somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরআনিক ব্যাখ্যায় দয়াদর্শন সুরা বাকারা, আয়াত : ৩ /২

৩০ শে জুন, ২০১৫ রাত ২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোরআনিক ব্যাখ্যায় দয়াদর্শন
সুরা বাকারা, আয়াত : ৩ /২
ইসলামের ‘ঈমান বিল গায়েব’ শুধু শুধু পরাবাস্তব কোন বিষয়ও নয়। এখানে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় আছে। যেমন ঈমানে মুফাচ্ছালে বলা হয়েছে,

এক. আমানতু বিল্লাহ
অর্থাৎ আল্লাহর ওপর ঈমান
আল্লাহর ওপর ঈমান ইসলামে সবচে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যে কোন কারণে হোক, আল্লাহর প্রতি পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাস স্থাপন না করলে কেউ মুত্তাকির মর্যাদা পাবেন না। আল্লাহর উপর অবিশ্বাসী যিনি মুত্তাকি নয়, তাকে আর ঈমানদার, বিশ্বাসী অর্থাৎ মুসলমান বলা যাবে না। আল্লাহর ওপর বিশ্বাস হলো আল্লাহর নিরানব্বই গুণবাচক নামের প্রতি বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত। এখানে একটা গুণবাচক নামকেও অস্বীকার করা যাবে না। সম্পূর্ণ বিশ্বাস করতে হবে-লা ইলাহা ইল্লাললাহ, অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন ‘ইলা’ নেই। ইলা একটি ব্যাপক শব্দ। অনেকে ‘ইলা’ অর্থ করেছেন ‘মাবুদ’। ‘ইলা’ অর্থ কিন্তু মাবুদ নয়, মাবুদ পৃথক একটি গুণবাচক নাম। ‘ইলা’ শব্দের ভেতর প্রকৃত অর্থে আল্লাহর নিরানব্বই গুণবাচক নামের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আল্লাহর উপর বিশ্বাস পূর্ণাঙ্গ না হলে মানুষ বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে যায়। এই বিশ্বাস ছাড়া মানুষের চিন্তা-চেতনা স্বাধীন হতে পারে না। মানুষ যখন এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাসকে পূর্ণাঙ্গ করতে ব্যর্থ হয় তখন সে আল্লাহর অসংখ্য সৃষ্টির সামনে মাতানত করে দেয়। এভাবে মানুষ আটকে যায় বিভিন্ন শাসক আর বিভিন্ন বস্তুর গোলামীতে। আল্লাহর উপর ঈমান পূর্ণাঙ্গ না হলে মানুষ বিভিন্ন রোগেও আক্রান্ত হয়, বিশেষ করে মানসিক রোগ তো লেগেই থাকে। আর মনোবিজ্ঞানিদের মতে মানসিক রোগ থেকেই মানুষের বেশির ভাগ রোগের জন্ম হয়। বর্তমানে ডাক্তারে গেলে অধিকাংশ রোগিকে ডাক্তার মূল রোগ বলে দেন ‘চিন্তা’।

প্রকৃত অর্থে চিন্তা দু প্রকার-১) সুচিন্তা, ২) দুশ্চিন্তা। সুচিন্তা মানুষের মন কিংবা দেহে কখনও রোগ তৈরি করে না। বরং তা রোগকে কমিয়ে রাখে। যেমন আপনি মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিবারণের জন্য ভাবছেন, অন্যের সমস্যা সমাধানের জন্য ভাবছেন, সমাজ পরিবর্তনের জন্য ভাবছেন, জলাবদ্ধতাÑবন্যা থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য ভাবছেন, মাদরাসা-স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা বা রক্ষার কথা ভাবছেন; আপনি নিশ্চিত থাকুন আপনার কোন রোগ হবে না। বরং এই ভাবনাগুলো আপনার শরীরকে সুস্থ্য করে রাখবে।

