somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খালি বোতল, কাপ, প্যাকেট ফেরত দিন, ৫ টাকা বুঝে নিন

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত এক বছর ধরে বিমানের যাত্রী হিসেবে নিয়মিত ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করি। ঢাকার হযরত শাহজালাল রহ. বিমানবন্দরে অপেক্ষার সময় একটা জিনিস আমার সঙ্গী হয়। এক কাপ কফি। বিমানবন্দরের ভেতরে দোকান থেকেই এই কফি কিনি। এই কফি কিনতে গিয়েই আমার এই উদ্ভাবনী আইডিয়ার সাথে পরিচয়। এক বছর আগে দেখতাম, নেসক্যাফে কফির দাম ছিল ৩০ টাকা। এখন কফি কিনতে গেলে দোকানী দাম রাখেন ৩৫ টাকা। বলেন, কাপ ফেরত দিলেই ৫ টাকা ফেরত পাবেন। দোকানীদের জিজ্ঞাসা করতে হয়নি, কেন? আইডিয়াটা জানি। জবাবটা নিজেই পেয়ে যাই, যখন বিমানবন্দরের ভেতরের দিকে তাকাই। এক বছর আগেও যাত্রীদের বসার চেয়ারগুলোর নিচে লুটোপুটি খেতো কফির কাপ। পানির বোতল, চিপসের প্যাকেট। কত কি! অথচ পাশেই আছে ডাস্টবিন। কিন্তু কে কষ্ট করে এসব ফেলতে যায় ডাস্টবিনে। এখন একটা কফির কাপ, পানির বোতল আর চিপসের প্যাকেটের দাম ৫ টাকা। মেঝেতে পড়ে থাকার জিনিস নয়। এ কারণে বদলে গেছে, বিমানবন্দরের ভেতরের দৃশ্যপট। একটা কফির কাপও মেঝেতে খুজেঁ পাবেন না আপনি। জাস্ট একটা আইডিয়া। বদলে দিয়েছে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। পেছনে যে ব্যক্তিটি রয়েছেন। তিনি মুহাম্মদ ইউসুফ স্যার। এয়ারপোর্টের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।


এখানকার প্রতিটি দোকানেই একটা নোটিশ দেখা যায়। তাতে লেখা রয়েছে, 'এয়ারপোর্ট এলাকায় যেকোন ধরণের ময়লা/বর্জ্য নির্ধারিত ডাস্টবিনের বাইরে ফেললে ৫০০০ টাকা জরিমানা এবং/অথবা এক বছরের কারাদন্ড হতে পারে।'
আমার দেখামতে দেশের প্রচলিত আইনে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলার অপরাধে এটাই সবচেয়ে কঠিন শাস্তির বিধান। এরপরেও তা রোধ করা যায়নি। সবার দিকে তো আর তাকিয়ে থাকা যায়না। কে কখন কোথায় কফির কাপটা ফেলে বিমান ধরতে দৌড় দেন। একারণেই নোটিশের নিচে পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। লেখা হয়েছে, 'খাওয়ার পর খালি বোতল, কাপ, প্যাকেট ইত্যাদি ফেরত দিয়ে অথবা দোকানের বিনে ফেলে ৫ টাকা ফেরত নিন। ' শাস্তি প্রদান অপেক্ষা পুরস্কার বেশি কার্যকর আবারো প্রমাণিত হলো।


আমি প্রথম এ ধরণের আইডিয়ার সাথে পরিচিত হই, সাভারের পিএটিসিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নেয়ার সময়। সেটা ২০১২ সালে। বিসিএস ২৪ ব্যাচের ওবায়দুল্লাহ স্যার ছিলেন এর রূপকার। তিনি পরীক্ষায় প্রশ্ন করেছিলেন, ধরুন আপনি কক্সবাজার শহরের মেয়র। আপনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সি বিচ পরিস্কার রাখা। হাজার হাজার মানুষ সেখানে বোতল, চিপসের প্যাকেট ইত্যাদি নিয়ে সমূদ্রের ধারে গিয়ে বসেন। খেয়ে দেয়ে খালি প্যাকেটগুলো সেখানেই ফেলে রাখেন। প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় এগুলো সাফ রাখতে প্রচুর জনবল নিয়োগ দিতে হয়েছে। অনেক অর্থ ব্যয় হচ্ছে। আপনি এ সমস্যার সমাধান কীভাবে করবেন?


অনেকেই অনেক রকম আইডিয়া দিয়েছিলো। আমি লিখেছিলাম, সৈকতে পাওয়া প্রতিটি বর্জ্যর মূল্য ঘোষণা করলে এগুলো সাফ করার জন্য আর লোক নিয়োগ করতে হবেনা। কর্তৃপক্ষেকে শুধু একটা বুথ রাখতে হবে। সেখানে জমা দিয়ে টাকা নেয়ার ব্যবস্থা থাকলেই আর কেউ সৈকতে ফেলবেন না। পর্যটক নিজেই টাকার জন্য রেখে দেবেন। নয়তো এগুলো কুড়ানোর জন্য অন্যরা তৈরী হয়ে থাকবে। লোক নিয়োগের চেয়ে কম খরচে সি বিচ পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হবে। সম্ভবত, বিশ্বের কোন একটি দেশের সি বিচে এমনি একটি ব্যবস্থা আছে। আমি সেটাই লিখেছিলাম।

অনেক বছর পর এয়ারপোর্টে এই আইডিয়ার বাস্তাবয়ন দেখে আপ্লুত হলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৭
২৬টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×