somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেসবুকহীন!, একটি দিন!

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শুক্রবার রাত ১০ টা। স্পর্শ ঘুমোতে যাবে, কাল সকালে অফিস আছে আবার। অন্যান্য দিন, দিন শেষে রাতের এই সময়টা বড় অদ্ভুত আর অসস্থি লাগে স্পর্শের, সকালে অফিস যাবার তাড়না, রাতে ভালো ঘুম হবে কিনা? কাপড়, ব্যাগ, কাগজ-পত্র গুছিয়ে রাখা, বাচ্চার স্কুলের জন্য নাস্তা, ওর স্কুল ড্রেস, গরম কাপড়, টুপি, বাসার বাজার ঠিক আছে কিনা, দুপুরের খাবার নেয়া, অফিস থেকে ফেরার পথে বাসার কি কি বাজার লাগবে, এসব ভাবনায়?

এইসব নানা রকম সাংসারিক, ব্যাক্তিগত, অফিস ও অন্যান্য বাস্তবিক ব্যাপার নিয়ে বেশ উৎকণ্ঠিত থাকে সে। আর সেই উৎকণ্ঠা কাটাতে একটু হালকা চা বা কফি নিয়ে সোফায় বসে টিভির রিমোট চাপে এই চ্যানেলে, সেই চ্যানেলে। আর কেউ কোন রকম ডাকাডাকি করলে সেই বিরক্তিটা বেড়ে যায় কয়েকগুন। সবকিছু অসহ্য ঠেকে সেই সময়। বাসা, অফিস, প্রিয়জন, সহকর্মী, বাজার, দৈনন্দিন প্রয়োজন, সব সবকিছুই।

কিন্তু আজ কেন যেন স্পর্শের তেমন উৎকণ্ঠা লাগছেনা, কারো ডাকে বা কথায় বিরক্ত লাগছেনা, সবার সব কথার শান্ত আর স্বাভাবিক উত্তর দিচ্ছে ও! তাছাড়া ঘুম বা সকালের অফিস যাওয়া নিয়ে কোন রকম অস্থিরতা কাজ করছেনা স্পর্শের ভিতরে। খুব অবাক লাগছে যেটা স্পর্শের নিজের কাছে নিজেরই।

আর একটা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করছে সে নিজের ভেতরে। কেমন একটা ফুরফুরে ভাব আর ইতিবাচক কিছু পরিবর্তন নিজের ভেতর, কিছুটা যেন ভেতরে ভেতরে বদলে যাওয়া, যেটা নিজের কাছে নিজের একটা সুখানুভূতি তৈরি করছে স্পর্শের ভিতরে। এমনটা তো আজকাল হয়না ওর! হঠাৎ কি হল যে, বুঝতে পারছেনা।

নিজের অজান্তেই জানালার কাছে উঠে গিয়ে দাঁড়িয়েছে কখন বুঝতেই পারেনি। শীতের রাতে কাঁচের জানালা খুলে দিতেই একটা ঠাণ্ডা কিন্তু মিহি বাতাসের এক পশলা সুখের বাতায়ন যেন ছুঁয়ে দিল ওকে! খুব অবাক হল আবারো। আর নিজের কাছে নিজেই প্রশ্ন করলো, এমন তো হয়না আজকাল, কি ব্যাপার? অনেক অনেক দিন আগে মাঝে মাঝেই এমন অনুভুতির মুখোমুখি হত ও। ওর কোন কোন বন্ধুরাও।

নিজের অজান্তেই নিজের কাছে একটু একটু করে বদলে জাওয়া, অদ্ভুত অদ্ভুত সুখের অনুভুতির সৃষ্টি হওয়া, শীতের বাতাসকে ভালোলাগা, উদ্বেগহীন জীবন কাটাতো তখন, শত ব্যাস্ততা আর হাজারো কাজের মাঝেও। আর বন্ধুদের মাঝে আলাপ করতে গিয়ে দেখতে পেত ওরাও ঠিক একই রকম অনুভুতির মধ্য দিয়ে গেছে বা যাচ্ছে কেউ কেউ। নিজের মাঝে নিজেদের অজান্তেই একটু একটু করে ইতিবাচকভাবে বদলে যাওয়া। ঠিক দেখা যেতনা সেই বদলে যাওয়াটা, তবে ওরা অনুভব করতে পারতো সেটা।