দুশ্চিন্তা আসে হীনমন্যতা থেকে। মানুষ যখন ভাবে আমি কেন গরীব, আমি কেন অসুন্দর বা কালো, আমি কেন ওর মতো টাকা ওয়ালা হতে পারলাম না, আমার কেন শুধু রোগ আসে, আমার কেন সন্তান হলো না, আমার কেন শুধু মেয়ে হয়- ছেলে সন্তান হয় না কেন-বংশের নাম কি থাকবে না, আমি কেন এত সাস্থ্যশূন্য, আমার স্ত্রী কেন ওমুকের স্ত্রীর মতো সুন্দর নয়, আহারে নিজের এত সম্পদ রেখে আমাকে চলে যেতে হবে, মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন কিন্তু স্বামীর বাড়ি সুখে নেই, ছেলে বিয়ে দিয়েছেন কিন্তু সে এখন বউ নিয়ে সুখে নেই কিংবা সে বউ পাগলা (মাউগা); মা-বাপের কথা শোনতে চায় না, আপনি আপনার মেয়ের স্বামীকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন কিন্তু পারছেন না, কারণ মেয়ের শশুড়-শাশুড়ি খুবই বজ্জাত, ওরা তাবিজ-যাদু পর্যন্ত করে রাখে কিংবা আপনি ছেলেকে নিজের নির্দেশে চালাতে চাচ্ছেন কিন্তু ছেলের শশুড়-শাশুড়ি যাদু-তাবিজ অথবা শিখিয়ে-বুঝিয়ে তার মাথাটা নষ্ট করে দিয়েছে ইত্যাদি বিভিন্ন চিন্তার জন্ম হয় হীনমন্যতা থেকে। শুধু নিজে বড় হতে চাই, অন্যকে বড় হতে দেখলে হিংসা আসে-কষ্ট লাগে ইত্যাদি হীনমন্যতা । আর এই হীনমন্যতা জন্মদেয় প্রতিদিন অসংখ্য দুশ্চিন্তার। কোন মানুষ যখন আত্মা থেকে আল্লাহর উপর পূর্ণাঙ্গ ঈমান রাখে তখন আর তাকে হীনমন্যতা, দুশ্চিন্তা, উৎকণ্ঠা ইত্যাদি স্পর্শ করতে পারে না।

আল্লাহ কি এবং আল্লাহর উপর বিশ্বাস বলতে কি বুঝায়?

