পথে ঘাটে বেশ কিছু পার্ট লিখে ফেলেছি অথচ এই ঘটনাটা নিয়ে কিছু লিখিনি। মনে পরেছে কিন্তু লিখতে ইচ্ছে করেনি। সত্যি কথা বলতে কি এই ঘটনাটা মনে করলে সত্যিকার অর্থেই মন খারাপ হয়ে যায়। নিজেকে ভীষণ তুচ্ছ মনে হয়, মাঝে মাঝে আমি মেয়ে বলে আমার বাধা প্রতিবন্দকতা মনে করে আমার কনফিডেন্স স্কেল জিরোতে চলে আসে। এটা বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা, তখন কেবল স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উথেছি।
সেদিন আমি বাসের জন্য এয়ারপোর্ট এর ওভার ব্রিজ থেকে বেশ অনেকটা দূরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কোথাও রিকশা বাস এমন কিছুই ছিলোনা। সময়টা দুপুর তাই রাস্তায় মানুষজন কম কিংবা কোন কারনে ছিলোনা বললেই চলে। ওইদিন আমার এক বান্ধবীর জন্মদিন ছিল, তাই আমরা কলেজ ড্রেসের সাথেই এক হাতের মুঠো ভরে চুড়ি পরেছিলাম। চুড়ি পরা ছিল কলেজের নিয়মের বাইরে, নিয়মের বাইরে কিছু করেছি বলে আমাদের খুব একটা adventure হল এই ভাললাগায় মুগ্ধ হয়ে আছি তখন, তখন ইন্টার প্রথম বর্ষে পড়ি।
অনেক বড় হয়ে গেছি এবং কিচ্ছু পরোয়া করিনা এই ভাব তখন আমাদের প্রত্যেকের।আসলে এই বয়সে হয়ত সকলের এই রকম ফিলই হয়। কে দেখল, কে তাকিয়ে থাকল কে কি ভাবল এইগুলা নিয়া টুকটাক চিন্তা করার মতো বিন্দু মাত্র সময় নাই তখন।আমি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে থেকেও কোন গাড়ি কিংবা রিকশা পেলাম না। পায়ে হেটে তো বাসায় ফেরা সম্ভব না তাই বাধ্য হয়েই দাঁড়িয়ে আছি একা। এমন সময় আনুমানিক চল্লিশ হবে বয়স এরকম এক লোক এসে আমার পাশে দাঁড়ালো। সে কাছাকাছি দাঁড়ানোয় আমি একটু সরে গিয়ে দাঁড়ালাম সে ফিরে আবার আমার কাছাকাছি এলো এবং বলল গাড়ি তো আজ বিকালের আগে চলবে না, প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে আসছে সব গাড়ি থামিয়ে রাখছে,
আমি চুপ করে রইলাম।
আপনি কোথায় যাবেন?
আমি চুপ। লোকটার সাথে একদম কথা বলতে ইচ্ছে করল না আমার।
-আমার সাথে মাইক্রো বাস আছে, আসেন নামিয়ে দেই।
আমি বললাম - না।
-আরে না কেন? চলেন... আসেন আপনাকে নামিয়ে দেই, এই রোদের মধ্যে কতক্ষন দাঁড়িয়ে থাকবেন, ফরসা মানুষ মুখ লাল হয়ে গেছে দেখছেন! আসেন নামিয়ে দেই।
দূরে দেখলাম ওভার ব্রিজের একটু সামনে একটা সাদা রঙের বড় সর মাইক্রো বাস দাঁড়িয়ে আছে, পাশে ওই লোকের কাছাকাছি বয়সের দুজন লোক, একজন হয়ত ড্রাইভার আর একজন সহকারী। দুইজনেরই খুব ব্যস্ততা। একজন ঘুরে ঘুরে দরজার কাছে যাচ্ছে আর একজন ঘন ঘন ঘড়ি দেখছে,
-লোকটি আমাকে বলল চলেন আরে আসেন এত ভাবার কিছু নাই, আমিও ওই দিকেই যাব, যেতে যেতে আপনাকে নামিয়ে দিব।
- আমিতো বলিনি আমি কোনদিকে যাব!?
