[মনের সহিত অনেকখানি যুদ্ধ করিয়া অবশেষে রম্যরচনা প্রকাশ করিলাম। লেখালেখি শাস্রে আমার জ্ঞান খুবই কম। যাহা মনে আসিয়াছে তাহাই লেখিয়াছি। যদি কোনরূপ ভুল করিয়া থাকি আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখিবেন সকলে]
[বিঃ দ্রঃ রচনাখানা শেয়ার করিবার অধিকার আপনাদের দেয়া হইল, তবে কপি করিবার অধিকার আমি নিজের কাছেই রাখিয়া দিয়াছি। যদি কোন ব্যক্তি ইহা কপি করিয়া থাকেন তবে বুঝিব তাহার ব্যক্তিত্বে কিঞ্চিত গন্ডগোল রহিয়াছে]
পর্বঃ ১
শিরোনামঃ ভালবাসার সংজ্ঞা By কমলাকান্ত
লেখার সময়ঃ ০৬.০৪.২০১২-২৮.০৪.২০১২
প্রথম প্রকাশঃ ০৭.০৪.২০১২ (আংশিক)
পূর্ণাঙ্গ প্রকাশঃ ০৮.০৫.২০১২
শুরুঃ
হৈমন্তীকে হারাইবার পর আজ আমি [অপু] বড়ই উদাসীন। সেই দেড় বছর পূর্বে আমি গৃহ ত্যাগ করিয়াছি। বর্তমানে আমি ঢাকায় ভবঘুরে জীবন যাপন করিতেছি। কিছুদিন হইতেই মনটা ভীষণ খারাপ। তাই মন ভাল করিবার উদ্দেশ্যে আমি হাঁটিতে বাহির হইলাম। হাঁটিতে হাঁটিতে যখন ধানমন্ডি লেকে পৌঁছাইলাম তখনি কমলাকান্তের সহিত দেখা হইয়া গেল।
দেখিলাম কমলাকান্ত লেকের পাড়ে বসিয়া হুইস্কি সেবন করিতেছিল। আর তাহার পাশে বসিয়াছিল তাহার অতি প্রিয় প্রসন্ন গোয়ালিনী।
[উল্লেখ্যঃ কমলাকান্ত এখন রাজধানী শহর ঢাকার অভিজাত এলাকা ধানমন্ডির বাসিন্দা। তাহার একখানা সুবিশাল অট্টালিকা রহিয়াছে। তিনি আফিম ছাড়িয়া এখন হুইস্কি ধরিয়াছেন।
অপরদিকে প্রসন্ন গোয়ালিনীও অনেকখানি বদলাইয়া গিয়াছে। নিজের নাম বদলাইয়া Miss Gracious রাখিয়াছে। এই গল্পে আমরা তাহাকে প্রসন্ন বলিয়াই সম্বোধন করিব।]
মূল গল্পে আসা যাকঃ
কমলাকান্তকে দেখিবামাত্র আমি দাঁড়াইয়া পড়িলাম এবং আমার খাতা কলম বাহির করিয়া লেখিতে আরম্ভ করিলাম। কারণ কমলাদা অর্থহীন কথা খুব কম বলিয়া থাকেন। তাহার সকল কথাই অতিব গুরুত্বপূর্ণ। যাহা বলিয়াছিলেন তাহা অনেখানি এই রকমঃ
কিঞ্চিত হুইস্কি সেবন করিয়া কমলাকান্তের যখন সামান্য মতিভ্রম ঘটিল তখন প্রসন্ন তাহাকে প্রশ্ন করিতে আরম্ভ করিল।
প্রসন্নঃ কতকাল ধরিয়া আমি তোমাকে ভালবাসিয়া আসিতেছি। কিন্তু তাহার বিনিময়ে তুমি আমাকে কিছুই দিলে না।
কমলাঃ ভালবাসা !!! উহা আবার কী জিনিস?
প্রসন্নঃ তুমি সত্যিই জানো না ভালবাসা কী জিনিস?
কমলাঃ আমার জানাজানি দিয়া তোমার কী লাভ হইবে শুনি?