‘আল্লাহ’ শব্দটি সৃষ্টিকর্তার সত্তাবাচক নাম, যাকে আরবীতে ‘ইসমে যাত’ বলা হয়েছে। সত্তাবাচক নাম অর্থ হলো-যার অস্তিত্ব অবশ্যাম্ভাবী এবং যিনি সমস্ত প্রশংসনীয় ও উত্তম গুণাবলির অধিকারী। (শাহরে তাহযিব, আল্লামা তাফতাযানি (র.), ২য় খণ্ড)। আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়। ‘আল্লাহ’ শব্দের দ্বিবচন বা বহুবচন হয় না। এই শব্দের হুবহু সমার্থক প্রতিশব্দ নেই। অন্য কোন শব্দ দিয়ে ‘আল্লাহ’র সম্যক পরিচয় দেওয়া যায় না। আল্লাহর অর্থ, পরিচয়, সংজ্ঞা, প্রতিশব্দ ইত্যাদি একমাত্র আল্লাহ-ই, অন্যকিছু নয়। ইসলামের তৌহিদ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন আল্লাহকে বিশ্বাস করতে হবে মহাবিশ্বের অনাদি-অনন্ত (কাদীম) সৃষ্টিকর্তা। তিনি সবসময় ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। তাঁর অস্তিত্ব সন্দেহাতীত ও অবশ্যম্ভাবী। প্রশংসনীয় সকল গুণাবলিতে তিনি গুণান্বিত। সকল দোষ-ত্র“টি থেকে তিনি মুক্ত ও পবিত্র। সবকিছূ তাঁর জ্ঞানে অধিন। সবকিছুর উপর তিনি ক্ষমতাশীল। সব সৃষ্টি তাঁর ইচ্ছায় আবর্তিত। তিনি সবকিছু শোনেন এবং দেখেন। তাঁর কোন উদাহরণ নেই। তাঁর কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তাঁর কোন সহযোগি নেই। তাঁর ইবাদতে বা উপাসনায় অন্য কেউ শরিক নেই। বিশ্বজাহানের আইন তৈরিতেও তাঁর কেউ অংশিদার নয়। তিনি যা চান তা হয়, যা চান না তা হয় না। অসুস্থতা-সুস্থতা, রিজেক, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি সবই তাঁর নিয়ন্ত্রণে চলে। তিনি অন্য কোন সত্তায় প্রবেশ কিংবা একীভূত হওয়া থেকে পবিত্র। তিনি দেহ বিশিষ্ট নয় এবং তিনি কোন সীমায় আবদ্ধ নয়। তিনি কারো কিংবা কোনকিছুর মুখাপেক্ষি নয়। কারো কাছে তিনি কোন কিছুর জন্যই জবাবদিহি করতে হয় না। যদি তিনি চান তবে অবশ্যই তাঁর কাছে সবাইকে জবাব দিতে হবে প্রতিটি মূহুর্তের। তাঁর প্রতিটি কাজ হেকমতপূর্ণ এবং প্রজ্ঞাসম্পন্ন। তিনি ছাড়া কেউ যথার্থ নির্র্দেশ দাতা নেই, নেই কোন হাকিম। আরশ, কুরসি, লাও-কলম, আকাশ-জমিন, গাছ-পালা, বৃক্ষলতা, পশু-পাখি ইত্যাদি দেখা-নাদেখা যতকিছু সৃষ্টি হয়েছে সবই তিনি করেছেন। তিনি চিরঞ্জিব এবং নিজের অস্তিত্বে সবসময় বিরাজমান। মহাবিশ্ব কোন আকস্মিক দুর্ঘটনায় সৃষ্টি হয়নি, তা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন সুপরিকল্পিতভাবে। তিনি যেমন গড নয়, তেমনি দেবিও নয়। তিনি আল্লাহ নিজের সকল গুলবাচক নামের সমন্বয়ে। এই সবের উপর ঈমান বা বিশ্বাস-ই হলো আল্লাহর উপর ঈমান বা বিশ্বাসের বিষয়। আমরা যারা নিজকে মুমিন-মুসলমান বলে দাবী করি তাদের সবার উচিৎ মনের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একবার চিন্তা করা যে সত্য কি আমরা আল্লাহতে ঈমান এনেছি? যদি মন বলে-সত্য এনেছি। তা হলে আসুন আবার মনকে প্রশ্ন করি-তা হলে আমাদের মধ্যে এত ফিতনা-ফাসাদ-মারামারি-চুরি-ডাকাতি-মিথ্যা মামলা, সুদ- ঘুষ, থানা-হাজত, মানসিক চিকিৎসক ইত্যাদি কেন? কেন এত মিথ্যার বন্যা ? তা হলে আমাদের দাবী কি মিথ্যা? অন্যকে বেঈমান, মিথ্যুক, খারাপ ইত্যাদি চিহ্নিত করার আগে আসুন আমরা নিজকে মনের আয়নার সামনে রেখে চিন্তা করি আমরা কতটুকু আল্লাহ বুঝেছি এবং কতটুকু ঈমান বা বিশ্বাস রেখেছি। আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাসটাই একজন মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসতে পারে। অসৎ থেকে সৎ করে দিতে পারে। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না কেন? বিষয়গুলো নিয়ে নিজের সাথে নিজের বিচার-বিবেচনা করতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর প্রতি পূর্ণাঙ্গ ঈমান আনার তৈফিক দান করুক।

দুই. ওয়ামালাইকাতিহি
অর্থাৎ ফেরেশতাদের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা

