somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইলেকট্রন নামক তরঙ্গ এবং কণার কথা

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নবম দশম শ্রেণীতে রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল আমাকে প্রচুর প্যারা দিসে। সেখানে তিনি একটা এক্সপেরিমেন্ট সেট আপ করেন, এবং প্রথম সফলভাবে একটি মডেল উপস্থাপন করে বলেন পরমাণু কি কি দিয়ে তৈরি ? উনি আলফা কণার একটা স্রোত স্বর্ণের পাতলা পাতের উপর নিক্ষেপ করেন। এবং বিস্ময়ের সাথে দেখেন যে কিছু আলফা কণা সরাসরি যেই পথে আসে সেই পথে ফিরে আসে, কিছু কণা আবার সোজাসুজি চলে যায়, কিছু আবার হাল্কা বেঁকে যায়। মাথার চুল ছিঁড়া শুরু করলেন। হচ্ছেটা কি এখানে? এইযে সোজাসোজি চলে আসে কারণ এখানে ধনাত্মক চার্জ যুক্ত নিউক্লিয়াস আছে। আবার সোজাসোজি চলে যায় কারণ জায়গাটা ফাকা। আর বেঁকে যায় কারণ ওইটা গার্লস স্কুল (মানে ঋণাত্মক চার্জ ওয়ালা ইলেকট্রন)।
আমি পুরা ব্যাপারটা এভাবে ব্যাখ্যা করি। ছোট বেলায় মার্বেল খেলছেন এক মার্বেল দিয়ে আরেক মার্বেল আঘাত করেন। রাদারফোর্ড আসলে যা করেছিলেন ধনাত্মক আলফা কণা দিয়ে আরেকটা ধনাত্মক নিউক্লিয়াস আঘাত করেছেন ফলে সোজাসোজি বিপরীত দিকে চলে আসে। কারণ মাটিতে রাখা মার্বেলটাকে যদি স্থির রাখতেন চান হাত থেকে ছোড়া মার্বেলটি আপনার দিকেই আসতে হবে। ব্যাপারটা এমন আপনাকে মরণে ডাকছে সাইকেল নিয়ে একটা স্থির ভারী ট্রাকের সাথে ধাক্কা খেলেন বলেন তো আপনি কোনদিকে যাবেন? আপনি যেদিক থেকে এসেছিলেন সেই দিকেই উল্টে পড়ার চেষ্টা করেন। এই থেকে আরেকটা জিনিস বুঝা যায় নিউক্লিয়াস ভারী। উনি আসলে যা করেছিলেন তা হচ্ছে নিউক্লিয়াস, ইলেকট্রন এসবের কণা ধর্ম বের করেছিলেন।
কিন্তু উনার মডেল ব্যর্থ হয় ম্যাক্সওয়েলের ইলেক্ট্রোম্যাগ্নেটিজম ব্যাখ্যার কারণে। কি ছিল সেখানে? তার আগে চলেন বাবা ডি ব্রগ্লির কথা শুনে আসি। উনি বলেছেন সব কিছুই তরঙ্গ, ঢেউ, ফিল্ড। মানে যা দেখি সব তরঙ্গ। এবং তরঙ্গ ও কণা ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতিক। মানে যার তরঙ্গ ধর্ম বেশি তার কণা ধর্ম কম। আর কণা ধর্ম যার বেশি তার তরঙ্গ ধর্ম কম। কণা ধর্ম সেই জায়গায়তেই বেশি হবে যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ এনার্জি গুচ্ছাকারে থাকে। এইটার ব্যাখ্যা খুবই অদ্ভুত। ধরেন আমি একটা তরঙ্গ। তরঙ্গ চলমান তার মানে আমি মহাবিশ্বের সব জায়গায় ছড়ায়ে আছি। কিন্তু আমি এই লিখাটা সাস্ট থেকে লিখছি। কারণ আমার তরঙ্গের এনার্জি সবচেয়ে বেশি একসাথে জমা হয়ে সাস্টে আছে। এই জিনিসটাই শ্রদিঞ্জার বলেছেন। কোন পয়েন্টে এ তরঙ্গের সবচেয়ে বেশি এনার্জি থাকে ফলে ওই পয়েন্টে কণা পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। এইজন্য বাসে জ্যাম এ আটকে থাকা অবস্থায় বস ফোন দিলে বাস না বলে বলেন স্যার আমি অফিসের নিচে। আপনার কিছু তরঙ্ অফিসের নিচে পাওয়ার সম্ভাবনা অবশ্যই আছে। মিথ্যা বলেন নাই কিন্তু!
