নাদান ব্যক্তি : আচ্ছা বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার ভারসাম্য রাখার জন্য কি করণীয়?
মি: নলেজ : এই পরিস্থিতিতে সব থেকে কার্যকর ব্যবস্থা হলো সৌখিন পন্যের উপর বেশী পরিমানে কর আরোপ করা।
নাদান ব্যক্তি : আচ্ছা সৌখিন পন্য কোনগুলো?
মি: নলেজ : সৌখিন পন্য হলো যেগুলো মৌলিক এবং নিত্য প্রয়োজনীয় নয়।যেমন বিড়ি-সিগারেট,ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট,কলরেট,গাড়ি ও গাড়ির তেল,গৃহ নির্মানের সৌখিন সামগ্রী ইত্যাদি।
(মি: নলেজের এই বক্তব্য শুনে কিছু ব্যক্তি একজন একজন করে তাদের মন্তব্য প্রকাশ করতে লাগল)
জনৈক বিড়িখোর : সিগারেট কোন সৌখিন পণ্য হলো?সিগারেট কতো ডিপ্রেসড মানুষকে বাঁচিয়ে রেখেছে জানেন!এই ধোঁয়া যদি না থাকত তাহলে এই এতো এতো সাহিত্যকর্ম,সৃজনশীল কাজ কারবার কোথায় পেতেন!না মশাই সিগারেটকে সৌখিন পন্য হিসেবে মানতে পারলাম না।
ব্লুটুথ বয় : না কাকা আমি একদমই মেনে নিতে পারলাম না।ইলেক্ট্রনিক পণ্য,গ্যাজেট,কলরেট এগুলোকে একদমই সৌখিন পন্য বলা উচিৎ না।এমনিতেই আমরা করোনার কারনে বাড়িতে বসে আছি।একটু গেমিং করে,ইন্টারনেটব্রাউজিং করে,গার্লফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলে টাইম পাস করছি।এখন যদি এগুলোর মূল্য বৃদ্ধির পরে আমরা ঘর থেকে বের হয়ে পড়ি তখন যেনো আমাদের দোষ দিতে আসবেন না।
হাইক্লাস বাবু : যাই বলেন না কেন গাড়ি,গাড়ির তেল আর গৃহ নির্মান সামগ্রীকে সৌখিন পণ্য কিভাবে বলতে পারলেন তাই আমি ভেবে পাই না।আচ্ছা একটা দেশে যদি রাস্তায় দামি দামি গাড়ি না চলে,উঁচু উঁচু অট্টালিকা না থাকে তাহলে কি সেটাকে কেউ উন্নত - শীল দেশ বলবে!শুনুন ওয়াসার পাইপের মধ্যে বা মধ্যবিত্তের টিনের চালের মধ্যে কতজন না খেয়ে আছে তা কেউ দেখে না উপর থেকে দামী গাড়ি আর অট্টালিকাই আগে চোখে পড়ে।
(এভাবে একে একে তাদের জ্বালাময়ী মন্তব্য প্রকাশ করতে লাগলেন।ইতোমধ্যে জটলা দেখে সেখানে এক "সংগ্রামী বন্ধু" এর আগমন।পরিস্থিতি বুঝে নিয়ে উনি বলতে শুরু করলেন।)
সংগ্রামী বন্ধু : ঠিক বলেছেন বন্ধুগণ।বিড়ি সিগারেট,ইলেক্ট্রনিক সামগ্রি,কলরেট,গাড়ি ও গাড়ির তেল,ফাস্টফুড,গৃহ নির্মানের সৌখিন সামগ্রী,সড়ক টোল,হোল্ডিং কর কোনটাই বাড়ানো যাবে না।বর্তমান সরকার দেশ চালাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। যোগ্য সরকার হলে কর না বাড়িয়ে বেশী বেশী টাকা ছাপানোতে মনযোগী হতো। আমাদের তীব্র আন্দোলন শুরু করতে হবে।করোনার কারনে যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলন চলতে পারলে আমরা থেমে থাকব না।চলুন আমরা যে কোন একটা চত্বরে মিলিত হয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলি।
(বাকি সবাই সংগ্রামী বন্ধুর সাথে আন্দোলন চত্বরে রওয়ানা হলেন।মিস্টার নলেজ ও বাড়ির পথ ধরলেন আর নাদান ব্যক্তি এহেন পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য কিভাবে বজায় রাখা যায় এ ব্যপারে পুণরায় ভাবতে শুরু করলেন।)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:০৮