ফেরেস্তা শব্দটি ফার্সি। আরবিতে ‘মালাক’ বলা হয়, যার বহুবচন ‘মালাইকা’। বাংলায় অর্থ হয় ‘বার্তা বাহক’। ফেরেশতার পরিচিতিতে স্যাইয়েদ মুফতি মুহাম্মদ আমিমুল ইহসান (র.) লিখেছেন : এমন নূরানী মাখলুক-যারা বিভিন্ন আকৃতি ধারণ করতে পারেন। তাঁরা কখনও আল্লাহর নির্দেশের বিরুদ্ধাচারণ করেন না; বরং সর্বদা আল্লাহর নির্দেশ পালন করতে থাকেন। (কাওয়াইদুল ফিকহ, পৃষ্টা-৫০৪)। ফেরেশতা একটি পরাবাস্তব বিষয়। ইসলামী পণ্ডিতদের মতে তারা বিভিন্ন আকৃতি ধারণ করতে পারেন। তাদের কামনা-বাসনা, ক্ষুধা-তৃষ্ণা, নিদ্রা কিংবা তন্দ্র কিছুই নেই। পৃথিবীতে আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত, গজব, ওহী ইত্যাদি যা কিছু নাযিল হয় সবই ফেরেশতারা নিয়ে আসেন। কিয়ামতের দিনে তারা ভাল-মন্দের স্বাক্ষী দিবেন। ফেরেশতার সংখ্যা কত তা একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন। কোরআনে বলা হয়েছে- আপনার প্রতিপালকের বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন। (সুরা মুদ্দাস্সির, আয়াত-৭৪)। কোরআন-হাদিসের সূত্রে আমরা চারজন ফেরেশতাকে বড় বলে জানি। তারা হলেন-

১) হযরত জিবরাইল (আ.), যার কাজ ছিলো নবী ও রাসুলদের কাছে আল্লাহর কথা পৌঁছানো। জিবরাইল ফেরেশতাকে ‘রূহ’ বা ‘রূহুল আমীন’ও বলা হয়। শেষ নবীর বিদায়ের পর এই ফেরেশতার মূল দায়িত্ব শেষ।
২) হযরত মিকাইল (আ.), যার কাজ সকল প্রাণীকে খাদ্য বন্টন করা।
৩) হযরত আজরাইল (আ.), যার কাজ সকল প্রাণীর প্রাণ বা রূহ কবয করা।
৪) হযরত ইসরাফিল (আ.), যিনি শিঙ্গায় ফুঁক দিয়ে পৃথিবী ধ্বংস করে কিয়ামত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করবেন।

এই চারের বাইরে আরও কিছু ফেরেস্তার নাম পাওয়া যায়। যেমন-

১) কিরামান কাতিবিন, যারা মানুষের ভাল-মন্দ লিখে রাখেন।
২) মুনকার ও নাকির, এই দুজন মানুষের মৃত্যুর পর কবরে প্রশ্ন করেন।
৩) মালিক; যিনি জাহান্নামের পাহড়াদার।
৪) রিযওয়ান, জান্নাতের দায়িত্বশীল।

এছাড়া আরও আছেন অসংখ্য ফেরেশতা। যারা আল্লাহর ওপর পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাস এনেছেন তারাই ফেরেশতার ওপর বিশ্বাস পূর্ণাঙ্গ করতে পারবেন। ফেরেশতাকে আমরা দেখি নাই। আল্লাহর পক্ষ থেকে আমরা ফেরেশতা সম্পর্কে হযরত রাসুল (স.)-এর মাধ্যমে জানতে পেরেছি। কোরআন-হাদিসে ফেরেশতাদের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে তা বিশ্বাস করাই গায়েবের ওপর ঈমানের দ্বিতীয় শর্ত। আল্লামা সুলায়মান নদভী (র.) লিখেছেন : দুনিয়ার সকল ধর্মে ফেরেশতা জাতীয় সত্তাসমূহের অস্তিত্ব স্বীকার করা হয়েছে। (সীরাতুন্নবী, ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্টা-২৯৩)।
ফেরেশতাদের উপর ঈমান হলো ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক একটি বিষয়। কেউ যদি ফেরেশতাদের উপর বিশ্বাস আনতে পারে না সে আর কিছুর উপরই ঈমান ধরে রাখতে পারবে না। কারণ, ফেরেশতা বাদ দিলে ওহী, নবী, ঐশিগ্রন্থ সন্দেহের মুখোমুখি হয়ে যায়।

