somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম গল্প

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কলেজের ক্লাসে বসেই ভাবছি আজ একটা গল্প লিখেই ফেলব । একটা কলম নিলাম ব্যাগ থেকে । কলমটা বেশ দামী ! ভালই কালি দিত বাট কিছুদিন ধরে কি যেন সমস্যা দেখা দিচ্ছে । কালি মাঝ থেকে কেটে যায় সমস্যাটা কি বুঝতে পারছি না । এটা দিয়ে হয়ত স্যারের কাছে ব্যাচে পড়ার টাইমে লেখা যাবে না । তাই চিন্তা করলাম গল্পটা লিখেই এটাকে জাদুঘরে পাঠাবো । খাতায় গল্প লেখা শুরু করলাম । বিষয়বস্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার পরের সময়টা কেমন আউলা ঝাউলা কেটেছিল তাই । কিছুক্ষণ পরেই আবিষ্কার করলাম যে আমি নতুন কিছুই লিখছি না । আমি যা যা করেছিলাম অনেকটা সেরকম হয়ে যাচ্ছে । প্রথম গল্প লিখছি তাই আনন্দ স্বভাবতই বেশী হচ্ছে । হাসছি আর লিখছি । কেউ দেখে নিশ্চিতভাবেই বলবে আমি এখন যে কাজ করছি সেটা করে আসলেই খুব আনন্দ পাচ্ছি। আমাকে চিরসুখী হতে হলে আমাকে এ কাজই আজীবন করে যেতে হবে , ডাক্তাররাও হয়ত এমন প্রেস্ক্রিপ্সন লিখবেন । লিখতে লিখতে মনে হচ্ছিল এই বারের সাহিত্যের নোবেল বোধধয় তৃতীয় বিশ্বের এখন যে লোকটা গল্প লিখছে সেই পাবে । আর বুকার পুরস্কার যদি আমাকে না দেয় তাহলে আর পুরস্কার কি ! কয়েক দিনের মধ্যে এই গল্প প্রকাশ করলেই হয়ত সব শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা আমাকে হেডলাইনের বিষয়বস্তু বানিয়ে লেখা-লেখি শুরু করবে । এরই মাঝে এক বন্ধু এসে বলল বসে বসে কি কর ? প্রেমপত্র লিখস নাকি ? নতুন বন্ধু তো তাই কখনো তুই আবার পরক্ষনেই তুমি এই নিয়েই চলছে । তার পর বলল বাসায় যাবি না ? গেট খোলা কিনা জিজ্ঞেস করার পর হ্যা সুচক উত্তর পাওয়ার পর বললাম না যাবনা তুই যা ।সরকারী কলেজে এইটা ভালই লাগে কোনো ক্লাস করার বাধ্যবাধকতা নেই । ও ওর ব্যাগ নিয়ে চলে গেল । যাওয়ার আগে অবশ্য বুঝিয়ে দিতে হল আসলে এটা স্যারের পড়া হেহেহে । নাহলে কি লিখছি সেটা আবার দেখতে চেয়ে বসে ! দেখাতে চাইলাম না কারন আমি কি লিখছি লেখা শেষ হওয়ার আগেই কেউ দেখে আমার সামনেই হাসাহাসি করুক তা আমি চাই না । এখন আর কোনো ক্লাসের স্যারই মনোযোগ আকর্ষণ করে পড়াচ্ছে না ।আমারও ক্লাসে কোনো মনোযোগ নেই । এখন মাথার মধ্যে গল্পের প্লাটফরম দাঁড়িয়ে গেছে । প্লাটফরমে হয়ত কিছুক্ষনের মধ্যেই রেল আসবে । রেল যাতে মিস না হয় সেদিকেই মনোযোগ । যাই হোক রেল আসার আগেই ছুটি হয়ে গেল । ভাবলাম ট্রেন কিভাবে আনা যায় তার জন্যে কিছু সময় পাব । আজকে আর বাসে করে বাসায় যাব না । বাসায় হেঁটে যেতে বেশী হলে লাগবে ত্রিশ মিনিট । হাঁটা যাক । হাটতে হাটতে হয়ত ট্রেন আনা যেতেও পারে ! শার্লক হোমস নাকি বেশী চিন্তা করার সময় হাটত । হুমায়ূন আহমেদও নাকি কি লিখবেন তা ভাবার সময় হাটতেন তাই আমি হাটলেও কোনো সমস্যা নেই । রাস্তায় হাটতে দেখছি ভালই লাগছে । গাড়ির সাথে পাল্লা দেওয়া শুরু করেছি । একটি গাড়িকে টার্গেট করছি দুইটা সিগন্যাল পার হওয়ার আগেই আমি গাড়িটাকে ধরে ফেলছি বেশ মজাই লাগছে । বাড়ি পৌছানোর পর পরই জেরার মুখোমুখি হব ভাবিনী । শুরু হল , পাখা গজিয়েছে স্বাধীনতাটাকে আমি যেন বিপথে যাওয়ার উপায় হিসেবে না ব্যবহার করি সে বিষয়ে হাজারটা উপদেশ । রাগে নিজের ঘরে এসে গল্প যেখানে লিখা শুরু করছিলাম পাতাটা ছিঁড়ে ঘরের মধ্যেই ফেলে দিলাম । হয়ত পরে বড় বোনের হাতে গেছে । রাতেই আমার রুমে এসে বলে গেল কিরে আজকাল কি প্রেম-পত্র পাচ্ছিস নাকি ? নাকি লেখার চেষ্টা করছিস ?
বললাম গল্পের মধ্যে এসব থাকতেই পারে !
- ও তাই নাকি! তাহলে আব্বুকে বলি ?
আরে এসব আব্বুরে দেখানোর কি হল ?
- না না তাও দেখাই । তার ছেলে কেমন গল্প লেখে একটু দেখুক । স্কুল পালিয়ে কবে কাকে দেখতে গিয়েছে একটু জানুক ! হিহিহিহি (আবার শয়তানের হাসি )
আমি কিন্তু ফেসবুক থেকে ব্লক মারব !
- মার ! তো কি হয়েছে ? আমি কি তোকে মানা করছি নাকি ? আমি আম্মুকে দিতে যাচ্ছি তোর গল্প ।

