somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্রপতিরা কেউই হাসিমুখে বিদায় নিতে পারেননি!!!

২৪ শে জুলাই, ২০১০ রাত ১২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের কেউ হাসিমুখে বিদায় নিতে পারেননি। ঘাতকের বুলেটে নিহত, সংবিধান লংঘন করে বন্দুকের নলের মুখে কাউকে বিদায় করে দেয়া, ছাত্র-শ্রমিক ও জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করা, রাজনৈতিক প্রসাদ ষড়যন্ত্রে কাউকে বিদায় করাসহ নানা নাটকীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে কাউকে বিদায় নিতে হয়েছে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে।

বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্বপরিবারে শহীদ হয়েছেন ঘাতকের নির্মম বুলেটে। মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর প্রধান রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম শহীদ হয়েছেন ঘাতকের বুলেটে। একাধিক রাষ্ট্রপতি বিদায় বেলায় বেঈমান ও বিশ্বাস ঘাতক হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন। দেশের সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহমেদ বিদায় নিতে যাচ্ছেন সংবিধান লংঘনকারী, শপথ ভঙ্গকারী ও ষড়যন্ত্রকারী আখ্যা পেয়ে। রাজনীতিবিদ, আইনবিদ, সেনাপ্রধান, চিকিৎসক ও শিক্ষাবিদদের থেকে আসা রাষ্ট্রপতিরা কেউ হাসিমূখে বিদায় পাননি।

স্বাধীনতার স্থপতি ও দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে ঘাতকরা হত্যা করেছিল ধানমণ্ডি তার নিজ বাসভবনে। ইতিহাসের জঘন্যতম এই হত্যকাণ্ডে শহীদ হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূ ও ঘনিষ্ঠ আত্বীয়রা। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ১৯৮১ সালের ৩০ মে। বঙ্গবন্ধুর পর ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ৭৩ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন প্রয়াত বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। তিনিও হাসিমূখে বিদায় নিতে পারেননি। আবু সাঈদকে সরিয়ে সে সময় মোহাম্মদ উল্লাহকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৩ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন মোহাম্মদ উল্লাহ। বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে এবং মোহাম্মদউল্লাহকে সরিয়ে ফের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। ৭৫ এর ২৫ জানুয়ারি থেকে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি পদে ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খন্দকার মোসতাক আহমদ রাষ্ট্রপতি পদ গ্রহণ করেন। ১৫ আগস্ট থেকে ৭৫ এর ৬ নভেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি পদে ছিলেন খন্দকার মোসতাক। ৭৫ এর ৬ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি করা হয় বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে। মাত্র এক বছরের মাথায় সায়েমকে সরিয়ে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। ৭৭ এর ২১ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনি। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রপতি পদে আসেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি সাত্তারকে বন্দুকের নলের মুখে জোর করে সরিয়ে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন বর্তমানে জাপা প্রধান এইচএম এরশাদ। মাত্র তিনদিন রাষ্ট্রপতি পদে ছিলেন তিনি। ৮২ সালের ২৭ মার্চ রাষ্ট্রপতি পদে বসেছিলেন বিচারপতি এ এফ এম আহসানউদ্দীন চৌধুরী। ৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর পুনরায় রাষ্ট্রপতি পদে বসেছিলেন এইচএম এরশাদ। গণআন্দোলণের মূখে ৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এইচএম এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। এরশাদের পদত্যাগের পর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। ৯১ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন আব্দুর রহমান বিশ্বাস। ৯১ এর ৯ অক্টোবর থেকে ৯৬ এর ৯ অক্টোবর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ৯৬ এর ৯ অক্টোবর থেকে ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত পরবর্তী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন বিচারপতি সাহাবুদ্দিন। ৯১ এর পরবর্তী নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিরা নিজ নিজ দল থেকে নানা অপবাদ নিয়েই বিদায় নিয়েছেন। মেয়াদের আগেই হঠাৎ করে বিদায় নিতে হয়েছে এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে। পরবর্তীতে মাত্র তিন মাসের জন্য রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার। ২০০২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে রাষ্ট্রপতির পদে রয়েছেন প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন। বিদায়ের আগে তার বিরুদ্ধে সংবিধান লংঘনের অভিযোগ এনেছে নিজ দল বিএনপি। বর্তমান রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। এখন শুধু অপেক্ষার পালা তার ভাগ্যে কি ঘটে ?

তথ্যসূত্র: আমাদের সময়
কৃতজ্ঞতায়: আবুল বাশার নূরু

৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×