তিন. ওয়াকুতুবিহি
অর্থাৎ গ্রন্থসমূহের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা

গ্রন্থসমূহ বলতে এখানে কোরআন, ইঞ্জিল, তাওরাত, যবুর ইত্যাদি ঐশী গ্রন্থ বুঝানো হয়েছে। যে গ্রন্থসমূহ আমাদের সামনে সেগুলো পরাবাস্তব কি না, তা একটি প্রশ্ন। প্রকৃত অর্থে এখানে গ্রন্থসমূহের ঐশী আবেদনের প্রতি বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে। এই গ্রন্থসমূহ যে আল্লাহর কালাম তা বিশ্বাস স্থাপনকে ঈমান বিল গায়েব বা পরাবাস্তব বিষয়ের বিশ্বাস বুঝায়। আল্লাহর পক্ষ থেকে যখন যে ঐশী গ্রন্থ অবতীর্ণ হয়েছে তা সত্য ছিলো এবং নিজ সময়ে সেগুলো সম্পূর্ণ উপযোগি ছিলো। এই গ্রন্থগুলোর কোনটি পরবর্তীতে গ্রান্থিকদের কর্তৃক বিকৃত হয়েছে, কোনটি যেকোন দূর্ঘটনায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে, কোনটি সময়ের ব্যবধানে নতুন গ্রন্থ বা নতুন সংস্করণ অবতীর্ণ হওয়ায় প্রয়োজনিয়তা হারিয়েছে। তবে এই গ্রন্থগুলো যে আল্লাহর পক্ষ থেকে ছিলো তা বিশ্বাস করতে হবে।
আল্লাহর পক্ষ থেকে ছোট বড় অনেক গ্রন্থ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গোত্র বা বিভিন্ন স্থানের মানুষদের হেদায়তের নির্দেশনা হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছে। এরমধ্যে চারটি প্রধান গ্রন্থের কথা কোরআনে বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়েছে। যেমন- তাওরাত : যা হযরত মুসা (আ.)-এর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে। যবুর : যা হযরত দাউদ (আ.)-এর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে। ইঞ্জিল : যা হযরত ঈসা (আ.)-এর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে। কোরআন : যা হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে।
কোরআন হলো সর্বশেষ ঐশিগ্রন্থ। এরপর কোন গ্রন্থ আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হবে না। এতে পূর্বের সকল গ্রন্থের সত্যগুলো এবং ভবিষ্যত মানব জীবনের সমস্যাবলীর আলোচনা ও সমাধানের আবশ্যক সূত্রসমূহ সন্নিবেশিত হয়েছে। তাই বিশ্বাস করতে হবে কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার পর পূর্বের সকল গ্রন্থ ও শরিয়ত রহিত (মনসুখ) করে দেওয়া হয়েছে। কোরআন কোন বিশেষ সময়, বিশেষ স্থান কিংবা বিশেষ জনগোষ্ঠির জন্য অবতীর্ণ হয়নি। কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে আন্তর্জাতিক সভ্যতা গঠনের সূচনালগ্নে বিশ্বের সব দেশ ও জাতীর জন্য। কোরআনের আবেদন কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। কোরআন যেভাবে হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে সেভাবেই থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত, তাতে কোন রদবদল হবে না। কোরআনে যা আদেশ হয়েছে তা মেনে চলা ফরজ, আর যা নিষেধ হয়েছে তা করা হারাম, একথা পূর্ণাঙ্গরূপে বিশ্বাস করতে হবে। বিশ্বাস করতে হবে কোরআনে উল্লেখিত প্রতিটি কথা সত্য এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। এর নাম-ই হলো কিতাবসমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপন।