কিন্তু সেইসব দিন তো পুরনো হয়ে গেছে। অমন অনুভুতির দেখা তো বহুদিন পায়নি স্পর্শ বা ওর কোন বন্ধুরা। শোনেও না আজকাল কারো কাছ থেকে অমন একান্ত অনুভুতির কোন ক্ষণের কথা, যা সুখ দিয়ে যেত একান্ত ভাবে, বদলে দিত ভেতর থেকে, জীবন রাঙাতো বর্ণিল করে। আজকাল সবকিছু কেমন যেন ফ্যাঁকাসে, এক ঘেয়ে, ম্যাড়মেড়ে, আবেগ-অনুভূতিহীন, ক্ষণিকের।

কোন কিছুই যেন ছুঁয়ে যায়না আজকাল, খুবই সাময়িক সবকিছু, কোন আত্মিক টান নেই কিছুতেই, কোথাও। না কোন সামাজিকতায়, না কোন সম্পর্কে, না কোন আবেগ-অনুভূতিতে। অদ্ভুত হয়ে গেছে সবকিছুই। অথচ এমন ছিলনা কিছুদিন আগেই।

কিন্তু আজ কেন, কিভাবে সেই পুরনো অনুভুতি আর পরিবর্তনের আভাস পাচ্ছে সেটা নিয়ে ভাবতে বসলো... কিন্তু কিছুতেই ভেবে পাচ্ছেনা, ভেবে পাচ্ছেনা! এরই মধ্যে হাতের চা যে কখন শেষ করে ফেলেছে বুঝতেই পারেনি। তাই স্পর্শ আবার চায়ের ফরমায়েশ দিল, আর ভাবতে বসলো। ঠিক ভাবতে না, সকাল থেকে কি কি সে আজ করেছে তার হিসেব মেলাতে বসলো, যাতে করে সেই পুরনো পরিবর্তন বা পুরনো অনুভুতির শিহরন পাচ্ছে?

আবারো চা এলো। আর সকালে ঘুম থেকে উঠে কি কি করেছে এই রাত ১০ টা পর্যন্ত তাই একে-একে হিসেব মিলিয়ে দেখতে থাকলো...
স্পর্শ আজ শুক্রবার সকালে উঠে নামাজ পড়েছে, এরপর বাচ্চাকে নিয়ে হাঁটতে বেরিয়েছে একটু চা খেয়ে, হেটে ফেরার সময় হালকা বাজার করেছে, বাচ্চার জন্য ফল কিনেছে, দেশী মুরগীর ঝোল খাবে বলে অনেকদিন পর একটি দেশী মুরগী কিনেছে, বাসায় ফিরে ফ্রেস হয়ে অন্যান্য দিনের মত পেপার নিয়ে বাথরুমে গিয়েছে! পেপার নিয়ে বাথরুমে যাওয়া স্পর্শের একটা অভ্যেস! যেটা বাসার সবাই জানে। তাই স্পর্শের কাছাকাছি সব সময় কোন না কোন পত্রিকা রাখা থাকে।

পেপার ছাড়া সে কখনো বাথরুমে যায়না সে নতুন হোক বা পুরনো। আর অনেক সময় নিয়ে পেপার আর বাথরুম শেষে ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে নাস্তা করেছে, এরপর বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলের আর বাসার পড়া তৈরি করেছে, মাঝে বাচ্চাকে নিয়ে একটু খেলেছে, একসাথে গোসল করে, হালকা কিছু খেয়ে নামাজে গেছে, নামাজ শেষে বাসায় ফিরে সবার সাথে দুপুরের খাবার খেয়েছে।

খাবার পরে বিছানায় গিয়ে বেশ কয়েকটি গল্প পড়েছে, একটু ঘুমিয়েও নিয়েছে বাচ্চাকে কোলের মধ্যে নিয়ে লেপের তলায়। ঘুম থেকে উঠে চা খেয়ে আবার গল্প পড়েছে, আসর আর মাগরিবের নামাজ শেষ করে বাইরে কিছুটা হেটে এসে, আবারো গল্প নিয়ে বসেছে। আজ ওকে গল্পে পেয়েছে। সারাদিন-রাত যখনই সময় পেয়েছে তখনই কোন না কোন গল্প পড়েছে আজ অনেকদিন পর।
রাতে খেয়ে সে এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে সে মনে করলো তবে কি গল্প পড়াই এই ফুরফুরে মেজাজ আর পুরনো ইতিবাচক পরিবর্তনের কারন? কিন্তু না গল্প তো সে প্রায়ই পড়ে, অন্যদিন তো এমন মনে হয়না বা হয়নি, তবে আজ কেন হঠাৎ করে? প্রশ্নের উত্তর কাছাকাছি আসে তবে পুরোপুরি মিলছেনা কেন যেন?

