সেরা কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসাবে এবছর এই পদক অর্জন করে অন্নদাতা প্রতিষ্ঠান হিসাবে খ্যাত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। ব্রি'র পক্ষে পদক ও সম্মাননার চেক গ্রহণ করেন ব্রি'র সম্মানিত মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস । সেরা কৃষি ব্যক্তিত্ব হিসেবে পদক পেয়েছেন স্বনামধন্য ও প্রবীণ কৃষি বিজ্ঞানী ড. মো: মামুনুর রশিদ। কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা খ্যাত কিউএআইএস সফটওয়্যার তৈরী করে বর্ষসেরা কৃষিবিদ হিসেবে পদক পেয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহাদৎ হোসাইন সিদ্দিকী, কৃষি সম্প্রচার ও প্রকাশনা ক্যাটেগরিতে পদক পেয়েছেন শেকৃবি'র প্রো-ভিসি ড. শহীদুর রশীদ ভূইয়া এবং সফল কৃষক হিসেবে পদক পেয়েছেন চুয়াডাঙ্গার কৃষক মো: আসাদুল হক বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সকল কৃষিবিদদের কৃষি ও কৃষকের আনন্দ বেদনার সারথী হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপলব্ধি করেছিলেন কৃষির উৎকর্ষ ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যদা প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণায় কৃষিবিদরা যেমন সম্মানিত হয়েছেন তেমনি দেশে কৃষিও ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন নীতিমালায় কৃষিকে অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। পরমাণু ও জৈব প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চল, হাওড় বাওড়সহ প্রতিকূল জলবায়ুর উপযোগী জাত উদ্ভাবন ও আবাদ এলাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষি গবেষণা ও কৃষি সম্প্রসারণকে আরো নিবিড়ভাবে কাজ করার জন্য তিনি আহ্বান জানান। মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেন, কৃষকরা যেন পরিবর্তিত পরিবেশে খাপ খাইয়ে চলতে পারেন সেজন্য তাদের কৃষি তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে হবে। তিনি বলেন, খাদ্য উৎপাদনে যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হয়েছে তা ধরে রাখতে হলে কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি খাদ্য শস্যের বহুমাত্রিক ব্যবহার জনপ্রিয় করাসহ সাধারণ মানুষের পুষ্টি উন্নয়নে বিশেষ নজর প্রদানের জন্য গুরুত্ব আরোপ করেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি কেআইবি কৃষি পদক প্রচলনের জন্য কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, পদক প্রাপ্তরা ভবিষ্যতে আরো বেশি অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেন, বর্তমান সরকারের কৃষি উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপের কারণে দেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনই করেনি বরং খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশ হিসেবে বিদেশে চাল রপ্তানী করেছে। এ সফলতার জন্য তিনি কৃষক ও কৃষিবিদদের ধন্যবাদ জানান। পাটের জীবন রহস্য উন্মোচন, বিটি বেগুনের জাত উদ্ভাবন, বিশ্বে প্রথম জিংক সমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবনের কৃতিত্ব বাংলাদেশকে বিশ্বমানে নিয়ে গেছে বলে মাননীয় কৃষিমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মাননীয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জনাব নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি বলেন, সরকারের কার্যকর নীতি ও কৌশলের সাথে কৃষক ও কৃষিবিদদের মেধা ও প্রচেষ্টার সমন্বয়ের ফলে শুধু দানাদার ফসলের উৎপাদনই বৃদ্ধি পায়নি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতেও বিপ্লব রচিত হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মাননীয় সভাপতি কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যদা প্রদান করেছিলেন বলেই মেধাবী শিক্ষার্থীরা কৃষি শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির মাননীয় সদস্য কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান এমপি বলেন, কৃষিবিদ দিবস উদযাপনের মধ্য দিয়ে আমরা জাতির জনকের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অবকাশ পাই পাশাপাশি কৃষি খাতের বহুমাত্রিক উন্নয়নের নানান উপায় ও কৌশল অবলম্বনে অনুপ্রাাণিত হই। তিনি কৃষিবিদদের বিভিন্ন যৌক্তিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির সুদৃষ্টি কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ-এর সভাপতি কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি বলেন, সরকারের উন্নয়নমূলক নীতির পাশাপাশি কৃষক ও কৃষিবিদদের নিরলস শ্রমের ফলেই কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব কৃষিবিদ মোহাম্মদ মোবারক আলী।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:২০