somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শিশির খান ১৪
সময় পাইলে ব্লগ লেখাটা এখন নেশায় পরিণত হয়েছে। ব্যাস্ততার ফাকে যারা আমার ব্লগ দেখেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনাদের অনুপ্রেরণা থাকলে নিশ্চই সামনের দিন গুলোতে লেখা চালিয়ে যাবো।

সিঙ্গেল লাইফ ইজ দ্য বেস্ট লাইফ......................

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৪ ই ফেব্রুয়ারি ,ভালোবাসা দিবস আসলেই আমি কেমন জানি একটু আউলায়া যাই। জীবন এর হিসাব নিকাশ করতে গেলে কেমন জানি একটু উলটা পালটা লাইগা যায়। নব্বই দশক এর প্রজন্ম যারা আছেন নিশ্চই মনে আছে ওয়াকমেনে বা ক্যাসেট প্লেয়ার এ গান শুনার সময় ক্যাসেট এর ফিতা পেঁচায় যাইতো পরে কলম দিয়া ছুটান লাগতো।১৪ ই ফেব্রুয়ারি আসলে আমারও ওই রকম মাথার ফিতা পেঁচায় যায়। ঠিক হইতে বেশ কিছু দিন সময় লাইগা যায়।আমি চল্লিশ ছুঁই ছুঁই বেচেলর।বন্ধু বান্ধব ,আত্মীয় স্বজন ও এলাকার মানুষ এর সামনে বুক ফুলায়া চলি।বেচেলর তো কি হয়েছে কারো প্রয়োজন নেই একাই ১০০ এই রকম একটা আমেজ ধইরা রাখি সারা বছর। এমন ভাবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলি এবং এতো আনন্দ হৈ হুল্লোর করি যে বিবাহিত পোলাপাইন আমারে দেইখা হিংসায় মইরা যায়।আমার বেচেলর লাইফস্টাইল এর কাছে হুমায়ন আহমেদ এর হিমু মিসির আলী সব ফেইল। কিন্তু সমস্যা অন্যখানে আমার সার্কেলে আমি এখন এক মাত্র বেচেলর মানে ডাইনোসর হয়ে গেছি আমার প্রজাতির আর কেউ নাই আমার সম সাময়িক বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় স্বজন ,এমনকি ছোট ভাই বোন কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভাইগ্না ভাগ্নি সবার বিয়ে হয়ে গেছে। অনেকের তো বাচ্চাও বেশ বরো হয়ে গেছে।কেউ কেউ তো আবার ফুটবল টিম বানাচ্ছে মানে দুই তিনটা বাচ্চা নিয়া নিছে।এদের মাঝে আমি এক মাত্র বেচেলর হয়েও এমন ভাবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলি যে ওরা উলটা আমারে দেইখা বিভ্রান্ত হয়ে যায় অনেকে তো বইলাই বসে মামা তুই বিয়া না কইরা ভালো আছিস সুখে আছিস ভুলেও বিয়া করিস না। বেচেলর আর বিবাহিত দুই টা দুই দুনিয়া ,আমার ছোট বেলার বন্ধু বান্ধব কাছাকাছি কাজিন ভাই বোন আমার সাথে সিঙ্গেল থাকা অবস্থায় যে ভাবে চলতো বিবাহিত অবস্থায় ঠিক তার উলটা একেবারে ৩৬০ ডিগ্রি মারছে। অনেক বন্ধুদের বউরা তো আমার নামে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করছে। আমার নাম শুনলেই এদের বৌ মনে হয় তেলে বেগুনে জ্বইলা উঠে। আমার ধারণা আমার সাথে আছে শুনলে এদের বৌ রাতের বেলা বেডরুমে এদেরকে প্রহার করে। অনেক সময় তো দেখি এদের বৌ মোবাইল এ ফোন দিয়া জিগায় কোথায় এরা তখন ভুলেও আমার নাম নেয় না, মিথ্যা কথা কয়। বলে জামে আটকায় আছে বা রাস্তায় আছে অথবা অন্য বিবাহিত বন্ধুদের নাম কয়। আমি তখন শুইনাও না শুনার ভান করি দেইখাও না দেখার ভান করি। বয়সের সাথে সাথে চিন্তা ধারায় পরিবর্তন আসে। আগে মনে হইতো থাক মিথ্যা বলে বলুক বেটার ঘরে অশান্তি লাগায়া আমার লাভ কি ? কিন্তু এখন মনে হয় আমি হইতাছি বিলুপ্ত প্রজাতির বেচেলর আমার অস্তিত্বের স্বীকৃতি দিতে হবে ।এখন আমি এদের দেখলে এড়ায় চলি।