
একদিন আমি বুড়ো হবো।
চুলে রূপোলি ঝিলিক, হাতে কাঁপা কাঁপা আঙুল।
তখন শহরের এক কোণে খুলবো একটা ছোট্ট কফিশপ।
নামটা কি হবে এখনও ভাবি নাই।
কাঁচের জানালা দিয়ে রোদ এসে পড়বে মেঝেতে,
দেয়ালে হবে পুরনো দিনের সিনেমার পোস্টার
আর ক্যাফের এক কোণায় থাকবে একটা বুকশেলফ,
যেখানে সাজানো থাকবে বিভূতিভূষণের "পথের পাঁচালী",
রবীন্দ্রনাথের "গীতাঞ্জলি",
আর সেলিনা হোসেনের "নিরন্তর কালপুরুষ"।
হুমায়ূন আহমেদ থেকে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, জীবনানন্দের কবিতা থেকে হাসান আজিজুল হকের গল্প—
যে কেউ এসে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে ডুবে যাবে সাহিত্যের পাতায়।
একটা আরামদায়ক সোফায় বসে কেউ হয়তো পড়বে হেলাল হাফিজের কবিতা,
আবার কেউ হয়তো গল্পে মিশিয়ে দেবে নিজের দুঃখগুলো।
বাইরে থাকবে কাঠের বেঞ্চ।
যেখানে সন্ধ্যার মৃদু বাতাসে বসে দুইজন মানুষ
চুপচাপ গল্প করবে।
একটা প্রজাপতি হয়তো তাদের কথা শুনে
পাশ দিয়ে উড়ে যাবে।
আর আমি?
আমি ক্যাফের কাউন্টারে দাঁড়িয়ে থাকবো।
একটা পুরনো ডায়েরি হাতে,
যার ভাঁজে লেখা থাকবে কিছু অসমাপ্ত কবিতা,
কিছু হারিয়ে যাওয়া চিঠি।
একজন এসে হয়তো জিজ্ঞেস করবে,
কেন এই কফিশপ?
তখন আমি একটু থেমে,
চোখে পুরনো দিনের ঝিলিক এনে বলবো—
“এটা শুধু একটা কফিশপ নয়।
এটা একটা আশ্রয়।
যে প্রেম কখনো বলা হয়নি,
যে স্বপ্ন কখনো পূরণ হয়নি,
যে জীবন কখনো ছোঁয়া হয়নি—
সবকিছু মিলে এটাই আমার গল্প।”
সন্ধ্যার বাতাসে কফির গন্ধ ভেসে যাবে,
আর কেউ হয়তো বুকশেলফ থেকে তুলে নেবে
হুমায়ুন আহমেদের লেখা কোনো বই।
ক্যাফের ঘড়িটা তখন থেমে যাবে।
সময়ের দরকার নেই।
এখানে গল্পের শেষ হয় না,
শুধু শুরু হয় নতুন অধ্যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




