somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্রানজিট ফি ইস্যুতে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করল সরকার !!

২৭ শে অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংবাদটি দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা থেকে সংকলিত, এর গুরুত্ব উপলব্দি করে সবাইকে জানানোর জন্য ব্লগে উপস্থাপন করা হলো।

নৌ ট্রানজিট ফি আদায়ের ব্যাপারে অবশেষে দিল্লির চাপের কাছে নতিস্বীকার করেছে সরকার। বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহারকারী ভারতীয় জাহাজের কাছ থেকে নৌ ট্রানজিট ফি আদায় স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে এনবিআর চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তের পর পরই খুলনায় আটক দুটি ভারতীয় জাহাজকে ছেড়ে দেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, নৌ ট্রানজিট ফি আদায়ের বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে বলে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে জানানোর পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এখন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখবে। এ কারণে তাদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, নৌ ট্রানজিট ফি আদায়ের ব্যাপারে এনবিআর গত কয়েক মাস আগে একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করে। এ নীতিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহারকারী বিদেশি জাহাজগুলো প্রতি টন পণ্যের জন্য এক হাজার টাকা ফি দেবে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত কার্যকরও হয়। বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহারকারী একাধিক ভারতীয় জাহাজ এই নৌ ট্রানজিট ফি প্রদান করে। গত দুই সপ্তাহ আগে সাতক্ষীরা জেলার শেখবাড়িয়া প্রবেশ পয়েন্টে দুটি ভারতীয় জাহাজ হঠাত্ করে এই নৌ ট্রানজিট ফি দিতে অস্বীকার করে। ফলে বাংলাদেশ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ওই জাহাজ দু’টি আটক করে। এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে তৈরি হয় জটিলতা। এনবিআর কর্তৃপক্ষ ট্রানজিট ফি ছাড়া ভারতীয় জাহাজ দু’টিকে না ছাড়ার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে। অন্যদিকে ট্রানজিট ফি না দিয়েই জাহাজ দুটি ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য তত্পরতা শুরু করে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন। ভারতীয় হাইকমিশনার রজিত মিত্র বৈঠক করেন পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েসের সঙ্গে। দুই ঘণ্টার ওই বৈঠক সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। ওই বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব এনবিআরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে এনবিআরের কর্মকর্তারা এ ট্রানজিট ফি আদায়ের ব্যাপারে তাদের মতামত তুলে ধরে বলেন, নৌ ট্রানজিট ফি’র ব্যাপারে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী ভারত এই ট্রানজিট ফি দিতে বাধ্য। এই ফি আদায় না করলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশ। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের ওই বৈঠকের পর ধারণা করা হচ্ছিল, নৌ ট্রানজিট ফি আদায়ের ব্যাপারে বাংলাদেশ তার শক্ত অবস্থান ধরে রাখবে। কিন্তু হঠাত্ করেই গতকাল সরকার নৌ ট্রানজিট ফি আদায় স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভারতের চাপের কাছে শেষ পর্যন্ত নতিস্বীকার করলো সরকার।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ট্রানজিট ফি আদায় আপাতত স্থগিত রাখাসহ মুচলেকার মাধ্যমে ভারতীয় জাহাজ দুটিকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকার যেহেতু বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে তাই আমরা এখন কোন ট্রানজিট ফি চার্জ করছি না। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে কথা উঠেছে তাই আমরা এ নিয়ে আলোচনা করব। আমরা সেজন্য বিষয়টি মেনে নিয়েছি। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে। তারা যোগাযোগ করছে এবং বিষয়টি নিয়ে আগামী মাসে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হবে। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এখন সিদ্ধান্ত হবে, বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহারকারী ভারতীয় জাহাজের কাছ থেকে ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট ফি আদায় করা হবে কিনা। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর প্রকাশিত যৌথ ইশতেহারে ট্রানজিটের পরিসর বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। অন্যান্য দেশের সঙ্গেও কানেক্টিভিটির কথাও বলা হচ্ছে। ভবিষ্যতের এসব দিক বিবেচনা করেই ট্রানজিট ফি’র ব্যাপারে নতুন নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের কাস্টমস আইনের ১২৫ ধারায় এই ফি আদায়ের ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাও মনে করেন, ভারতের কাছ থেকে অবশ্যই ট্রানজিট ফি আদায় করা উচিত। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ এ ব্যাপারে বিবিসি’কে বলেন, যেকোন দেশের ভেতর দিয়ে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ট্রানজিট ফি দিতে হয়। আইন অনুযায়ী ভারতকে ওই ফি দিতে হবে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ভারতের স্বার্থ রক্ষায় নানাভাবে তত্পর রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নৌ ট্রানজিট ফি আদায়ের ক্ষেত্রেও তিনি ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করে ফি না নেয়ার জন্য এনবিআরকে চিঠি দেন। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×