somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চতুর্থক কবিতা বিষয়ক কিছু কথা ও একটি চতুর্থক কবিতাঃ সাজ্জাদ হোসেন

১৮ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ১০:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চতুর্থক শব্দটির সমাস যদি বিশ্লেষণ করা যায় , তবে বলা যেতে পারে , চতুর্থেই অক্কা (মুক্তি) পায় যা । এই নামটিকেই আমি বেছে নিয়েছি , কাব্য জগতের এই নতুন কাব্যধারণার নামকরণে।


চতুর্থক কবিতার গঠনতন্ত্রঃ

খুব সংক্ষেপে বর্ণনা করছি , পরবর্তি সময়ে বিস্তারিত আলোচনা করবার ইচ্ছে রাখি।


চতুর্থক কবিতার অনুভূতির উৎসঃ

পদার্থ বিজ্ঞান এর চারটি ডাইমেনশন , তথা দৈর্ঘ্য , প্রস্থ , উচ্চতা এবং সময়। একটা চতুর্থক কবিতার প্রথম প্যারাতে এই ৪ টি ডাইমেনশন কে অনুভূতির উৎস হিসেবে বলা যায়। ধরা যাক কোন চতুর্থক শুরু হয়েছে দৈর্ঘ্য থেকে অর্থাৎ প্রথম প্যারার প্রথম পংতি শুরু হতে পারে দৈর্ঘ্য থেকে , একে এর পর এক করে প্রস্থ ,সময় আর এলো উচ্চতা। আবার অন্য একটা চতুর্থক শুরু হতে পারে প্রস্থ থেকে , অর্থাৎ প্রথম প্যারার প্রথম পংতি শুরু হতে পারে প্রস্থ থেকে একে এর পর এক করে দৈর্ঘ্য ,সময় আর এলো উচ্চতা।আবার অন্য একটা চতুর্থক শুরু হতে পারে উচ্চতা থেকে , অর্থাৎ প্রথম প্যারার প্রথম পংতি শুরু হতে পারে প্রস্থ থেকে একে এর পর এক করে দৈর্ঘ্য ,সময় আর এলো প্রস্থ।আবার অন্য একটা চতুর্থক শুরু হতে পারে সময় থেকে , অর্থাৎ প্রথম প্যারার প্রথম পংতি শুরু হতে পারে প্রস্থ থেকে একে এর পর এক করে দৈর্ঘ্য , সময় আর এলো উচ্চতা।

প্রথম প্যারার প্রথম পংতিঃ দৈর্ঘ্য / প্রস্থ/ উচ্চতা / সময়
প্রথম প্যারার দ্বীতিয় পংতিঃ দৈর্ঘ্য / প্রস্থ/ উচ্চতা / সময়
প্রথম প্যারার তৃতীয় পংতিঃ দৈর্ঘ্য / প্রস্থ/ উচ্চতা / সময়
প্রথম প্যারার চতুর্থ পংতিঃ দৈর্ঘ্য / প্রস্থ/ উচ্চতা / সময়

প্রথম প্যারাতে কোন ডাইমেনশন একবার-ই আসবে। অর্থাৎ দৈর্ঘ্য একবারই আশবে , দু'বার নয়।


দৈর্ঘ্য , প্রস্থ , সময় আর উচ্চতা যে কোন একটা ডাইমেনশনাল চিন্তা থেকেই একটা চতুর্থক শুরু হতে পারে। অর্থাৎ একজন চতুর্থক কবিতা চর্চাকারীকে যে কোন একটা ডাইমেনশন থেকেই চতুর্থক কবিতা শুরু করবার পূর্ণ স্বাধীনতা দিচ্ছে চতুর্থক এর গঠনতন্ত্র! এই বিষয়ে আরো আলোচনা করবার ইচ্ছে রাখি চতুর্থক বিষয়ক পরবর্তি লেখাতে।

চতুর্থক কবিতায় আছে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট প্যারা , প্রতিটি প্যারা গঠিত হয়েছে ৪ টি পংতিতে।