ওহ হ্যা আর একটা ব্যাপার আজ একটু আলাদা ছিল। সেটা হল, আজ অফিসের কোন পীড়াদায়ক ফোন আসেনি তার কাছে। এমনকি নিজ থেকেই কারো সাথে কোন রকম যোগাযোগ করেনি ফোনে বা সেই প্রয়োজন হয়নি। গত কয়েকদিন অফিসে অনেক ঝামেলা আর কাজের চাপ ছিল। গতকাল অফিসের বেশ বড় একটা প্রোগ্রাম স্বাভাবিক ভাবে শেষ করতে পারাতে আজ তেমন কোন চাপ ছিলনা। এটাও একটা কারন হতে পারে তবে। হ্যা হতে পারে, তবে এবারেও ওর প্রশ্নের উত্তর প্রায় মিলেছে, কাছাকাছি এসেছে, কিন্তু পুরোপুরি মেলেনি কেন যেন? বেশ অদ্ভুত লাগছে ব্যাপারটা।

এইসব ভাবতে-ভাবতে রাত ১১ টা পেরিয়ে যাওয়াতে, প্রশ্নের উত্তর না মেলাতেও একটা সুখানুভূতি নিয়ে আর উদ্বেগহীন ভাবেই ঘুমোতে গেল। আর কোন রকম ঝামেলা বা তাড়াহুড়ো ছাড়াই পরদিন শনিবার সে ঠিক সময়ে অফিসে পৌছালো। তবে তার প্রশ্নের উত্তর খোঁজা থেকে বিরত হলনা। এভাবে এক সপ্তাহ পরে সে আবার শুক্রবার পেলো, আর সারাদিন কখন কি করলো সেটা লিখে রাখলো। লিখে রেখেছিলো আগের শুক্রবারের পুরনো সুখানুভূতি পাবার দিনের সব কাজের তালিকাও।

কিন্তু এই শুক্রবার আর আগের শুক্রবারের মত হলনা কেন যেন? তবে সঠিক পার্থক্যও বের করতে পারলোনা। যদিও আগের শুক্রবারের মতই সব কাজ একই রকম ছিল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। শুধু ফোন করা আর ফোন আসার পার্থক্যটুকু ছাড়া।

তবে কি এটাই সেই পার্থক্য? নাহ তা কি করে হয়, ফোন আসা, করা বা এটার ব্যাবহার করা তো নিত্য প্রয়োজনীয় একটা ব্যাপার। এটা ছাড়া তো আজকাল অসম্ভব। যেমন বাথরুমে না গিয়ে দিন কাটানো অসম্ভব ঠিক তেমনি ফোন ছাড়া থাকাও তো অসম্ভব! নয় কি? সুতরাং এই সপ্তাহেও হিসেব মিললোনা, সেই সপ্তাহের পুরনো সখানুভুতির প্রশ্নের।

তাই স্পর্শ মনে মনে ঠিক করলো আগামী দুই সপ্তাহ সে গত দুই সপ্তাহের মত হুবহু করবে সবকিছু, আর মিলিয়ে দেখবে কোথায় যেন একটা সুক্ষ পার্থক্য রয়েছে যেটা বোঝা যাচ্ছে কিন্তু ধরা দিচ্ছেনা।