মাঝে মাঝে বাটে পইরা ঈদ বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এদের সাথে গল্প করতে বসা লাগে তখন আমার জন্য বিষয়টা খুব কষ্টকর হয়ে যায়। একে বারে ছাইরা দে মা কাইন্দা বাঁচি অবস্থা হয়ে যায়। দুই ঘন্টা গল্প করলে পঞ্চাশ টা টপিক নিয়ে গল্প হয় এর মাঝে খুব বেশি হইলে দুই বা তিনটা টপিকে আমি অংশগ্রহণ করতে পারি বাকি গুলো হচ্ছে বাচ্চার ডায়পার ,দুধ ,স্কুল,সংসারের বাড়তি খরচ, বৌ শাশুড়ির যুদ্ধ ইত্যাদি।আমার মতো বেচেলর যারা আছেন তাদের নিজ পরিবারেও বৈষম্যের স্বীকার হতে হয় তাদের মূল্যায়ন হয় না অনেক বিষয়ে তাদের মতামত এর কোনো মূল্য নেই। ইদানিং দেখছি পরিবারে কারো বিয়া হইলে দাওয়াত দিতে চায় না তাতে অবশ্য এক দিক দিয়া ভালো হইছে গিফট এর টাকা বাইচা যায়।আর এমনেও সিঙ্গেল বেচেলার মানুষ বিয়ার দাওয়াত এ যাওয়ার অনুভূতি হচ্ছে বাচ্চাদের বার্থডে তে ক্লাউন হয়ে যাওয়ার মতো। একটা সময় এলাকাবাসীও এই সব বেচেলর এর জীবন হারাম কইরা দেয় ওই দিন এলাকার এক দোকানদার বললো ভাই আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কি থাকবে না ? বললাম ভবিষ্যৎ প্রজন্ম থাকতে হবে কেনো আমি কি নওয়াব সিরিজ উদ দৌলা। বাজার থেকে শুরু করে পাশের বাসার খালাম্মা সবাই উলটা চোখে তাকায়।অনেকে তো বইলাই বসে কোনো মেডিকেল সমস্যা আছে নাকি ? এতো প্রতিকূলতার মাঝে আমার মতো বিলুপ্ত প্রজাতির বেচেলর তাও যুদ্ধ কইরা টিকা আছে কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাস আসলে হিসাব নিকাশে উলটা পালটা লাইগা যায়।বাইরের মানুষকে যতই বুঝ দেই নিজেকে বুঝ দেয়া কিন্তু কঠিন। এক দিক দিয়ে আসে পাশে যখন অসংখ্য ডিভোর্স দেখি তখন মনে হয় ঠিক পথেই আছি অযথা এই রকম মিথ্যা ভালোবাসার ঘর সাজাই নাই আবার যখন ভাবি বৃদ্ধ বয়সে দেখার কেউ থাকবে না একাই যুদ্ধ করে টিকতে হবে তখন মনে হয় কপালে খারাপই আছে। আসলে ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয় পঁচিশ থেকে তিরিশ বছর এর মাঝে বিয়ে করে ফেলাটাই উত্তম। চল্লিশ এর পর বিয়ে করা খুবই বিপদজনক সিদ্ধান্ত মনে হয়। বিয়াল্লিশ বছরে ছেলে মেয়ে হইলে আপনার বয়স যখন সাইট হবে তখন বাচ্চা আঠারো বছরে পা দিবে। এক পা তো তখন কবরে চইলা গেছে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর কাছে আমি তখন বোঝা হয়ে উঠবো। জীবনের হিসাব মিলানো খুব কঠিন। কষ্ট হয় এই ভাইবা যে ফেব্রুয়ারি মাসে আমার মতো বেচেলর এর হাত ধইরা হাটার মতো কেউ নাই ,চকলেট খাওয়ানোর কেউ নাই আবার ফুল দেবারও কেউ নাই ,সুখ দুঃখ কষ্ট ভাগ করার কেউ নাই। আসলে নিয়তি বইলা তো একটা বিষয় আছে তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই। পরিসংখ্যান তো বলে দেশের ডিভোর্স রেইট দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই রকম তো প্রায়ই শুনি দুই জন পাঁচ বছর প্রেম কইরা বিয়া করছে কিন্তু বিয়ার তিন বছর এর মাথায় ডিভোর্স হওয়া গেছে এই রকম ভালোবাসা থাকার চে আমার মতো বেচেলর জীবন অনেক ভালো। দুঃখ হয় তাদের জন্য যাদের থাইকাও নাই অতএব দাঁত থাকিতে দাঁতের মর্ম বুঝতে হবে এবং সুযোগের সৎ ব্যবহার করিতে হইবে না হইলে আমার মতো পস্তাইতে হইবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:৩৭
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×