প্রথম প্যারার প্রথম পংতির বিশ্লেষণ হবে দ্বীতিয় প্যারায়
প্রথম প্যারার দ্বীতিয় পংতির বিশ্লেষণ হবে তৃতীয় প্যারায়
প্রথম প্যারার তৃতীয় পংতির বিশ্লেষণ হবে চতুর্থ প্যারায়
প্রথম প্যারার চতুর্থ পংতির বিশ্লেষণ হবে পঞ্চম প্যারায় অর্থাৎ শেষ প্যারায় এবং

২য় প্যারার সারমর্ম মিলিত হবে ৩য় প্যারায়
২য় ও ৩য় প্যারার সম্মিলিত সারমর্ম মিলিত হবে ৪র্থ প্যারায়
২য় , ৩য় ও ৪র্থ প্যারার সম্মিলিত সারমর্ম মিলিত হবে ৫ম প্যারায়
৫ম প্যারার শেষ পংতিটাই হবে একটা চতুর্থক কবিতার সমাপ্তি-সূচক পংতি

এবং
যে কথাটি না বললেই নয় , প্রতিটি প্যারাই এক একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কবিতা।

চতুর্থকের স্বীকার্যসমূহঃ

১। চতুর্থক চারটি মাত্রা [ dimension] নিয়ে গঠিত।
২। একটি মাত্রা আবার চারটি পংতিতে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
৩। সম্পূর্ণ চতুর্থক একটি মাত্র অনুভূতিকেই প্রকাশ করে।

স্বীকার্য ১ অনুসারে চতুর্থকে আছে চারটি (৪) মাত্রা অর্থাৎ সংখ্যা ৪
স্বীকার্য ২ অনুসারে চতুর্থকের মাত্রাসমূহ পরবর্তীতে ৪টি পংতিতে বিশ্লেষিত হয়েছে এবং এদের সারমর্ম মিলিত হয়েছে পর্যায়ক্রমে আর এক প্যারায়। কাজেই আমরা বলতে পারি ১/৪+১/৪+১/৪+১/৪ = ১।
স্বীকার্য ৩ অনুসারে সম্পূর্ণ চতুর্থক একটি মাত্র অনুভূতিকেই প্রকাশ করে , কাজেই সংখ্যা ১ ।
এই ৩টি স্বীকার্য থেকে প্রাপ্ত সংখ্যাগুলোকে যদি আমরা যোগ করি , তাহলে আমরা পাচ্ছি,

স্বীকার্য ১+স্বীকার্য ২+স্বীকার্য ৩ = ১+৪+১ = ৬ ।

এই ৬ হচ্ছে সেই ষষ্ঠ অনুভূতি যাকে আমরা "Sixth Sense" বলেও জানি।

এখানে একটা চতুর্থক কবিতা " ধ্যানী" দেয়া হল , এই কবিতাটি আমি উৎসর্গ করেছি , "হরিপদ কাপালি" কে , যিনি বাংলাদেশ এ "হরি" ধান এর আবিষ্কারক।

ধ্যানী[চতুর্থক কবিতা]

প্রতিটি আদম সন্তানই , গোপন-অগোপনে , একে অপরের চেয়ে জ্ঞানী, তবে ধ্যানী নয় সবে,
অসংখ্য আকাশ , মহাকাশে বিদ্যমান , চর্মচক্ষু বলে! একটি আকাশই বৃষ্টি ঝরায় নিরবে,
আর এইসব অহোরাত্র সমূহ আপন বেগে ধাবমান,যাপিত বোধ ও অনাগত জ্ঞান-ধ্যানের উৎসবে
আর তাদের চরণের শক্তি আর হৃদয়ের ভক্তি এসে বিন্দুতে মেশে ,যেখানে আলোক বিন্দু উজ্জ্বলতম ,গম্ভীর মাঙ্গলিক গৌরবে।

প্রকৃ্তির নিগূঢ়তম সত্য ভাষণ ,আসন ফেলে না কোথাও,বসে না ক্লান্তি , আবেগ কিংবা শ্রান্তিতে
এ ভাষণ ঘোরে,সৃষ্টি-অনা্সৃষ্টিতে ,রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে ,গোপন-অগোপনে ,প্রাকৃতিক কোন সংগীতে
আগমনেই জানতে হয় , একদিন হবেই লয় , শুধু থাকে সত্য ভাষণ , ধ্যানী-জ্ঞানীর ভংগীতে
আর আদম সন্তানেরা, অচেনা হৃদয়ে ধারণ করে সেই সত্য ভাষণ , তবু দিন যায় তাদের কেবলি বিভ্রান্তিতে।

