somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট আল্টিমেটলি মেন এমপাওয়ামেন্টেই পর্যবসিত হচ্ছে।

২৭ শে মার্চ, ২০২৩ ভোর ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


'স্যার' একটি পুরুষবাচক শব্দ, রংপুরের ডিসি একজন নারী হয়েও তাকে যে স্যার ডাকতে বলেছে, এটাই মর্যাদার দিক থেকে নারীর পিছিয়ে থাকার মূল কারণ। অর্থাৎ বলতে চাচ্ছি নারীরা যখন সবকিছুতে পুরুষের মানদণ্ডে নিজের মান পরিমাপ করতে যায় তখন তাদের নিজস্ব মান বলতে আর কিছু থাকে না। ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেও এই সাধারণ বিষয়টা তিনি বুঝতে পারেনি, শুধু তিনি নয় অন্য কোন নারীকেও সেটা অনুধাবন করতে দেখিনা। সবাই প্রচলিত পদ্ধতিতে নারী হিসেবে নিজের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই নিজেকে পুরুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কেউ নতুন করে নতুন কিছু চিন্তা করতে পারছে না। অথচ প্রচলিত এই পদ্ধতিতে আদৌ নারী জাতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না, এবং গত একশো বছরেও সেটা সম্ভব হয়নি। কেন সম্ভব না সেটা নিচের উদাহরণ থেকে আরো স্পষ্ট হবে।

শুধু নারী নয়, যখনই কোন জাতি বা প্রজাতি অপর কারো মতো হতে চায় বা অপর কাউকে আদর্শ মানদণ্ড মনে করে তখনই ঐ জাতিটা অপর জাতির নিচে নেমে যায়। বাঙালি জাতির নিজস্ব একটা সাংস্কৃতি আছে, সেটাকে পাশকাটিয়ে পশ্চিমা সাংস্কৃতিকে সাংস্কৃতির আদর্শ মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণ করে সবকিছুতে তাদের মতো হওয়ার প্রচেষ্ঠা বাঙালি জাতিকে পশ্চিমাদের নীচে নামিয়ে দেয়। এজন্য কি পশ্চিমারা দায়ী? না বাঙালি নিজেই, অর্থাৎ বাঙালির মনস্তাত্ত্বই এ জন্য দায়ী। ইদানীং কেউ কেউ আরব সাংস্কৃতি ধারণ করার চেষ্টা করছে, এটা তাদের আরবদের নিচে নামিয়ে দেবে।

বাংলায় একটা প্রবাদ আছে "কাক কখনো কোকিল হয় না"। প্রশ্ন হচ্ছে কাককে কেন কোকিল হতে হবে? কাক যখন কোকিলের মতো হতে চায় তখন পক্ষীসমাজে সে মূলত নিজেকে কোকিলের নিচে নামিয়ে ফেলে। এ জন্য কোকিল দায়ী নয়, কাক নিজেই এ জন্য দায়ী। কাক হওয়াটাকে ছোট করে দেখে ক্রমশ কোকিল হয়ে ওঠার প্রচেষ্টার দ্বারা সে নিজেই নিজের মর্যাদা হ্রাস করে। অথচ পৃথিবীতে প্রতিটা প্রাণীরই অবদান রয়েছে, সুতরাং কাক হওয়াতে পক্ষীসমাজে নিজেকে ছোট মনে করার যেমন সুযোগ নেই, আবার নিজেকে সবার থেকে শ্রেষ্ট বলে অহংকার করারও কোন সুযোগ নেই। কাককে কাক হয়েই পক্ষীসমাজে তার অবস্থান জানান দিতে হবে। লক্ষ্য করলে দেখা যায় কাকের বাসায় জন্ম নিয়েও পক্ষীসমাজে কোকিলের দৃঢ় অবস্থান রয়েছে। কারণ কাকের বাসায় জন্ম নিলেও সে কখনো নিজেকে কাকের মতো করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে না, সে কোকিল হিসেবেই নিজেকে তৈরি করে।

বহু নারী প্যান্ট-শার্ট, টি-শার্ট, পরে রাস্তায় বের হয়, এবং এটাতে সে নিজের মধ্যে এক প্রকার মর্ডানিটিও ফিল করে (প্রত্যেক নারীই বাপ, ভাই, স্বামী বা তার নিজের টাকায় পোশাক কিনে পরে, আমার বা আমার বাপের টাকায় নয়, তাই কে কেমন পোশাক পরবে সেটা তার ব্যক্তিগত অভিরুচি, আমি শুধুমাত্র ঐসকল নারীর সাথে পুরুষের মনস্তাত্ত্বিক পার্থক্যটা দেখাতে চাই)। অথচ একজন পুরুষকে যদি বলা হয়, ১০০০ টাকা দেয়া হবে বিনিময়ে শাড়ী বা সেলোয়ার-কামিজ পরে রাস্তায় বের হতে হবে, পুরুষ কি সেটা করবে? আশাকরি পুরো বিষয়টা বুঝতে চিন্তাশীল এবং বুদ্ধিমতী নারীদের জন্য এই প্রশ্নটাই যথেষ্ট।

জাতি হিসেবে পশ্চিমাদের তুলনায় বাঙালির অবস্থান নিচে থাকার দায় যেমন বাঙালির নিজের। পাখি হিসেবে কোকিলের তুলনায় নিচে থাকার দায় যেমন কাকের নিজের। মানুষ হিসেবে পুরুষের নিচে থাকার দায়ও তেমন নারীর নিজের। পুরুষের মতো করে নিজেকে তৈরি করার প্রচেষ্টার মাধ্যমে নারী নিজই নিজের অবস্থান পুরুষের নিচে নামিয়ে দিচ্ছে। আমার প্রকৃতি যেমন ঠিক সেভাই নিজেকে তুলে ধরতে হবে, অপরের মত হওয়ার চেষ্টা মানেই নিজের বিকৃতি ঘটানো। সমাজে জন্মে এই সমাজ এব প্রকৃতির প্রতি আমার কিছু দায়িত্ব রয়েছে, আমার প্রাকৃতি আমাকে যা করার সুযোগ দিয়েছে তা সমাজে কোন ইতিবাচক অবদান রাখছে কিনা সেটাই মুখ্য, তার আর্থিক মূল্য কম না বেশি, আছে না নাই সেটা বিবেচ্য কোন বিষয়ই নয়। এবং এটা বিবেচনা করে নিজেকে ছোট বা বড় ভাবাও নিজেকে অসম্মান করার শামিল।



সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২৩ ভোর ৫:৫৫
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×