-আরে এত কথা বাড়াইতেছ কেন? চল তো চল, এমন করলে রাস্তার মানুষজন কি ভাববে, এই ভাবে কথা বললে মানুষজন ভাববে আমি অচেনা একটা মেয়েরে নিয়া টানা টানি করতেছি হা হা হা (কথা গুলা সে বেশ জোরে জোরে বলল যেন কিছু দূরে দুই একজন মানুষ যারা অপেক্ষমান গাড়ীর জন্য তাড়া শুনতে পায়।
আমি তার কথার অর্থ বুঝলাম, ঝট করে সরে যেতে উদ্ধত হতেই সে আমার হাত চেপে ধরল, যে হাতে আমি সেদিন খুব সখ করে চুড়ি পরেছি, সেই হাতটা সে প্রবল শক্তি দিয়ে চেপে ধরল। তার হাতের চাপে আমার মেটালের চুড়ি বেকে যেতে লাগলো। এর আগে কোন পুরুষ আমার হাত ধরেনি, কেউ এতখানি সাহস কখনো পায়নি, আমি আমার নিজের ভাইদের ও কখনো দেখিনি কোন কারনে তারা কেউ আমার হাত ধরেছে, আমি প্রচণ্ড অবিশ্বাস্য আর ভয়ে আতঙ্কিত। আমি হাত ঝারা দিলাম তার হাত থেকে হাত সরানোর জন্য দুইবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হাতের কলেজের ব্যাগ দিয়ে তার গায়ের উপর বারি দিতে উদ্যত হতেই লোকটি সেদিকে মনোযোগ দিতেই আমি আমার হাত চুড়ির ভেতর দিয়ে মুচড়ে বের করেই দৌড় দিলাম, বেশ কিছুটা সামনে যেতেই দেখি এক মহিলা আর তার মেয়েকে নিয়ে দাঁড়ানো তার কাছে যেয়ে থামলাম।
ওখানে আশেপাশে কয়েকজন বাদাম ওয়ালা ফেরিওয়ালা টাইপের ছেলে ছিল, মহিলা খুব সহজেই ব্যাপারটা বুঝে ফেললো তার ছোট্ট মেয়ের সাথে সাথে আমাকেও তার আড়াল করলো পেছনে, লোক গুলো খুবি দ্রুত সেখানে পৌঁছে যেতেই মহিলা প্রচণ্ড আক্রোশে ওদের গালাগালি আর চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলো, একজন দুইজন করে লোক জমা হতেই খারাপ লোক তিনটি মাইক্রো বাস নিয়ে তৎক্ষণাৎ ভাগল।পরে ওই মহিলা সহ আরও বেশ কিছু মানুষ আমাকে বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিলো, বাসায় ফিরে অনেক বমি করলাম, হয়ত ভেতর থেকেই খুব ভয় পেয়েছিলাম, বার বার হাত ধুচ্ছিলাম, ওই ছিল আমার জীবনে প্রথম কোন পুরুষের হাত ধরা, মনে করলে এখনো খারাপ লাগে। বাসায় আমি কাউকে কিছু বললাম না, চুপ করে রুমে দরজা বন্ধ করে শুয়ে ছিলাম।
গভীর রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গেছে বেশ কিছুদিন। মানুষ সম্পর্কে পুরুষ মানুষ সম্পর্কে অনেক দিন প্রচণ্ড ঘ্রিনা জমে ছিল। আমি বেশ চাপা স্বভাবের মানুষ নিজের ব্যক্তিগত দুঃখের বিপদের কথা বলে কাউকে বিরক্ত করা কিংবা কারো সিম্পাথি পাওয়া আমার স্বভাবের বাইরে। তাই এই ঘটনা আমি কাউকেই বলিনি। আসলে ঘটনাটা ছিল খুবি নোংরা আর বাজে।
যাই হোক গত কয়দিন ধরে দেখছি খিলখেত একটা বিশাল বিলবোর্ড টানানো। যাতে লেখা অপরিচিত মাইক্রোবাস আর প্রাইভেট কার ব্যাবহারে বিরত থাকুন এবং নিজেকে নিরাপদ রাখুন। প্রচারনায় Rab। এটা দেখে ভাবলাম আমার এই খারাপ অভিজ্ঞতাও শেয়ার করা উচিৎ অন্তত সচেতনতার জন্য।