চার. ওয়ারাসুলিহি
অর্থাৎ রাসুলদের ওপর বিশ্বাস স্থাপন
রাসুল দৃশ্যত একটি বিষয়। এখানে গ্রন্থের মতো রাসুল বাস্তব বিষয় হলেও তাঁর কাছে আগত ওহী কিংবা রাসুলের বিভিন্ন ঐশী বিষয় পরাবাস্তব। নবী এবং রাসুলের ওপর বিশ্বাস না থাকলে সবই মিথ্যা। ‘রাসুল’ অর্থ- সংবাদ বহন। ইসলামী পরিভাষায় রাসুল হলেন যিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের হেদায়তের জন্য ওহী ও গ্রন্থ সহকারে প্রেরিত হয়েছেন। যদিও এখানে নবী শব্দ আসেনি, তবে যেহেতু নবী ছাড়া রাসুল হন না, তাই নবীদের উপর বিশ্বাসটাও এর অর্ন্তভূক্ত। ‘নবী’ অর্থ-সংবাদদাতা। নবী এবং রাসুলের মধ্যে ব্যবধান হলো-নবী গ্রন্থ ছাড়া শুধু ওহীর অধিকারী আর রাসুল গ্রন্থসহ ওহীর অধিকারি। নবী ও রাসুলদের উপর বিশ্বাস অর্থ হলো, হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করতে হবে, আল্লাহ পাক মানুষের হেদায়াতের জন্য যুগে যুগে নাবী ও রাসুল প্রেরণ করেছেন। পৃথিবীতে নবী-রাসুল কতজন এসেছেন সেই হিসাব আল্লাহ ছাড়া কারো জানা নেই। কোরআনে মাত্র ২৫ জনের নাম উল্লেখ আছে। এক হাদিসে উল্লেখ আছে, হযরত মুহাম্মদ (স.) নবী এবং রাসুলের সংখ্যা বলেছেন এক লাখ চব্বিশ হাজার। যার মধ্যে তিন শ পনেরো জন রাসুল ছিলেন। (তালিকুছ ছাবিহ-শহরে মেশকাত : মাওলানা ইদরিছ কান্দলবী)।
নবী এবং রাসুল সংখ্যায় যতই হোন না কেন তাদের প্রতি বিশ্বাসের ক্ষেত্রে কোন ব্যবধান নেই। কোরআনের ভাষ্য হলো-‘লা নুফাররিকু বাইনা আহাদিম মির রাসুলি।’ (সুরা বাকারা)। তবে এ বিশ্বাসও থাকতে হবে হযরত মুহাম্মদ (স.) ওদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ট ও সর্বশেষ নবী এবং রাসুল। হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর ঘোষণা : ‘আনা খাতামুল আম্বিয়া, লা নাবিয়া বাদা, অর্থাৎ আমি সর্বশেষ নবী, আমার পরে কোন নবী আসবেন না।’ সাথে সাথে বিশ্বাসও রাখেতে হবে কেউ যদি হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর পর নিজকে নবী দাবী করে তবে সে অবশ্যই মিথ্যুক বা কাফের।
পাঁচ.ওয়াল ইয়াওমিল আখেরি
অর্থাৎ আখেরাতের দিনের ওপর বিশ্বাস স্থাপন

আখেরাত মনে মৃত্যুর পর থেকে শুরু হওয়া জীবন। আখেরাতের জীবনের বিশ্বাসটা সম্পূর্ণ পরাবাস্তব এবং ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর একটি। এবিষয়ে সুরা ফাতেহায় আলোচনা করেছি যে, আখেরাতের বিশ্বাস নিয়েই অনেক ধর্মের সাথে ইসলামের মৌলিক ব্যবধান স্পষ্ট হয়েছে। মানুষকে সর্বপ্রকার পাপাচারÑঅত্যাচার ইত্যাদি থেকে রক্ষায় আখেরাতের বিশ্বাসটা অত্যন্ত জরুরী। আখেরাতের বিশ্বাসে রয়েছে কবর, হাশর, পুলসিরাত, মিজান, বেহেস্ত, দোজখ ইত্যাদি বিষয়ক আলোচনা। মুসলমান হওয়ার জন্য বিশ্বাস করতে হবে কোরআন-হাদিসে আখেরাত সম্পর্কে যা বলা হয়েছে সবই সত্য। যেমন, কবরের জীবন, মুনকার নকিরের প্রশ্ন, হাশরের বিচার, পরকালের শাস্তি বা শান্তি ইত্যাদির ওপর বিশ্বাস করা।

