
এক বিকট শব্দ, থমকে যায় সময়,
জীবনের সমস্ত রঙ ছাই হয় মুহূর্তে।
ঝাঁপসা হয়ে যায় মায়েদের দৃষ্টি,
চিৎকারে কাঁপে বাতাস, নড়ে ওঠে নিস্তব্ধ পৃথিবী।
বিমান ধ্বসের আগুনে পুড়ে গেল দেহ,
পুড়ে গেল ভরসা, স্বপ্নে আঁকা সোনালি প্রহর।
ছোট্ট বুকের ধন চেয়ে থাকে শূন্য চোখে
আমার মা কই? বাবা কই?
পোড়া ঠোঁটে অস্পষ্ট আর্তনাদ,
পাশ কাটায় মুখোশপরা ব্যস্ত শহরবাসী।
কেউ না বাড়ায় হাত, কেউ না পাতে বুক,
মুঠোফোনে জ্বলছে আগুনের দৃশ্য
মানুষ যেন ভুলে গিয়েছিল আহত বাচ্চারাও মানুষ!
এক মুহূর্তেই ভেঙে যায় আলোয় ভরা সংসার,
মা বাবার কান্নায় কেঁপে ওঠে আকাশ
পুড়ে যাওয়া হাত, চুলহীন মাথা, বিকৃত মুখে
তবু শিশুটি হেঁটে চলে বাঁচার শেষ চেষ্টায়।
তুমি কি পারতে না একবার শুধু বলতে
এই তো আমি আছি, ভয় পেও না বাবা!
তুমি শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিডিও করলে,
মানবতার নাম পুড়িয়ে ফেললে!
বিধ্বস্ত স্কুলব্যাগ, পোড়া পেন্সিল বক্স,
জমা পড়ে আছে কোনো কাগজের স্তূপের নিচে,
ক্লাস টু, থ্রি, ক্লাস ফোর
যাদের জীবন মাত্র শুরু হয়েছিল একটুখানি রঙে,
শেষ হয়ে গেল প্রতিদিনের প্রিয় স্কুল মাইলস্টোনে
কল্পনার বাইরেও তবু কত কিছু হয়
আহারে দুনিয়া।
দোলনার নিচে পড়ে থাকা একজোড়া জুতো,
চামড়াটা গলে গেছে, ছিল কিছু পোড়া আইডি কার্ড
মিরসাদ, সায়মা, জুনায়েদ
তারা আর কখনো উঠবে না দোলনায়,
এই পৃথিবীর মাটি আর দোলাবে না তাদের কোমল শরীর।
পুড়ে গেছে মা
যিনি দৌঁড়ে এসেছিলেন বাচ্চাকে নিতে,
পুড়ে গেছে শিক্ষিকা
যিনি বুক দিয়ে বাঁচালেন সন্তানসম শিশুদের।
স্বামী-স্ত্রী সন্তানদের ভালোবাসায় গড়া স্বপ্নের সংসার
আজ ছাই হয়ে উড়ে যাচ্ছে আকাশে।
আর আমরা?
আমরা শুধুই দাঁড়িয়ে আছি,
ক্যামেরা ধরে রাখছি
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেব বলে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:৩৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