পথে ঘাটে বেশ কিছু পার্ট লিখে ফেলেছি অথচ এই ঘটনাটা নিয়ে কিছু লিখিনি। মনে পরেছে কিন্তু লিখতে ইচ্ছে করেনি। সত্যি কথা বলতে কি এই ঘটনাটা মনে করলে সত্যিকার অর্থেই মন খারাপ হয়ে যায়। নিজেকে ভীষণ তুচ্ছ মনে হয়, মাঝে মাঝে আমি মেয়ে বলে আমার বাধা প্রতিবন্দকতা মনে করে আমার কনফিডেন্স স্কেল জিরোতে চলে আসে। এটা বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা, তখন কেবল স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উথেছি। সেদিন আমি বাসের জন্য এয়ারপোর্ট এর ওভার ব্রিজ থেকে বেশ অনেকটা দূরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কোথাও রিকশা বাস এমন কিছুই ছিলোনা। সময়টা দুপুর তাই রাস্তায় মানুষজন কম কিংবা কোন কারনে ছিলোনা বললেই চলে। ওইদিন আমার এক বান্ধবীর জন্মদিন ছিল, তাই আমরা কলেজ ড্রেসের সাথেই এক হাতের মুঠো ভরে চুড়ি পরেছিলাম।
চুড়ি পরা ছিল কলেজের নিয়মের বাইরে, নিয়মের বাইরে কিছু করেছি বলে আমাদের খুব একটা adventure হল এই ভাললাগায় মুগ্ধ হয়ে আছি তখন, তখন ইন্টার প্রথম বর্ষে পড়ি। অনেক বড় হয়ে গেছি এবং কিচ্ছু পরোয়া করিনা এই ভাব তখন আমাদের প্রত্যেকের।আসলে এই বয়সে হয়ত সকলের এই রকম ফিলই হয়। কে দেখল, কে তাকিয়ে থাকল কে কি ভাবল এইগুলা নিয়া টুকটাক চিন্তা করার মতো বিন্দু মাত্র সময় নাই তখন।আমি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে থেকেও কোন গাড়ি কিংবা রিকশা পেলাম না। পায়ে হেটে তো বাসায় ফেরা সম্ভব না তাই বাধ্য হয়েই দাঁড়িয়ে আছি একা।
এমন সময় আনুমানিক চল্লিশ হবে বয়স এরকম এক লোক এসে আমার পাশে দাঁড়ালো। সে কাছাকাছি দাঁড়ানোয় আমি একটু সরে গিয়ে দাঁড়ালাম সে ফিরে আবার আমার কাছাকাছি এলো এবং বলল গাড়ি তো আজ বিকালের আগে চলবে না, প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে আসছে সব গাড়ি থামিয়ে রাখছে,
আমি চুপ করে রইলাম।
আপনি কোথায় যাবেন?
আমি চুপ। লোকটার সাথে একদম কথা বলতে ইচ্ছে করল না আমার।
-আমার সাথে মাইক্রো বাস আছে, আসেন নামিয়ে দেই।
আমি বললাম - না।
-আরে না কেন? চলেন... আসেন আপনাকে নামিয়ে দেই, এই রোদের মধ্যে কতক্ষন দাঁড়িয়ে থাকবেন, ফরসা মানুষ মুখ লাল হয়ে গেছে দেখছেন! আসেন নামিয়ে দেই।
দূরে দেখলাম ওভার ব্রিজের একটু সামনে একটা সাদা রঙের বড় সর মাইক্রো বাস দাঁড়িয়ে আছে, পাশে ওই লোকের কাছাকাছি বয়সের দুজন লোক, একজন হয়ত ড্রাইভার আর একজন সহকারী। দুইজনেরই খুব ব্যস্ততা। একজন ঘুরে ঘুরে দরজার কাছে যাচ্ছে আর একজন ঘন ঘন ঘড়ি দেখছে,
-লোকটি আমাকে বলল চলেন আরে আসেন এত ভাবার কিছু নাই, আমিও ওই দিকেই যাব, যেতে যেতে আপনাকে নামিয়ে দিব।
- আমিতো বলিনি আমি কোনদিকে যাব!?