যা কিছু অবলোকিত হয় , তার সবই কি সত্য নয়? তবে বিলম্ব কেন এ অবগাহনে?
জেনো! নীলাচলে যে নীল ভাসে সৃষ্টির আদি-উপাদানের রূপে, তা প্রত্যাবর্তিত হয় , নশ্বর সূ্র্যের খান্ডব দাহনে?
অন্য জগত-সমূহ কি একই চক্রে বাঁধা? আগমন-প্রত্যাগমন ,জীবন ও মরন? মহাকালের অদ্ভূত বাহনে?
হৃদয়ের চোখে ভাসে একটি আকাশ, যেন ধাঁধা! সেই বাঁধার দূ্র্গে ,মূর্খেরা খেলে পাশা, আমৃত্যু দিবস-শয়নে।

সত্য ভাষণ, করে ধারণ, তাবৎ মহাকাল , ওড়ে শূণ্যে হাউই ,মাথাল মাথায় কৃ্ষক বসে ধ্যানে
ওড়ে ধূ্মকেতু , সেই হেতু , গড়ে ওঠে সেতু , দিন-রাত্রির চক্রে , বক্রে-সরলে , অমৃত-গরলে, অনন্ত অনির্বান জ্ঞানে।
আর নবান্নের উৎসব পৃ্থিবীর ঘরে ঘরে , জমিনে চাষার লোহিত-ঘর্ম ঝরে, তাও বর্ণিত, হেরা পর্বতের সেই সত্য ভাষণে
দৃষ্টিই সৃষ্টি অনুভবের শেষ কথা নয়,প্রথা পায় লয়,বুঝি!অশ্বত্থ বৃক্ষমূ্লে গোকূ্লের কৃ্ষ্ণকান্তি কৃ্ষক লাঙ্গলসম ক্রুশ কাঁধে দাঁড়ায় সটানে।

অনন্ত অনির্বাণ জ্ঞাণ ,আপন ধ্যানে ,দেদীপ্যমান ,উজ্জ্বলতম আলোকবিন্দুতে ,তাবৎ সৃষ্টির গোপন গহীনে
আপন বেগে ধাবমান মহাকাল চলে বয়ে ,সেই বিন্দুতে একাকার হয়ে ,নিরাকারের গম্ভীর মাঙ্গলিক গৌরবে
চরণের শক্তি-হৃদয়ের ভক্তি,অবিরত সৃষ্টির সংগীত সাধনায়!আদ্যন্ত উদ্বেলিত চাষার ফসলের গানে ,ফসলের উৎসবে
সে গানের সুরে,অতীত ও আগত ধ্যানীদের চোখ জুড়ে,কত নদী খেলা করে ,আর জ্বলে বিন্দু তাবৎ শূণ্যে-জলে-স্থলে ,শ্বাশত অনির্বাণ ধ্যাণে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ

যে কথাটি বলা উচিত বলে মনে করছি তা হচ্ছে, আমি সাজ্জাদ হোসেন ,

যেই লেখা এখানে লিখলাম , সেটা আমার একটা বই থেকে নেয়া , বই এর নাম "কাপালিক" , ২০০৭ এ একুশে ফেব্রুয়ারীর বইমেলাতে বেরিয়েছিল , অদ্বৈত প্রকাশনী থেকে। এই লিঙ্কেও পেতে পারেন " Click This Link "

চতুর্থক কবিতা বিষয়ে কিছু জানতে চাইলে নির্দ্বিধায় জিজ্ঞেস করুন আমাকে , এখানে অথবা "PM" এ।আপনাদের সুচিন্তিত মতামত আশা করছি।

চতুর্থক কাব্যধারণা আমার নিজেরই!!


সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:২৪
১৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

(রম্য রচনা -৩০কিলো/ঘন্টা মোটরসাইকেলের গতি )

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫০



একজন খুব পরিশ্রম করে খাঁটি শুকনো সবজি( দুষ্টু লোকে যাকে গাঁ*জা বলে ডাকে) খেয়ে পড়াশোনা করে হঠাৎ করে বিসিএস হয়ে গেলো। যথারীতি কষ্ট করে সফলতার গল্প হলো। সবাই খুশি। ক্যাডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×