প্রসন্নঃ আগে বল ভালবাসা বলিতে তুমি কী বুঝ?
[কমলাকান্ত তাহার তত্ত্বজ্ঞান হাসিল করা আরম্ভ করিয়া দিল]
কমলাঃ ভালবাসার সংজ্ঞা আমরা ''বিগ ব্যাঙ তত্ত্ব'' হইতে জানিতে পারি।
প্রসন্নঃ উহা আবার কী জিনিস?
কমলাঃ [তাহা জানিলে কি তুমি দুধ বেচিতে?] ''বিগ ব্যাঙ তত্ত্ব'' হইল মহাবিশ্ব কী করিয়া সৃষ্টি হইয়াছিল তাহার একখানা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। ইহা অনেকটা এই রকমঃ
মহাবিশ্ব সৃষ্টির পূর্বে একখানা বিন্দুরূপে বিরাজ করিতে ছিল। হঠাৎ এক ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে তাহা প্রসারিত হইয়া এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি হইয়াছে এবং যাহা আজও প্রসারণশীল।
[আমি খুব মনোযোগ দিয়া কমলাকান্তের ভাবতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা শুনিতেছিলাম]
আর এই প্রসারণের মাঝে কখনও কখনও দুইটি বস্তুকণার সংঘর্ষে উভয়েই ধ্বংস হইয়া যায়।
প্রসন্নঃ উহার সাথে ভালবাসার কি কোন যোগসূত্র রহিয়াছে?
কমলাঃ [উহা জানিলে তো তুমি প্রসন্ন হইতে না, আর আমি কমলাকান্তকেও জিজ্ঞাসা করিতে না]
আমাদের ভালবাসা হইল মহাবিশ্বের মত, যাহা আমাদের অন্তরে বিন্দুরূপে সঙ্কুচিত হইয়া থাকে। ভাললাগা নামক বিস্ফোরণের মাধ্যমেই আমাদের জীবনে ভালবাসা নামক মহাবিশ্বের জন্ম হইয়া থাকে। আর মহাবিশ্বের তথা ভালবাসার প্রসারণ ঘটিবার সময় কখনও কখনও কিছু সংঘর্ষ ঘটিয়া থাকে। যাহার ফলস্বরূপ ভালবাসা তথা মহাবিশ্ব হইতে সুন্দর কিছু জীবন তথা পৃথিবী নামক গ্রহের বিনাশ ঘটিয়া যায়। আর যাহারা এই সংঘর্ষকে পাশ কাটাইয়া যাইতে পারে তাহাদের ভালবাসা হয় অসীম।
অপুঃ [দূর হইতে আমি হাঁকিয়া উঠিলাম] কমলাদা চমৎকার বলিয়াছেন।
কমলাঃ [কিঞ্চিত টলিতে টলিতে] কী হে অপু? কোথাহইতে আসিয়াছ?
অপুঃ এই তো, বাসা হইতে। মন ভাল নাই। তাহার জন্য একটু হাঁটিতে বাহির হইয়াছি।
কমলাঃ [হুইস্কির বোতল হাতে] নেবে নাকি একটু হুইস্কি?
অপুঃ [মুখে কিঞ্চিত বিরক্ত ভাব ফুটাইয়া] দাদা, ঐ সব আমার একেবারেই সয় না।
কমলাঃ তুমি কী বুঝিবে হুইস্কি গ্রহণের স্বাদ? আচ্ছা, শুনিয়াছিলাম তোমার নাকি হৈমন্তি নামক এক তরুণীর সহিত প্রণয় হইয়াছিল? বল দেখি ঘটনাখানা।
অপুঃ [ইনশাল্লাহ আগামী পর্বে বলিব। সাথে থাকিতে চেষ্টা করিবেন সকলেই]
© Copyright Shahidul Islam Majumder
বিশেষ কৃতজ্ঞতাঃ কাজী ফারহানা ইয়াসমিন শান্তা
উৎসর্গঃ আমার সকল বন্ধু
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১২ সকাল ১১:১১