
বগুড়া একটা মার্ডার হটস্পট হয়ে গেছে । আজকাল কারোর সাথে সামান্য বাকবিতন্ডাতেও জড়ানোর ফল ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে । রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় ছোট ছোট ছেলেপেলেরা নেতা হয়ে উঠেছে, তৈরি করেছে কিশোর গ্যাং, সন্ত্রাসী-মাস্তানি নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে উঠেছে ।
বগুড়াকে কখনও এরকম একটা পরিস্থিতিতে দেখবো তা কখনও চিন্তাই করিনি । নব্বই দশকেও অবশ্য বেশকিছু সন্ত্রাসীর আবির্ভাব ঘটেছিলো । তবে এরকম কিশোর গ্যাংদের তখন উদ্ভব ঘটেনি ।
প্রশাসনিক কাঠামোয় একটা স্থিতিশীল অবস্থার তৈরি হয়েছে । সন্ত্রাসবাহিনী কিংবা ক্যাডারবাহিনী সবগুলোর পাটাতনেই রাজনৈতিক আশ্রয় ।
সেদিন বগুড়াতে একটা নিউজ বেশ শোরগোল ফেলেছিলো, নিউজের হেডলাইন ছিলো, “বগুড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩৮ জন কপোত-কপোতী আটক”। আমাদের বগুড়ার মানুষরা এতই দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন যে সেই নিউজ দেখে ধেই ধেই করে নেচে উঠেছিলো । অথচ দিনে-দুপুরে মাস্তান, সন্ত্রাসী কার্যক্রম দেখেও নীরব ভূমিকায় । কাউকে রাস্তায় ফেলে কোপালেও কেউ প্রতিবাদ করছেনা ।
আজ শহরে প্রবেশকালে লিচুতলা এলাকায় দেখলাম একজনকে বাইকের মাঝখানে নিয়ে মেডিকেলে ছুটতেছে, ছেলেটার টি-শার্টে রক্তের দাগ । যাঁরা নিয়ে যাচ্ছে সবাই কিশোর বয়সী ।
এত ভয়ংকর আর দুর্ধর্ষ একটা নগরী হয়ে উঠেছে বগুড়া যা বিগত কয়েক বছরের নিউজেই তাঁর প্রমাণ মেলে । এঁর ভীত স্বমূলে উৎপাটন না হলে বগুড়াবাসীর জন্য আরও বড় অশনী সংকেত অপেক্ষা করছে ।
আমাদের দাদা-নানা’রা হাট-বাজার কিংবা শহর থেকে ফেরার পথে ভয় করতেন যে বাঘ এসে খেয়ে ফেলবে নাকি, একারণে গরুর গাড়ির চাকার সাথে লোহার পাত বসিয়ে শব্দ তৈরি করে বাঘকে ভীতি প্রদর্শন করে সারিবদ্ধভাবে বাড়ি ফিরতো । অথচ আমাদের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষ, কিশোরদের গ্যাং, রাজনৈতিক দলকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা নেতা-কর্মীরা ।
এই মৃত্যু উপত্যকার বগুড়া তো আমার নয়, এই সন্ত্রাসী-মাস্তানীর বগুড়া তো আমার নয় ।
বগুড়াতে আবারও সুদিন ফিরে আসুক । মানুষ নির্ভয়ে চলাচল করুক । মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ফিরে আসুক । প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক । বগুড়ার মানুষের জান-মাল-ইজ্জত-আভ্রু সিকিউর হোক সেই প্রত্যাশা রাখি...
সাব্বির আহমেদ সাকিল
২৪ আষাঢ় ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | ০৮ জুলাই ২০২২ ইং | বগুড়া
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