ছয়. ওয়ালকাদরি খাইরিহি ওয়াশাররিহি মিনাল্লাহি তা’আলা’
অর্থাৎ ‘তাকদিরের ভালো-মন্দ সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়’ এ কথার বিশ্বাস স্থাপন করা

তাকদির অর্থ ভাগ্য। বিষয়টা পূর্ণাঙ্গ পরাবাস্তব। অনেকে তাকদিরের বিশ্বাস করেন না, তারা বলেন মানুষ ইচ্ছার স্বাধীন, সে যা ইচ্ছে তা করবে, এখানে তাকদির বা ভাগ্য কোন বিষয় নয়। অর্থাৎ তারা বিশ্বাস করেন নিজের কর্মের। তারা তাদেরকে দাবী করেন বস্তুবাদি, বাস্তববাদি, প্রগতিবাদি। আবার একদল আছেন ভাববাদি, যারা বলেন ভাগ্যে যা লিখা আছে তা-ই যখন ঘটবে তবে চেষ্টা বা কর্ম করে লাভ নেই। ইসলামী জ্ঞানের দৃষ্টিতে তারা উভয়গ্র“পই বিভ্রান্ত। তাকদির বা ভাগ্য ইসলামের মৌলিক একটা বিষয়। এই ভাগ্য মানে কর্ম বা চেষ্টাশূন্য জীবন নয়। তাকদির সম্পর্কিত পবিত্র কোরআনের অন্যান্য আয়াতসমূহ পাঠে স্পষ্ট হয় আল্লাহর সৃষ্টিতে যা হয় সবই তার নিয়মানুসারে ঘটে। তাকদির আল্লাহ পূর্ব থেকেই নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। কার তাকদিরে কি আছে সবই তিনি আবগত আছেন। কর্মক্ষেত্রে মানুষ ইচ্ছার স্বাধীন হলেও সে তাকদিরের অধীনে সীমাবদ্ধ। এখানেই মানুষ অসীম না হয়ে স্বসীম হয়েছে। ইসলামী জ্ঞানের পুণ্ডিতেরা তাকদিরকে ‘হাকিকি’ এবং ‘মালিকি’ এই দুভাগে বিভক্ত করে থাকেন।

১) ‘তাকদির-এ-হাকিকি’-হলো অপরিবর্তনীয় তাকদির। মানুষ চেষ্টা, সাধনা করেও যা পরিবর্তন করতে পারে না। যেমন জন্ম, মৃত্যু ইত্যাদি। এই তাকদির চিরন্তন এবং স্থান-কালের উর্ধ্বে। যাকে সাধকেরা ‘লা-মাকান’ বলে থাকেন।

২) ‘তাকদিরে মালিকি’-হলো পরিবর্তনশীল তাকদির, যা মানুষ তার চেষ্টা, সাধনা, কর্ম দিয়ে পরিবর্তন করতে পারে। এখানেই মানুষ চিন্তার ক্ষেত্রে, কর্মের ক্ষেত্রে স্বাধীন। এই ক্ষুদ্র স্বাধীনতায় মানুষ হারিয়ে ফেলে তাঁর বিবেক-বুদ্ধি, আর ঘোষণা করে তাকদির বলতে কিছু নেই।