-আরে এত কথা বাড়াইতেছ কেন? চল তো চল, এমন করলে রাস্তার মানুষজন কি ভাববে, এই ভাবে কথা বললে মানুষজন ভাববে আমি অচেনা একটা মেয়েরে নিয়া টানা টানি করতেছি হা হা হা (কথা গুলা সে বেশ জোরে জোরে বলল যেন কিছু দূরে দুই একজন মানুষ যারা অপেক্ষমান গাড়ীর জন্য তাড়া শুনতে পায়।
আমি তার কথার অর্থ বুঝলাম, ঝট করে সরে যেতে উদ্ধত হতেই সে আমার হাত চেপে ধরল, যে হাতে আমি সেদিন খুব সখ করে চুড়ি পরেছি, সেই হাতটা সে প্রবল শক্তি দিয়ে চেপে ধরল। তার হাতের চাপে আমার মেটালের চুড়ি বেকে যেতে লাগলো। এর আগে কোন পুরুষ আমার হাত ধরেনি, কেউ এতখানি সাহস কখনো পায়নি, আমি আমার নিজের ভাইদের ও কখনো দেখিনি কোন কারনে তারা কেউ আমার হাত ধরেছে, আমি প্রচণ্ড অবিশ্বাস্য আর ভয়ে আতঙ্কিত।
আমি হাত ঝারা দিলাম তার হাত থেকে হাত সরানোর জন্য দুইবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হাতের কলেজের ব্যাগ দিয়ে তার গায়ের উপর বারি দিতে উদ্যত হতেই লোকটি সেদিকে মনোযোগ দিতেই আমি আমার হাত চুড়ির ভেতর দিয়ে মুচড়ে বের করেই দৌড় দিলাম, বেশ কিছুটা সামনে যেতেই দেখি এক মহিলা আর তার মেয়েকে নিয়ে দাঁড়ানো তার কাছে যেয়ে থামলাম।
ওখানে আশেপাশে কয়েকজন বাদাম ওয়ালা ফেরিওয়ালা টাইপের ছেলে ছিল, মহিলা খুব সহজেই ব্যাপারটা বুঝে ফেললো তার ছোট্ট মেয়ের সাথে সাথে আমাকেও তার আড়াল করলো পেছনে, লোক গুলো খুবি দ্রুত সেখানে পৌঁছে যেতেই মহিলা প্রচণ্ড আক্রোশে ওদের গালাগালি আর চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলো, একজন দুইজন করে লোক জমা হতেই খারাপ লোক তিনটি মাইক্রো বাস নিয়ে তৎক্ষণাৎ ভাগল।পরে ওই মহিলা সহ আরও বেশ কিছু মানুষ আমাকে বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিলো, বাসায় ফিরে অনেক বমি করলাম, হয়ত ভেতর থেকেই খুব ভয় পেয়েছিলাম, বার বার হাত ধুচ্ছিলাম, ওই ছিল আমার জীবনে প্রথম কোন পুরুষের হাত ধরা, মনে করলে এখনো খারাপ লাগে।
বাসায় আমি কাউকে কিছু বললাম না, চুপ করে রুমে দরজা বন্ধ করে শুয়ে ছিলাম। গভীর রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গেছে বেশ কিছুদিন। মানুষ সম্পর্কে পুরুষ মানুষ সম্পর্কে অনেক দিন প্রচণ্ড ঘ্রিনা জমে ছিল। আমি বেশ চাপা স্বভাবের মানুষ নিজের ব্যক্তিগত দুঃখের বিপদের কথা বলে কাউকে বিরক্ত করা কিংবা কারো সিম্পাথি পাওয়া আমার স্বভাবের বাইরে। তাই এই ঘটনা আমি কাউকেই বলিনি। আসলে ঘটনাটা ছিল খুবি নোংরা আর বাজে।
যাই হোক গত কয়দিন ধরে দেখছি খিলখেত একটা বিশাল বিলবোর্ড টানানো। যাতে লেখা অপরিচিত মাইক্রোবাস আর প্রাইভেট কার ব্যাবহারে বিরত থাকুন এবং নিজেকে নিরাপদ রাখুন। প্রচারনায় Rab। এটা দেখে ভাবলাম আমার এই খারাপ অভিজ্ঞতাও শেয়ার করা উচিৎ অন্তত সচেতনতার জন্য।
বিঃ দ্রঃ এটা কোন গল্প নয় আমার জীবনে পথে ঘাটে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১০