প্রোটন বলতে কিছু নাই। প্রোটন কোয়ার্ক দিয়ে তৈরি। দুইটা আপ কোয়ার্ক একটা ডাউন কোয়ার্ক। ফলে প্রোটন তৈরি কোয়ার্কের ফিল্ড বা তরঙ্গ দিয়ে। নিউট্রিনো আরেকটা মৌলিক কণা। যার উৎস মহাবিশ্ব। কারণ এইটা প্রতি মুহূর্তে তৈরি হচ্ছে। তার মানে মহাবিশ্বের মৌলিক কণিকা চারটা। প্রতিটা মৌলিক কণিকা আবার নিজেদের মধ্য ইন্টার‌্যাকশন করে আরও দুইটি করে কণিকা তৈরি করে। ফলে পুরা টেবিলটা দাড়ায় এমন।


টেবিলটার মাথা মুণ্ডু কিছু না বুজলে সমস্যা নাই। কিন্তু এই বারোটা কণা দিয়েই মহাবিশ্ব তৈরি। আমি কণা না বলে ফিল্ড বলি। মানে এই বারোটা কণার ফিল্ড দিয়েই এই মহাবিশ্ব তৈরি। এই বারোটা তরঙ্গ নিজেদের মধ্যে ইন্টার‌্যাকশন করে ৪ টা বল তৈরি করে। যা হচ্ছে। মহাকর্ষ বল, ইলেক্ট্রোম্যাগ্নেটিজম বল, সবল ও দুর্বল নিউক্লিয় বল। ইলেকট্রন যখন কোয়ার্ক মানে প্রোটনের চারপাশে ঘুরে তখন সে নতুন আরেকটা ফোরস ফিল্ড তৈরি করে যা হচ্ছে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক। আর এই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড হচ্ছে আলো। ম্যাক্সওয়েল বলেন কোন তরঙ্গ থেকে আলো বেরোলে তার শক্তি কমে যায়। বেচারা রাদারফোর্ড এই জিনিসটারই ব্যাখ্যা দিতে পারেন নি।
আচ্ছা ইলেকট্রনের চার্জ আর ভর কোথা থেকে আসে? মানে কিছু জিনিসের চার্জ আছে কিছু জিনিসের নাই কারণ কি? কিছু জিনিস ভারী কিছু হাল্কা কেন? চার্জ জিনিস টা আসে ইলেকট্রন কিভাবে ইলেক্ট্রো ম্যাগ্নেটিজম ফিল্ডের সাথে ইন্টার‌্যাকশন করে তার উপর। দেখা যায় ইলেকট্রন যেভাবে করে প্রোটন সেভাবে করে না। ব্যাখ্যা টা অনেকটা এমন। ইলেক্ট্রোম্যাগ্নেটিজম ফিল্ড হচ্ছে ইলেকট্রিক আর ম্যাগনেটিক ফিল্ড দুইটা একত্র করলে যা হয়। ইলেকট্রিক ফিল্ড তৈরি হয় স্থির পজিটিভ চার্জের কারণে আর ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয় গতিশীল চার্জের কারণে। এখন বলেন পজিটিভ চার্জ যেভাবে ইলেকট্রনএর উপর প্রভাব ফেলবে প্রোটনের উপর সেভাবে ফেলবে? অবশ্যই না কারণ আকর্ষণ বিকর্ষণ আছে।
আর কণাগুলোর ভর এই ধর্মটা আসে কণার ফিল্ড হিগস ফিল্ড এর সাথে কিভাবে রিএকশন করে তার উপর। আর এই হিগস ফিল্ড এর সাথে মিশে আছে আমাদের সত্যেন বসুর নাম। কয়েকবছর আগে এই হিগসবোসন কণার ফিল্ড বের করার কারণেই বিজ্ঞানীরা জানতে পেরছেন মৌলিক কণার ভর কোথা থেকে আসে। এই কারণেই সাড়া দুনিয়া তোলপাড় করা আবিষ্কার ছিল সেটা।
আমার তাত্ত্বিক ব্যাপার খুব ভাল লাগে। এইগুলো বলা বুঝা সমীকরণ ছাড়া অনেক কঠিন। এবং আমি সেটাই চেষ্টা করি। কারণ স্তিফেন্স হকিংস এর ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম বইতে উনি বলেন একটা সমীকরণ লেখা মানে বইটা ২০০ মানুষ না পড়া। সেজন্য উনি পুরো বইয়ে একটা সমীকরণ ব্যবহার করেন। তাছাড়া আমি মনে করি প্রকৃতি সমীকরণ ছাড়া চলে তাই সব কিছু সমীকরণ ছাড়া বুঝা সম্ভব।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:০৩
১৪টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×