প্রকৃত অর্থে তাকদির একটি বিশাল বিষয়, যার বৃত্তের ভেতরই মানুষ স্বাধীনভাবে চিন্তা ও কাজ করে থাকে। এই বিশাল বৃত্তের ভেতরই সে সুকর্ম-কুকর্মের স্বাধীনতা অর্জন করে। মানুষের অনেক রোগ হয়ে তার নিজের কর্মের ফলে, সে ঔষুধ সেবন করে ডাক্তারের পরামর্শে, এসব কিছুই তাকদিরের বিষয় নয়। এখানে তাকদিরের বিষয় হলো নিয়মভঙ্গের কারণে রোগের আগমন। ইমাম গাজ্জালি (র.)-সহ যে সুফি-সাধকেরা বলেনÑমানুষ তার তাকদিরের লেখা বাস্তবায়নের পথেই কাজ করে, এর বাইরে কিছু করে না। অর্থাৎ যার ভাগ্যে অমঙ্গল লেখা আছে সে অমঙ্গলের পথে চলে এবং যার ভাগ্যে মঙ্গল লেখা সে মঙ্গলের পথে চলে। (কিমিয়ায়ে সা’দাত, ইমাম গাজ্জালী, ৪র্থ খণ্ড)। ইমাম গাজ্জালির এমত মেনে নিলে মানুষের আর কর্মের কোন প্রয়োজন থাকে না, সে তাকে ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিলেই হয়। অথচ পবিত্র কোরআনের কথা হলো: ‘তোমাদের যে বিপদ-আপদ আসে তা তো তোমাদেরই হাতের কামাইয়ের ফল’ (সুরা শূরা, আয়াত ৩০)। অবশ্য কোরআনের অন্যস্থানে বলা হয়েছে : প্রত্যেক মানুষের কৃতকর্ম আমি তার গলায় লাগিয়ে দিয়েছি’ (সুরা বানী ইসরাইল, আয়াত ১৩)। আবার হাদিসে আছে : ‘আত্ তাকদিরো লা-ইয়ারুদ্দু’ অর্থাৎ তাকদিরের লেখা কেউ ফিরাতে পারে না।’ এখানে কিছুটা মুখোমুখি সংঘর্ষ দেখা গেলেও তা সংঘর্ষ নয়, বরং তা তাকদিরের ব্যাপকতার ক্ষেত্রে বাস্তবতা। মোটকথা তাকদিরকে এখানে বুঝতে হবে ‘তাকদির-এ-হাকিকি’ ও ‘তাকদিরে মালিকি’-র মধ্যে বিভক্ত করে। অবশ্যই তাকদিরের বিশ্বাস ছাড়া কেউ মুত্তাকি অর্থাৎ ঈমানদার বলে গ্রহণযোগ্য হবে না। তাকদিরের বিশ্বাস হলো, আসীম কিংবা সসীম ক্ষেত্রে কিছু থেকে কিছু হয় না, সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, সেকথার বিশ্বাস স্থাপন করা।

সাত. ওয়ালবা’সি বাআদাল মাউত
অর্থাৎ মৃত্যুর পর আবার জীবিত হওয়ার ওপর বিশ্বাস স্থাপন
সপ্তম বিষয়ের সামঞ্জস্য পঞ্চম বিষয়ের সাথে রয়েছে। দুটাই আখেরাতের জীবনের সাথে সম্পর্কিত।
ইসলামের পরাবাস্তব বিশ্বাসগুলো কমবেশি এই সাত বিষয়ের মধ্যে রয়েছে। ‘ইউমিনুনা বিল গায়বি’ অর্থাৎ গায়েবের ওপর বিশ্বাস দিয়ে মূলত ঈমানে মুফাস্সালের এই সাতটি বিষয়ই বুঝানো হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৫ রাত ২:৪৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রম্য: টিপ

লিখেছেন গিয়াস উদ্দিন লিটন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৫




ক্লাস থ্রীয়ে পড়ার সময় জীবনের প্রথম ক্লাস টু'এর এক রমনিকে টিপ দিয়েছিলাম। সলজ্জ হেসে সেই রমনি আমার টিপ গ্রহণ করলেও পরে তার সখীগণের প্ররোচনায় টিপ দেওয়ার কথা হেড স্যারকে জানিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈশাখে ইলিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪০



এবার বেশ আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে । বৈশাখ কে সামনে রেখে ইলিশের কথা মনে রাখিনি । একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে যে ইলিশকে কিঞ্চিত হলেও ভুলতে পেরেছি । ইলিশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×