পরের সপ্তাহের শুক্রবার এলো আর সে আগে থেকেই পুরনো সুখানুভূতি আর অজান্তেই কিছু বদলে যাওয়া শুক্রবারের মত করে কাঁটালো তালিকা ধরে ধরে! এবং প্রায় একই রকম অনুভুতির মুখোমুখি হল, যেটা স্পর্শকে চমকে দিল! যেটা ওর পুরনো প্রশ্নটাকে আরও বড় করে তুলল, উত্তর খুজে পেতে। প্রায় একই রকম কিছু পরিবর্তন, কারো সাথে কোন রকম খিটখিটে ব্যাবহার করেনি সে, বাচ্চাকে করেনি দুরদুর, বাবা-মা ডাকলে হয়নি বিরক্ত আর কেউ কোন কাজের কথা বললে সেটাও মেজাজ খারাপের কোন কারন হয়ে ওঠেনি। বাহ দারুন তো! কিন্তু পার্থক্যটা হচ্ছে কোথায়, যেটা অন্য সপ্তাহে হচ্ছেনা?

পরের শুক্রবার সে আবারো দ্বিতীয় সপ্তাহের মত করে কাঁটালো, কিন্তু এবার আর সেই অনুভুতি হলনা কেন যেন? শুধু ফোনের ব্যাবহারেই একটু পার্থক্য রয়ে যাওয়াতে কি? যেন চমকে উঠলো স্পর্শ! আসলেই কি তাই? এটা নিজের কাছে নিজে প্রমাণ করার জন্য এবার উঠে পরে লাগলো স্পর্শ।

এরই মধ্যে এক শুক্রবার সে খুঁজে পেল, সেই যে প্রথম যে শুক্রবার সে এমন পুরনো অনুভুতি আর ভিতরে-ভিতরে বদলে যাবার স্বাদ পেয়েছিল সেদিন তার মোবাইলে নেট বা ডাটা ছিলোনা। সেদিন সে একবারও ফেসবুকে ঢোকেনি। সেদিন বা তার আগেরদিন অফিসের ভীষণ ব্যাস্ততার মাঝে ফেসবুকে তার কোন নতুন পোস্ট ছিলোনা যেটার আপডেট বা কার-কার, কি-কি রেসপন্স এলো সেটা দেখার কোন তাগিদ ছিলোনা। সেদিন সারাদিন সে বাসায় সবাইকে সময় দিয়েছে আর সময় পেলেই বইয়ে মুখ লুকিয়ে রেখেছে, সবার সাথে সেদিন দারুন সময় কাটিয়েছে স্পর্শ।

আর সেইসব মিলেই কি তবে ওর সেই পুরনো অনুভুতি ফিরে এসেছিল? যেটা আগে হত, অনেক আগে। নতুন একটা বই বা নতুন একটা গল্প পড়ার পরেই সেই কেমন যেন একটা পরিবর্তন অনুভব করত নিজের মধ্যে। একটা কেমন সুখ-সুখ অনুভুতি হত নিজের ভেতর, যেটা তাকে বেশ কিছুদিন আচ্ছন্ন করে রাখতো ভিতরে-ভিতরে।

অন্য আর একটা নতুন বই পড়ার পরে আর একরকম অনুভুতির টের পেত নিজের ভিতরে। যেটা ওকে মানসিকভাবে অনেক পরিণত আর শক্ত করে তুলতো, যেটা ওকে নিজের কাছে নিজেকে চেনাতো, যেটা ওকে অন্যদের কাছ থেকে আলাদা করে ফেলত নিজের অজান্তেই, যেটা ওকে একটা অন্যরকম পরিপক্কতা দান করেছিল ভিতরে ভিতরে? উহ আর ভাবতে পারছেনা স্পর্শ।

সেই প্রশ্নটা আরও গাড় হল স্পর্শের মনে? সঠিক আর একদম স্পষ্ট উত্তর খুঁজে পেতে তাই স্পর্শ পরের চার সপ্তাহ এই ভাবে ভাগ করলো। বাসা থেকে এক শুক্রবারের জন্য নেট কানেকশন অফ রাখলো। বৃহস্পতিবার ফেসবুকে কোন নতুন পোস্ট দিলনা, যাতে করে বার বার আপডেট বা রেসপন্স চেক করতে ইচ্ছা করে।

আর পরের শুক্রবার ফেসবুক ব্যাবহার করতে লাগলো ঠিক আগে যেমন করত। বৃহস্পতিবার একটা নতুন পোস্ট থাকতো, যেটার আপডেট দেখতো শুকবার আর অন্যান্য রেসপন্স, লাইক, কমেনট, চ্যাটিং, স্বাভাবিকভাবে করতো।

