
মৃত্যু অবধারিত ! এটাই মনে হয়েছে যখন শুনলাম পাকিস্তান এর সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ আর নেই। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি ) দুবাইয়ের একটি আমেরিকান হাসপাতালে ৭৯ বছর বয়সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন জেনারেল মোশাররফ। তিনি বিরল রোগ অ্যামাইলয়েডোসিসে ভুগছিলেন অ্যামাইলয়েডোসিস হলো বিরল রোগ, যা সারা শরীরজুড়ে অঙ্গ এবং টিস্যুতে অ্যামাইলয়েড নামক একটি অস্বাভাবিক প্রোটিন তৈরি করে। এর ফলে অঙ্গ এবং টিস্যুগুলোর জন্য সঠিকভাবে কাজ করা কঠিন হয়ে উঠে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যাদের আগ্রহ একটু হলেও ছিলো তাদের কাছে পাকিস্তান এর সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ এর নাম ভুলার নয়। পাকিস্তান এর স্থানীয় রাজনৌতিক প্রেক্ষাপটে বা আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে জেনারেল মোশারফ এর অধ্যায় বার বার উঠে এসেছে কখনো ভালো উদাহরণ হয়ে আবার কখনো খারাপ উদাহরণ হয়ে। তিনি ১৯৯৮ সালে জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন , এর এক বছর পর ১৯৯৯ সালের ১২ই অক্টোবর সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নওয়াজ শরীফকে ক্ষমতাচ্যুত করে মোশাররফ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে নেন। ২০০১ সালে চেয়ারম্যান অব দ্য জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির পদ ছেড়ে দেন। যদিও তিনি আর্মি চিফের দায়িত্বে থেকে যান। ২০০১ সালের ২০শে জুন নিজেকে দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি। ২০০২ সালের ১ই মে একটি রেফারেন্ডামের মাধ্যমে তিনি পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট থাকবেন বলে ঘোষণা দেন। অবশ্য মাঝে ২০০৪ সালে ১৭তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হন মোশাররফ। মোশাররফ ২০০৭ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের পদচ্যুত করার কারণে সংবিধান-বিরোধী পদক্ষেপের জন্যও পরিচিত। যা আইনজীবীদের আন্দোলনের সূচনা করেছিল। যা বিচারব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের আন্দোলন নামেও পরিচিত।সেই ধারাবাহিকতকায় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে তুমুল গণআন্দোলনের মুখে ২০০৮ সালের ১৮ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হন পারভেজ মোশাররফ। তিনি পাকিস্তানের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০১৩ সালে মোশাররফের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলায় ২০০৭ সালে তার সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারিকে অবৈধ ঘোষণা করে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় অবশ্য মামলার বিচারকাজ চলাকালেই অসুস্থতাকে কারণ দেখিয়ে মোশাররফ সংযুক্ত আরব আমিরাত চলে যান। পরে তার মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে দেয়া হয়। গত আট বছর ধরে তিনি আরব আমিরাতে বসবাস করে আসছিলেন।বর্তমানে পাকিস্তান খুব খারাপ সময় অতিক্রম করছে। পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্তিতিশীলতাই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নতির প্রধান বাধা হিসাবে কাজ করেছে। এক হাতে পারমাণবিক বোমা অন্য হাতে ভিক্ষার থালা এটাই বর্তমান পাকিস্তান। আই এম এফ অসংখ্য বার পাকিস্তান কে সাহায্য করেছে খুব সম্ভবত ২২ বার যা ভারতে মাত্র ৭ বার। কিন্তু এই বার আর এতো সহজে সাহায্য দিবে বলে মনে হচ্ছে না নান রকম শর্ত দিয়া পাকিস্তান কে টাইট দিবে। কেন জানি মনে হয় পাকিস্তান এর এই অর্থনৈতিক দুর্যোগ বা দুর্বলতার সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে আফগানিস্তান এর তালেবান রা আবার পাকিস্তান কে ভাগ কইরা দিবে।পাকিস্তান এ কেন কোনো রাজনৈতিক দল কেনো দীর্ঘমেয়াদি সময় থাকতে পারে না আবার সামরিক শাসক রাই বা বার বার ক্ষমতা দখল করে কেনো সেটা নিয়ে বিশ্লেষণ বা গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


