চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার কাছে চাইবেন! মুখের ওপরে বলে দেবে নাই৷ বিনা কারণে কিছু কেনাকাটা করার পর বড় নোট দেখলে মালামাল রেখে বিদায় করে দেয়৷ এমন ব্যবহার করে যে সহ্য করা কঠিন৷ এই টাকা ভাংতি না থাকলে রিকশায় ওঠেন বেশি ভাড়া দিতে হবে৷ আশি টাকার ভাড়া একশ টাকা৷ রিকশাওয়ালা বলবো নাই৷ কম দিলে নেবেনা৷ মানে টাকা ভাংতি নাই আপনার দোষ৷ এজন্য আপনাকেই বেশি দিতে হবে৷
একবার একজনের অভিজ্ঞতা শুনছিলাম৷ ভাংতি নাই৷ হাতে পাঁচশ টাকার নোট৷ পরে একটা সিঙ্গারা নিয়ে পাঁচশ টাকার নোট দিয়েছিলেন৷ দোকানী মুহূর্তেই তার কাছ থেকে সিঙ্গারা কেড়ে নিয়ে জায়গা মতো রেখে দেয়৷ আমার কাছে ভাংতি করার একটা উপায় আছে৷ মোবাইলে টাকা দেই৷ অনেক সময় ভাংতি না থাকার জন্য রিকশায় বা গাড়িতে না চড়ে হাটি৷
একবার এক দোকানে একটা জিনিস কিনে এক হাজার টাকার নোট দিলাম৷ দোকানী তার জুনিয়র বিক্রেতাকে টাকা ভাংতির জন্য পাঠিয়েছে৷ পাক্কা এক ঘন্টা বসে রয়েছি৷ পরে সে যখন ফিরেছে জিজ্ঞাসা করলাম, এত দেরি কেন! জানালো, ভাংতির জন্য সে এই এলাকার প্রতিটি দোকানে গেছে৷ এজন্য দেরি! বুঝুন অবস্থা! এই যে টাকা ভাঙ্গানো বা ভাংতি করা বিরাট ঝামেলার৷
কয়েকদিন আগে মেট্রোরেলের মতিঝিল স্টেশনে গেলাম। উদ্দেশ্য আগারগাঁও যাবো। একশ টাকার নোট দিলাম। টিকেট কাটতে পারিনি। একটা মেশিনেও ভাংতি টাকা নাই। শনিবার সকালে হওয়ায় লোকজনের ভীড় কম ছিল। প্রতিটি মেশিন দেখার সুযোগ পেয়েছি। পরে পাঁচশ টাকা দিয়ে এমআরটি পাস করিয়ে নিলাম।
যাই হোক, এটা এখন বড় নাগরিক সমস্যা৷ এই সমস্যায় কেউ পড়েনি- এমন কোন লোক খুঁজে পাওয়া যাবেনা৷ তাহলে সমাধান কী!
সমাধান
সমস্যা থাকলেই সমাধান মেলে। উন্নত দেশে টাকা খুচরা করার মেশিন দেখে এসেছি৷ ওই মেশিনগুলো ট্রেন স্টেশনে, বাস স্ট্যান্ডসহ লোকজন জমায়েত হয় এমন স্থানে বসানো হয়েছে৷ অভিজ্ঞতার জন্য আমি বেশ কয়েকবার টাকা খুচরা করেছি৷ যদিও সেখানে নগদ টাকার কাজ কারবার কম৷ একটা কার্ডেই সব সমাধান৷ এবার আপনি বলতে পারেন- এদেশে উন্মুক্ত স্থানে টাকা খুচরা করার মেশিন বসালে চুরি ডাকাতি হতে পারে৷ আমাদের দেশে এটিএম বুথের অভাব নেই৷ এই টাকা খুচরা করার মেশিন এটিএম বুথে বসাতে পারে৷ এতে সহজেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়৷ এখন আনাচে কানাচে এটিএম বুথ৷ সবখানেই টাকা৷ অথচ টাকা খুচরা করার কোন উপায় নেই৷ এটিএম বুথ থেকেও পাঁচশ টাকার নোট পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার৷ খুচরা করার মেশিন থাকলে মানুষ বুথ থেকে টাকা তুলে যত টাকার খুচরা নোট দরকার সেগুলো সহজেই করে নিতে পারবে৷ বিশ্বাস করেন, এটা ছোট উদ্যোগ অনেক পরিবর্তন আনবে৷ নাগরিক জীবনে অনেক মুশকিল আছান হবে৷ এটা এখনো কেউ ভাবেনি এটা ভেবেই আমার অবাক লাগছে৷
এজন্য বেশি কিছু করার দরকার নেই৷ এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা নির্দেশনাই যথেস্ট৷