somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সানিম মাহবীর ফাহাদ
আমি প্রচলিত অর্থে কোন লেখক নই তবে লেখালেখিটাকে অন্তর থেকে ভালোবাসি। তাই ভালোবাসার টানেই মাঝে মাঝে সমাজ, সংস্কৃতি এবং প্রযু্ক্তি নিয়ে দু’এক লাইন লেখার চেষ্টা করি।

বাঙ্গালী মুসলিমদের পোশাক প্রীতি ও ধর্মীয় গোঁড়ামি! পা বাদ রেখে লাঠির জয়জয়কার!!

২৮ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাঙ্গালী মুসলিমদের জোব্বার প্রতি বিশেষ ধরনের একটা দুর্বলতা আছে। কোন মূর্খ যদি সুন্দর জোব্বা এবং টুপি পড়ে গ্রামের কোন মসজিদে গিয়ে হাজির হয় তাহলে ইমাম সাহেব নির্দ্বিধায় তার জায়গা ছেড়ে দিয়ে সেই জোব্বাধারীকে ইমাম হিসাবে দাঁড় করিয়ে দিবে। অথচ অন্য কোন ছেলে যদি ইসলামিক যথার্থ জ্ঞান নিয়ে সাধারণ শার্ট কিংবা টিশার্ট পরে নামাজ পড়তে যায় তাহলে তাকে পোশাকের জন্য নানা রকম তিরস্কারের শিকার হতে হয়। এর মানে এই দাঁড়াচ্ছে যে কারও মুসলিম এবং মুত্তাকী হওয়ার মানদণ্ড অনেকটা জোব্বার উপরেও নির্ভর করে।

কিন্তু সত্যিকার অর্থে যারা জোব্বাধারী তাঁদের অনেকের আচরণ দেখলে এই সব জোব্বাপ্রেমিদের মাথায় বজ্রপাত হওয়ার মতো অনুভূতি হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের যেসব শেখরা অঢেল অর্থ সম্পত্তির মালিক তাঁরা সুন্দর জোব্বা পাগড়ি পরে সাথে অর্ধ-নগ্ন কিংবা আংশিক পোশাকে আবৃত মেয়ে পাশে নিয়ে চলাচল করে। জোব্বা পরে পার্টিতে গিয়ে নাচে, কিংবা জোব্বা পরে বাদ্যযন্ত্র বাজায়। যার কোনটাই ইসলাম কর্তৃক স্বীকৃত না।

আসলে পোশাকে কারও ধর্মীয় আনুগত্য প্রকাশ পায় না। আমরা যদিও পাঞ্জাবী কে ইসলামিক পোশাক হিসাবে মনে করি কিন্তু এটাতে অনেক বড় ধরনের একটা ভুল আছে আছে। আমার জানা মতে ইসলাম ধর্মে নির্দিষ্ট কোন পোশাক কে ইসলামিক পোশাক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়নি। ইসলামিক পোশাক হলো ঢিলেঢালা পোশাক, যাতে কারও নামাজ পড়তে কোন প্রকার ঝামেলা না হয়। আপনি যদি কোন টাইট পাঞ্জাবী পড়ে নামাজে দাঁড়ান এবং এতে করে আপনার রুকু সিজদা করতে সমস্যা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে পাঞ্জাবীও ইসলামিক পোশাক হিসাবে বিবেচিত হবে না।

মহানবী (সাঃ) মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেটা ছিলো মরুভূমির দেশ যেখানে দিনে অসহ্য গরম এবং রাতে প্রচণ্ড শীত থাকতো। তাই দিনে মরুভূমির বালি যাতে শরীর ও চোখে মুখে লাগতে না পারে এবং রাতে শীতের কারণে যেন কষ্ট করতে না হয় তার জন্যই জোব্বা এবং পাগড়ির প্রচলন ছিলো। রাসুল (সাঃ) যদি মক্কায় জন্মগ্রহণ না করে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতেন তাহলে তিনি বাংলাদেশের সাথে মানানসই পোশাকই পরতেন। অবশ্যই তখন গলা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত আবৃত জোব্বা পড়তেন না।

আমাদের অনেক গোঁড়া মুসলিমদের কিছু কর্মকাণ্ড আমার কাছে অস্বাভাবিক লাগে। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞানের অভাবে তাঁরা অনেক ধরণের মুর্খামি করে। যেমন রাসুলের যুগে যে জিনিস ছিলো না তাঁরা তা ব্যবহার করবে না। যেমন মসজিদে মাইক ব্যবহারেও অনেক হুজুরের আপত্তি দেখেছি আমি। ইসলাম সব সময় একটি আধুনিক ধর্ম। রাসুল (সাঃ) যে যুগে ইসলাম নিয়ে আসেন তখন ইসলাম ছিলো একেবারে স্ট্যান্ডার্ড। আধুনিক রণকৌশল, পররাষ্ট্রনীতি, সংবিধান, রাষ্ট্রপরিচালনার সিস্টেম সব ইসলাম থেকেই এসেছে। আপনারা জানেন কিনা জানিনা, পৃথিবীর সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান হলো মদিনার সনদ।

রাসুল (সাঃ) যদি সেই যুগে জন্মগ্রহণ না করে বর্তমান যুগে জন্মগ্রহণ করতেন তাহলে তাঁর কাছে থাকতো সব আধুনিক প্রযুক্তি। আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম, তাঁর সাহাবীরা থাকতেন বড় বড় রাষ্ট্রীয় নেতাগণ। তিনি থাকতেন বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত এবং ক্ষমতাধর মানুষ। ইসলাম এমন একটা ধর্ম যেখানে সব সময় আধুনিকতা থাকে। গোঁড়ামি ইসলামের সাথে মানানসই কোন বিষয় না। ইসলাম সহজ এবং সুন্দর ধর্ম এবং সর্বকালের মানুষের জীবনযাত্রার সাথে মানানসই। ইসলামের সঠিক জ্ঞান আপনাকে ১৪০০ বছর আগের যুগে ফিরিয়ে দিবে না। বরং বর্তমান যুগে সঠিক এবং সুন্দর জীবন যাপনের ধারণা দিবে। আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে ইসলামের সঠিক জ্ঞান দান করুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৬ দুপুর ২:৩৮
১৬টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×