এতে করে লখ্য করলো যে শুক্রবার সে ফেসবুক ব্যাবহার করে সেই শুক্রবার সে বাচ্চাকে কাছে ঘেঁসতে দেয়না, চ্যাটিং এর সময় কেউ ডাকলে ভীষণ বিরক্ত হয়, কোন মজার গ্রুপ চ্যাটের সময় কেউ কোন কাজের কথা বললে, বিগড়ে ওঠে! পেপার, গল্প বা কোন বই পড়া হয়ে ওঠেনা, সেই সময়ই তো পাওয়া যায়না। কারো সাথেই ঠিকঠাক একই সাথে খেতে বসা হয়না, বাচ্চার সাথে খেলা বা ঘুমানো হয়না আর সবচেয়ে বড় যেটা নিজের মধ্যে সত্যিকারের কোন পরিবর্তন বা সুখানুভুতির শিহরণ হয়না।

যেটা হয় অন্য শুক্রবার একদম ফেসবুকহীন থাকলে! সারাদিন বাসার কাজ করলে, সময় পেলেই গল্পের বইয়ে মুখ গুজে রাখলে, দুপুরে একটু ঘুমোলে, পেপার পড়লে আর সবার সাথে সময় কাটালে, একসাথে খেলে।

মোট কথা যে শুক্রবার সে ফেসবুকহীন থাকে সেই শুক্রবার সে সেই পুরনো অনুভুতি আর নিজের ভেতরে নিজের পরিবর্তন অনুভব করে। এদিন তাকে অনেক কিছুই আগের মত স্পর্শ করে যায়, অনেক কিছুর পুরনো অনুভব যেন ফিরে ফিরে আসে, যেটা তাকে একটা অন্যরকম সুখ দিতে থাকে প্রতিনিয়ত। যেটার প্রভাবে সে আগের মতই নিজের ভেতরে নিজের ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পায় আর বুঝতে পারে।

আর যেদিন বা যে শুক্রবার সে ফেসবুক ব্যাবহার করে সেদিন তার অন্য শুক্রবারের মত কাটেনা কিছুতেই। সেই সময়ই যে পাওয়া যায়না! কোথা থেকে কোথায় যেন সময় চলে যায়, ঠিক চলে যায়না যেন সময় উড়ে যায়! অথচ দিন শেষে রাতে নেই কোন ভালোলাগার অনুভুতি, নেই বিশেষ কোন প্রাপ্তি, নেই নিজের কাছে নিজের বদলে যাওয়ার মত কোন সুখানুভূতি, নেই পেপার বা গল্পের বইয়ে বুঁদ হয়ে থাকার অদ্ভুত কোন আকর্ষণ বা অনন্য অনুভবের ছোঁয়া!

স্পর্শ তার একান্ত সুখের অনুভুতি, নিজের মাঝে নিজের বদলে যাবার সঠিক, স্পষ্ট আর শতভাগ তৃপ্তি দায়ক উত্তর পেয়ে গেছে। তার তাই সে সিধান্ত নিয়েছে, যেহেতু অনেক সংবাদ, বন্ধুদের নিয়মিত খবর, অফিস ও সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ, বাইরের পৃথিবীর হাজারো, লাখো খবর পাবার অন্যাতম আর সহজ উপায় হচ্ছে এই ফেসবুক তাই সেটা ঠিক আছে, থাকুক আর থাকবেও।

শুধু একটু পরিবর্তন। অন্যরকম, স্বাভাবিক, পুরনো আর একান্ত একটি দিন কাটিয়ে নিজের কাছে, পরিবারের কাছে, বাচ্চার কাছে, বইয়ের কাছে নিজেকে ফিরে পেতে, নিজের মাঝে নিয়মিত পরিবর্তন যেন আসে সেজন্য এখন থেকে সপ্তাহে একটি দিন, হ্যা মাত্র একটি দিন শুক্রবার। এই একটি দিন, সে থাকবে পুরোপুরি ফেসবুকহীন।

তাই স্পর্শ তার একান্ত নিজের আর ব্যাক্তিগত এই প্রতিজ্ঞা ও প্রকল্পের নাম দিল।

ফেসবুকহীন, একটি দিন!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:১৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×