝে রামদা দিয়ে ছবি আঁকি। লাল লাল দাগ পড়া ছবি।