এই বলে ঘর থেকে বের হয়ে চলে গেল । আমি তাড়াতাড়ি লগ-ইন করে ওকে ব্লক মারলাম । একটু পর আব্বু এসে বলল বাবা তা আজ কি কি দেখলে ?
- আমি বললাম কোথায় !
ঐ যে কার সাথে নাকি কলেজের পর বেড়াতে গেছিলে ?
- কই ? না তো !
ও তা কলেজে ক্লাস কেমন চলছে ?
- জ্বী । ভাল ।

এবার শয়তানটাকে আরেকটা ব্লক মারতে ইচ্ছা করছে । আমি ওর রুমে গিয়ে আর কোনোদিন আমার রুমে আস্তে মানা করে দিয়ে আসলাম । এবার একটু শান্তি লাগছে ।
আবার দেখছি ও সকাল থেকে ও আমার রুমে ঠিকই আসছে । মনে হল একটা হেস্তনেস্ত করতেই হবে । আবার মনে হল কি দরকার আমরা আমরাইতো ! সকালেই আবার বাড়িতে আসল মাহবুব । আমাদের গ্রুপের সবচেয়ে বদাইম্মা । সাইকেল চালিয়ে নাকি বন্ধুরা কোথায় যাবে তাই আমাকেও যেতে হবে সেজন্য ডাকতে ।একটু পর আবার আমার রুমে আসল আপু । এসে মাহবুবকে গতদিনের নিজের তৈরি ফালতু কাহিনী শোনান শুরু করল । বাসা থেকে বের হওয়ার আগেই মাহবুব কে বুঝিয়ে শুনিয়ে বললাম এসব ফালতু কাউকে যে এই কাহিনী না বলে । কাউকে বললে আমি ওকে ব্লক মারব । কোনো কাজ হল না । ও খুব রসিয়ে সব কিছু সবাইকে বলে দিল । আর যে কাজটা করল তা হল গল্প বলার শুরুতে একটা মেয়ের নাম জুড়ে দিল । যাকে সবাই চেনে বলেই আমিও চিনি বলে ! ব্যাস ...............।।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×